আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায়

হাদীস নং: ৩১০৩
আন্তর্জাতিক নং: ৩১০৩
সূরা তাওবা
৩১০৩. মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) ...... যায়দ ইবনে ছাবিত (রাযিঃ) বলেছেনঃ ইয়ামামা যুদ্ধে (বহু হাফিজ সাহাবীর) শাহাদাতের ঘটনার পর আবু বকর সিদ্দীক (রাযিঃ) আমাকে ডেকে পাঠালেন। সেখানে উমর (রাযিঃ)ও ছিলেন। তিনি বললেনঃ উমর আমার কাছে এসে বলেছেন, ইয়ামামার যুদ্ধে কুরআনের অনেক হাফিজ শহীদ হয়েছেন। আমার আশঙ্কা হয় যে, আরো অনেক স্থানে বহু হাফিযে কুরআন শহীদ হতে পারেন। এতে কুরআনের বহু অংশ বিলীন হয়ে যেতে পারে। সুতরাং কুরআন একত্রকরণের নির্দেশ দান করা আমি ভাল মনে করি। আবু বকর (রাযিঃ) উমর (রাযিঃ)-কে বললেন, আমি কি রূপে সে কাজ করি যা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) করেন নি। উমর (রাযিঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম, এ কাজ মঙ্গলজনক হবে। আবু বকর (রাযিঃ) বলেনঃ তিনি আমাকে বারবার এমনভাবে বলতে লাগলেন যে, শেষ পর্যন্ত আল্লাহ্ তাআলা এ বিষয়টি সম্পর্কে আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিলেন। যে বিষয়ে তিনি উমরের বক্ষ প্রশস্ত করেছিলেন। বিষয়টি সম্পর্কে উমর যেমন ভাবছেন এখন আমিও তা ভাবছি।

যায়দ (রাযিঃ) বলেন, আবু বকর (রাযিঃ) আমাকে বললেনঃ তুমি একজন বুদ্ধিমান যুবক, তোমাকে আমরা কোন বিষয়ে সন্দেহ করি না। তুমি রাসূল্লাহ্ (ﷺ) এর জন্য ওহী লিখতে। সুতরাং তুমি কুরআন শরীফ তালাশ করে সংগ্রহ করার কাজে লেগে যাও।

যায়দ (রাযিঃ) বলেনঃ আল্লাহর কসম, তাঁরা যদি কোন পাহাড় স্থানান্তরিত করার দায়িত্ব আমাকে দিতেন তবে তা আমার কাছে এর চেয়ে বেশী ভারী মনে হতো না। আমি বললামঃ আপনারা কি রূপে এ কাজ করবেন যা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) করেন নি?

আবু বকর (রাযিঃ) বললেনঃ আল্লাহর কসম, এটি ভাল কাজ। আবু বকর এবং উমর (রাযিঃ) উভয়েই আমাকে বারবার বিষয়টি বুঝতে লাগলেন, আল্লাহ্ তাআলা এ বিষয়ে আমার বক্ষ প্রশস্ত করে দিলেন, যে বিষয়ের জন্য আবু বকর ও উমর (রাযিঃ) উভয়ের বক্ষ প্রশস্ত করে দিয়েছিলেন। তারপর আমি কুরআন তালাশ করে সংগ্রহ করতে শুরু করলাম। আমি কাগজের টুকরা, খেজুর গাছের ডাল, মসৃণ পাথর এবং মানষের সীনায় যা রক্ষিত ছিল তা একত্রিত করতে থাকলাম। সূরা বারাআতের শেষের এ আয়াতটি খুযায়মা ইবনে ছাবিত (রাযিঃ)-এর কাছে পেলামঃ

قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ * فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ

তোমাদের মধ্য থেকে তোমাদের কাছে এক রাসূল এসেছে। তোমাদের যা বিপন্ন করে তা তাঁর জন্য কষ্ট দায়ক। সে তোমাদের কঙ্গলকামী। মুমিনদের প্রতি সে দয়ার্দ্র ও পরম দয়ালু। এরপর তারা যদি মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে তুমি বলবে আমার জন্য আল্লাহ্ই যথেষ্ট। তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নেই। আমি তারই উপর নির্ভর করি আর তিনি মহা আরশের অধিপতি।(৯ : ১২৮)। বুখারি ও মুসলিম

(আবু ঈসা বলেন)এ হাদীসটি হাসান-সহীহ।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ التَّوْبَةِ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ بَشَّارٍ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ مَهْدِيٍّ، حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ سَعْدٍ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ عُبَيْدِ بْنِ السَّبَّاقِ، أَنَّ زَيْدَ بْنَ ثَابِتٍ، حَدَّثَهُ قَالَ بَعَثَ إِلَىَّ أَبُو بَكْرٍ الصِّدِّيقُ مَقْتَلَ أَهْلِ الْيَمَامَةِ فَإِذَا عُمَرُ بْنُ الْخَطَّابِ عِنْدَهُ فَقَالَ إِنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ قَدْ أَتَانِي فَقَالَ إِنَّ الْقَتْلَ قَدِ اسْتَحَرَّ بِقُرَّاءِ الْقُرْآنِ يَوْمَ الْيَمَامَةِ وَإِنِّي لأَخْشَى أَنْ يَسْتَحِرَّ الْقَتْلُ بِالْقُرَّاءِ فِي الْمَوَاطِنِ كُلِّهَا فَيَذْهَبَ قُرْآنٌ كَثِيرٌ وَإِنِّي أَرَى أَنْ تَأْمُرَ بِجَمْعِ الْقُرْآنِ . قَالَ أَبُو بَكْرٍ لِعُمَرَ كَيْفَ أَفْعَلُ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ عُمَرُ هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ فَلَمْ يَزَلْ يُرَاجِعُنِي فِي ذَلِكَ حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِلَّذِي شَرَحَ لَهُ صَدْرَ عُمَرَ وَرَأَيْتُ فِيهِ الَّذِي رَأَى قَالَ زَيْدٌ قَالَ أَبُو بَكْرٍ إِنَّكَ شَابٌّ عَاقِلٌ لاَ نَتَّهِمُكَ قَدْ كُنْتَ تَكْتُبُ لِرَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم الْوَحْىَ فَتَتَبَّعِ الْقُرْآنَ . قَالَ فَوَاللَّهِ لَوْ كَلَّفُونِي نَقْلَ جَبَلٍ مِنَ الْجِبَالِ مَا كَانَ أَثْقَلَ عَلَىَّ مِنْ ذَلِكَ قَالَ قُلْتُ كَيْفَ تَفْعَلُونَ شَيْئًا لَمْ يَفْعَلْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ أَبُو بَكْرٍ هُوَ وَاللَّهِ خَيْرٌ . فَلَمْ يَزَلْ يُرَاجِعُنِي فِي ذَلِكَ أَبُو بَكْرٍ وَعُمَرُ حَتَّى شَرَحَ اللَّهُ صَدْرِي لِلَّذِي شَرَحَ صَدْرَهُمَا صَدْرَ أَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ فَتَتَبَّعْتُ الْقُرْآنَ أَجْمَعُهُ مِنَ الرِّقَاعِ وَالْعُسُبِ وَاللِّخَافِ يَعْنِي الْحِجَارَةَ الرِّقَاقَ وَصُدُورِ الرِّجَالِ فَوَجَدْتُ آخِرَ سُورَةِ بَرَاءَةَ مَعَ خُزَيْمَةَ بْنِ ثَابِتٍ : ( قَدْ جَاءَكُمْ رَسُولٌ مِنْ أَنْفُسِكُمْ عَزِيزٌ عَلَيْهِ مَا عَنِتُّمْ حَرِيصٌ عَلَيْكُمْ بِالْمُؤْمِنِينَ رَءُوفٌ رَحِيمٌ * فَإِنْ تَوَلَّوْا فَقُلْ حَسْبِيَ اللَّهُ لاَ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَهُوَ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ ) . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ .
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ৩১০৩ | মুসলিম বাংলা