আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
৪৬. কুরআনের তাফসীর অধ্যায়
হাদীস নং: ৩০৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ৩০৩৬
সূরা আন-নিসা
৩০৩৬. হাসান ইবনে আহমদ ইবনে আবু শুআয়ব আবু মুসলিম হাররানী (রাহঃ) ..... কাতাদা ইবনে নু’মান (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেনঃ আমাদের এক পরিবার ছিল এদেরকে বানু উবাইরিক বলা হত। এদের নাম ছিল বিশর, বুশায়র এবং মুবাশশির। বুশায়র ছিল মুনাফিক। সে সাহাবীদের নিন্দা করে কবিতা রচনা করত পরে তা অন্য কোন আরবের প্রতি আরোপ করে বলতঃ অমুকে অমুক কথা বলেছে। সাহাবীরা যখন এই কবিতা শুনতেন তারা বলতেনঃ আল্লাহর কসম, এই খবীছ ছাড়া এই কবিতা অন্য কেউ রচনা করেনি। ইবনুল উবাইরিকই তা রচনা করেছে।
কাতাদা বলেনঃ জাহিলী ও ইসলামী যুগেও এই পরিবারটি ছিল অভাবগ্রস্থ এবং উপবাস তাড়িত। মদীনার লোকদের খাদ্য ছিল খেজুর ও যব। কেউ যদি স্বচ্ছল হত তবে শাম থেকে কোন খাদ্য ব্যবসায়ী ময়দা নিয়ে আসলে তা সে কিনে নিত এবং নিজের ব্যবহারের জন্য তা বিশেষ করে রেখে দিত। আর ঐ খেজুর ও যবই হত পরিবারের অন্যদের খাদ্য।
একবার শাম থেকে ব্যবসায়ী এল। আমার চাচা রিফাআ ইবনে যায়দ তার নিকট থেকে এক বোঝা ময়দা কিনেন এবং তা ভাঁড়ার ঘরে রেখে গেল। ঐ কুঠুরীতে অস্ত্রশস্ত্র, বর্ম, তরবারি ইত্যাদিও ছিল। কিন্তু কুঠুরিটির নীচ দিয়ে একদিন চুরি হয়ে গেল। ভাঁড়া ঘরের নীচ দিয়ে সিঁদ কেটে ও অস্ত্রশ্স্ত্র লোপাট হয়ে যায়। সকালে আমার চাচা রিফাআ আমার কাছে এলেন। বললেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! আজ রাতে তো আমাদের উপর জুলম হয়ে গেল। আমাদের ভাঁড়ারের সিঁদ কেটে খাদ্য ও অস্ত্রশস্ত্র সব লোপাট করে ফেলেছে। মহল্লায় বিষয়টির খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং (বিভিন্ন জনকে) জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমাদেরকে বলা হয়েছে যে, আজ রাতে বনু উবাইরিকদের ঘরে বাতি জ্বালাতে দেখেছি। যতটুকু দেখেছি তাতে তোমাদের খাদ্যের সামনেই এদের দেখেছি।
বনু উবাইরিক বলছে, আল্লাহর কসম, লাবীদ ইবনে সাহলই তোমাদের ঐ চোর বলে আমাদের মনে হয়। অথচ আমরা মহল্লাবাসীদের এই বিষয়ে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আর লাবীদ হচ্ছেন আমাদের মাঝে অত্যন্ত নেক এবং আন্তরিকভাবে ইসলামের অধিকারী ব্যক্তি। লাবীদ এই কথা শুনে তলোয়ার কোষ মুক্ত করে এলেন, বললেনঃ আমি চুরি করেছি? আল্লাহর কসম হয়ত এই তরবারীর সঙ্গে তোমাদের মিলন ঘটবে নয়ত তোমরা এই চুরির সাক্ষ্য প্রমাণ পেশ করবে। লোকজনরা বললঃ ওহে ব্যাটা, সরে দাঁড়াও। তুমি আমাদের ঐ চোর নও। যা হোক, আমরা মহল্লায় আরো জিজ্ঞাসাবাদ করে নিঃসন্দেহ হলাম যে, এ বনু উবাইরিকেরই কান্ড। শেষে আমার চাচা আমাকে বললেনঃ হে ভ্রাতুষ্পুত্র! তুমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে গিয়ে বিষয়টা নিয়ে যদি আলোচনা করতে!
কাতাদা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে গেলাম। বললাম, আমাদের মহল্লায় একটা জালিম পরিবার আছে। আমার চাচা রিফাআ ইবনে যায়দ-এর ক্ষতি সাধনের ইচ্ছায় তার ভাঁড়ারে সিঁদ কেটে তার অস্ত্রশস্ত্র এবং খাদ্য সবই নিয়ে গেছে। আমাদের অস্ত্রশস্ত্রগুলো ফেরত নিয়ে দিন। আমাদের খাদ্যের দরকার নেই। নবী (ﷺ) বললেনঃ বিষয়টি নিয়ে আমি শিগগীরই পরামর্শ করব।
বনু উবাইরিক যখন এই কথা শুনল তখন তারা উসায়র ইবনে উরওয়া নামক তাদের এক ব্যক্তির কাছে এল এবং এই বিষয়ে তার সাথে আলোচনা করল এই বাড়ির কিছু লোক একত্রিত হয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -কে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কাতাদা ইবনে নু’মান ও তার চাচা আমাদের একটি সৎ ও মুসলিম পরিবারের ক্ষতি-সাধনের ইচ্ছায় কোনরূপ সাক্ষী-প্রমাণ ছাড়াই তাদের উপর চুরির অপবাদ দিচ্ছে।
কাতাদা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে এলাম এবং বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বললেনঃ এমন একটি পরিবার যাদের ইসলাম ও সততা সম্পর্কে খ্যাতি আছে তাদের তুমি ক্ষতি সাধনের ইচ্ছায় কোন প্রমাণ ছাড়াই চুরির অপবাদ দিচ্ছে!
আমি ফিরে চলে এলাম। আমি তখন পছন্দ করছিলাম যে, আমার কিছু সম্পদ যদি চলেও যেত তবু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সঙ্গে এই নিয়ে যদি আলাপ না করতাম! আমার চাচা রিফআ আমার কাছে এলেন এবং বললেনঃ হে ভাতিজা! (আমার বিষয়টির) কি করলে?
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে যা বলেছিলেন তা আমি তাকে জানালাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ই একমাত্র সাহায্য-প্রার্থনাস্থল। এরপর আর বেশীক্ষণ না যেতেই কুরআনের এই আয়াত নাযিল হলঃ
إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلاَ تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا
সত্যসহ আপনার কাছে কিতাব নাযিল করেছি যাতে আল্লাহ আপনাকে যা জ্ঞাত করিয়েছেন তদনুসারে আপনি লোকদের মাঝে ফয়সালা প্রদান করেন। খিয়ানতকারীদের (যেমন, বানু উবাইরিকের পক্ষে) তর্ক করবেন না।
কাতাদাকে যা বলেছেন তজ্জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করুন। আল্লাহ্ অবশ্যই অতিশয় ক্ষমাশীল। পরম দয়ালু।
যারা নিজেদের প্রতারিত করে তাদের পক্ষে তর্কবিতর্ক করবেন না। আল্লাহ্ তাআলা খিয়ানতকারী পাপীকে পছন্দ করেন না।
তারা লোকদের থেকে গোপন করতে চায় কিন্তু আল্লাহ্ থেকে গোপন করে না। অথচ রাত্রে যখন তারা তাঁর নিকট অপছন্দনীয় কথা নিয়ে আলোচনা করে তখনও তো তিনি তাদের সঙ্গেই আছেন ...... আল্লাহর বাণী - ’পরম দয়ালু’ পর্যন্ত।
অর্থাৎ এরা যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তবে তিনি তাদের ক্ষমা করে দিবেন।
কেউ কোন দোষ বা পাপ করে তা কোন নির্দোষ ব্যক্তির উপর আরোপ করে- যেমন লাবীদ সম্পর্কে তাদের বক্তব্য - সে তো মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।
আপনার প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকত তাদের একদল তো আপনাকে পথভ্রষ্ট করতে সংকল্প আঁটত। কিন্তু তারা নিজদের ব্যতীত আর কাউকে পথভ্রষ্ট করে না; আপনার কোনই ক্ষতি তারা করতে পারবে না। আল্লাহ্ আপনার প্রতি কিতাব ও হিকমত অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনি যা জানতেন না তা আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন। আপনার প্রতি রয়েছে আল্লাহর মহা অনুগ্রহ।
তাদের অনেক গোপন সলা-পরামর্শেই কোন কল্যাণ নেই। তবে যে দান- খয়রাত, সৎকার্য ও মানুষের মাঝে শান্তি স্থাপনের নির্দেশ দেয় তার পরামর্শে কল্যাণ আছে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি তালাশে তা করে তাকে দিব মহা পুরস্কার (৪ঃ ১০৫-১১৪)।
কুরআনের আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলু্ল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে অস্ত্র ফেরত নিয়ে আসা হয় এবং তিনি তা রিফাআকে দিয়ে দেন।
কাতাদা (রাযিঃ) বলেনঃ আমার চাচা ছিলেন একজন বৃদ্ধ লোক। জাহিলী যুগ তিনি অতিবাহিত করেছেন কিংবা তিনি বলেছেনঃ জাহিলী যুগেই তিনি অতিশয় বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। আমার ধারণা ছিল যে, তিনি ইসলামে প্রবিষ্ট ছিলেন। তাঁর কাছে যখন অস্ত্র ফেরত নিয়ে আসলাম তখন তিনি বললেনঃ হে ভ্রাতুষ্পুত্র! এটি আল্লাহর রাস্তায় দিয়ে দিলাম। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে, তিনি সঠিক ভাবেই ইসলামে দাখিল হয়েছেন।
কুরআনের এই আয়াতে নাযিল হওয়ার পর বুশায়র মুশরিকদের সাথে গিয়ে মিশে যায় এবং সুলাফা বিনতে সা’দ ইবনে সুমাইয়ার কাছে উঠে। তখন আল্লাহ্ তাআলা নাযিল করলেনঃ
وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا * إِنَّ اللَّهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيدًا
কারো নিকট সৎপথ সুস্পষ্ট হওয়ার পরও সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে এবং মু’মিনদের পথ ধরে তবে যে দিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব। আর তা কতই না মন্দ আবাস!
আল্লাহ্ তাঁর সঙ্গে শরীক করা ক্ষমা করেন না। তাছাড়া যার জন্য ইচ্ছা তিনি তার অন্য সব পাপ ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়। (৪ঃ ১১৫-১১৬)।
বুশায়র সুলাফার এখানে আশ্রয় নিলে হাসসান ইবনে ছাবিত (রাযিঃ) কিছু কবিতা-চরণের মাধ্যমে তাকে আক্রমণ করেন। তখন ঐ মহিলা বুশায়রের মাল-সমান মাথায় তুলে আবতাহে নিয়ে ফেলে দিল। পরে বললঃ হাসসানের কবিতা আমার জন্য হাদিয়া নিয়ে এলে, আমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে আসতে পারলে না?
হাদীসটি গারীব। মুহাম্মাদ ইবনে সালাম হাররানী ছাড়া আর কেউ এটি মুসনাদ রূপে রিওয়ায়াত করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। ইউনুস ইবনে বুকায়র প্রমুখ (রাহঃ) এই হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক-আসিম ইবনে উমর ইবনে কাতাদা (রাহঃ) সূত্রে মুরসাল রূপে বর্ণনা করেছেন। এতে তার পিতা উমর এবং তার পিতামহ কাতাদা-এর উল্লেখ নেই। কাতাদা ইবনে নু’মান (রাযিঃ) হলেন আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ)-এর মা শরীক ভাই। আবু সাঈদ (রাযিঃ)-এর নাম হল সা’দ ইবনে মালিক।
কাতাদা বলেনঃ জাহিলী ও ইসলামী যুগেও এই পরিবারটি ছিল অভাবগ্রস্থ এবং উপবাস তাড়িত। মদীনার লোকদের খাদ্য ছিল খেজুর ও যব। কেউ যদি স্বচ্ছল হত তবে শাম থেকে কোন খাদ্য ব্যবসায়ী ময়দা নিয়ে আসলে তা সে কিনে নিত এবং নিজের ব্যবহারের জন্য তা বিশেষ করে রেখে দিত। আর ঐ খেজুর ও যবই হত পরিবারের অন্যদের খাদ্য।
একবার শাম থেকে ব্যবসায়ী এল। আমার চাচা রিফাআ ইবনে যায়দ তার নিকট থেকে এক বোঝা ময়দা কিনেন এবং তা ভাঁড়ার ঘরে রেখে গেল। ঐ কুঠুরীতে অস্ত্রশস্ত্র, বর্ম, তরবারি ইত্যাদিও ছিল। কিন্তু কুঠুরিটির নীচ দিয়ে একদিন চুরি হয়ে গেল। ভাঁড়া ঘরের নীচ দিয়ে সিঁদ কেটে ও অস্ত্রশ্স্ত্র লোপাট হয়ে যায়। সকালে আমার চাচা রিফাআ আমার কাছে এলেন। বললেন, হে ভ্রাতুষ্পুত্র! আজ রাতে তো আমাদের উপর জুলম হয়ে গেল। আমাদের ভাঁড়ারের সিঁদ কেটে খাদ্য ও অস্ত্রশস্ত্র সব লোপাট করে ফেলেছে। মহল্লায় বিষয়টির খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং (বিভিন্ন জনকে) জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। আমাদেরকে বলা হয়েছে যে, আজ রাতে বনু উবাইরিকদের ঘরে বাতি জ্বালাতে দেখেছি। যতটুকু দেখেছি তাতে তোমাদের খাদ্যের সামনেই এদের দেখেছি।
বনু উবাইরিক বলছে, আল্লাহর কসম, লাবীদ ইবনে সাহলই তোমাদের ঐ চোর বলে আমাদের মনে হয়। অথচ আমরা মহল্লাবাসীদের এই বিষয়ে আগেই জিজ্ঞাসাবাদ করছি। আর লাবীদ হচ্ছেন আমাদের মাঝে অত্যন্ত নেক এবং আন্তরিকভাবে ইসলামের অধিকারী ব্যক্তি। লাবীদ এই কথা শুনে তলোয়ার কোষ মুক্ত করে এলেন, বললেনঃ আমি চুরি করেছি? আল্লাহর কসম হয়ত এই তরবারীর সঙ্গে তোমাদের মিলন ঘটবে নয়ত তোমরা এই চুরির সাক্ষ্য প্রমাণ পেশ করবে। লোকজনরা বললঃ ওহে ব্যাটা, সরে দাঁড়াও। তুমি আমাদের ঐ চোর নও। যা হোক, আমরা মহল্লায় আরো জিজ্ঞাসাবাদ করে নিঃসন্দেহ হলাম যে, এ বনু উবাইরিকেরই কান্ড। শেষে আমার চাচা আমাকে বললেনঃ হে ভ্রাতুষ্পুত্র! তুমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে গিয়ে বিষয়টা নিয়ে যদি আলোচনা করতে!
কাতাদা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে গেলাম। বললাম, আমাদের মহল্লায় একটা জালিম পরিবার আছে। আমার চাচা রিফাআ ইবনে যায়দ-এর ক্ষতি সাধনের ইচ্ছায় তার ভাঁড়ারে সিঁদ কেটে তার অস্ত্রশস্ত্র এবং খাদ্য সবই নিয়ে গেছে। আমাদের অস্ত্রশস্ত্রগুলো ফেরত নিয়ে দিন। আমাদের খাদ্যের দরকার নেই। নবী (ﷺ) বললেনঃ বিষয়টি নিয়ে আমি শিগগীরই পরামর্শ করব।
বনু উবাইরিক যখন এই কথা শুনল তখন তারা উসায়র ইবনে উরওয়া নামক তাদের এক ব্যক্তির কাছে এল এবং এই বিষয়ে তার সাথে আলোচনা করল এই বাড়ির কিছু লোক একত্রিত হয়ে রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -কে বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্! কাতাদা ইবনে নু’মান ও তার চাচা আমাদের একটি সৎ ও মুসলিম পরিবারের ক্ষতি-সাধনের ইচ্ছায় কোনরূপ সাক্ষী-প্রমাণ ছাড়াই তাদের উপর চুরির অপবাদ দিচ্ছে।
কাতাদা (রাযিঃ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে এলাম এবং বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বললাম। তিনি বললেনঃ এমন একটি পরিবার যাদের ইসলাম ও সততা সম্পর্কে খ্যাতি আছে তাদের তুমি ক্ষতি সাধনের ইচ্ছায় কোন প্রমাণ ছাড়াই চুরির অপবাদ দিচ্ছে!
আমি ফিরে চলে এলাম। আমি তখন পছন্দ করছিলাম যে, আমার কিছু সম্পদ যদি চলেও যেত তবু রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) -এর সঙ্গে এই নিয়ে যদি আলাপ না করতাম! আমার চাচা রিফআ আমার কাছে এলেন এবং বললেনঃ হে ভাতিজা! (আমার বিষয়টির) কি করলে?
রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) আমাকে যা বলেছিলেন তা আমি তাকে জানালাম। তিনি বললেনঃ আল্লাহ্ই একমাত্র সাহায্য-প্রার্থনাস্থল। এরপর আর বেশীক্ষণ না যেতেই কুরআনের এই আয়াত নাযিল হলঃ
إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلاَ تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا
সত্যসহ আপনার কাছে কিতাব নাযিল করেছি যাতে আল্লাহ আপনাকে যা জ্ঞাত করিয়েছেন তদনুসারে আপনি লোকদের মাঝে ফয়সালা প্রদান করেন। খিয়ানতকারীদের (যেমন, বানু উবাইরিকের পক্ষে) তর্ক করবেন না।
কাতাদাকে যা বলেছেন তজ্জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রর্থনা করুন। আল্লাহ্ অবশ্যই অতিশয় ক্ষমাশীল। পরম দয়ালু।
যারা নিজেদের প্রতারিত করে তাদের পক্ষে তর্কবিতর্ক করবেন না। আল্লাহ্ তাআলা খিয়ানতকারী পাপীকে পছন্দ করেন না।
তারা লোকদের থেকে গোপন করতে চায় কিন্তু আল্লাহ্ থেকে গোপন করে না। অথচ রাত্রে যখন তারা তাঁর নিকট অপছন্দনীয় কথা নিয়ে আলোচনা করে তখনও তো তিনি তাদের সঙ্গেই আছেন ...... আল্লাহর বাণী - ’পরম দয়ালু’ পর্যন্ত।
অর্থাৎ এরা যদি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায় তবে তিনি তাদের ক্ষমা করে দিবেন।
কেউ কোন দোষ বা পাপ করে তা কোন নির্দোষ ব্যক্তির উপর আরোপ করে- যেমন লাবীদ সম্পর্কে তাদের বক্তব্য - সে তো মিথ্যা অপবাদ ও স্পষ্ট পাপের বোঝা বহন করে।
আপনার প্রতি যদি আল্লাহর অনুগ্রহ ও দয়া না থাকত তাদের একদল তো আপনাকে পথভ্রষ্ট করতে সংকল্প আঁটত। কিন্তু তারা নিজদের ব্যতীত আর কাউকে পথভ্রষ্ট করে না; আপনার কোনই ক্ষতি তারা করতে পারবে না। আল্লাহ্ আপনার প্রতি কিতাব ও হিকমত অবতীর্ণ করেছেন এবং আপনি যা জানতেন না তা আপনাকে শিক্ষা দিয়েছেন। আপনার প্রতি রয়েছে আল্লাহর মহা অনুগ্রহ।
তাদের অনেক গোপন সলা-পরামর্শেই কোন কল্যাণ নেই। তবে যে দান- খয়রাত, সৎকার্য ও মানুষের মাঝে শান্তি স্থাপনের নির্দেশ দেয় তার পরামর্শে কল্যাণ আছে। যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি তালাশে তা করে তাকে দিব মহা পুরস্কার (৪ঃ ১০৫-১১৪)।
কুরআনের আয়াত নাযিল হওয়ার পর রাসূলু্ল্লাহ্ (ﷺ) এর কাছে অস্ত্র ফেরত নিয়ে আসা হয় এবং তিনি তা রিফাআকে দিয়ে দেন।
কাতাদা (রাযিঃ) বলেনঃ আমার চাচা ছিলেন একজন বৃদ্ধ লোক। জাহিলী যুগ তিনি অতিবাহিত করেছেন কিংবা তিনি বলেছেনঃ জাহিলী যুগেই তিনি অতিশয় বৃদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। আমার ধারণা ছিল যে, তিনি ইসলামে প্রবিষ্ট ছিলেন। তাঁর কাছে যখন অস্ত্র ফেরত নিয়ে আসলাম তখন তিনি বললেনঃ হে ভ্রাতুষ্পুত্র! এটি আল্লাহর রাস্তায় দিয়ে দিলাম। তখন আমি বুঝতে পারলাম যে, তিনি সঠিক ভাবেই ইসলামে দাখিল হয়েছেন।
কুরআনের এই আয়াতে নাযিল হওয়ার পর বুশায়র মুশরিকদের সাথে গিয়ে মিশে যায় এবং সুলাফা বিনতে সা’দ ইবনে সুমাইয়ার কাছে উঠে। তখন আল্লাহ্ তাআলা নাযিল করলেনঃ
وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا * إِنَّ اللَّهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيدًا
কারো নিকট সৎপথ সুস্পষ্ট হওয়ার পরও সে যদি রাসূলের বিরুদ্ধাচারণ করে এবং মু’মিনদের পথ ধরে তবে যে দিকে সে ফিরে যায় সে দিকেই তাকে ফিরিয়ে দিব এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করব। আর তা কতই না মন্দ আবাস!
আল্লাহ্ তাঁর সঙ্গে শরীক করা ক্ষমা করেন না। তাছাড়া যার জন্য ইচ্ছা তিনি তার অন্য সব পাপ ক্ষমা করেন। যে আল্লাহর সঙ্গে শরীক করে সে ভীষণভাবে পথভ্রষ্ট হয়। (৪ঃ ১১৫-১১৬)।
বুশায়র সুলাফার এখানে আশ্রয় নিলে হাসসান ইবনে ছাবিত (রাযিঃ) কিছু কবিতা-চরণের মাধ্যমে তাকে আক্রমণ করেন। তখন ঐ মহিলা বুশায়রের মাল-সমান মাথায় তুলে আবতাহে নিয়ে ফেলে দিল। পরে বললঃ হাসসানের কবিতা আমার জন্য হাদিয়া নিয়ে এলে, আমার জন্য ভাল কিছু নিয়ে আসতে পারলে না?
হাদীসটি গারীব। মুহাম্মাদ ইবনে সালাম হাররানী ছাড়া আর কেউ এটি মুসনাদ রূপে রিওয়ায়াত করেছেন বলে আমাদের জানা নেই। ইউনুস ইবনে বুকায়র প্রমুখ (রাহঃ) এই হাদীসটি মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক-আসিম ইবনে উমর ইবনে কাতাদা (রাহঃ) সূত্রে মুরসাল রূপে বর্ণনা করেছেন। এতে তার পিতা উমর এবং তার পিতামহ কাতাদা-এর উল্লেখ নেই। কাতাদা ইবনে নু’মান (রাযিঃ) হলেন আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ)-এর মা শরীক ভাই। আবু সাঈদ (রাযিঃ)-এর নাম হল সা’দ ইবনে মালিক।
بَابٌ: وَمِنْ سُورَةِ النِّسَاءِ
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ أَبِي شُعَيْبٍ أَبُو مُسْلِمٍ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، قَتَادَةَ بْنِ النُّعْمَانِ قَالَ كَانَ أَهْلُ بَيْتٍ مِنَّا يُقَالُ لَهُمْ بَنُو أُبَيْرِقٍ بِشْرٌ وَبَشِيرٌ وَمُبَشِّرٌ وَكَانَ بَشِيرٌ رَجُلاً مُنَافِقًا يَقُولُ الشِّعْرَ يَهْجُو بِهِ أَصْحَابَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ يَنْحَلُهُ بَعْضَ الْعَرَبِ ثُمَّ يَقُولُ قَالَ فُلاَنٌ كَذَا وَكَذَا قَالَ فُلاَنٌ كَذَا وَكَذَا فَإِذَا سَمِعَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَلِكَ الشِّعْرَ قَالُوا وَاللَّهِ مَا يَقُولُ هَذَا الشِّعْرَ إِلاَّ هَذَا الْخَبِيثُ أَوْ كَمَا قَالَ الرَّجُلُ وَقَالُوا ابْنُ الأُبَيْرِقِ قَالَهَا قَالَ وَكَانَ أَهْلُ بَيْتِ حَاجَةٍ وَفَاقَةٍ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَالإِسْلاَمِ وَكَانَ النَّاسُ إِنَّمَا طَعَامُهُمْ بِالْمَدِينَةِ التَّمْرُ وَالشَّعِيرُ وَكَانَ الرَّجُلُ إِذَا كَانَ لَهُ يَسَارٌ فَقَدِمَتْ ضَافِطَةٌ مِنَ الشَّامِ مِنَ الدَّرْمَكِ ابْتَاعَ الرَّجُلُ مِنْهَا فَخَصَّ بِهَا نَفْسَهُ وَأَمَّا الْعِيَالُ فَإِنَّمَا طَعَامُهُمُ التَّمْرُ وَالشَّعِيرُ فَقَدِمَتْ ضَافِطَةٌ مِنَ الشَّامِ فَابْتَاعَ عَمِّي رِفَاعَةُ بْنُ زَيْدٍ حِمْلاً مِنَ الدَّرْمَكِ فَجَعَلَهُ فِي مَشْرَبَةٍ لَهُ وَفِي الْمَشْرَبَةِ سِلاَحٌ وَدِرْعٌ وَسَيْفٌ فَعُدِيَ عَلَيْهِ مِنْ تَحْتِ الْبَيْتِ فَنُقِبَتِ الْمَشْرَبَةُ وَأُخِذَ الطَّعَامُ وَالسِّلاَحُ فَلَمَّا أَصْبَحَ أَتَانِي عَمِّي رِفَاعَةُ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي إِنَّهُ قَدْ عُدِيَ عَلَيْنَا فِي لَيْلَتِنَا هَذِهِ فَنُقِبَتْ مَشْرَبَتُنَا فَذُهِبَ بِطَعَامِنَا وَسِلاَحِنَا . قَالَ فَتَحَسَّسْنَا فِي الدَّارِ وَسَأَلْنَا فَقِيلَ لَنَا قَدْ رَأَيْنَا بَنِي أُبَيْرِقٍ اسْتَوْقَدُوا فِي هَذِهِ اللَّيْلَةِ وَلاَ نُرَى فِيمَا نُرَى إِلاَّ عَلَى بَعْضِ طَعَامِكُمْ . قَالَ وَكَانَ بَنُو أُبَيْرِقٍ قَالُوا وَنَحْنُ نَسْأَلُ فِي الدَّارِ وَاللَّهِ مَا نُرَى صَاحِبَكُمْ إِلاَّ لَبِيدَ بْنَ سَهْلٍ رَجُلٌ مِنَّا لَهُ صَلاَحٌ وَإِسْلاَمٌ فَلَمَّا سَمِعَ لَبِيدٌ اخْتَرَطَ سَيْفَهُ وَقَالَ أَنَا أَسْرِقُ فَوَاللَّهِ لَيُخَالِطَنَّكُمْ هَذَا السَّيْفُ أَوْ لَتُبَيِّنُنَّ هَذِهِ السَّرِقَةَ . قَالُوا إِلَيْكَ عَنْهَا أَيُّهَا الرَّجُلُ فَمَا أَنْتَ بِصَاحِبِهَا . فَسَأَلْنَا فِي الدَّارِ حَتَّى لَمْ نَشُكَّ أَنَّهُمْ أَصْحَابُهَا فَقَالَ لِي عَمِّي يَا ابْنَ أَخِي لَوْ أَتَيْتَ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَذَكَرْتَ ذَلِكَ لَهُ . قَالَ قَتَادَةُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقُلْتُ إِنَّ أَهْلَ بَيْتٍ مِنَّا أَهْلَ جَفَاءٍ عَمَدُوا إِلَى عَمِّي رِفَاعَةَ بْنِ زَيْدٍ فَنَقَبُوا مَشْرَبَةً لَهُ وَأَخَذُوا سِلاَحَهُ وَطَعَامَهُ فَلْيَرُدُّوا عَلَيْنَا سِلاَحَنَا فَأَمَّا الطَّعَامُ فَلاَ حَاجَةَ لَنَا فِيهِ . فَقَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " سَآمُرُ فِي ذَلِكَ " . فَلَمَّا سَمِعَ بَنُو أُبَيْرِقٍ أَتَوْا رَجُلاً مِنْهُمْ يُقَالُ لَهُ أَسِيرُ بْنُ عُرْوَةَ فَكَلَّمُوهُ فِي ذَلِكَ فَاجْتَمَعَ فِي ذَلِكَ نَاسٌ مِنْ أَهْلِ الدَّارِ فَقَالُوا يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّ قَتَادَةَ بْنَ النُّعْمَانِ وَعَمَّهُ عَمَدَا إِلَى أَهْلِ بَيْتٍ مِنَّا أَهْلِ إِسْلاَمٍ وَصَلاَحٍ يَرْمُونَهُمْ بِالسَّرِقَةِ مِنْ غَيْرِ بَيِّنَةٍ وَلاَ ثَبْتٍ . قَالَ قَتَادَةُ فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَكَلَّمْتُهُ فَقَالَ " عَمَدْتَ إِلَى أَهْلِ بَيْتٍ ذُكِرَ مِنْهُمْ إِسْلاَمٌ وَصَلاَحٌ تَرْمِيهِمْ بِالسَّرِقَةِ عَلَى غَيْرِ ثَبْتٍ وَلاَ بَيِّنَةٍ " . قَالَ فَرَجَعْتُ وَلَوَدِدْتُ أَنِّي خَرَجْتُ مِنْ بَعْضِ مَالِي وَلَمْ أُكَلِّمْ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي ذَلِكَ فَأَتَانِي عَمِّي رِفَاعَةُ فَقَالَ يَا ابْنَ أَخِي مَا صَنَعْتَ فَأَخْبَرْتُهُ بِمَا قَالَ لِي رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ اللَّهُ الْمُسْتَعَانُ فَلَمْ يَلْبَثْ أَنْ نَزَلَ الْقُرْآنُ : ( إِنَّا أَنْزَلْنَا إِلَيْكَ الْكِتَابَ بِالْحَقِّ لِتَحْكُمَ بَيْنَ النَّاسِ بِمَا أَرَاكَ اللَّهُ وَلاَ تَكُنْ لِلْخَائِنِينَ خَصِيمًا ) بَنِي أُبَيْرِقٍ : ( وَاسْتَغْفِرِ اللَّهَ ) أَىْ مِمَّا قُلْتَ لِقَتَادَةَ : ( إِنَّ اللَّهَ كَانَ غَفُورًا رَحِيمًا * وَلاَ تُجَادِلْ عَنِ الَّذِينَ يَخْتَانُونَ أَنْفُسَهُمْ إِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ مَنْ كَانَ خَوَّانًا أَثِيمًا * يَسْتَخْفُونَ مِنَ النَّاسِ وَلاَ يَسْتَخْفُونَ مِنَ اللَّهِ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( غَفُورًا رَحِيمًا ) أَىْ لَوِ اسْتَغْفَرُوا اللَّهَ لَغَفَرَ لَهُمْ : ( وَمَنْ يَكْسِبْ إِثْمًا فَإِنَّمَا يَكْسِبُهُ عَلَى نَفْسِهِ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( إِثْمًا مُبِينًا ) قَوْلُهُمْ لِلَبِيدٍ : وَلَوْلاَ فَضْلُ اللَّهِ عَلَيْكَ وَرَحْمَتُهُ ) إِلَى قَوْلِهِ : ( فَسَوْفَ نُؤْتِيهِ أَجْرًا عَظِيمًا ) فَلَمَّا نَزَلَ الْقُرْآنُ أُتِيَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم بِالسِّلاَحِ فَرَدَّهُ إِلَى رِفَاعَةَ فَقَالَ قَتَادَةُ لَمَّا أَتَيْتُ عَمِّي بِالسِّلاَحِ وَكَانَ شَيْخًا قَدْ عَسِيَ أَوْ عَشِيَ فِي الْجَاهِلِيَّةِ وَكُنْتُ أُرَى إِسْلاَمَهُ مَدْخُولاً فَلَمَّا أَتَيْتُهُ بِالسِّلاَحِ قَالَ يَا ابْنَ أَخِي هُوَ فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَعَرَفْتُ أَنَّ إِسْلاَمَهُ كَانَ صَحِيحًا فَلَمَّا نَزَلَ الْقُرْآنُ لَحِقَ بَشِيرٌ بِالْمُشْرِكِينَ فَنَزَلَ عَلَى سُلاَفَةَ بِنْتِ سَعْدِ ابْنِ سُمَيَّةَ فَأَنْزَلَ اللَّهُ : ( وَمَنْ يُشَاقِقِ الرَّسُولَ مِنْ بَعْدِ مَا تَبَيَّنَ لَهُ الْهُدَى وَيَتَّبِعْ غَيْرَ سَبِيلِ الْمُؤْمِنِينَ نُوَلِّهِ مَا تَوَلَّى وَنُصْلِهِ جَهَنَّمَ وَسَاءَتْ مَصِيرًا * إِنَّ اللَّهَ لاَ يَغْفِرُ أَنْ يُشْرَكَ بِهِ وَيَغْفِرُ مَا دُونَ ذَلِكَ لِمَنْ يَشَاءُ وَمَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ ضَلَّ ضَلاَلاً بَعِيدًا ) فَلَمَّا نَزَلَ عَلَى سُلاَفَةَ رَمَاهَا حَسَّانُ بْنُ ثَابِتٍ بِأَبْيَاتٍ مِنْ شِعْرِهِ فَأَخَذَتْ رَحْلَهُ فَوَضَعَتْهُ عَلَى رَأْسِهَا ثُمَّ خَرَجَتْ بِهِ فَرَمَتْ بِهِ فِي الأَبْطَحِ ثُمَّ قَالَتْ أَهْدَيْتَ لِي شِعْرَ حَسَّانَ مَا كُنْتَ تَأْتِينِي بِخَيْرٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ غَرِيبٌ لاَ نَعْلَمُ أَحَدًا أَسْنَدَهُ غَيْرَ مُحَمَّدِ بْنِ سَلَمَةَ الْحَرَّانِيِّ . وَرَوَى يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ وَغَيْرُ وَاحِدٍ هَذَا الْحَدِيثَ عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ عَنْ عَاصِمِ بْنِ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ مُرْسَلٌ لَمْ يَذْكُرُوا فِيهِ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ وَقَتَادَةُ بْنُ النُّعْمَانِ هُوَ أَخُو أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ لأُمِّهِ وَأَبُو سَعِيدٍ الْخُدْرِيُّ اسْمُهُ سَعْدُ بْنُ مَالِكِ بْنِ سِنَانٍ .


বর্ণনাকারী: