আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

৪৮- নবীগণের আঃ আলোচনা

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ৩৩৪৩
২০০৫. (মহান আল্লাহর বাণীঃ) আর আমি আদ জাতির নিকট তাদেরই ভাই হুদকে পাঠিয়েছিলাম .... (সূরা হুদঃ ৫০) এবং আল্লাহর বাণীঃ আর স্মরণ কর (হুদের কথা) যখন তিনি আহকাফ অঞ্চলে নিজ জাতিকে সতর্ক করেছিলেন .... এভাবে আমি অপরাধী সম্প্রদায়কে প্রতিফল দিয়ে থাকি। (সূরা আহকাফঃ ২১-২৫) এ প্রসঙ্গে আতা ও সুলাইমান (রাহঃ) আয়িশা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে হাদীস বর্ণিত আছে। আরো মহান আল্লাহর বাণীঃ আদ জাতিকে ধ্বংস করা হয়েছে একটি প্রচণ্ড ঝাঞ্জা বায়ুর দ্বারা। ইবনে উয়াইনা (রাহঃ) বলেন, প্রবাহিত করেছিলেন তিনি যা নিয়ন্ত্রনকারীর নিয়ন্ত্রন থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল বিরামহীনভাবে সাত রাত ও আট দিন পর্যন্ত। (সেখানে তুমি থাকলে) দেখতে পেতে যে, তারা সেখানে লুটিয়ে পড়ে আছে সারশূন্য বিক্ষিপ্ত খেজুর গাছের কাণ্ডের ন্যায়। এরপর তাদের কাউকে তুমি বিদ্যমান দেখতে পাও কি? (সূরা হাককাঃ ৫-৮)
৩১০৭। মুহাম্মাদ ইবনে ‘আর‘আরা (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, আমাকে ভোরের বায়ু (পুবালী বাতাস) দ্বারা সাহায্য করা হয়েছে, আর আদ জাতিকে দাবুর বা পশ্চিমের (এক প্রকার মারাত্মক) বায়ু দ্বারা ধংস করা হয়েছে।
ইবনে কাসীর (রাহঃ) আবু সাইদ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, আলী (রাযিঃ) নবী (ﷺ)- এর নিকট কিছু স্বর্ণের টুকরো পাঠালেন। তিনি তা চার ব্যক্তির মাঝে বন্টন করে দিলেন। (১) আল-আকরা ইবনে হাবেস হানযালী যিনি মাজাশেয়ী গোত্রের ছিলেন (২) উআইনা ইবনে বদর ফাযারী (৩) যায়দ ত্বায়ী, যিনি বনী নাবহান গোত্রের ছিলেন (৪) আলকামা ইবনে উলাসা আমেরী, যিনি বনী কিলাব গোত্রের ছিলেন। এতে কুরাইশ ও আনসারগণ অসন্তুষ্ট হলেন এবং বলতে লাগলেন, নবী (ﷺ) নাজাদবাসী নেতৃবৃন্দকে দিচ্ছেন আর আমাদেরকে দিচ্ছেন না। নবী (ﷺ) বললেন, আমি তো তাদেরকে (ইসলামের দিকে) আকৃষ্ট করার জন্য মনোরঞ্জন করছি। তখন এক ব্যক্তি সামনে এগিয়ে আসল, যার চোখ দু’টি কোটরাগত, গণ্ডুদ্বয় জুলে পড়া; কপাল উঁচু, ঘন দাঁড়ি এবং মাথা মোড়ানো ছিল। সে বলল, হে মুহাম্মাদ! আল্লাহকে ভয় করুন। তখন তিনি বললেন, আমিই যদি নাফরমানী করি তাহলে আল্লাহর আনুগত্য করবে কে?
আল্লাহ আমাকে পৃথিবীবাসীর উপর আমানতদার বানিয়েছেন, আর তোমরা আমাকে আমানতদার মনে করছ না। তখন এক ব্যক্তি তাঁর কাছে তাকে হত্যা করার অনুমতি চাইল। (আবু সাঈদ (রাযিঃ) বলেন) আমি তাকে খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রাযিঃ) বলে ধারণা করছি। কিন্তু নবী (ﷺ) তাকে নিষেধ করলেন। তারপর অভিযোগকারী লোকটি যখন ফিরে গেল, তখন নবী (ﷺ) বললেন। এ ব্যক্তির বংশ হতে বা এ ব্যক্তির পরে এমন কিছু সংখ্যক লোক হবে তারা কুরআন পরবে কিন্তু তা তাদের কণ্ঠনালী অতিক্রম করবে না। দ্বীন থেকে তারা এমনভাবে বেরিয়ে পড়বে যেমনি ধনুক থেকে তীর বেরিয়ে যায়। তারা ইসলামের অনুসারীদেরকে (মুসলিমদেরকে) হত্যা করবে, আর মূর্তি পূজারীদেরকে হত্যা করা থেকে মুক্তি দেবে। আমি যদি তাদের নাগাল পেতাম তবে তাদেরকে আদ জাতির মত অবশ্যই হত্যা করতাম।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন