আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
১০. জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
হাদীস নং: ১০৩৬
আন্তর্জাতিক নং: ১০৩৬
শহীদের জন্য সালাতুল জানাযা ত্যাগ করা।
১০৩৬. কুতায়বা ইবনে সাঈদ (রাহঃ) ...... জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) বলেন, নবী (ﷺ) উহুদ যুদ্ধে নিহতদের দুইজন দুইজন করে একই কাপড়ে কাফন দিয়েছিলেন। পরে বললেন, এদের দুজনের মধ্যে কে কুরআন অধিক হিফজ করেছে? তখন তাদের যার দিকে ইশারা করা হচ্ছিল তাকে তিনি লাহদে* আগে রাখছিলেন। এরপর তিনি বললেন, কিয়ামতের দিন আমি এদের জন্য সাক্ষী হব। এরপর তিনি তাদের রক্ত সহই দাফন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাদের জন্য সালাতুল জানাযাও আদায় করা হয় নাই এবং তাদেরকে গোসলও দেওয়া হয় নাই। - ইবনে মাজাহ
এই বিষয়ে আনাস ইবনে মালিক (রাহঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ইসা (রাযিঃ) বলেন, জাবির (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। হাদীসটি যুহরী- আনাস (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকেও বর্ণিত আছে। আবার যুহরী - আব্দুল্লাহ ইবনে ছা’লাবা ইবনে আবু সুআয়র সূত্রে নবী (ﷺ) থেকেও বর্ণিত হয়েছে। তাদের কেউ কেউ জাবির (রাযিঃ) এর সূত্রেরও উল্লেখ করেছেন। শহীদের সালাতুল জানাযা সম্পর্কে আলিমদের মতবিরোধ রয়েছে। কতক আলিম বলেন, শহীদের জন্য সালাতুল জানাযা আদায় করতে হয় না। এ হলো মদীনাবাসী ফকীহগণের অভিমত। ইমাম শফিঈ ও আহমাদ (রাহঃ)-এর বক্তব্যও এ-ই। কোন কোন আলিম বলেন, শহীদের জন্য সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে। নবী (ﷺ) হামযা (রাযিঃ) এর সালাতুল জানাযা আদায় করেছিলেন বলে যে হাদীসটি আছে সেটিকে তারা দলীল হিসাবে পেশ করেন। এ হলো ইমাম ছাওরী ও কূফাবাসী ফকীহগণের অভিমত। ইমাম ইসহাক (রাহঃ) এর বক্তব্য এ-ই।
*আরবে কবরের ভিতর একপার্শ্বে গর্ত করে তাতে মৃত ব্যক্তির লাশ রাখার নিয়ম রয়েছে। শক্ত ভূমিতে তা সম্ভব। এটিকে লাহদ বলা হয়।
এই বিষয়ে আনাস ইবনে মালিক (রাহঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে। ইমাম আবু ইসা (রাযিঃ) বলেন, জাবির (রাযিঃ) বর্ণিত হাদীসটি হাসান-সহীহ। হাদীসটি যুহরী- আনাস (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকেও বর্ণিত আছে। আবার যুহরী - আব্দুল্লাহ ইবনে ছা’লাবা ইবনে আবু সুআয়র সূত্রে নবী (ﷺ) থেকেও বর্ণিত হয়েছে। তাদের কেউ কেউ জাবির (রাযিঃ) এর সূত্রেরও উল্লেখ করেছেন। শহীদের সালাতুল জানাযা সম্পর্কে আলিমদের মতবিরোধ রয়েছে। কতক আলিম বলেন, শহীদের জন্য সালাতুল জানাযা আদায় করতে হয় না। এ হলো মদীনাবাসী ফকীহগণের অভিমত। ইমাম শফিঈ ও আহমাদ (রাহঃ)-এর বক্তব্যও এ-ই। কোন কোন আলিম বলেন, শহীদের জন্য সালাতুল জানাযা আদায় করা হবে। নবী (ﷺ) হামযা (রাযিঃ) এর সালাতুল জানাযা আদায় করেছিলেন বলে যে হাদীসটি আছে সেটিকে তারা দলীল হিসাবে পেশ করেন। এ হলো ইমাম ছাওরী ও কূফাবাসী ফকীহগণের অভিমত। ইমাম ইসহাক (রাহঃ) এর বক্তব্য এ-ই।
*আরবে কবরের ভিতর একপার্শ্বে গর্ত করে তাতে মৃত ব্যক্তির লাশ রাখার নিয়ম রয়েছে। শক্ত ভূমিতে তা সম্ভব। এটিকে লাহদ বলা হয়।
باب مَا جَاءَ فِي تَرْكِ الصَّلاَةِ عَلَى الشَّهِيدِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا اللَّيْثُ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، أَنَّ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللَّهِ، أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَجْمَعُ بَيْنَ الرَّجُلَيْنِ مِنْ قَتْلَى أُحُدٍ فِي الثَّوْبِ الْوَاحِدِ ثُمَّ يَقُولُ " أَيُّهُمَا أَكْثَرُ أَخْذًا لِلْقُرْآنِ " . فَإِذَا أُشِيرَ لَهُ إِلَى أَحَدِهِمَا قَدَّمَهُ فِي اللَّحْدِ وَقَالَ " أَنَا شَهِيدٌ عَلَى هَؤُلاَءِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ " . وَأَمَرَ بِدَفْنِهِمْ فِي دِمَائِهِمْ وَلَمْ يُصَلِّ عَلَيْهِمْ وَلَمْ يُغَسَّلُوا . قَالَ وَفِي الْبَابِ عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ . قَالَ أَبُو عِيسَى حَدِيثُ جَابِرٍ حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَقَدْ رُوِيَ هَذَا الْحَدِيثُ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ أَنَسٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَرُوِيَ عَنِ الزُّهْرِيِّ عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ ثَعْلَبَةَ بْنِ أَبِي صُعَيْرٍ عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . وَمِنْهُمْ مَنْ ذَكَرَهُ عَنْ جَابِرٍ . وَقَدِ اخْتَلَفَ أَهْلُ الْعِلْمِ فِي الصَّلاَةِ عَلَى الشَّهِيدِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ يُصَلَّى عَلَى الشَّهِيدِ . وَهُوَ قَوْلُ أَهْلِ الْمَدِينَةِ وَبِهِ يَقُولُ الشَّافِعِيُّ وَأَحْمَدُ . وَقَالَ بَعْضُهُمْ يُصَلَّى عَلَى الشَّهِيدِ . وَاحْتَجُّوا بِحَدِيثِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ صَلَّى عَلَى حَمْزَةَ . وَهُوَ قَوْلُ الثَّوْرِيِّ وَأَهْلِ الْكُوفَةِ وَبِهِ يَقُولُ إِسْحَاقُ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে উহুদ যুদ্ধে যারা শহীদ হয়েছিলেন তাদের দাফনকার্য সম্পর্কিত একটি বিশেষ তথ্য দেওয়া হয়েছে। উহুদের যুদ্ধ হয়েছিল হিজরী ৪র্থ সনে। এতে ৭০ জন সাহাবী শাহাদাত বরণ করেন। মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন অনেকেই। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও ভীষণভাবে আহত হন। যখন দাফন-কাফনের পালা আসে, তখন সাহাবায়ে কেরামকে যে কঠোর-কঠিন সংকটের সম্মুখীন হতে হয়েছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তারা ছিলেন নেহায়েত গরীব। সকল শহীদের পূর্ণাঙ্গ কাফনের ব্যবস্থা করা সম্ভব হচ্ছিল না। সকলেই ছিলেন আহত ও ক্ষত-বিক্ষত। এতগুলো কবর তাদের পক্ষে কিভাবে খনন করা সম্ভব? আনসারগণ এসে আরয করেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা তো ক্ষত-বিক্ষত, সংকটাপন্ন। তিনি বললেন, তোমরা একটু প্রশস্ত গর্ত কর এবং প্রতি কবরে দুই-তিনজন করে দাফন কর। তা-ই করা হয়েছিল। এমনকি একই কবরে পুরুষ ও নারীকেও স্থান দেওয়া হয়েছিল। মাঝখানে মাটি দিয়ে আড়াল করা হয়েছিল। একেকজনের কাফন এতই ছোট ছিল যে,মাথা ঢাকলে পা ঢাকে না, পা ঢাকলে মাথা ঢাকে না। অগত্যা মাথা ঢেকে পায়ের উপর ঘাস ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল।
যাহোক যখন দু-দু'জনকে একেক কবরে দাফন করা হচ্ছিল, তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে জেনে নিচ্ছিলেন যে, তাদের মধ্যে কুরআন বেশি কে জানে। যার দিকে ইশারা করা হত যে সে বেশি জানে, তাকে কেবলার দিকে সামনে রাখা হতো। অপরজনকে রাখা হত তার পেছনে। অর্থাৎ এ অগ্রগণ্যতা বয়স বা অন্য কোনও বিচারে বিবেচনা করা হত না; তা বিবেচনা করা হত কুরআন কম-বেশি জানার ভিত্তিতে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রয়োজনে একাধিক ব্যক্তিকে এক কবরে দাফন করা যেতে পারে।
খ. কুরআন যে বেশি জানে তার মর্যাদাও বেশি। এমনকি দাফনের ক্ষেত্রেও সে মর্যাদা বিবেচনাযোগ্য।
যাহোক যখন দু-দু'জনকে একেক কবরে দাফন করা হচ্ছিল, তখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম প্রথমে জেনে নিচ্ছিলেন যে, তাদের মধ্যে কুরআন বেশি কে জানে। যার দিকে ইশারা করা হত যে সে বেশি জানে, তাকে কেবলার দিকে সামনে রাখা হতো। অপরজনকে রাখা হত তার পেছনে। অর্থাৎ এ অগ্রগণ্যতা বয়স বা অন্য কোনও বিচারে বিবেচনা করা হত না; তা বিবেচনা করা হত কুরআন কম-বেশি জানার ভিত্তিতে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. প্রয়োজনে একাধিক ব্যক্তিকে এক কবরে দাফন করা যেতে পারে।
খ. কুরআন যে বেশি জানে তার মর্যাদাও বেশি। এমনকি দাফনের ক্ষেত্রেও সে মর্যাদা বিবেচনাযোগ্য।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
