আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ
১০. জানাযা-কাফন-দাফনের অধ্যায়
হাদীস নং: ৯৬৯
আন্তর্জাতিক নং: ৯৬৯
রোগীর খোঁজ-খবর নেয়া।
৯৭২. আহমাদ ইবনে মানী (রাহঃ) ....... ছুওয়ার তৎপিতা আবু ফাখেতা (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আলী (রাযিঃ) আমার হাত ধরে বললেন, আমার সঙ্গে চল, হুসাইন অসুস্থ, তাকে দেখে আসি। আমরা গিয়ে তাঁর কাছে আবু মুসা (রাযিঃ)-কেও পেলাম, আলী (রাযিঃ) বললেন, আবু মুসা, রোগী-দর্শনের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন না এমনি বেড়াতে এসেছেন? তিনি বললেন, না, রোগী দেখার নিয়তে এসেছি। আলী (রাযিঃ) বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কে বলতে শুনেছি, কোন মুসলিম যদি কোন মুসলিম রোগীকে দেখতে যায় তবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার জন্য সত্তর হাজার ফিরিশতা দুআ করেন। আর যদি সন্ধ্যার সময় কোন মুসলিম রোগীকে দেখতে যায় তবে তার জন্য ভোর পর্যন্ত সত্তর হাজার ফিরিশতা দুআ করেন। আর তার জন্য জান্নাতে একটি ফলের বাগান হবে।
ইমাম আবু ঈসা (রাযিঃ) বলেন, এই হাদীসটি গারীব ও হাসান। আলী (রাযিঃ) থেকে একাধিক সূত্রে এটি বর্ণিত আছে। এর মধ্যে কেউ কেউ তো এটিকে মারফু না করে মাউকুফরূপে বর্ণনা করেছেন। রাবী আবু ফাখেতা-এর নাম হলো সাঈদ ইবনে ইলাকা।
ইমাম আবু ঈসা (রাযিঃ) বলেন, এই হাদীসটি গারীব ও হাসান। আলী (রাযিঃ) থেকে একাধিক সূত্রে এটি বর্ণিত আছে। এর মধ্যে কেউ কেউ তো এটিকে মারফু না করে মাউকুফরূপে বর্ণনা করেছেন। রাবী আবু ফাখেতা-এর নাম হলো সাঈদ ইবনে ইলাকা।
باب مَا جَاءَ فِي عِيَادَةِ الْمَرِيضِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مَنِيعٍ، حَدَّثَنَا الْحُسَيْنُ بْنُ مُحَمَّدٍ، حَدَّثَنَا إِسْرَائِيلُ، عَنْ ثُوَيْرٍ، هُوَ ابْنُ أَبِي فَاخِتَةَ عَنْ أَبِيهِ، قَالَ أَخَذَ عَلِيٌّ بِيَدِي قَالَ انْطَلِقْ بِنَا إِلَى الْحَسَنِ نَعُودُهُ . فَوَجَدْنَا عِنْدَهُ أَبَا مُوسَى فَقَالَ عَلِيٌّ عَلَيْهِ السَّلاَمُ أَعَائِدًا جِئْتَ يَا أَبَا مُوسَى أَمْ زَائِرًا فَقَالَ لاَ بَلْ عَائِدًا . فَقَالَ عَلِيٌّ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " مَا مِنْ مُسْلِمٍ يَعُودُ مُسْلِمًا غُدْوَةً إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُمْسِيَ وَإِنْ عَادَهُ عَشِيَّةً إِلاَّ صَلَّى عَلَيْهِ سَبْعُونَ أَلْفَ مَلَكٍ حَتَّى يُصْبِحَ وَكَانَ لَهُ خَرِيفٌ فِي الْجَنَّةِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ وَقَدْ رُوِيَ عَنْ عَلِيٍّ هَذَا الْحَدِيثُ مِنْ غَيْرِ وَجْهٍ مِنْهُمْ مَنْ وَقَفَهُ وَلَمْ يَرْفَعْهُ . وَأَبُو فَاخِتَةَ اسْمُهُ سَعِيدُ بْنُ عِلاَقَةَ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে রোগী দেখতে যাওয়ার বিশাল ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। হাদীছটি বর্ণনা করেছেন হযরত আলী রাযি.। বর্ণনাটির একটি প্রেক্ষাপট আছে। একবার নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নাতি হযরত হাসান রাযি. অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। খবর পেয়ে হযরত আবূ মূসা আশ'আরী রাযি. তাঁকে দেখতে গেলেন। হযরত আলী রাযি. তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি রোগী দেখতে এসেছেন, না আমার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে? তিনি বললেন, না, বরং রোগী দেখতে। তখন হযরত আলী রাযি. তাঁকে এ হাদীছটি শুনিয়ে দেন।
হাদীছটিতে রোগী দেখতে যাওয়ার দু'টি ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। তার একটি হল সত্তর হাজার ফিরিশতার দু'আ পাওয়া। যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনও রোগীকে দেখতে যায়, তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফিরিশতা দু'আ করতে থাকে। আর সন্ধ্যাবেলা দেখতে গেলে সকালবেলা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফিরিশতা তার জন্য দু'আ করতে থাকে।
কোনও কোনও বর্ণনায় আরও আছে যে, ফিরিশতাগণ আল্লাহর কাছে তার গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। নিশ্চয়ই মা'সুম ফিরিশতাদের দু'আ বৃথা যায় না। কাজেই যারা রোগী দেখতে যায়, যথেষ্ট আশা রয়েছে আল্লাহ পাপরাশিও ক্ষমা করে দেবেন।
এতসংখ্যক ফিরিশতাদের দু'আ করতে থাকায় আশ্চর্যের কিছু নেই। দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষও যদি সকাল-বিকাল রোগী দেখতে বের হয়, তবে আল্লাহর এতসংখ্যক ফিরিশতা আছে যে, তাদের প্রত্যেকের জন্যই সত্তর হাজার ফিরিশতা দু'আ করতে পারবে। তাতে ফিরিশতাদের সংখ্যায় কোনও টান পড়বে না। আল্লাহ তা'আলা বলেন-
وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ
'তোমার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে (অর্থাৎ তাদের সংখ্যা যে কত তা) তিনি ছাড়া কেউ জানে না’। (সূরা মুদ্দাচ্ছির, আয়াত ৩১)
বলাবাহুল্য, ফিরিশতাদের দু'আ পেতে পারে কেবল তারাই, যারা ঈমানদার এবং যারা কেবল আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্যই রোগী দেখতে যায়। ইখলাস ও সহীহ নিয়ত যে-কোনও নেক আমলের জন্যই জরুরি।
রোগী দেখতে যাওয়ার দ্বিতীয় ফযীলত হল জান্নাতের ফল লাভ করা। অর্থাৎ রোগী দেখতে যাওয়ার পুরস্কারে আল্লাহ তা'আলা জান্নাতের অকল্পনীয় স্বাদের ফল খাওয়াবেন। জান্নাতের ফল খাওয়া যাবে জান্নাতে গেলেই। কাজেই এটা কেবল ফল খেতে পারার সুসংবাদই নয়; বরং জান্নাত পাওয়ারও সুসংবাদ। আল্লাহু আকবার! অতি সহজ ও সামান্য কাজের বিনিময়েও মহা মেহেরবান আল্লাহ কী বিশাল পুরস্কারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কিন্তু মানুষ কতইনা গাফেল। এত বড় ফযীলতের এ আমলটি ক'জন মানুষই বা করে? অতি কাছে বা অতি আপনজন দিনের পর দিন রোগশয্যায় শায়িত থাকে। তা সত্ত্বেও তাকে দেখতে যাওয়ার ফুরসত হয় না! হয় না ইচ্ছাও। আল্লাহ তা'আলা এ গাফলাত থেকে জেগে ওঠার তাওফীক আমাদেরকে দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. রোগী দেখতে গেলে ফিরিশতাদের দু'আ পাওয়া যায়।
খ. রোগী দেখতে যাওয়ার দ্বারা গুনাহ মাফেরও আশা থাকে।
গ. আল্লাহ তা'আলার ফিরিশতাসংখ্যা অগণিত। বিভিন্ন কাজের জন্য তাদের নিযুক্ত রাখা হয়েছে। একেক কাজের জন্য অসংখ্য ফিরিশতা।
ঘ. রোগী দেখতে যাওয়ার দ্বারা জান্নাতলাভ সহজ হবে এবং জান্নাতের ফল ভোগ করা যাবে।
হাদীছটিতে রোগী দেখতে যাওয়ার দু'টি ফযীলত বর্ণিত হয়েছে। তার একটি হল সত্তর হাজার ফিরিশতার দু'আ পাওয়া। যে ব্যক্তি সকালবেলা কোনও রোগীকে দেখতে যায়, তার জন্য সন্ধ্যা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফিরিশতা দু'আ করতে থাকে। আর সন্ধ্যাবেলা দেখতে গেলে সকালবেলা পর্যন্ত সত্তর হাজার ফিরিশতা তার জন্য দু'আ করতে থাকে।
কোনও কোনও বর্ণনায় আরও আছে যে, ফিরিশতাগণ আল্লাহর কাছে তার গুনাহের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকে। নিশ্চয়ই মা'সুম ফিরিশতাদের দু'আ বৃথা যায় না। কাজেই যারা রোগী দেখতে যায়, যথেষ্ট আশা রয়েছে আল্লাহ পাপরাশিও ক্ষমা করে দেবেন।
এতসংখ্যক ফিরিশতাদের দু'আ করতে থাকায় আশ্চর্যের কিছু নেই। দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষও যদি সকাল-বিকাল রোগী দেখতে বের হয়, তবে আল্লাহর এতসংখ্যক ফিরিশতা আছে যে, তাদের প্রত্যেকের জন্যই সত্তর হাজার ফিরিশতা দু'আ করতে পারবে। তাতে ফিরিশতাদের সংখ্যায় কোনও টান পড়বে না। আল্লাহ তা'আলা বলেন-
وَمَا يَعْلَمُ جُنُودَ رَبِّكَ إِلَّا هُوَ
'তোমার প্রতিপালকের বাহিনী সম্পর্কে (অর্থাৎ তাদের সংখ্যা যে কত তা) তিনি ছাড়া কেউ জানে না’। (সূরা মুদ্দাচ্ছির, আয়াত ৩১)
বলাবাহুল্য, ফিরিশতাদের দু'আ পেতে পারে কেবল তারাই, যারা ঈমানদার এবং যারা কেবল আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্যই রোগী দেখতে যায়। ইখলাস ও সহীহ নিয়ত যে-কোনও নেক আমলের জন্যই জরুরি।
রোগী দেখতে যাওয়ার দ্বিতীয় ফযীলত হল জান্নাতের ফল লাভ করা। অর্থাৎ রোগী দেখতে যাওয়ার পুরস্কারে আল্লাহ তা'আলা জান্নাতের অকল্পনীয় স্বাদের ফল খাওয়াবেন। জান্নাতের ফল খাওয়া যাবে জান্নাতে গেলেই। কাজেই এটা কেবল ফল খেতে পারার সুসংবাদই নয়; বরং জান্নাত পাওয়ারও সুসংবাদ। আল্লাহু আকবার! অতি সহজ ও সামান্য কাজের বিনিময়েও মহা মেহেরবান আল্লাহ কী বিশাল পুরস্কারের ব্যবস্থা রেখেছেন। কিন্তু মানুষ কতইনা গাফেল। এত বড় ফযীলতের এ আমলটি ক'জন মানুষই বা করে? অতি কাছে বা অতি আপনজন দিনের পর দিন রোগশয্যায় শায়িত থাকে। তা সত্ত্বেও তাকে দেখতে যাওয়ার ফুরসত হয় না! হয় না ইচ্ছাও। আল্লাহ তা'আলা এ গাফলাত থেকে জেগে ওঠার তাওফীক আমাদেরকে দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. রোগী দেখতে গেলে ফিরিশতাদের দু'আ পাওয়া যায়।
খ. রোগী দেখতে যাওয়ার দ্বারা গুনাহ মাফেরও আশা থাকে।
গ. আল্লাহ তা'আলার ফিরিশতাসংখ্যা অগণিত। বিভিন্ন কাজের জন্য তাদের নিযুক্ত রাখা হয়েছে। একেক কাজের জন্য অসংখ্য ফিরিশতা।
ঘ. রোগী দেখতে যাওয়ার দ্বারা জান্নাতলাভ সহজ হবে এবং জান্নাতের ফল ভোগ করা যাবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
