আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪৭- সৃষ্টি জগতের সূচনা
হাদীস নং: ৩০৩০
আন্তর্জাতিক নং: ৩২৫৮
১৯৯২. জাহান্নামের বিবরণ আর তা সৃষ্টবস্তু। غَسّاقًا প্রবাহিত পুঁজ যেমন কেউ বলে, তার চোখ প্রবাহিত হয়েছে ও ঘা প্রবাহিত হচ্ছে। غَسّاقً আর غسيق একই অর্থ। غِسْلِينَ যে কোন বস্তুকে ধৌত করার পর তা থেকে যা কিছু বের হয়, তাকে غِسْلِينَ বলা হয়, এটা غَسْلٍ শব্দ থেকে فِعْلِينَ এর ওজনে হয়ে থাকে। ইকরিমা (রাহঃ) বলেছেন, حَصَبُ جَهَنَّمَ এর অর্থ জাহান্নামের জ্বালানী। এটা হাবশীদের ভাষা। আর অন্যরা বলেছেন, حَاصِبًا অর্থ দমকা হাওয়া। আর الْحَاصِبُ অর্থ বায়ু যা ছুড়ে ফেলে। এ থেকে হয়েছে حَصَبُ جَهَنَّمَ যার অর্থ হচ্ছে যা কিছু জাহান্নামে ছুড়ে ফেলা হয় আর এগুলোই এর জ্বালানী। আর الْحَصَبُ শব্দটি حَصْبَاءِ শব্দ হতে উৎপত্তি। যার অর্থ কংকরসমূহ। صَدِيدٌ পুঁজ ও রক্ত। خَبَتْ- নিভে গেছে। تُورُونَ তোমরা আগুন বের করছ। أَوْرَيْتُ অর্থ আমি আগুন জালিয়েছি। لِلْمُقْوِينَ মুসাফিরগণের উপকারার্থে। আর الْقِيُّ তরুলতা বিহীন মাঠ। ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) বলেছেন, صِرَاطُ الْجَحِيمِ অর্থ জাহান্নামের দিক ও তার মধ্যস্থল। لَشَوْبًا তাদের খাদ্য অতি গরম পানির সাথে মিশানো হবে। زَفِيرٌ وَشَهِيقٌ কঠোর চিৎকার ও আর্তনাদ। وِرْدًا পিপাসার্ত। غَيًّا ক্ষতিগ্রস্ত। মুজাহিদ (রাহঃ) বলেছেন, يُسْجَرُونَ তাদের দ্বারা আগুন জালানো হবে। আর نُحَاسٌ অর্থ শীশা যা গলিয়ে তাদের মাথায় ঢেলে দেওয়া হবে। বলা হয়েছে, ذُوقُوا এর অর্থ স্বাদ গ্রহণ কর এবং অভিজ্ঞতা হাসিল কর। এটা কিন্তু মুখের দ্বারা স্বাদ গ্রহণ করা নয়। مَارِجٌ নির্ভেজাল অগ্নি। مَرَجَ الأَمِيرُ رَعِيَّتَهُ আমীর তার প্রজাকে ছেড়ে দিয়েছে, কথাটি এ সময় বলা হয় যখন সে তাদেরকে ছেড়ে দেয় আর তারা একে অন্যের প্রতি অত্যাচার করতে থাকে। مَرِيجٍ মিশ্রিত। مَرَجَ أَمْرُ النَّاسِ যখন মানুষ কোন বিষয় তালগোল পাকিয়ে যায়। আর مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ অর্থ তিনি দু’টি নদী প্রবাহিত করেছেন। مَرَجْتَ دَابَّتَكَ এ কথাটি সে সময় বলা হয়, যখন তুমি তোমার চতুষ্পদ জন্তুকে ছেড়ে দাও।
৩০৩০। আবুল ওয়ালীদ (রাহঃ) .... আবু যর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, নবী (ﷺ) এক সফরে ছিলেন, তখন (যোহরের নামাযের ওয়াক্ত হল) তিনি বললেন, ‘ঠাণ্ডা হতে দাও।’ পুনরায় বললেন, ‘টিলাগুলোর ছায়া নীচে নেমে আসা পর্যন্ত ঠাণ্ডা হতে দাও।’ আবার বললেন, ‘(যোহরের) নামায ঠাণ্ডা হলে পরে আদায় করবে। কেননা, গরমের তীব্রতা জাহান্নামের উত্তাপ থেকে হয়ে থাকে।’
باب صِفَةِ النَّارِ وَأَنَّهَا مَخْلُوقَةٌ {غَسَاقًا} يُقَالُ غَسَقَتْ عَيْنُهُ وَيَغْسِقُ الْجُرْحُ، وَكَأَنَّ الْغَسَاقَ وَالْغَسْقَ وَاحِدٌ. {غِسْلِينَ} كُلُّ شَيْءٍ غَسَلْتَهُ فَخَرَجَ مِنْهُ شَيْءٌ فَهُوَ غِسْلِينَ، فِعْلِينَ مِنَ الْغَسْلِ مِنَ الْجُرْحِ وَالدَّبَرِ. وَقَالَ عِكْرِمَةُ: {حَصَبُ جَهَنَّمَ} حَطَبُ بِالْحَبَشِيَّةِ. وَقَالَ غَيْرُهُ: {حَاصِبًا} الرِّيحُ الْعَاصِفُ، وَالْحَاصِبُ مَا تَرْمِي بِهِ الرِّيحُ، وَمِنْهُ حَصَبُ جَهَنَّمَ، يُرْمَى بِهِ فِي جَهَنَّمَ هُمْ حَصَبُهَا، وَيُقَالُ حَصَبَ فِي الأَرْضِ ذَهَبَ، وَالْحَصَبُ مُشْتَقٌّ مِنْ حَصْبَاءِ الْحِجَارَةِ. {صَدِيدٌ} قَيْحٌ وَدَمٌ. {خَبَتْ} طَفِئَتْ. {تُورُونَ} تَسْتَخْرِجُونَ، أَوْرَيْتُ أَوْقَدْتُ. {لِلْمُقْوِينَ} لِلْمُسَافِرِينَ، وَالْقِيُّ الْقَفْرُ. وَقَالَ ابْنُ عَبَّاسٍ صِرَاطُ الْجَحِيمِ سَوَاءُ الْجَحِيمِ وَوَسَطُ الْجَحِيمِ {لَشَوْبًا مِنْ حَمِيمٍ} يُخْلَطُ طَعَامُهُمْ وَيُسَاطُ بِالْحَمِيمِ. {زَفِيرٌ وَشَهِيقٌ} صَوْتٌ شَدِيدٌ، وَصَوْتٌ ضَعِيفٌ. {وِرْدًا} عِطَاشًا. {غَيًّا} خُسْرَانًا، وَقَالَ مُجَاهِدٌ: {يُسْجَرُونَ} تُوقَدُ بِهِمُ النَّارُ {وَنُحَاسٌ} الصُّفْرُ، يُصَبُّ عَلَى رُءُوسِهِمْ، يُقَالُ: {ذُوقُوا} بَاشِرُوا وَجَرِّبُوا، وَلَيْسَ هَذَا مِنْ ذَوْقِ الْفَمِ. مَارِجٌ خَالِصٌ مِنَ النَّارِ، مَرَجَ الأَمِيرُ رَعِيَّتَهُ إِذَا خَلاَّهُمْ يَعْدُو بَعْضُهُمْ عَلَى بَعْضٍ. {مَرِيجٍ} مُلْتَبِسٌ، مَرَجَ أَمْرُ النَّاسِ اخْتَلَطَ، {مَرَجَ الْبَحْرَيْنِ} مَرَجْتَ دَابَّتَكَ تَرَكْتَهَا
3258 - حَدَّثَنَا أَبُو الوَلِيدِ، حَدَّثَنَا شُعْبَةُ، عَنْ مُهَاجِرٍ أَبِي الحَسَنِ، قَالَ: سَمِعْتُ زَيْدَ بْنَ وَهْبٍ، يَقُولُ: سَمِعْتُ أَبَا ذَرٍّ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، يَقُولُ: كَانَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي سَفَرٍ فَقَالَ: «أَبْرِدْ» ثُمَّ قَالَ: «أَبْرِدْ» حَتَّى فَاءَ الفَيْءُ، يَعْنِي لِلتُّلُولِ ثُمَّ قَالَ: «أَبْرِدُوا بِالصَّلاَةِ، فَإِنَّ شِدَّةَ الحَرِّ مِنْ فَيْحِ جَهَنَّمَ»
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, গরমকালে রসূল স. যোহরের নামায ঠান্ডা করে পড়তে বলেছেন অর্থাৎ দেরি করে পড়তে বলেছেন যাতে সূর্যের তাপ কমে ঠান্ডা হয়ে যায়। এ বিষয়টি হযরত আবু মাসউদ বদরী রা. থেকে আবু দাউদ শরীফের একটি হাদীসে আরো স্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে যে, رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ صَلَّى الظُّهْرَ حِينَ تَزُولُ الشَّمْسُ، وَرُبَّمَا أَخَّرَهَا حِينَ يَشْتَدُّ الْحَرُّ، আমি রসূল স.কে দেখেছি সূর্য ঢলে পড়ার সাথে সাথে যোহরের নামায আদায় করতেন। তবে গরমের প্রচন্ডতা বৃদ্ধি পেলে তিনি নামায দেরি করে আদায় করতেন। (আবু দাউদ-৩৯৪)


বর্ণনাকারী: