আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

৭. নবীজী ﷺ থেকে বর্ণিত যাকাত অধ্যায়

হাদীস নং: ৬৭৫
আন্তর্জাতিক নং: ৬৭৫
সাদ্‌কাতুল ফিতর।
৬৭২. কুতায়বা (রাহঃ) .... ইবনে উমর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) নর-নারী আযাদ-গোলাম, বড়-ছোট প্রত্যেকের উপর সাদ্‌কাতুল ফিতর হিসাবে এক সা পরিমাণ খেজুর বা এক সা পরিমাণ যব প্রদান অবশ্য কর্তব্য হিসাবে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। রাবী বলেন, পরে লোকেরা গম আধা সা পরিমাণ এর সমান বলে মেনে নিয়েছে। - ইবনে মাজাহ ১৮২৫, বুখারি

ইমাম আবু ঈসা (রাহঃ) বলেন, এই হাদীসটি হাসান সহীহ্। এই বিষয়ে আবু সাঈদ, ইবনে আব্বাস, হারিস ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে যুবার-এর পিতামহ, সালারা ইবনে আবু শুআয়র এবং আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রাযিঃ) থেকেও হাদীস বর্ণিত আছে।
باب مَا جَاءَ فِي صَدَقَةِ الْفِطْرِ
حَدَّثَنَا قُتَيْبَةُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ بْنُ زَيْدٍ، عَنْ أَيُّوبَ، عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ فَرَضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم صَدَقَةَ الْفِطْرِ عَلَى الذَّكَرِ وَالأُنْثَى وَالْحُرِّ وَالْمَمْلُوكِ صَاعًا مِنْ تَمْرٍ أَوْ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ . قَالَ فَعَدَلَ النَّاسُ إِلَى نِصْفِ صَاعٍ مِنْ بُرٍّ . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَفِي الْبَابِ عَنْ أَبِي سَعِيدٍ وَابْنِ عَبَّاسٍ وَجَدِّ الْحَارِثِ بْنِ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِي ذُبَابٍ وَثَعْلَبَةَ بْنِ أَبِي صُعَيْرٍ وَعَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرٍو .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

সদাকাতুল ফিতর : গুরুত্ব ও ফযীলত

আল্লাহ তাআলার হুকুমে বান্দা পুরো মাস রোযা রেখেছে। আল্লাহ যেভাবে হুকুম করেছেন সেভাবে রাখতেই চেষ্টা করেছে। কিন্তু মহান আল্লাহ্র মহান হুকুম পালন করা অসহায় বান্দার জন্য কি এত সহজ! আল্লাহ তাআলা বান্দার দুর্বলতা ভালোভাবে জানেন। আল্লাহ্র রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও জানেন তাঁর উম্মতের দুর্বলতার কথা। তাই রোযা রাখতে গিয়ে যে টুকটাক ভুল হয়ে যায় তার কাফফারা স্বরূপ সদাকাতুল ফিত্রের বিধান দিয়েছেন।

পাশাপাশি রোযার মাধ্যমে রোযাদার কিছুটা হলেও উপলব্ধি করতে পেরেছে উপবাসে থাকা অন্ন-বস্ত্রহীন ভাইগুলোর কষ্ট। আজ রমযান শেষে ঈদের দিন সেই ভাইদের মুখেও যেন ফুটে ওঠে আনন্দের রেখা, তাদের ঘরেও উত্তম খাবারের ব্যবস্থা হয় সেজন্য বিত্তবানদের উপর ওয়াজিব করা হয়েছে সদাকাতুল ফিত্র। হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেনÑ

فَرَضَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ زَكَاةَ الْفِطْرِ طُهْرَةً لِلصّائِمِ مِنَ اللّغْوِ وَالرّفَثِ، وَطُعْمَةً لِلْمَسَاكِينِ، مَنْ أَدّاهَا قَبْلَ الصّلَاةِ، فَهِيَ زَكَاةٌ مَقْبُولَةٌ، وَمَنْ أَدّاهَا بَعْدَ الصّلَاةِ، فَهِيَ صَدَقَةٌ مِنَ الصّدَقَاتِ.

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সদাকাতুল ফিতরের বিধান দান করেছেন রোযাদারকে অর্থহীন ও অশ্লীল কথা-কাজ থেকে পবিত্র করার জন্য এবং মিসকীনদের খাবারের ব্যবস্থা হিসাবে। যে ব্যক্তি তা (ঈদের) নামাযের আগে আদায় করবে সেটা গ্রহণযোগ্য সদকা হিসাবে পরিগণিত হবে। আর যে নামাযের পর আদায় করবে সেটা সাধারণ সদকা হিসাবে বিবেচিত হবে। Ñসুনানে আবু দাউদ, হাদীস ১৬০৯

প্রত্যেক মুসলিম নর-নারী, যার মালিকানায় মৌলিক প্রয়োজনের অতিরিক্ত সাড়ে বায়ান্ন তোলা রুপার মূল্য সমপরিমাণ সম্পদ রয়েছে, তার ওপর সদাকাতুল ফিতর ওয়াজিব। প্রত্যেকে তার নিজের পক্ষ থেকে এবং নাবালেগ সন্তানের পক্ষ থেকে সদাকাতুল ফিতর আদায় করবে।

অতএব নিজের রোযাকে বিশুদ্ধ করার জন্য এবং ঈদের দিন অসহায় ভাইদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য ঈদের নামাযে যাওয়ার আগেই সদাকাতুল ফিত্র আদায় করব।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
জামে' তিরমিযী - হাদীস নং ৬৭৫ | মুসলিম বাংলা