আল জামিউল কাবীর- ইমাম তিরমিযী রহঃ

২. রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণিত নামাযের অধ্যায়

হাদীস নং: ৩০০
আন্তর্জাতিক নং: ৩০০
সালামের পর কি বলবে।
৩০০. আহমদ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে মুসা (রাহঃ) ...... রাসূলুল্লাহ (ﷺ)–এর আযাদক্রিত গোলাম ছাওবান (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন নামায শেষ করতেন, তখন তিনবার ইস্তিগফার পাঠ করতেন। অতঃপর তিনি (ﷺ) বলতেনঃ আল্লাহুম্মা আনতাস–সালাম, ওয়া মিনকাস সালাম, তাবারাকতা ইয়া যাল–জালালে ওয়াল ইকরাম।
‘‘হে আল্লাহ! আপনিই শান্তি, আপনার থেকেই শান্তি আগমন করে। হে আল্লাহ! আপনি মঙ্গলময়, আপনি অতি মহান হে প্রতাপশালী ও করুণার সাগর।’’
باب مَا يَقُولُ إِذَا سَلَّمَ مِنَ الصَّلاَةِ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ مُوسَى، حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ الْمُبَارَكِ، أَخْبَرَنَا الأَوْزَاعِيُّ، حَدَّثَنِي شَدَّادٌ أَبُو عَمَّارٍ، حَدَّثَنِي أَبُو أَسْمَاءَ الرَّحَبِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي ثَوْبَانُ، مَوْلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ كَانَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا أَرَادَ أَنْ يَنْصَرِفَ مِنْ صَلاَتِهِ اسْتَغْفَرَ اللَّهَ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ ثُمَّ قَالَ " اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالإِكْرَامِ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ صَحِيحٌ . وَأَبُو عَمَّارٍ اسْمُهُ شَدَّادُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, ফরয নামাযের পর ছুন্নাত আদায়ে এতটুকু দেরি করা যাবে, যতটুকু সময় হাদীসে বর্ণিত দুআ পড়তে লাগে। উপরিউক্ত দুআ ছাড়াও হাদীসে আরো অনেক দুআর কথা বর্ণিত আছে যা থেকে রসূল স. ফরযের পরে যে কোনটা পড়তেন। অতএব, ফরযের পরে ছুন্নাত শুরু করতে এতটুকু দেরি করা যায় উপরিউক্ত যে কোন দুআ বা তার সমপরিমাণ কোন দুআ পড়তে যতটুকু সময় লাগে। এর চেয়ে বেশী সময় দেরি করা ছুন্নাতের খেলাফ হবে। এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৫৩০)
ফরয নামাযের পরে যে সকল দুআ-দুরূদ এবং তাসবীহ-তাহলীল পড়ার ফযীলত সহীহ হাদীসে বর্ণিত হয়েছে তা বাহ্যিকভাবে এ হাদীসের পরিপন্থী। উভয় শ্রেণীর হাদীসের মধ্যে এভাবে সমন্বয় হতে পারে যে, যে সকল ফরয নামাযের পরে ছুন্নাত নেই সে সকল নামাযের পরেই তা পাঠ করবে। আর যে সকল ফরয নামাযের পরে ছুন্নাত আছে সে সকল নামাযের পরে প্রথমে ছুন্নাত পড়ে নিয়ে তারপর উক্ত দুআ-দুরূদ পাঠ করবে। কেননা দুআ-দুরূদ পড়ার হাদীসসমূহে বর্ণিত دُبُرُ الصَّلَاةِ অর্থাৎ নামাযের পরে শব্দের মধ্যে সময় নির্দিষ্ট করা নেই। বরং এ শব্দটি অনির্দিষ্ট সময় বুঝায়। তাই এর মাঝে খানিকটা দেরি করার অবকাশ রয়েছে। ছুন্নতের পরে দুআ-দুরূদ পড়লেও উক্ত হাদীসসমূহের উপর আমল পরিত্যাগ হবে না। পক্ষান্তরে হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত হাদীসে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, রসূল স. ফরযের পরে اللهمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ... দুআ’র চেয়ে বেশী দেরি করতেন না। আর দুআ-দুরূদ পাঠ করতে এর চেয়ে বেশী সময় পার হওয়াটাই স্বাভাবিক সুতরাং উপরিউক্ত পদ্ধতিতে উভয় শ্রেণীর হাদীসের মাঝে সমন্বয় করে আমল করা উত্তম হবে।
উল্লেখ্য, যে সকল ফরয নামাযের পরে ছুন্নাত রয়েছে সে সকল নামাযের পরে একাকী বা সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করলে তা এতটা সংক্ষিপ্ত করা উচিত যাতে ছুন্নাত নামায আদায় করতে হাদীসে বর্ণিত সময়ের চেয়ে দেরি না হয়।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
rabi
বর্ণনাকারী: