কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৩৪. ফিতনাসমূহ ও কিয়ামতপূর্ব আলামতের বর্ণনা

হাদীস নং: ৪০৭৯
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৭৯
দাজ্জালের ফিতনা, ঈসা ইবন মারইয়ামের অবতরণ ও ইয়াজুজ-মাজুজের বের হওয়া
৪০৭৯। আবু কুরায়ব (রাহঃ)...... আবু সাঈদ খুদরী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেনঃ ইয়াজুজ মাজুজকে ছেড়ে দেয়া হবে; (অর্থাৎ যে প্রাচীর বেষ্টিত আছে, তা খুলে দেওয়া হবে)। অতঃপর তারা বের হবে, যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেনঃوَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ

“এবং তারা সব উঁচু ভূমি হতে ছুটে আসবে।" (২১ঃ ৯৬)। এবং তারা যমীনের সর্বজ্ঞ ছড়িয়ে পড়বে মুসলমানেরা তাদের থেকে পৃথক হয়ে যাবে, অবশিষ্ট মুসলমানরা তাদের শহর ও দুর্গে আশ্রয় নিবে। সেখানে তারা তাদের গৃহপালিত পশুগুলো সাথে করে নিয়ে যাবে। ইয়াজুজ ও মাজুজের অবস্থা হবে এই যে, তাদের লোকগুলো একটি নহরের পাশ দিয়ে অতিক্রম করবে এবং তার সমুদয় পানি পান করে ফেলবে, এমন কি এক ফোঁটা পানিও অবশিষ্ট থাকবে না। এরপর তাদের দলের অবশিষ্টরা তাদের অনুসরণ করবে। তখন তাদের মধ্য হতে একজন বলবে, এখানে কি কখনো পানি ছিল। যমীনে তারা বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। শেষ পর্যন্ত তাদের একজন বলবে, এখন তো আমরা পৃথিবী বাসীদের থেকে স্বস্তি পেয়েছি, আমাদের কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। এবারে আসমান বাসীদের বিরুদ্ধে লড়বো। পরিশেষে তাদের একজন নিজ হাতে আকাশের দিকে বর্শা নিক্ষেপ করবে। তা রক্তে রঞ্জিত হয়ে ফিরে আসবে। অতঃপর তারা বলবে আমরা আসমানবাসীদেরও নিপাত করেছি। তারা এই অবস্থায় থাকবে, তখন আল্লাহ তা'আলা টিড্ডি (এক প্রকার ফড়িং বা ফসলের ক্ষতি করে এরূপ পোকা) বাহিনী পাঠাবেন। এই টিডিডগুলো ওদের ঘাড় ভেঙ্গে দিবে অথবা ঘাড়ের মধ্যে ঢুকে পড়বে। ফলে ওরাও তাদের মত মারা যাবে। তারপর একের উপর অপরটি পড়ে থাকবে। মুসলমানেরা সকাল বেলা তাদের শহর ও দুর্গ থেকে উঠবেন। তখন তারা ওদের বীভৎস চীৎকার শুনতে পাবেন এবং বলবেন আমাদের মধ্যে এমন কে আছে যে তার নিজের জানের উপর তামাশা করবে? সে যেন ইয়াজুজ মাজুজের কি কাণ্ড ঘটেছে তা দেখে নেয়। অতঃপর তাদের মধ্য হতে এক ব্যক্তি বের হবে এই বলে যে, তারা অবশ্যই তাকে হত্যা করবে। সে তাদের সবাইকে মৃত দেখতে পাবে। অতঃপর আনন্দে উৎফুল্ল হয়ে অন্যান্য মুসলমানদের ডাকতে থাকবে, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ কর। তোমাদের দুশমন ধ্বংস হয়েছে। তখন লোকেরা বেরিয়ে আসবে এবং তাদের গৃহপালিত পশুগুলো চারণভূমিতে ছেড়ে দিবে। তাদের চারণভূমিতে ইয়াজুজ মাজুজের গোশত ব্যতিরেকে কিছুই থাকবে না, ওরা তাদের মাংস ভক্ষণ করে বেশ মোটাতাজা হবে, যেমন কখনো কেউ ঘাস তৃণ লতা খেয়েও মোটাতাজা হতে পারেনি।
بَاب فِتْنَةِ الدَّجَالِ وَخُرُوجِ عِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَخُرُوجِ يَأْجُوجَ وَمَأْجُوجَ
حَدَّثَنَا أَبُو كُرَيْبٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ بُكَيْرٍ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، حَدَّثَنِي عَاصِمُ بْنُ عُمَرَ بْنِ قَتَادَةَ، عَنْ مَحْمُودِ بْنِ لَبِيدٍ، عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ قَالَ ‏"‏ تُفْتَحُ يَأْجُوجُ وَمَأْجُوجُ فَيَخْرُجُونَ كَمَا قَالَ اللَّهُ تَعَالَى ‏(وَهُمْ مِنْ كُلِّ حَدَبٍ يَنْسِلُونَ)‏ فَيَعُمُّونَ الأَرْضَ وَيَنْحَازُ مِنْهُمُ الْمُسْلِمُونَ حَتَّى تَصِيرَ بَقِيَّةُ الْمُسْلِمِينَ فِي مَدَائِنِهِمْ وَحُصُونِهِمْ وَيَضُمُّونَ إِلَيْهِمْ مَوَاشِيَهُمْ حَتَّى أَنَّهُمْ لَيَمُرُّونَ بِالنَّهَرِ فَيَشْرَبُونَهُ حَتَّى مَا يَذَرُونَ فِيهِ شَيْئًا فَيَمُرُّ آخِرُهُمْ عَلَى أَثَرِهِمْ فَيَقُولُ قَائِلُهُمْ لَقَدْ كَانَ بِهَذَا الْمَكَانِ مَرَّةً مَاءٌ وَيَظْهَرُونَ عَلَى الأَرْضِ فَيَقُولُ قَائِلُهُمْ هَؤُلاَءِ أَهْلُ الأَرْضِ قَدْ فَرَغْنَا مِنْهُمْ وَلَنُنَازِلَنَّ أَهْلَ السَّمَاءِ حَتَّى إِنَّ أَحَدَهُمْ لَيَهُزُّ حَرْبَتَهُ إِلَى السَّمَاءِ فَتَرْجِعُ مُخَضَّبَةً بِالدَّمِ فَيَقُولُونَ قَدْ قَتَلْنَا أَهْلَ السَّمَاءِ ‏.‏ فَبَيْنَمَا هُمْ كَذَلِكَ إِذْ بَعَثَ اللَّهُ دَوَابَّ كَنَغَفِ الْجَرَادِ فَتَأْخُذُ بِأَعْنَاقِهِمْ فَيَمُوتُونَ مَوْتَ الْجَرَادِ يَرْكَبُ بَعْضُهُمْ بَعْضًا فَيُصْبِحُ الْمُسْلِمُونَ لاَ يَسْمَعُونَ لَهُمْ حِسًّا فَيَقُولُونَ مَنْ رَجُلٌ يَشْرِي نَفْسَهُ وَيَنْظُرُ مَا فَعَلُوا فَيَنْزِلُ مِنْهُمْ رَجُلٌ قَدْ وَطَّنَ نَفْسَهُ عَلَى أَنْ يَقْتُلُوهُ فَيَجِدُهُمْ مَوْتَى فَيُنَادِيهِمْ أَلاَ أَبْشِرُوا فَقَدْ هَلَكَ عَدُوُّكُمْ ‏.‏ فَيَخْرُجُ النَّاسُ وَيُخْلُونَ سَبِيلَ مَوَاشِيهِمْ فَمَا يَكُونُ لَهُمْ رَعْىٌ إِلاَّ لُحُومُهُمْ فَتَشْكَرُ عَلَيْهَا كَأَحْسَنِ مَا شَكِرَتْ مِنْ نَبَاتٍ أَصَابَتْهُ قَطُّ ‏"‏ ‏.‏
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ৪০৭৯ | মুসলিম বাংলা