কিতাবুস সুনান- ইমাম ইবনে মাজা রহঃ

৫. নামাযের আদ্যোপান্ত বর্ণনা এবং সুন্নাতসমূহ

হাদীস নং: ১০১৯
আন্তর্জাতিক নং: ১০১৯
মুসল্লী কিরূপে সালামের জওয়াব দিবে
১০১৯। আহমদ ইবন সা'য়ীদ দারিমী (রাহঃ)... 'আব্দুল্লাহ (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ আমরা সালাতরত অবস্থায় সালাম দিতাম। তখন আমাদের বলা হলোঃ নিশ্চয়ই সালাতের মধ্যে ধ্যানমগ্নতা রয়েছে।
بَاب الْمُصَلِّي يُسَلَّمُ عَلَيْهِ كَيْفَ يَرُدُّ
حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ سَعِيدٍ الدَّارِمِيُّ، حَدَّثَنَا النَّضْرُ بْنُ شُمَيْلٍ، حَدَّثَنَا يُونُسُ بْنُ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي إِسْحَاقَ، عَنْ أَبِي الأَحْوَصِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ كُنَّا نُسَلِّمُ فِي الصَّلاَةِ فَقِيلَ لَنَا إِنَّ فِي الصَّلاَةِ لَشُغْلاً ‏.‏

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. কর্তৃক রসূল স.কে সালাম দেয়ার ঘটনায় তিনি ইরশাদ করেন, “তোমরা নামাযে কথা বলবে না”। এ থেকে প্রমাণিত হয় যে, নামাযে সালাম দেয়া বা সালামের জবাব দেয়া, কথা বলার শামিল যা নামায ভঙ্গের কারণ। (শামী: ১/৬১৩, ৬১৫)
মুসলিম শরীফের এক বর্ণনায় উল্লেখ আছে যে, নতুন ইসলাম গ্রহণকারী সাহাবা হযরত মুআবিয়া বিন হাকাম আস্ সুলামী রা. নামাযরত অবস্থায় এক লোকের হাঁচির জবাবে يَرْحَمُكَ الله বললে নামাযানেত্ম রসূল স. তাঁকে ইরশাদ করলেন: নামাযে কথাবার্তা বলা উচিত নয়। নামায তো তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠের জন্য। (মুসলিম: ১০৮২) শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি আবু দাউদ এবং নাসাঈ শরীফে বর্ণিত হয়েছে। (জামেউল উসূল-৩৬৯০)
এ হাদীসে রসূলুল্লাহ স. মূলত একটি নীতিমালার প্রতি ইঙ্গিত করেছেন যে, নামায হলো তাসবীহ, তাকবীর এবং কুরআন পাঠের জায়গা। সুতরাং রসূলুল্লাহ স. নামাযের যে পদ্ধতি উম্মাতকে শিক্ষা দিয়েছেন, তার সবটাই হয়তো তাসবীহ, না হয় তাকবীর, (আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ) অথবা কুরআন পাঠ। তাসবীহ ও কুরআন পাঠ কিসের দ্বারা হয় তা অনেকটা পরিস্কার। তবে তাকবীর কতভাবে কিসের দ্বারা প্রকাশ পায় তা সাধারণ মানুষের জানার বাইরে। এ কথার দ্বারা আমি আল্লাহু আকবার শব্দের দ্বারা বড়ত্ব প্রকাশের কথা বলছি না। কেননা এটা তো সকলেরই জানা। বরং রম্নকুর দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ, সিজদার দ্বারা আল্লাহর বড়ত্ব প্রকাশ, কিয়ামের দ্বারা আল্লার বড়ত্ব প্রকাশ ইত্যাদির কথা বলছি। এটা এমন একটি বিষয় যা নববী ইল্ম ছাড়া অনুধাবন করা যায় না। অতএব, নামাযের মধ্যে যে সব কাজ করণীয় বলে প্রমাণিত, তার বাইরে কিছু করা যাবে না। এর বাইরে যত ধরণের কাজ আছে তার ধরণ হিসেবে কোন্‌টা নামায ভঙ্গের কারণ হবে, কোন্‌টা মাকরূহ হবে, আবার কোন্‌টা বৈধ হবে ইত্যাদি বিষয় ইজতিহাদ বা গবেষণার সাথে সম্পর্কিত। এ ব্যাপারে গবেষক ইমামগণের শরণাপন্ন হতে হবে।
সুনানে ইবনে মাজা - হাদীস নং ১০১৯ | মুসলিম বাংলা