আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪১- হিবা তথা উপহার প্রদান, এর ফযীলত ও এতে উৎসাহ প্রদান
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ২৫৯৫
১৬২০. হাদিয়া দানের ক্ষেত্রে কাকে প্রথমে দিবে?
বকর (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) এর স্ত্রী মায়মুনা (রাযিঃ) তার এক বাঁদিকে আযাদ করে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন তাকে বললেন, তুমি যদি একে তোমার মামাদের কাউকে দিয়ে দিতে তাহলে তোমার সাওয়াব বেশী হত
বকর (রাহঃ) .... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) এর আযাদকৃত গোলাম কুরায়ব থেকে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) এর স্ত্রী মায়মুনা (রাযিঃ) তার এক বাঁদিকে আযাদ করে দিলেন। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তখন তাকে বললেন, তুমি যদি একে তোমার মামাদের কাউকে দিয়ে দিতে তাহলে তোমার সাওয়াব বেশী হত
২৪২৩। মুহাম্মাদ ইবনে বাশশার (রাহঃ) .... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন আমি আরয করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার দু’জন প্রতিবেশী আছে। এ দু’জনের কাকে আমি হাদিয়া দিব? তিনি ইরশাদ করলেন, এ দুয়ের মাঝে যার দরজা অধিক নিকটবর্তী।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
সুনির্দিষ্টভাবে প্রতিবেশী কারা, এ নিয়ে বিভিন্ন মত আছে। কারও মতে ডানে-বামে ও সামনে পেছনের প্রত্যেক দিকের চল্লিশ ঘর প্রতিবেশীর অন্তর্ভুক্ত। কেউ কেউ বলেন, প্রত্যেক দিকের দশ ঘর করে সর্বমোট চল্লিশ ঘর। কোনও কোনও বর্ণনা দ্বারাও এর সমর্থন পাওয়া যায়। কেউ বলেন, ফজরের নামাযে মসজিদে যারা একত্র হয় তারা একে অন্যের প্রতিবেশী। কারও মতে আযানের আওয়াজ যারা শুনতে পায় তারা সকলে একে অন্যের প্রতিবেশী।
মূলত এ সবই একটা আনুমানিক ধারণা। প্রতিবেশীর সংখ্যা এর কম-বেশিও হতে পারে। বস্তুত প্রত্যেকের জন্য তার অবস্থানগত বিবেচনায় প্রতিবেশীর পরিমাণ নির্ণিত হবে। কারও প্রতিবেশী এক-দু'জনও হতে পারে, আবার কারও হতে পারে অনেক বেশি। তবে সাধারণভাবে এতটুকু স্পষ্ট যে, প্রতিবেশীর সংখ্যা একাধিকই হয়ে থাকে।
হাদীছে সাধারণভাবে প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারের হুকুম দেওয়া হয়েছে। এখন কেউ যদি প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিতরণ করতে চায়, তখন অবস্থাবিশেষে এমন হতে পারে যে, তার আশেপাশে যত প্রতিবেশী আছে সকলের মধ্যে তা বিতরণ করার সামর্থ্য তার নেই। এ অবস্থায় সে কী করবে? কাকে রেখে কাকে দেবে? সম্ভবত আম্মাজান আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. এরকম জটিলতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাই তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন যে, আমার দুই প্রতিবেশী আছে। আমি তাদের কাকে হাদিয়া দেব? বোঝাতে চাচ্ছেন, আমার তো দু'জনকেই দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এ অবস্থায় আমি কী করলে প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার বাড়ির দরজা তোমার বাড়ির বেশি নিকটবর্তী। অর্থাৎ সবাইকে দিতে না পারলে সর্বাপেক্ষা নিকটবর্তী বাসিন্দাকে দেবে। এর দ্বারা বুঝা যায়, যদি সকলকে দিতে না পারে কিন্তু একাধিক জনকে পারে, সে ক্ষেত্রে নৈকট্যের পর্যায়ক্রম অনুযায়ী দিতে থাকবে ।
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বলেন, নিকটপ্রতিবেশীর আগে দূরপ্রতিবেশী থেকে দেওয়ার সূচনা করবে না। বরং আগে নিকটপ্রতিবেশীকে দেবে, তারপর দূর প্রতিবেশীকে। ৪৬
ইমাম আবূ জামরাহ রহ. বলেন, ‘পর্যায়ক্রম’র এ নির্দেশ মুস্তাহাব হিসেবে, ওয়াজিব হিসেবে নয়। কেননা হাদিয়া দেওয়া ওয়াজিব নয়। কাজেই পর্যায়ক্রম রক্ষা করাও ওয়াজিব হবে না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা শিক্ষা পাওয়া যায় আমল করার আগে ইলম হাসিল করা চাই।
খ. ইলম হাসিলের একটি পন্থা আলেমকে জিজ্ঞেস করা।
গ. আমলের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা উত্তম পন্থা অবলম্বনের আগ্রহ থাকা চাই ।
ঘ. প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিতরণ করা সুন্নত।
৪৬. বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ১১০
মূলত এ সবই একটা আনুমানিক ধারণা। প্রতিবেশীর সংখ্যা এর কম-বেশিও হতে পারে। বস্তুত প্রত্যেকের জন্য তার অবস্থানগত বিবেচনায় প্রতিবেশীর পরিমাণ নির্ণিত হবে। কারও প্রতিবেশী এক-দু'জনও হতে পারে, আবার কারও হতে পারে অনেক বেশি। তবে সাধারণভাবে এতটুকু স্পষ্ট যে, প্রতিবেশীর সংখ্যা একাধিকই হয়ে থাকে।
হাদীছে সাধারণভাবে প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারের হুকুম দেওয়া হয়েছে। এখন কেউ যদি প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিতরণ করতে চায়, তখন অবস্থাবিশেষে এমন হতে পারে যে, তার আশেপাশে যত প্রতিবেশী আছে সকলের মধ্যে তা বিতরণ করার সামর্থ্য তার নেই। এ অবস্থায় সে কী করবে? কাকে রেখে কাকে দেবে? সম্ভবত আম্মাজান আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. এরকম জটিলতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তাই তিনি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করেন যে, আমার দুই প্রতিবেশী আছে। আমি তাদের কাকে হাদিয়া দেব? বোঝাতে চাচ্ছেন, আমার তো দু'জনকেই দেওয়ার সামর্থ্য নেই। এ অবস্থায় আমি কী করলে প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহারকারীদের অন্তর্ভুক্ত হতে পারি? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যার বাড়ির দরজা তোমার বাড়ির বেশি নিকটবর্তী। অর্থাৎ সবাইকে দিতে না পারলে সর্বাপেক্ষা নিকটবর্তী বাসিন্দাকে দেবে। এর দ্বারা বুঝা যায়, যদি সকলকে দিতে না পারে কিন্তু একাধিক জনকে পারে, সে ক্ষেত্রে নৈকট্যের পর্যায়ক্রম অনুযায়ী দিতে থাকবে ।
হযরত আবূ হুরায়রা রাযি. বলেন, নিকটপ্রতিবেশীর আগে দূরপ্রতিবেশী থেকে দেওয়ার সূচনা করবে না। বরং আগে নিকটপ্রতিবেশীকে দেবে, তারপর দূর প্রতিবেশীকে। ৪৬
ইমাম আবূ জামরাহ রহ. বলেন, ‘পর্যায়ক্রম’র এ নির্দেশ মুস্তাহাব হিসেবে, ওয়াজিব হিসেবে নয়। কেননা হাদিয়া দেওয়া ওয়াজিব নয়। কাজেই পর্যায়ক্রম রক্ষা করাও ওয়াজিব হবে না।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা শিক্ষা পাওয়া যায় আমল করার আগে ইলম হাসিল করা চাই।
খ. ইলম হাসিলের একটি পন্থা আলেমকে জিজ্ঞেস করা।
গ. আমলের ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা উত্তম পন্থা অবলম্বনের আগ্রহ থাকা চাই ।
ঘ. প্রতিবেশীদের মধ্যে হাদিয়া বিতরণ করা সুন্নত।
৪৬. বুখারী, আল আদাবুল মুফরাদ, হাদীছ নং ১১০
