আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
৪১- হিবা তথা উপহার প্রদান, এর ফযীলত ও এতে উৎসাহ প্রদান
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ২৫৮১
১৬১২. সঙ্গীদের হাদিয়া দিতে গিয়ে তার কোন স্ত্রীর জন্য নির্ধারিত দিনে অপেক্ষা করা
২৪১১। ইসমাঈল (রাহঃ) .... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) এর স্ত্রীগণ দু’দলে বিভক্ত ছিলেন। একদলে ছিলেন আয়িশা, হাফসা, সাফিয়্যা ও সাওদা (রাযিঃ) অপর দলে ছিলেন উম্মে সালামা (রাযিঃ) সহ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর অন্যান্য স্ত্রীগণ। আয়িশা (রাযিঃ) এর প্রতি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর বিশেষ ভালোবাসার কথা সাহাবীগণ জানতেন। তাই তাদের মধ্যে কেউ রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে কিছু হাদিয়া পাঠাতে চাইলে তা বিলম্বিত করতেন। যেদিন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আয়িশা (রাযিঃ) এর ঘরে অবস্থান করতেন। সেদিন হাদিয়া দানকারী ব্যক্তি রাসূল (ﷺ) এর কাছে আয়িশা (রাযিঃ) এর ঘরে তা পাঠিয়ে দিতেন। উম্মে সালামা (রাযিঃ) এর দল তা নিয়ে আলোচনা করলেন।
উম্মে সালামা (রাযিঃ) কে তাঁরা বললেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে (এ বিষয়ে) আপনি আলাপ করুন। তিনি যেন লোকদের বলেন যে, যারা রাসূল (ﷺ) এর কাছে হাদিয়া পাঠাতে চান, তারা যেন তাঁর কাছে পাঠিয়ে দেন, যে স্ত্রীর ঘরেই তিনি থাকুননা কেন। উম্মে সালামা (রাযিঃ) তাদের প্রস্তাব নিয়ে তাঁর সাথে আলাপ করলেন। কিন্তু তিনি তাঁকে কোন জওয়াব দিলেন না। পরে সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না। তখন তাঁরা তাকে বললেন, আপনি তার সাথে আবার আলাপ করুন। (আয়িশা) বলেন, যেদিন তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর (উম্মে সালামার) ঘরে গেলেন, সেদিন তিনি আবার তাঁর কাছে আলাপ তুললেন। সেদিনও তিনি তাকে কিছু বললেন না।
তারপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তিনি বললেন, আমাকে তিনি কিছুই বলেন নি। তখন তাঁরা তাঁকে বললেন, তিনি কোন জওয়াব না দেওয়া পর্যন্ত আপনি বলতে থাকুন। তিনি (নবী (ﷺ)) তার ঘরে গেলে আবার তিনি তাঁর কাছে সে প্রসঙ্গ তুললেন। এবার তিনি তাকে বললেন, আয়িশা (রাযিঃ) এর ব্যাপার নিয়ে আমাকে কষ্ট দিও না। মনে রেখো, আয়িশা (রাযিঃ) ছাড়া আর কোন স্ত্রীর বস্ত্রাচ্ছাদনে থাকা অবস্থায় আমার উপর ওহী নাযিল হয়নি। (আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, একথা শুনে তিনি (উম্মে সালামা (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে কষ্ট দেওয়ার (অপরাধ) থেকে আমি আল্লাহর কাছে তওবা করছি।
তারপর সকলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কন্যা ফাতিমা (রাযিঃ) কে এনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে একথা বলার জন্য পাঠালেন যে, আপনার স্ত্রীগণ আল্লাহর দোহাই দিয়ে আবু বকর (রাযিঃ) এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানাচ্ছেন। (ফাতিমা (রাযিঃ) তাঁর কাছে বিষয়টি তুলে ধরলেন। তখন তিনি বললেন, প্রিয় কন্যা! আমি যা পছন্দ করি, তাই কি তুমি পছন্দ কর না? তিনি বললেন, অবশ্যই করি। তারপর তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে (আদ্যোপান্ত) অবহিত করলেন। তারা তাকে বললেন, তুমি আবার যাও। কিন্তু এবার তিনি যেতে অস্বীকার করলেন।
তখন তারা যায়নব বিনতে জাহাশ (রাযিঃ) কে পাঠালেন। তিনি তাঁর কাছে গিয়ে কঠোর ভাষা ব্যবহার করলেন, এবং বললেন, আপনার স্ত্রীগণ! আল্লাহর দোহাই দিয়ে ইবনে আবু কুহাফার (আবু বকর (রাযিঃ) এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানাচ্ছেন। এরপর তিনি গলার স্বর উচু করলেন। এমনকি আয়িশা (রাযিঃ) কে জড়িয়েও কিছু বললেন। আয়িশা (রাযিঃ) সেখানে বসা ছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আয়িশা (রাযিঃ) এর দিকে তাকিয়ে দেখছিলেন। তিনি কিছু বলেন কিনা।
(রাবী উরওয়া রা.) বলেন, আয়িশা (রাযিঃ) যয়নাব (রাযিঃ) এর কথার প্রস্তুতি বাদে কথা বলতে শুরু করলেন এবং তাকে চুপ করে দিলেন। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন নবী (ﷺ) তখন আয়িশা (রাযিঃ) এর দিকে তাকিয়ে বললেন, এ হচ্ছে আবু বকর (রাযিঃ) এর কন্য। আবু মারওয়ান গাসসানী (রাযিঃ) হিশাম এর সূত্রে উরওয়া (রাহঃ) থেকে বলেন, লোকেরা তাদের হাদিয়াসমূহ নিয়ে আয়িশা (রাযিঃ) এর জন্য নির্ধারিত দিনের অপেক্ষা করত। অন্য সনদে হিশাম (রাহঃ) মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে হারিস ইবনে হিশাম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, আয়িশা (রাযিঃ) বলেছেন, আমি নবী (ﷺ) এর কাছে ছিলাম, এমন সময় ফাতিমা (রাযিঃ) অনুমতি চাইলেন।
উম্মে সালামা (রাযিঃ) কে তাঁরা বললেন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সাথে (এ বিষয়ে) আপনি আলাপ করুন। তিনি যেন লোকদের বলেন যে, যারা রাসূল (ﷺ) এর কাছে হাদিয়া পাঠাতে চান, তারা যেন তাঁর কাছে পাঠিয়ে দেন, যে স্ত্রীর ঘরেই তিনি থাকুননা কেন। উম্মে সালামা (রাযিঃ) তাদের প্রস্তাব নিয়ে তাঁর সাথে আলাপ করলেন। কিন্তু তিনি তাঁকে কোন জওয়াব দিলেন না। পরে সবাই তাকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বললেন, তিনি আমাকে কোন জবাব দিলেন না। তখন তাঁরা তাকে বললেন, আপনি তার সাথে আবার আলাপ করুন। (আয়িশা) বলেন, যেদিন তিনি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাঁর (উম্মে সালামার) ঘরে গেলেন, সেদিন তিনি আবার তাঁর কাছে আলাপ তুললেন। সেদিনও তিনি তাকে কিছু বললেন না।
তারপর তারা তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, তখন তিনি বললেন, আমাকে তিনি কিছুই বলেন নি। তখন তাঁরা তাঁকে বললেন, তিনি কোন জওয়াব না দেওয়া পর্যন্ত আপনি বলতে থাকুন। তিনি (নবী (ﷺ)) তার ঘরে গেলে আবার তিনি তাঁর কাছে সে প্রসঙ্গ তুললেন। এবার তিনি তাকে বললেন, আয়িশা (রাযিঃ) এর ব্যাপার নিয়ে আমাকে কষ্ট দিও না। মনে রেখো, আয়িশা (রাযিঃ) ছাড়া আর কোন স্ত্রীর বস্ত্রাচ্ছাদনে থাকা অবস্থায় আমার উপর ওহী নাযিল হয়নি। (আয়িশা (রাযিঃ) বলেন, একথা শুনে তিনি (উম্মে সালামা (রাযিঃ) বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনাকে কষ্ট দেওয়ার (অপরাধ) থেকে আমি আল্লাহর কাছে তওবা করছি।
তারপর সকলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কন্যা ফাতিমা (রাযিঃ) কে এনে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে একথা বলার জন্য পাঠালেন যে, আপনার স্ত্রীগণ আল্লাহর দোহাই দিয়ে আবু বকর (রাযিঃ) এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানাচ্ছেন। (ফাতিমা (রাযিঃ) তাঁর কাছে বিষয়টি তুলে ধরলেন। তখন তিনি বললেন, প্রিয় কন্যা! আমি যা পছন্দ করি, তাই কি তুমি পছন্দ কর না? তিনি বললেন, অবশ্যই করি। তারপর তাদের কাছে গিয়ে তাদেরকে (আদ্যোপান্ত) অবহিত করলেন। তারা তাকে বললেন, তুমি আবার যাও। কিন্তু এবার তিনি যেতে অস্বীকার করলেন।
তখন তারা যায়নব বিনতে জাহাশ (রাযিঃ) কে পাঠালেন। তিনি তাঁর কাছে গিয়ে কঠোর ভাষা ব্যবহার করলেন, এবং বললেন, আপনার স্ত্রীগণ! আল্লাহর দোহাই দিয়ে ইবনে আবু কুহাফার (আবু বকর (রাযিঃ) এর কন্যা সম্পর্কে ইনসাফের আবেদন জানাচ্ছেন। এরপর তিনি গলার স্বর উচু করলেন। এমনকি আয়িশা (রাযিঃ) কে জড়িয়েও কিছু বললেন। আয়িশা (রাযিঃ) সেখানে বসা ছিলেন। শেষ পর্যন্ত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আয়িশা (রাযিঃ) এর দিকে তাকিয়ে দেখছিলেন। তিনি কিছু বলেন কিনা।
(রাবী উরওয়া রা.) বলেন, আয়িশা (রাযিঃ) যয়নাব (রাযিঃ) এর কথার প্রস্তুতি বাদে কথা বলতে শুরু করলেন এবং তাকে চুপ করে দিলেন। আয়িশা (রাযিঃ) বলেন নবী (ﷺ) তখন আয়িশা (রাযিঃ) এর দিকে তাকিয়ে বললেন, এ হচ্ছে আবু বকর (রাযিঃ) এর কন্য। আবু মারওয়ান গাসসানী (রাযিঃ) হিশাম এর সূত্রে উরওয়া (রাহঃ) থেকে বলেন, লোকেরা তাদের হাদিয়াসমূহ নিয়ে আয়িশা (রাযিঃ) এর জন্য নির্ধারিত দিনের অপেক্ষা করত। অন্য সনদে হিশাম (রাহঃ) মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুর রহমান ইবনে হারিস ইবনে হিশাম (রাহঃ) থেকে বর্ণিত, আয়িশা (রাযিঃ) বলেছেন, আমি নবী (ﷺ) এর কাছে ছিলাম, এমন সময় ফাতিমা (রাযিঃ) অনুমতি চাইলেন।
