কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ

২৪. হজ্ব আদায়ের পদ্ধতির বিবরণ

হাদীস নং: ২৭৩২
আন্তর্জাতিক নং: ২৭৩২
হজ্জে তামাত্তু[১]
২৭৩৪. মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুবারক মুখাররামী (রাহঃ) ......... সালিম ইবনে আব্দুল্লাহ্ (রাহঃ) থেকে বর্ণিত। আব্দুল্লাহ্ ইবনে উমর (রাযিঃ) বলেছেনঃ রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) হজ্জাতুল বিদা বা বিদায় হজ্জের উমরাহ ও হজ্জ একত্রে পর্যায়ক্রমে আদায় করে তামাত্তু করেন। আর তিনি যুল হুলায়াফায় তার সাথে কুরবানীর পশু নিয়ে আসেন এবং তা পাঠিয়ে দেন। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) ঐ দিনে হজ্জের কাজ আরম্ভ করেন। তিনি প্রথমে উমরার ইহরাম বাঁধলেন। তারপর হজ্জের ইহরাম বাঁধলেন। আর অন্যান্য লোক তাঁর সাথে পর্যায়ক্রমে উমরাহ ও হজ্জের ইহরাম বঁধলো। লোকদের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি কুরবানীর পশু সাথে নিয়ে এসেছিল তারা তো কুরবানীর পশু পাঠিয়ে দিল। আর তাদের মধ্যে কতক এমন ছিল যারা কুরবানীর পশু নিয়ে আসেনি। তারপর যখন রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) মক্কায় আগমন করলেন, তখন তিনি লোকদেরকে বললেনঃ তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি কুরবানীর পশু পাঠিয়েছে, সে যেন হজ্জ আদায় করা পর্যন্ত তার জন্য যা হারাম করা হয়েছে তদ্বারা ইহরাম ভঙ্গ না করে। আর যে ব্যক্তি কুরবানীর জন্তু পাঠায়নি, সে যেন কাবার তাওয়াফ করে এবং সাফা মারওয়ার সাঈ করে এবং মাথার চুল ছাঁটে এবং ইহরাম ভঙ্গ করে।

তারপর সে যেন হজ্জের ইহরাম বাঁধে এবং কুরবানীর জন্তু পাঠায়। আর যে ব্যক্তি কুরবানীর জন্তু পাঠাতে সমর্থ না হয়, সে যেন হজ্জের মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করে, এবং পরিবার-পরিজনের নিকট ফিরে আসার পর সাতদিন সিয়াম পালন করে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যখন মক্কায় আগমন করলেন, সর্বপ্রথম তওয়াফ করলেন এবং রুকনে ইয়ামানী চুম্বন করলেন, তারপর তিনি সাত তওয়াফের তিন তাওয়াফে রমল করলেন এবং চার তাওয়াফে হ্যাঁটলেন। তাওয়াফ সমাপ্ত করে তিনি বায়তুল্লাহর নিকট মাকামে ইবরাহীমে দু’ রাক'আত নামায আদায় করলেন। তারপর তিনি তথা হতে সাফা পাহাড়ে আগমন করলেন এবং সাফা ও মারওয়ায় সাতবার সাঈ করলেন। পরে হজ্জ আদায় করার পূর্বে যা তাঁর জন্য হারাম ছিল, তার কোনটি করে ইহরাম ভঙ্গ করেন নি। এরপর কুরবানীর দিন পশু কুরবানী করলেন এবং তথা হতে প্রত্যাবর্তন করে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করলেন। তারপর তাঁর জন্য যা হারাম ছিল তার প্রত্যেকটি দ্বারা তিনি ইহরাম ভঙ্গ করলেন। পরে লোকদের মধ্যে যারা কুরবানীর পশু পাঠিয়েছিল বা নিয়ে এসেছিল, তারা রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) যা করলেন তদ্রূপ করলো।

[১] এখানে তামাত্তু দ্বারা তামাত্তু-হজ্জের পারিভাষিক অর্থ বুঝানো হয়নি বরং অভিধানিক অর্থ অর্থাৎ (একই সফরে হজ্জ ও উমরা সম্পাদন দ্বারা) লাভবান হওয়া বা উপকৃত হওয়ার অর্থ বুঝানো হয়েছে। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) একই ইহরামে উমরা ও হজ্জের কাজ সমাধা করে লাভবান হওয়া অর্থে তামাত্তু শব্দ ব্যবহার করেছেন। কুরআন মজীদেও এ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। উল্লেখ্য সাহাবাদের নিকট তামাত্তু দ্বারা কিরানও বুঝা যেত।
التَّمَتُّعُ
أَخْبَرَنَا مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ الْمُبَارَكِ الْمُخَرِّمِيُّ قَالَ حَدَّثَنَا حُجَيْنُ بْنُ الْمُثَنَّى قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ عُقَيْلٍ عَنْ ابْنِ شِهَابٍ عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا قَالَ تَمَتَّعَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي حَجَّةِ الْوَدَاعِ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ وَأَهْدَى وَسَاقَ مَعَهُ الْهَدْيَ بِذِي الْحُلَيْفَةِ وَبَدَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَأَهَلَّ بِالْعُمْرَةِ ثُمَّ أَهَلَّ بِالْحَجِّ وَتَمَتَّعَ النَّاسُ مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِالْعُمْرَةِ إِلَى الْحَجِّ فَكَانَ مِنْ النَّاسِ مَنْ أَهْدَى فَسَاقَ الْهَدْيَ وَمِنْهُمْ مَنْ لَمْ يُهْدِ فَلَمَّا قَدِمَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَكَّةَ قَالَ لِلنَّاسِ مَنْ كَانَ مِنْكُمْ أَهْدَى فَإِنَّهُ لَا يَحِلُّ مِنْ شَيْءٍ حَرُمَ مِنْهُ حَتَّى يَقْضِيَ حَجَّهُ وَمَنْ لَمْ يَكُنْ أَهْدَى فَلْيَطُفْ بِالْبَيْتِ وَبِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ وَلْيُقَصِّرْ وَلْيَحْلِلْ ثُمَّ لِيُهِلَّ بِالْحَجِّ ثُمَّ لِيُهْدِ وَمَنْ لَمْ يَجِدْ هَدْيًا فَلْيَصُمْ ثَلَاثَةَ أَيَّامٍ فِي الْحَجِّ وَسَبْعَةً إِذَا رَجَعَ إِلَى أَهْلِهِ فَطَافَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ قَدِمَ مَكَّةَ وَاسْتَلَمَ الرُّكْنَ أَوَّلَ شَيْءٍ ثُمَّ خَبَّ ثَلَاثَةَ أَطْوَافٍ مِنْ السَّبْعِ وَمَشَى أَرْبَعَةَ أَطْوَافٍ ثُمَّ رَكَعَ حِينَ قَضَى طَوَافَهُ بِالْبَيْتِ فَصَلَّى عِنْدَ الْمَقَامِ رَكْعَتَيْنِ ثُمَّ سَلَّمَ فَانْصَرَفَ فَأَتَى الصَّفَا فَطَافَ بِالصَّفَا وَالْمَرْوَةِ سَبْعَةَ أَطْوَافٍ ثُمَّ لَمْ يَحِلَّ مِنْ شَيْءٍ حَرُمَ مِنْهُ حَتَّى قَضَى حَجَّهُ وَنَحَرَ هَدْيَهُ يَوْمَ النَّحْرِ وَأَفَاضَ فَطَافَ بِالْبَيْتِ ثُمَّ حَلَّ مِنْ كُلِّ شَيْءٍ حَرُمَ مِنْهُ وَفَعَلَ مِثْلَ مَا فَعَلَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَهْدَى وَسَاقَ الْهَدْيَ مِنْ النَّاسِ
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)
সুনানে নাসায়ী - হাদীস নং ২৭৩২ | মুসলিম বাংলা