কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ

১৩. নামাযে সাহু তথা ভূলের বিধান

হাদীস নং: ১২১৮
আন্তর্জাতিক নং: ১২১৮
নামাযে কথা বলা।
১২২১। ইসহাক ইবনে মনসূর (রাহঃ) ......... মুআবিয়া ইবনে হাকাম সুলামী (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমরা নিকট অতীতে জাহেলিয়াতে নিমজ্জিত ছিলাম, তারপর আল্লাহ তাআলা ইসলাম পাঠালেন। আমাদের মধ্যে কিছু লোক শুভ অশুভ লক্ষণ মানে। তিনি বললেন, তা এক প্রকার কুসংস্কার, যা তাদের মনে উদ্রেক হয়ে থাকে এটা যেন তাদের কোন কাজ থেকে বিরত না রাখে। আমি আরো বললাম, আমাদের মধ্যে কিছু লোক গণকদের কাছে যাতায়াত করে।

তিনি বললেন, তোমরা গণকদের কাছে যেয়ো না। তিনি বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমাদের মধ্যে কিছু লোক রেখা টেনে থাকে, তিনি বললেন নবীদের মধ্যে একজন নবী রেখা টানতেন। [ ইদ্রীস (আলাইহিস সালাম) অথবা দানিয়াল (আলাইহিস সালাম)] অতএব, যার রেখা তাঁর রেখার সাথে মিলে যায় তা সঠিক বলে প্রতিপন্ন হবে।

রাবী বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে নামাযে ছিলাম, এমন সময় এক ব্যক্তি হাচি দিলে আমি يَرْحَمُكَ اللَّهُ বললাম, তখন উপস্থিত লোকজন আমার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতে থাকলে আমি বললাম, তোমাদের মাতারা তোমাদের হারিয়ে ফেলূক! তোমাদের কি হল তোমরা আমার দিকে এরূপ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাচ্ছ কেন? তখন লোকজন (আাশ্চর্যান্বিত হয়ে) তাদের উরুদেশে তাদের হাত মারতে আরম্ভ করলো, আমি যখন দেখলাম যে, তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছে আমি (রাগান্বিত না হয়ে) চুপ হয়ে গেলাম।

রাসূলুল্লাহ (ﷺ) যখন নামায শেষ করলেন আমাকে তাকলেন, তাঁর উপর আমার মাতা-পিতা কুরবান হোক। তিনি (নামাযে তিনি আমার অবাঞ্চিত কথা বার্তার জন্য) আমাকে তিরস্কার করলেন না এবং কটু কথাও বললেন না। আমি এর পূর্বে বা পরে তার থেকে উত্তম কোন শিক্ষক দেখিনি। তিনি বললেন আমাদের এ নামাযে কারো কথা বলা সমীচীন নয়। এতো হলো তাসবীহ তাকবীর ও তিলাওয়াতে কুরআনের সমষ্টি।

রাবী বলেন, এরপর আমার একটি বকরীর পাল আমার দিকে এগিয়ে আসল যা আমার দাসী উহুদ এবং জাওয়ানীয়ায় চরাচ্ছিল। আমি দেখলাম যে, বাঘে পাল থেকে একটি বকরী নিয়ে গেছে। আমিও তো এক আদম সন্তান তাই আমি (দাসীর উপর) রাগান্বিত হয়ে গেলাম, যেমন অন্যরাও রাগান্বিত হয়ে থাকে। অতএব, আমি দাসীকে একটা চড় মারলাম। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর কাছে এসে তাঁর সংবাদ দিলাম। তিনি চড় মারাকে খুবই অন্যায় কাজ মনে করলেন।

আমি বললাম, ইয়া রাসুলল্লাহ আমি কি তাকে (এর প্রায়শ্চিত স্বরূপ) আযাদ করে দের? তিনি বললেন, আযাদ করে দাও। সে দাসীকে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ কোথায়? সে বললো, আসমানে। তিনি তাঁকে আবার জিজ্ঞাসা করলেন আমি কে? সে বললো, আপনি আল্লাহর রাসুল। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, “সে মুমিনা, অতএব তাকে আযাদ করে দাও”।
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ يُوسُفَ، قَالَ حَدَّثَنَا الأَوْزَاعِيُّ، قَالَ حَدَّثَنِي يَحْيَى بْنُ أَبِي كَثِيرٍ، عَنْ هِلاَلِ بْنِ أَبِي مَيْمُونَةَ، قَالَ حَدَّثَنِي عَطَاءُ بْنُ يَسَارٍ، عَنْ مُعَاوِيَةَ بْنِ الْحَكَمِ السُّلَمِيِّ، قَالَ قُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنَّا حَدِيثُ عَهْدٍ بِجَاهِلِيَّةٍ فَجَاءَ اللَّهُ بِالإِسْلاَمِ وَإِنَّ رِجَالاً مِنَّا يَتَطَيَّرُونَ . قَالَ " ذَاكَ شَىْءٌ يَجِدُونَهُ فِي صُدُورِهِمْ فَلاَ يَصُدَّنَّهُمْ " . وَرِجَالٌ مِنَّا يَأْتُونَ الْكُهَّانَ . قَالَ " فَلاَ تَأْتُوهُمْ " . قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ وَرِجَالٌ مِنَّا يَخُطُّونَ . قَالَ " كَانَ نَبِيٌّ مِنَ الأَنْبِيَاءِ يَخُطُّ فَمَنْ وَافَقَ خَطُّهُ فَذَاكَ " . قَالَ وَبَيْنَا أَنَا مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الصَّلاَةِ إِذْ عَطَسَ رَجُلٌ مِنَ الْقَوْمِ فَقُلْتُ يَرْحَمُكَ اللَّهُ فَحَدَّقَنِي الْقَوْمُ بِأَبْصَارِهِمْ فَقُلْتُ وَاثُكْلَ أُمِّيَاهُ مَا لَكُمْ تَنْظُرُونَ إِلَىَّ قَالَ فَضَرَبَ الْقَوْمُ بِأَيْدِيهِمْ عَلَى أَفْخَاذِهِمْ فَلَمَّا رَأَيْتُهُمْ يُسَكِّتُونِي لَكِنِّي سَكَتُّ فَلَمَّا انْصَرَفَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم دَعَانِي بِأَبِي وَأُمِّي هُوَ مَا ضَرَبَنِي وَلاَ كَهَرَنِي وَلاَ سَبَّنِي مَا رَأَيْتُ مُعَلِّمًا قَبْلَهُ وَلاَ بَعْدَهُ أَحْسَنَ تَعْلِيمًا مِنْهُ قَالَ " إِنَّ صَلاَتَنَا هَذِهِ لاَ يَصْلُحُ فِيهَا شَىْءٌ مِنْ كَلاَمِ النَّاسِ إِنَّمَا هُوَ التَّسْبِيحُ وَالتَّكْبِيرُ وَتِلاَوَةُ الْقُرْآنِ " . قَالَ ثُمَّ اطَّلَعْتُ إِلَى غُنَيْمَةٍ لِي تَرْعَاهَا جَارِيَةٌ لِي فِي قِبَلِ أُحُدٍ وَالْجَوَّانِيَّةِ وَإِنِّي اطَّلَعْتُ فَوَجَدْتُ الذِّئْبَ قَدْ ذَهَبَ مِنْهَا بِشَاةٍ وَأَنَا رَجُلٌ مِنْ بَنِي آدَمَ آسَفُ كَمَا يَأْسَفُونَ فَصَكَكْتُهَا صَكَّةً ثُمَّ انْصَرَفْتُ إِلَى رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَأَخْبَرْتُهُ فَعَظَّمَ ذَلِكَ عَلَىَّ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَفَلاَ أَعْتِقُهَا قَالَ " ادْعُهَا " . فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَيْنَ اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ " . قَالَتْ فِي السَّمَاءِ . قَالَ " فَمَنْ أَنَا " . قَالَتْ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قَالَ " إِنَّهَا مُؤْمِنَةٌ فَاعْتِقْهَا " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

১. এখানে হাদীসটি সংক্ষিপ্ত আকারে আনা হয়েছে। অন্যান্য বর্ণনার আলোকে নিম্নে পূর্ণাঙ্গ হাদীস ও তার ব্যাখ্যা পেশ করা হলো।

হযরত মু‘আবিয়া ইবনুল হাকাম আস সুলামী রাযি. বলেন, একদা আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামায পড়ছিলাম। হঠাৎ উপস্থিত লোকদের মধ্যে একজন হাঁচি দিল। আমি বললাম, ইয়ারহামুকাল্লাহ (আল্লাহ তোমার প্রতি রহমত করুন)। এতে লোকজন আমার প্রতি তাদের দৃষ্টি নিক্ষেপ করল। আমি বললাম, কী হল, আমার মা সন্তানহারা হোক! তোমাদের কী হল যে, আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছ? তখন তারা তাদের হাত দিয়ে উরু চাপড়াতে শুরু করল। যখন দেখলাম তারা আমাকে চুপ করাতে চাচ্ছে, অগত্যা আমি চুপ করলাম। অবশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায শেষ করলেন। তাঁর প্রতি আমার পিতা–মাতা কুরবান হোক। আমি তাঁর আগে ও পরে তাঁর চেয়ে উত্তম শিক্ষাদাতা কোনও শিক্ষক দেখিনি। আল্লাহর কসম! তিনি আমাকে তিরস্কার করলেন না (অথবা এর অর্থ– তিনি চেহারা কুঞ্চিত করলেন না), মারলেন না এবং মন্দও বললেন না। তিনি বললেন, এই যে নামায, এর ভেতর মানবীয় কোনও কথাবার্তা সঙ্গত নয়; এটা তো তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠ। অথবা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বলেছেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি জাহিলী যুগের খুব কাছের (অর্থাৎ আমি সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী)। আল্লাহ আমাদের এ অবস্থায় ইসলাম দিয়েছেন যে, আমাদের কিছু লোক গণকদের কাছে যাতায়াত করে। তিনি বললেন, তুমি তাদের কাছে যেয়ো না। আমি বললাম, আমাদের কিছু লোক অশুভ প্রক্ষিণে বিশ্বাস করে। তিনি বললেন, এটা এমন একটা জিনিস, যা তারা তাদের অন্তরে অনুভব করে। তবে তা যেন তাদেরকে (ঈন্সিত কাজে) বাধা না দেয়।
আমি বললাম, আমাদের মধ্যে কিছু লোক রেখা অঙ্কন করে, (ভাগ্য নির্ণয় করে) তিনি বললেন, একজন নবী রেখা অঙ্কন করতেন। যার রেখা সেই নবীর রেখার সঙ্গে মিলবে তারটা ঠিক হবে।
(বর্ণনাকারী মুআবিয়া বলেন) আমার একটি দাসী ছিল। সে উহুদ ও জাওয়ানিয়ার দিকে আমার ছাগল চরাত। একদিন আমি সেখানে উপস্থিত হয়ে দেখি, একটি বাঘ এসে একটি ছাগল নিয়ে গেল। যেহেতু আমিও মানুষ, সেহেতু অন্যান্য মানুষের মত আমারও রাগ এসে গেল। আমি তাকে একটি চড় বসিয়ে দিলাম। তারপর আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট এলাম। তিনি আমার এই কাজকে অত্যন্ত অপছন্দ করলেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি কি তাকে আযাদ করে দিব? তিনি বললেন, তাকে আমার নিকট নিয়ে এসো আমি তাকে তার নিকট নিয়ে এলাম। তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, আল্লাহ কোথায় আছেন? সে বলল, আকাশে। তিনি বললেন, আমি কে? সে বলল, আপনি আল্লাহর রাসুল। তখন তিনি বললেন, ওকে আযাদ করে দাও। কেননা ও মু’মিনা।

হাদীসের ব্যাখ্যাঃ

فَقُلْتُ : يَرْحَمُكَ اللَّهُ ‘আমি বললাম, ইয়ারহামুকাল্লাহ (আল্লাহ তোমার প্রতি রহমত করুন)'। অর্থাৎ মুসল্লীদের একজন হাঁচি দিলে তিনি এ দু'আটি পড়লেন। নিয়ম হল কেউ হাঁচি দিলে সে الْحَمْدُ لِلَّهِ বলবে। যে তা শুনবে, সে يَرْحَمُكَ اللهُ বলে তার জবাব দেবে। এ জবাবকে তাশমীত বলে। এটা ওয়াজিব। যে ব্যক্তি হাঁচি দিয়েছিল সে الْحَمْدُ الله বলেছিল কি না, এ হাদীছে তার উল্লেখ নেই। হতে পারে বলেছিল। আবার নাও বলতে পারে। না বললে সে ক্ষেত্রে তাশমীত করার প্রয়োজন ছিল না। তা সত্ত্বেও হযরত মু'আবিয়া ইবনুল হাকাম রাযি. এটা করলেন। কারণ তাঁর এ নিয়ম জানা ছিল না। তিনি সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী একজন সাহাবী। ইসলামের বিধানাবলি সবে শিক্ষা শুরু করেছেন।

فَرَمَانِي الْقَوْمُ بِأَبْصَارِهِم (এতে লোকজন আমার প্রতি তাদের দৃষ্টি নিক্ষেপ করল)। অর্থাৎ তারা তাঁর দিকে আপত্তির দৃষ্টিতে তাকাল। কেননা তিনি যে কাজ করেছেন তাতে নামায বাতিল হয়ে যায়, যদিও তা যিকির ও দু'আ। কেননা তিনি এটা বলেছেন হাঁচিদাতাকে লক্ষ্য করে তার দু'আর জবাবে। সে হিসেবে এটা মানুষের পারস্পরিক কথার মতো হল। এ জাতীয় কথা দ্বারা নামায বাতিল হয়ে যায়। যে ব্যক্তি الْحَمْدُ الله বলেছে, তার নামায বাতিল হয়নি। কারণ সে অন্য কাউকে লক্ষ্য করে তা বলেনি।

فَقُلتُ: واثُكْلَ أُمِّيَاهْ (আমি বললাম, কী হল, হায়রে আমার সন্তানহারা মা)! এর অর্থ কোনও নারী কর্তৃক তার সন্তান হারানো। যে নারীর সন্তান মারা যায় তাকে বলা হয় ثكلى।

واثُكْلَ এর শুরুর 'و' হরফটি শোক প্রকাশক অব্যয় (وَاوُ النُّدْبَةِ)। শোকের আওয়াজকে দরাজ করার জন্য এর সঙ্গে 'ا' (আলিফ) যুক্ত হয়, যেমন এখানে হয়েছে।

أُمِّيَاهْ -এর ভেতর أم (মা) শব্দটি সম্বন্ধযুক্ত হয়েছে 'ي' (আমার) উত্তম পুরুষ সর্বনামের সঙ্গে। অর্থাৎ আমার মা। তারপর আওয়াজ দরাজ করার জন্য 'ي' এর পর 'ا' হরফটি যোগ করা হয়েছে। শেষের 'ه' হরফটি সাকতার জন্য। আলিফের উচ্চারণ সুস্পষ্ট করার জন্য এটা যোগ করা হয়ে থাকে।

এটা আরবদের একটা বাকরীতি। তারা যখন কোনও বিষয়ে শোক, আক্ষেপ বা বিস্ময় প্রকাশ করে কিংবা তিরস্কার করে, তখন এরূপ বাক্য ব্যবহার করে থাকে। মায়ের সন্তানহারা হওয়ার অর্থ বক্তার নিজের মৃত্যু ঘটা। বক্তা যেন বলছে, হায়রে আমার মরণ! বাংলা ভাষায়ও বিস্ময়, তিরস্কার, আক্ষেপ ইত্যাদি ক্ষেত্রে 'হায়রে আমার মরণ' কথাটি ব্যবহৃত হয়। এ হাদীছে এ কথাটি দ্বারা হযরত মু'আবিয়া ইবনুল হাকাম রাযি. মুসল্লীদের প্রতি বিস্ময় প্রকাশ করছেন অথবা তাদেরকে তিরস্কার করছেন যে, তোমরা কেন আমার প্রতি কটাক্ষ করছ। আমি এমন কী করেছি?

فَجَعَلُوْا يَضْرِبُونَ بِأَيْدِيهِمْ عَلَى أَفْخَاذِهِمْ (তখন তারা তাদের হাত দিয়ে উরু চাপরাতে শুরু করল)। অর্থাৎ তারা এ আচরণ দ্বারা হযরত মু'আবিয়া রাযি.-কে চুপ করাতে চাইল। সম্ভবত এটা ওই সময়ের কথা, যখনও পর্যন্ত নামাযের ভেতর কারও দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য সুবহানাল্লাহ বলার বিধান দেওয়া হয়নি।

এর দ্বারা প্রমাণ হয়, নামাযের ভেতর 'সামান্য কাজ' করার দ্বারা নামায বাতিল হয় না। প্রয়োজনবশত করা হলে মাকরূহ-ও হয় না।

যাহোক হযরত মু'আবিয়া রাযি. যখন বুঝতে পারলেন তারা তাঁকে চুপ করাতে চাচ্ছে, তখন তিনি চুপ হয়ে গেলেন। তারপর যথারীতি নামায শেষ হল। নামায শেষ হলে তিনি তাঁর অনুভূতি প্রকাশ করেছেন যে, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কত উত্তম শিক্ষক! কী উত্তমভাবে তিনি তাঁর ভুল সংশোধন করে দিয়েছেন এবং তাঁকে কী মমত্বের সঙ্গে শিক্ষাদান করেছেন! এটা করতে গিয়ে তিনি না তাঁকে মেরেছেন, না তাঁকে ধমকিয়েছেন, না চেহারায় বিরক্তি ভাব প্রকাশ করেছেন। তিনি তাঁকে এই বলে শিক্ষাদান করেছেন যে-
إِنَّ هَذِهِ الصَّلَاةَ لَا يَصْلُحُ فِيْهَا شَيْءٌ مِنْ كَلَامِ النَّاسِ (এই যে নামায, এর ভেতর মানবীয় কোনও কথাবার্তা সঙ্গত নয়)। 'এই যে নামায' বলে ফরয-নফল সব নামাযই বোঝানো হয়েছে। এমনকি যেসকল কাজ নামাযের অংশবিশেষ, তাও এর অন্তর্ভুক্ত। যেমন জানাযার নামায, তিলাওয়াতের সিজদা ও শোকরের সিজদা। বলা হয়েছে, মানুষ নিজেদের মধ্যে যেসব কথাবার্তা বলে, সেরকমের কোনও কথা নামাযে সঙ্গত নয়। এর দ্বারা স্পষ্টভাবে নামাযে কথা বলাকে হারাম করে দেওয়া হয়েছে। সে কথা ইচ্ছাকৃত হোক বা অনিচ্ছাকৃত। এমনিভাবে সে কথা দ্বারা যদি নামাযের ভুল সংশোধন করাও উদ্দেশ্য হয়। যদি ইমামকে তার ভুলের বিষয়ে সচেতন করা উদ্দেশ্য হয়, তবে পুরুষ মুকতাদী তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ) বলবে আর নারী মুকতাদী হাতে তালি বাজাবে।

إِنَّمَا هِيَ التّسْبِيْحُ وَالتَّكْبِيْرُ وَقِرَاءَةُ الْقُرْآنِ (এটা তো তাসবীহ, তাকবীর ও কুরআন পাঠ)। নামাযে তাসবীহ পড়া সুন্নত। তাকবীরে তাহরীমা ফরয। বাকি সব তাকবীর সুন্নত। কুরআন পাঠ করা ফরয। নামাযে এছাড়া আরও আমল আছে। তা এখানে উল্লেখ করা হয়নি। এ তিনটি উল্লেখ করে বোঝানো হয়েছে যে, নামাযে বান্দা কেবল আল্লাহ তা'আলার অভিমুখী হয়েই থাকবে আর সে লক্ষ্যে কেবল যিকিরে রত থাকবে। তাসবীহ, তাকবীর, কুরআন তিলাওয়াত সবই যিকির। এছাড়া আর যা-কিছু পড়া হয় তাও যিকির। যেমন ছানা', রুকূ' থেকে ওঠার দু'আ, তাশাহহুদ, দুরূদ, দু'আ মা'ছুরা, দু'আ কুনূত। একজনের সঙ্গে কথা বলাটা যিকিরের পরিপন্থী কাজ। তাই নামাযে তা জায়েয হতে পারে না।

লক্ষণীয়, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের হাকীকত এবং নামাযে কী করণীয় আর কী করা যাবে না এ কথাটা বোঝানোর জন্য লম্বা-চওড়া কোনও বক্তৃতা দেননি। বরং গভীর মমতার সঙ্গে অল্প কথায় বুঝিয়ে দিয়েছেন। যতটুকু কথা বলা দরকার কেবল ততটুকুই বলেছেন। তার বেশিও নয়, কমও নয়। কাউকে শিক্ষাদান করা বা উপদেশ দেওয়ার এটাই সঠিক পন্থা।

قُلْتُ: يَا رَسُوْلَ اللهِ، إِنِّي حَدِيْثُ عَهْد بِجَاهِلِيَّةٍ 'আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি জাহিলী যুগের খুব কাছের (অর্থাৎ আমি সদ্য ইসলাম গ্রহণকারী)'। জাহিলিয়াতের যুগ মানে অজ্ঞতার যুগ। এর দ্বারা ইসলামপূর্ব যুগকে বোঝায়। সে যুগে অজ্ঞতা ছিল সর্বব্যাপী। তাই এ নাম। এ কথার দ্বারা হযরত মু'আবিয়া রাযি.-এর পক্ষ থেকে যেন ওজর দেখানো হল যে, আমি যেহেতু সদ্য ইসলাম গ্রহণ করেছি, তাই ইসলামের বিধানাবলি আমার জানা নেই। আমার জানা ছিল না যে নামাযে কথা বলা হারাম।

وَإِنَّ مِنَّا رِجَالًا يَأْتُوْنَ الْكُهَّانَ (আমাদের কিছু লোক গণকদের কাছে যাতায়াত করে)। اَلْكُهَّانُ শব্দটি كَاهِنٌ এর বহুবচন। এর অর্থ গণক, ভবিষ্যদ্বক্তা, যে-কোনও জিনের মাধ্যমে বা বিভিন্ন আলামত-ইঙ্গিতের দ্বারা ভবিষ্যতের ঘটনাবলি জানে বলে দাবি করে।

আরেক হল عَرَّافٌ (আররাফ)। এটা বলা হয় ওই ব্যক্তিকে, যে চুরি হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া মাল কোথায় কী অবস্থায় আছে তা বলতে পারে বলে দাবি করে।

قَالَ: فَلَا تَأْتِهِمْ (তিনি বললেন, তুমি তাদের কাছে যেয়ো না)। এভাবে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম গণক বা ভবিষ্যদ্বক্তার কাছে যাওয়া হারাম করে দিয়েছেন। এটা হারাম এ কারণে যে, তারা গায়েবী বিষয়ে কথা বলে। আন্দাযে ঢিল ছুঁড়লে যেমন কখনও কখনও লেগে যায়, তেমনি তাদের কথাও কখনও কখনও সত্য হয়ে যায়। বেশিরভাগই মিথ্যা হয়। দু'-চারটি সত্য হওয়ার কারণে লোক তাদের কথা বিশ্বাস করে। এতে করে পারিবারিক ও সামাজিক নানা বিশৃঙ্খলা ও অশান্তি দেখা দেয়। অনেক সময় মানুষ তাদের কথায় বিশ্বাস করে শরী'আতের বিধান পর্যন্ত অগ্রাহ্য করে আর এভাবে নিজ ঈমান ও আমল বরবাদ করে ফেলে।

জ্যোতিষশাস্ত্রও এ নিষেধাজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত। জ্যোতিষীরাও তাদের মনগড়া অনুমাননির্ভর শাস্ত্রের ভিত্তিতে মানুষকে ভবিষ্যতের সংবাদ দিয়ে থাকে, যা অধিকাংশই মিথ্যা প্রমাণিত হয়। কোনও মুমিন-মুসলিমের তাদের কাছে যাওয়া ও তাদের দিয়ে ভবিষ্যতের কোনও বিষয়ে জানার চেষ্টা করা কিছুতেই উচিত নয়। এটা সম্পূর্ণ হারাম ও জায়েয নয়। তাদের কথা বিশ্বাস করা তো ঈমানেরই পরিপন্থী।

وَمِنَّا رِجَالٌ يَتَطَيَّرُونَ (আমাদের কিছু লোক অশুভ লক্ষণে বিশ্বাস করে) । يَتَطَيَّرُونَ শব্দটির উৎপত্তি الطّيرة থেকে। এর অর্থ কোনওকিছু দ্বারা শুভ-অশুভ নির্ণয় করা। যেমন বিশেষ কোনও পাখি সম্পর্কে মনে করা যে, সেটি ডান দিকে উড়ে গেলে তা শুভতার লক্ষণ। কোনওদিকে যাত্রাকালে এরকম হলে মনে করা হয় যাত্রাটি শুভ হবে। আর যদি বামদিকে উড়ে যায়, তবে যাত্রা নাস্তি। এতে বিশ্বাসীরা সে ক্ষেত্রে যাত্রা স্থগিত রাখে।

قَالَ : ذَاكَ شَيْءٌ يَجِدُونَهُ فِي صُدُورِهِمْ فَلَا يَصُدَّنَّهُمْ তিনি বললেন, এটা এমন একটা জিনিস, যা তারা তাদের অন্তরে অনুভব করে। তবে তা যেন তাদেরকে (ঈপ্সিত কাজে) বাধা না দেয়'। অর্থাৎ এরকম একটা ধারণা প্রচলিত থাকায় তাদের অন্তরে স্বাভাবিকভাবেই এটা এসে যায়। যেসব বিষয়কে তারা অশুভ কিছুর লক্ষণ মনে করে, সেগুলো দেখতে পেলে অযাচিতভাবেই মনের মধ্যে এসে যায় যে, অশুভ কিছু ঘটবে। তো মনের এই অনুভূতি যেহেতু তাদের ইচ্ছার অতীত, অনিচ্ছাকৃতভাবেই তা জন্ম নেয়, তাই এতে কোনও দোষ নেই। দোষ হল সে কারণে কাজ থেকে বিরত থাকা, যেমন যাত্রা মুলতবি রাখা। কেননা কাজ করা বা না করাটা মানুষের ইচ্ছায় হয়ে থাকে। এখন কেউ যদি তাদের ধারণা অনুযায়ী অশুভ কোনও লক্ষণের ভিত্তিতে কোনও কাজ করা হতে বিরত থাকে, তবে সে যেন আল্লাহর ইচ্ছা ও তাকদীরের উপর ওই ভিত্তিহীন অশুভ লক্ষণকে প্রাধান্য দিল। যেন তার বিশ্বাস ওই অশুভ লক্ষণেরও কোনও ক্ষমতা আছে। এটা সম্পূর্ণ জাহেলী ধারণা ও ঈমানবিরোধী বিশ্বাস। শয়তানই মানুষের অন্তরে এ প্ররোচনা যোগায়। কাজেই এ ধারণাকে কর্মে পরিণত করা হতে বিরত থাকা অবশ্যকর্তব্য।

২. হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বাদীকে জিজ্ঞাসা করলেন— আল্লাহ কোথায় ? বাদী বললেন, “আকাশে বা আকাশের উপরে"

এই হাদিসের বাহ্যিক অর্থ প্রয়োগ করে কেউ কেউ আল্লাহ আসমানে আছেন তা দলিল দিয়ে থাকেন।
আল্লাহ আসমানে আছেন এ বিষয়ে শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, ”কেউ যদি বিশ্বাস করে যে, আল্লাহ তায়ালা আসমানে রয়েছেন, আসমান দ্বারা পরিবেষ্টিত বা আবদ্ধ রয়েছেন, তবে সে পথভ্রষ্ট, বিদযাতী, মূর্খ”।-[মাজমুউল ফাতাওয়া-৫/২৫৮]

বাদীর হাদীস সম্পর্কে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের বুঝঃ
১. ইমাম কুরতুবী রহ. বলেন— রাসুল ﷺ বাদীকে জিজ্ঞাসা করা "আল্লাহ কোথায়" এই প্রশ্নে রাসুল ﷺ বাদীর বুঝের ক্ষমতা অনুসারে নিজের অবস্থান থেকে নীচে নেমে প্রশ্ন করেন। কারণ তাঁর উদ্দেশ্য ছিল বাদীর থেকে এমন কিছু প্রকাশ করা যা এটা বুঝাবে, সে জমিনে থাকা বিভিন্ন মূর্তি এবং পাথরের উপাসনা করেন না। সুতরাং তাঁর কথার অর্থ হলো “আল্লাহ ঐ উপাস্যদের মাঝে নয় যারা জমিনে আছে"। কারণ أین শব্দটা দ্বারা কোন স্থান সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় সুতরাং এটাকে তাঁর প্রকৃত অর্থে আল্লাহর সাথে ব্যবহার সহিহ হাবে না। কারণ আল্লাহ স্থান থেকে পবিত্র। যেমনি ভাবে তিনি সময় থেকে পবিত্র। বরং তিনি সময় ও স্থানের স্রষ্টা। আর তিনি ছিলেন যখন কোন সময় বা স্থান ছিল না। এবং এখনাে তিনি সেই অবস্থানেই আছেন এবং বাদীর বুঝে ঘাটতি থাকার পরেও তাকে সেই অবস্থাতে রেখে দেওয়া হয় যেন সে পরে তা বুঝতে সক্ষম হয় এবং তার বক্ষ উন্মুক্ত হয়। কারণ তিনি যদি ঐ অবস্থায় বাদীকে বলতেন, আল্লাহ হলেন এমন এক সত্ত্বা যার উপর স্থান বা সময়ের ব্যবহার সম্ভ। তাহলে বাদীর উপর এই আশঙ্কা ছিল যে সে এই বিশ্বাস করে ফেলত যে, আল্লাহ নেই। কারণ যে কোন বিবেকবান ব্যক্তি এটা গ্রহণ এবং তা সঠিক ভাবে বুঝতে পারে না। এটা সঠিক ভাবে ঐ আলেমরাই বুঝবেন যাদের বক্ষকে আল্লাহ তার হেদায়েতের জন্য উন্মুক্ত করেছেন এবং নিজ মারেফাতের নূর দ্বারা তাঁদের হৃদয়কে আলােকিত করেছেন এবং নিজ তাওফিক এবং সাহায্য দ্বারা তাঁদেরকে সহায়তা করেছেন।[২]

২. ইমাম ইবনুল জাওযি বলেন— "ওলামাদের নিকট সুসাব্যস্ত যে, আল্লাহ তায়ালাকে উপর নীচ বেষ্টন করতে পারে না। এবং বিভিন্ন প্রান্তরও তাকে বেষ্টন করতে পারে না। এখন প্রশ্ন আসতে পাবে বাদীর হাদিসে তাে আছে "আকাশের উপরে" ?
ইমাম ইবনুল জাওযি রহ. তাবিল করে জবাব দিচ্ছেন—
"রাসূল ﷺ তাঁর ইশারার মাধ্যমে বুঝতে পরেছেন, সে আল্লাহকে সম্মান করে।[৩]

৩. ইমাম রাজি রহ. উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টা আরাে স্পষ্ট করেছেন। ইমাম রাজি বলেন— "আকাশের উপরে" এই "উপর" দ্বারা উদ্দেশ্য হচ্ছে মর্যাদাগত দিক থেকে উঁচু হওয়া। যেমনি বলা হয় অমুক আসমানে আছে এর অর্থ হল তাঁর মর্যাদা ও সম্মান অনেক উঁচু, এটা বুঝানাে।[৪]

৪. ইমাম নববী রহ. বলেন— বাদীর "আকাশের উপরে" বলা দ্বারা রাসুল ﷺ বুঝতে পরেছেন, সে আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী এবং সে বিভিন্ন মূর্তি পূজারী নয়।[৫]

৫. ইমাম গাজ্জালী রহ. বলেন— বাদী আসমানের দিকে ঈশারা দেওয়ার পরেও রাসুল ﷺ তাকে মুমিনা হুমুক দিয়েছেন কারণ একজন বােবা মহিলা “উঁচু মর্যাদা” বুঝানাের জন্য উপরের দিকে ঈশারা করা ছাড়া তার আর কোন উপায় নেই। এবং তার প্রতি এই ধারণা ছিল যে, সে বিভিন্ন মূর্তির উপাসনা করতে পারে এবং মূর্তিদের ঘরে যেই সমস্ত উপাস্য থাকে তাদের উপাসনা করতে পারে কিন্তু তিনি আসমানের দিকে ঈশারা করার মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলেন যে, তার উপাস্য মূর্তিদের ঘরে নয় যেমন বিশ্বাস রাখে অন্যরা।

৬. ইমাম কাজী ইয়াজ রহ. বলেন— সকল মুসলমানদের মাঝে অর্থাৎ সকল ফকীহ মুহাদ্দিস, মুতাকাল্লিম, মুনাজীর, মুকাল্লিদ, কারাে মাঝে কোন ইখতেলাফ বা মতবিরােধ নেই যে, বিভিন্ন আয়াতে বা হাদিসে যে এসেছে যে الله فی السماء বা "আল্লাহ আসমানে"–এই গুলাে তার বাহ্যিক অর্থে হবে না। বরং সকলের নিকট এই গুলাে তাবিল হবে। অর্থাৎ বাহ্যিক অর্থে ধরা এটা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মানহাজ নয়।[৬]

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কেউ হাঁচি দিলে সে اَلْحَمْدُ لِلَّهِ বলবে। যে তা শুনবে, সে يَرْحَمُكَ اللهُ বলে তার জবাব দেবে।

খ. নামাযে কোনও কথা বলা জায়েয নয়। এমনকি হাঁচিদাতার اَلْحَمْدُ لِلَّهِ বলার জবাবে يَرْحَمُكَ اللهُ বলাও নিষেধ।

গ. শিক্ষার্থীর প্রতি শিক্ষককে মমত্ববোধের পরিচয় দিতে হবে। নিতান্ত প্রয়োজন না হলে শিক্ষার্থীর উপর রাগ প্রকাশ করবে না।

ঘ. গণক, জ্যোতিষী ও ভবিষ্যদ্বক্তার কাছে যাওয়া সম্পূর্ণ হারাম ও নাজায়েয।

ঙ. কোনও অশুভ লক্ষণের ভিত্তিতে কোনও কাজ থেকে বিরত থাকা ইসলামসম্মত নয়।

চ. শিক্ষাদান বা ওয়াজ-নসীহতে বক্তব্য হওয়া উচিত পরিমিত। এমন সংক্ষেপ যাতে না হয়, যদ্দরুন বিষয়বস্তু অস্পষ্ট থেকে যায়। আবার এমন দীর্ঘ করাও উচিত নয়, যদ্দরুন শিক্ষার্থী ও শ্রোতা বিরক্তি বোধ করে।
__________
১। সহিহ মুসলিম -হা/৫৩৭
২। আল মুফহিম: ২/১৪৩-১৪৪
৩। দাফউ শুবহাতিত তাশবিহ-২৭
৪। আল মুনতাকা-৮/৩২০
৫। আল মিনহাজ-৫/৩৩
৬। আল ইকমাল-২/৪৬৫
১. ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন