কিতাবুস সুনান (আলমুজতাবা) - ইমাম নাসায়ী রহঃ
১২. তাত্ববীক্ব [রুকুতে দুইহাত হাঁটুদ্বয়ের মাঝে রাখা] এবং অবশিষ্ট নামাযের বিবরণ
হাদীস নং: ১১৫৪
আন্তর্জাতিক নং: ১১৫৪
হাঁটু উঠানোর পূর্বে হাত উঠানো।
১১৫৭। ইসহাক ইবনে মনসুর (রাহঃ) ......... ওয়ায়িল ইবনে হুজর (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে দেখেছি, যখন তিনি সিজদা করতেন তখন তার হাটুদ্বয় হাতদ্বয়ের পূর্বে রাখতেন। আর যখন তিনি উঠতেন তখন উভয় হাটু উঠানোর পূর্বে উভয় হাত উঠাতেন। আবু আব্দুর রহমান বলেন, ইয়াযীদ ইবনে হারুন ছাড়া আর কেউ এ হাদীস (জনৈক রাবী) থেকে বর্ণনা করেননি। আল্লাহই সর্বজ্ঞা।
أَخْبَرَنَا إِسْحَاقُ بْنُ مَنْصُورٍ، قَالَ أَنْبَأَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ، قَالَ أَنْبَأَنَا شَرِيكٌ، عَنْ عَاصِمِ بْنِ كُلَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ وَائِلِ بْنِ حُجْرٍ، قَالَ رَأَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم إِذَا سَجَدَ وَضَعَ رُكْبَتَيْهِ قَبْلَ يَدَيْهِ وَإِذَا نَهَضَ رَفَعَ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ . قَالَ أَبُو عَبْدِ الرَّحْمَنِ لَمْ يَقُلْ هَذَا عَنْ شَرِيكٍ غَيْرُ يَزِيدَ بْنِ هَارُونَ وَاللَّهُ تَعَالَى أَعْلَمُ .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূলুল্লাহ স.-এর আমল ছিলো সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত রাখা। আর সিজদা থেকে উঠার সময় এর বিপরীত করা। ইমাম তিরমিযী রহ. এ হাদীসের আলোচনায় আরো মনত্মব্য করেছেন যে, অধিকাংশ উলামায়ে কিরামের আমলও এ হাদীস অনুযায়ী।
حَدَّثَنَا يَعْلَى عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ أَنَّ عُمَرَ كَانَ يَقَعُ عَلَى رُكْبَتَيْهِ
হযরত উমার রা. হাঁটুর উপর ভর করে (সিজদার জন্য) নীচু হতেন (ইবনে আবী শাইবা: ২৭১৯)
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, হযরত উমার রা.-এর আমল ছিলো সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু রাখা।
حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ مُغِيرَةَ، عَنْ إبْرَاهِيمَ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الرَّجُلِ يَضَعُ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ ؟ فَكَرِهَ ذَلِكَ، وَقَالَ: هَلْ يَفْعَلُهُ إِلاَّ مَجْنُونٌ ؟!.
হযরত ইবরাহীম নাখাঈ রহ.কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, সিজদার সময় হাঁটুর আগে হাত রাখে। তিনি এটাকে অপছন্দ করলেন এবং বললেন: পাগল ছাড়া কেউ এমন করে? (ইবনে আবী শাইবা: ২৭২২)
উপরিউক্ত সকল হাদীস এবং সাহাবা ও তাবিঈগণের আমল থেকে প্রমাণিত হলো যে, সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত রাখতে হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৪৯৭)
উল্লিখিত পদ্ধতির বিপরীতে সিজদা করার সময় আগে হাত এবং পরে হাঁটু রাখা, আর উঠার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত উঠানোর আমলও হাদীসে বর্ণিত আছে। তবে আমরা এ হাদীসকে আমলের জন্য বেশী উপযোগী মনে করি। কারণ ইমাম তিরমিযী রহ. এ হাদীসটিকে হাসান বলার সাথে সাথে এ হাদীসের উপর অধিকাংশ আহলে ইলম-এর আমল রয়েছে বলেও উলেস্নখ করেছেন। আমীরুল মুমিনীন হযরত উমার রা.-এর আমলও এটাই। ইবনে খুযাইমা রহ. হযরত সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস রা. থেকে এ বিষয়ক একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন: كنا نضع اليدين قبل الركبتين فأمرنا بالركبتين قبل اليدين “আমরা হাঁটুর পূর্বে হাত রাখতাম। অতঃপর আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হলো হাতের পূর্বে হাঁটু রাখতে”। (সহীহ ইবনে খুযাইমা: ৬২৮) এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত রাখার হাদীসটি রহিত। অবশ্য সহীহ ইবনে খুযাইমার এ হাদীসটি সহীহ নয়। সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত রাখার ব্যাপারে হযরত ওয়ায়েল বিন হুজর রা. থেকে বর্ণিত তিরমিযী-২৬৮ নং হাদীসটি মিশকাত শরীফের ৮৯৮ নাম্বারেও বর্ণিত হয়েছে। এরপর হযরত আবু হুরায়রা রা. অপর একটি হাদীসে এর বিপরীতে সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত ও পরে হাটু রাখার আমল বর্ণনা করার পর মাসাবীহুছ্ছুন্নাহর লেখক ইমাম ইমাম খত্তাবী রহ.-এর বরাত দিয়ে বলেন যে, তিনি হাদীসটিকে রহিত বলেছেন। অর্থাৎ সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত ও পরে হাটু রাখার আমল বহাল নয়; বরং রহিত।
حَدَّثَنَا يَعْلَى عَنِ الأَعْمَشِ عَنْ إبْرَاهِيمَ عَنِ الأَسْوَدِ أَنَّ عُمَرَ كَانَ يَقَعُ عَلَى رُكْبَتَيْهِ
হযরত উমার রা. হাঁটুর উপর ভর করে (সিজদার জন্য) নীচু হতেন (ইবনে আবী শাইবা: ২৭১৯)
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, হযরত উমার রা.-এর আমল ছিলো সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু রাখা।
حَدَّثَنَا ابْنُ فُضَيْلٍ، عَنْ مُغِيرَةَ، عَنْ إبْرَاهِيمَ؛ أَنَّهُ سُئِلَ عَنِ الرَّجُلِ يَضَعُ يَدَيْهِ قَبْلَ رُكْبَتَيْهِ ؟ فَكَرِهَ ذَلِكَ، وَقَالَ: هَلْ يَفْعَلُهُ إِلاَّ مَجْنُونٌ ؟!.
হযরত ইবরাহীম নাখাঈ রহ.কে এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলো যে, সিজদার সময় হাঁটুর আগে হাত রাখে। তিনি এটাকে অপছন্দ করলেন এবং বললেন: পাগল ছাড়া কেউ এমন করে? (ইবনে আবী শাইবা: ২৭২২)
উপরিউক্ত সকল হাদীস এবং সাহাবা ও তাবিঈগণের আমল থেকে প্রমাণিত হলো যে, সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত রাখতে হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (শামী: ১/৪৯৭)
উল্লিখিত পদ্ধতির বিপরীতে সিজদা করার সময় আগে হাত এবং পরে হাঁটু রাখা, আর উঠার সময় আগে হাঁটু এবং পরে হাত উঠানোর আমলও হাদীসে বর্ণিত আছে। তবে আমরা এ হাদীসকে আমলের জন্য বেশী উপযোগী মনে করি। কারণ ইমাম তিরমিযী রহ. এ হাদীসটিকে হাসান বলার সাথে সাথে এ হাদীসের উপর অধিকাংশ আহলে ইলম-এর আমল রয়েছে বলেও উলেস্নখ করেছেন। আমীরুল মুমিনীন হযরত উমার রা.-এর আমলও এটাই। ইবনে খুযাইমা রহ. হযরত সা’দ বিন আবী ওয়াক্কাস রা. থেকে এ বিষয়ক একটি হাদীস উল্লেখ করেছেন: كنا نضع اليدين قبل الركبتين فأمرنا بالركبتين قبل اليدين “আমরা হাঁটুর পূর্বে হাত রাখতাম। অতঃপর আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হলো হাতের পূর্বে হাঁটু রাখতে”। (সহীহ ইবনে খুযাইমা: ৬২৮) এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত রাখার হাদীসটি রহিত। অবশ্য সহীহ ইবনে খুযাইমার এ হাদীসটি সহীহ নয়। সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত রাখার ব্যাপারে হযরত ওয়ায়েল বিন হুজর রা. থেকে বর্ণিত তিরমিযী-২৬৮ নং হাদীসটি মিশকাত শরীফের ৮৯৮ নাম্বারেও বর্ণিত হয়েছে। এরপর হযরত আবু হুরায়রা রা. অপর একটি হাদীসে এর বিপরীতে সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত ও পরে হাটু রাখার আমল বর্ণনা করার পর মাসাবীহুছ্ছুন্নাহর লেখক ইমাম ইমাম খত্তাবী রহ.-এর বরাত দিয়ে বলেন যে, তিনি হাদীসটিকে রহিত বলেছেন। অর্থাৎ সিজদায় যাওয়ার সময় আগে হাত ও পরে হাটু রাখার আমল বহাল নয়; বরং রহিত।
.


বর্ণনাকারী: