কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

২৭. পোশাক-পরিচ্ছদের ইসলামী বিধান

হাদীস নং: ৪০৪০
আন্তর্জাতিক নং: ৪০৮৪
২৫. লুঙ্গী পাজামা ঝুলিয়ে পায়ের গিঁঠের নীচে পরা।
৪০৪০. মুসাদ্দাদ (রাহঃ) .... জাবির ইবনে সালিম (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা আমি এমন এক লোককে দেখতে পাই, তিনি যা বলতেন লোকেরা কবুল করতো। আমি জিজ্ঞাসা করিঃ এ ব্যক্তি কে? তারা বলেনঃ রাসূলুল্লাহ (ﷺ)। তখন আমি তাঁকে দু’বার বলিঃ আলাইকাস সালাম ইয়া রাসূলাল্লাহ। তিনি বলেনঃ আলাইকাস সালাম বলো না; কেননা মৃতদের এভাবে সালাম করা হয়। তুমি বলঃ আস্-সালামু আলাইকা। আমি জিজ্ঞাসা করিঃ আপনি কি আল্লাহর রাসূল? তিনি বলেনঃ হ্যাঁ, আমি সেই আল্লাহর রাসূল, যিনি বিপদের সময় তুমি দুআ করলে তোমার বিপদ দূর করে দেন এবং তোমার উপর দুর্ভিক্ষ আপতিত হলে, তোমার দুআর বরকতে তিনি খাদ্য-শস্য ও তৃণলতা পয়দা করেন। আর যখন তুমি এমন কোন স্থানে থাক, যার বিজন মরুভূমিতে তোমার উট হারিয়ে যায়, তখন তোমার দুআর ফলে তিনি তা তোমার কাছে ফিরিয়ে দেন। রাবী বলেন, তখন আমি বলিঃ আমাকে কিছু নসিহত করুন। তিনি বলেনঃ তুমি কখনো কাউকে গালি দেবে না।

রাবী জাবির (রাযিঃ) বলেনঃ এরপর থেকে আমি কোন দিন কোন স্বাধীন ব্যক্তি, গোলাম, উট এবং বকরীকে গালি দেইনি। তিনি আরো বলেনঃ তুমি কখনো কোন উত্তম বস্তুকে অধম মনে করবে না, যদি তুমি তোমার ভাইয়ের সাথে কথা বলার সময় হাসিমুখে কথা বল, এটাও একটা ভাল কাজ। আর তুমি তোমার লুঙ্গী ও পাজামাকে পায়ের গোছার উপর রাখবে, যদি তা সম্ভব না হয়, তবে পায়ের গিঁট পর্যন্ত রাখবে। সাবধান, তুমি লুঙ্গী বা পাজামাকে পায়ের গিঁটের নীচ পর্যন্ত ঝুলিয়ে পরিধান করবে না। কেননা, এতে গর্ব ও অহংকার প্রকাশ পায় এবং মহান আল্লাহ গর্বকারীকে পছন্দ করেন না। আর যদি কেউ তোমাকে গালি দেয় এবং তোমার গোপন দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে দেয়, তবে তুমি তার গোপন দোষ-ত্রুটি যা জান তা প্রকাশ করবে না। কেননা, তার কৃতকর্মের ফল সে ভোগ করবে।
باب مَا جَاءَ فِي إِسْبَالِ الإِزَارِ
حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى، عَنْ أَبِي غِفَارٍ، حَدَّثَنَا أَبُو تَمِيمَةَ الْهُجَيْمِيُّ، - وَأَبُو تَمِيمَةَ اسْمُهُ طَرِيفُ بْنُ مُجَالِدٍ - عَنْ أَبِي جُرَىٍّ، جَابِرِ بْنِ سُلَيْمٍ قَالَ رَأَيْتُ رَجُلاً يَصْدُرُ النَّاسُ عَنْ رَأْيِهِ، لاَ يَقُولُ شَيْئًا إِلاَّ صَدَرُوا عَنْهُ قُلْتُ مَنْ هَذَا قَالُوا هَذَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم . قُلْتُ عَلَيْكَ السَّلاَمُ يَا رَسُولَ اللَّهِ مَرَّتَيْنِ . قَالَ " لاَ تَقُلْ عَلَيْكَ السَّلاَمُ . فَإِنَّ عَلَيْكَ السَّلاَمُ تَحِيَّةُ الْمَيِّتِ قُلِ السَّلاَمُ عَلَيْكَ " . قَالَ قُلْتُ أَنْتَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " أَنَا رَسُولُ اللَّهِ الَّذِي إِذَا أَصَابَكَ ضُرٌّ فَدَعَوْتَهُ كَشَفَهُ عَنْكَ وَإِنْ أَصَابَكَ عَامُ سَنَةٍ فَدَعَوْتَهُ أَنْبَتَهَا لَكَ وَإِذَا كُنْتَ بِأَرْضٍ قَفْرَاءَ أَوْ فَلاَةٍ فَضَلَّتْ رَاحِلَتُكَ فَدَعَوْتَهُ رَدَّهَا عَلَيْكَ " . قُلْتُ اعْهَدْ إِلَىَّ . قَالَ " لاَ تَسُبَّنَّ أَحَدًا " . قَالَ فَمَا سَبَبْتُ بَعْدَهُ حُرًّا وَلاَ عَبْدًا وَلاَ بَعِيرًا وَلاَ شَاةً . قَالَ " وَلاَ تَحْقِرَنَّ شَيْئًا مِنَ الْمَعْرُوفِ وَأَنْ تُكَلِّمَ أَخَاكَ وَأَنْتَ مُنْبَسِطٌ إِلَيْهِ وَجْهُكَ إِنَّ ذَلِكَ مِنَ الْمَعْرُوفِ وَارْفَعْ إِزَارَكَ إِلَى نِصْفِ السَّاقِ فَإِنْ أَبَيْتَ فَإِلَى الْكَعْبَيْنِ وَإِيَّاكَ وَإِسْبَالَ الإِزَارِ فَإِنَّهَا مِنَ الْمَخِيلَةِ وَإِنَّ اللَّهَ لاَ يُحِبُّ الْمَخِيلَةَ وَإِنِ امْرُؤٌ شَتَمَكَ وَعَيَّرَكَ بِمَا يَعْلَمُ فِيكَ فَلاَ تُعَيِّرْهُ بِمَا تَعْلَمُ فِيهِ فَإِنَّمَا وَبَالُ ذَلِكَ عَلَيْهِ " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি. নিজ গোত্রীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মদীনা মুনাউওয়ারায় আগমন করেন। তিনি মসজিদে ঢুকলেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইছ ওয়াসাল্লামকে তিনি চিনতেন না। এ-ই প্রথম রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামে সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে আসা। তিনি দেখলেন মসজিদে এক ব্যক্তি নীরবে বসে আছেন। তিনি নিজ থেকে কোনও কথা বলছেন না। লোকজন তাঁর কাছে আসে আর তাঁতে কিছু জিজ্ঞেস করে। তাঁর মতামত জানতে চায়। তিনি যে মত দেন তা নিয়ে তারা ফিরে যায়। হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি.-এর ভাষাটি বড় চমৎকার। তিনি বলেন- رأيت رجلا يصدر الناس عن رأيه (আমি এক ব্যক্তিকে দেখলাম, মানুষ ফিরে যায় যার মত নিয়ে)। صدر- يصدر এর প্রকৃত ব্যবহার হয় কুয়া থেকে পানি পান করে ফিরে যাওয়া অর্থে। কুয়া পানির আধার। সেকালে মানুষ পানি সংগ্রহ বা পানি পান করার জন্য কুয়ায় চলে যেত এবং কুয়ার পানি দ্বারা তৃষ্ণা নিবারণ করে আপন পথে ফিরে যেত। তো কুয়া যেমন পানির আধার, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বক্ষদেশ তেমনি জ্ঞান-প্রজ্ঞার আধার।

صدر এর অর্থ বক্ষদেশও বটে। সাহাবায়ে কেরামের ছিল দীন সম্পর্কে জানার তীব্র কৌতূহল। তাদের ছিল দীনী ইলমের বিপুল পিপাসা। তারা সে পিপাসা মেটানোর জন্য নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সামনে হাজির হতেন এবং তাঁর বক্ষদেশ থেকে যে ইলমের ফল্গুধারা প্রবাহিত হত, তা দ্বারা জ্ঞানের পিপাসা মিটিয়ে আপন আপন জায়গায় ফিরে যেতেন।

মসজিদের ভেতর এ দৃশ্য দেখে হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি.-এর কৌতূহল হল। ওই ব্যক্তি কে, যার মতামতের মুখাপেক্ষী সকলে? তিনি লোকজনকে জিজ্ঞেসই করে ফেললেন যে, ইনি কে? তারা জানাল, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। সঙ্গে সঙ্গে তিনি সালাম দিলেন। কিন্তু সালাম দেওয়ার নিয়ম তাঁর জানা ছিল না। তিনি বললেন عَلَيْكَ السَّلَامُ يَا رَسُولَ اللهِ (ইয়া রাসূলাল্লাহ। আপনার প্রতি সালাম)। তিনি এভাবে দু'বার সালাম দিলেন। তিরমিযী শরীফের বর্ণনায় আছে তিনবার। তাঁর এ সালাম ইসলামের শিক্ষা মোতাবেক হয়নি। কী ত্রুটি এখানে হয়েছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করে বললেন-
عَلَيْكَ السَّلام)لا تَقُلْ عَلَيْكَ السَّلامُ، عَلَيْكَ السَّلَامُ تَحِيَّةُ الْمَوْتَىবলো না। عَلَيْكَ السَّلَامُ মৃতদের অভিবাদন)। অর্থাৎ প্রথমে عَلَيْكَ এবং পরে السَّلَام বলার দ্বারা মৃতদের সালাম দেওয়া হয়ে থাকে। আমি তো জীবিত মানুষ। আমাকে এভাবে সালাম দেবে কেন? আমাকে অর্থাৎ জীবিতদের তো সালাম দেবে السَّلَامُ عَلَيْكَ বলে। অর্থাৎ প্রথমে হবে السَّلَامُ এবং পরে عَلَيْكَ।

عَلَيْكَ এর অর্থ আপনার উপর। এটা একজনের বেলায়। একাধিক ব্যক্তির বেলায় হবে عَلَيْكم (আপনাদের উপর)। তবে একজনের বেলায়ও عَلَيْكُمْ বলা উত্তম। কেননা ব্যক্তি একজন হলেও তার সঙ্গে দু'জন ফিরিশতা থাকে। তাই সালামের ক্ষেত্রে তাদেরকেও যোগ করে নেওয়া চাই।

প্রকাশ থাকে যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে বলেছেন عَلَيْكَ السَّلامُ মৃতদের অভিবাদন, তার মানে এ নয় যে, মৃতদেরকে এভাবে সালাম দেওয়া নিয়ম। প্রকৃতপক্ষে ইসলামে জীবিত ও মৃত সকলের ক্ষেত্রেই সালামের পদ্ধতি একই। অর্থাৎ السَّلَامُ عَلَيْكُمْ বলা। অর্থাৎ اَلسَّلَامُ শব্দটি জীবিত ও মৃত উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রথমে হবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কবরস্থানে গিয়ে এভাবেই সালাম দিতেন। হাদীছে কবরস্থানে গিয়ে সালাম দেওয়ার নিয়ম এভাবেই শেখানো হয়েছে। তাহলে প্রশ্ন দাঁড়ায়, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে বললেন এটা মৃতদের সালাম? আসলে এর দ্বারা তিনি জাহিলী যুগের নিয়মের প্রতি ইশারা করেছেন। সেকালে মৃতদের সালাম দেওয়ার রেওয়াজ এরকমই ছিল। অর্থাৎ اَلسَّلَامُ শব্দটি পরে বলা হত। জাহিলী যুগের কবি-সাহিত্যিকদের শোকগাঁথায় এর উল্লেখ পাওয়া যায়। সারকথা জাহিলী যুগে জীবিতদের সালাম মৃতদের সালাম থেকে আলাদা হত। ইসলামে সেরকম নয়।

হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি. নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনি কি আল্লাহর রাসূল? অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা কি আপনাকে তাঁর বার্তাবাহী করে আমাদের কাছে পাঠিয়েছেন? এর উত্তরে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন যে, হাঁ, আমি আল্লাহর রাসূল। সেইসঙ্গে তিনি আল্লাহ তা'আলার কয়েকটি গুণেরও উল্লেখ করলেন। যেমন বললেন-
أَنَا رَسُولُ اللهِ الَّذِي إِذَا أَصَابَكَ ضُرٌّ فَدَعَوْتَهُ كَشَفَهُ عَنْكَ ( আমি সেই আল্লাহর রাসুল, যাঁকে তুমি কোনও কষ্টে পড়ে ডাক, ফলে তিনি তোমার কষ্ট দূর করে দেন)। অর্থাৎ অসুখ-বিসুখ বা অন্য কোনও বিপদ-আপদে মানুষের শেষ ভরসা আল্লাহই। কাফের- বেঈমান পর্যন্ত যখন সকল উপায়-উপকরণ থেকে হতাশ হয়ে যায়, তখন মুক্তির জন্য কেবল আল্লাহ তা'আলাকেই ডাকে। যেমন ইরশাদ হয়েছে-
هُوَ الَّذِي يُسَيِّرُكُمْ فِي الْبَرِّ وَالْبَحْرِ حَتَّى إِذَا كُنْتُمْ فِي الْفُلْكِ وَجَرَيْنَ بِهِمْ بِرِيحٍ طَيِّبَةٍ وَفَرِحُوا بِهَا جَاءَتْهَا رِيحٌ عَاصِفٌ وَجَاءَهُمُ الْمَوْجُ مِنْ كُلِّ مَكَانٍ وَظَنُّوا أَنَّهُمْ أُحِيطَ بِهِمْ دَعَوُا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ لَئِنْ أَنْجَيْتَنَا مِنْ هَذِهِ لَنَكُونَنَّ مِنَ الشَّاكِرِينَ
'তিনি তো আল্লাহই, যিনি তোমাদেরকে স্থলেও ভ্রমণ করান এবং সাগরেও। এভাবে তোমরা যখন নৌকায় সওয়ার হও আর নৌকাগুলো মানুষকে নিয়ে অনুকূল বাতাসে পানির উপর বয়ে চলে এবং তারা তাতে আনন্দমগ্ন হয়ে পড়ে, তখন হঠাৎ তার উপর আপতিত হয় তীব্র বায়ু এবং সবদিক থেকে তাদের দিকে ছুটে আসে তরঙ্গ এবং তারা মনে করে সবদিক থেকে তারা পরিবেষ্টিত হয়ে পড়েছে, তখন তারা খাঁটিমনে কেবল আল্লাহর প্রতি বিশ্বাসী হয়ে শুধু তাঁকেই ডাকে (এবং বলে, হে আল্লাহ।) তুমি যদি এই (অর্থাৎ এই বিপদ) থেকে আমাদেরকে মুক্তি দাও, তবে আমরা অবশ্যই কৃতজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত হব। (সূরা ইয়ূনুস, আয়াত ২২)

এরূপ কঠিন মুহূর্তে মানুষকে রক্ষা করতে পারেন কেবল আল্লাহ তা'আলাই সুতরাং ইরশাদ হয়েছে-
أَمَّنْ يُجِيبُ الْمُضْطَرَّ إِذَا دَعَاهُ وَيَكْشِفُ السُّوءَ
'তবে কে তিনি, যিনি কোনও আর্ত যখন তাকে ডাকে, তার ডাকে সাড়া দেন ও তার কষ্ট দূর করে দেন।' (সূরা নামল, আয়াত ৬২)

আরও ইরশাদ হয়েছে-
وَإِنْ يَمْسَسْكَ اللَّهُ بِضُرٍّ فَلَا كَاشِفَ لَهُ إِلَّا هُوَ
'আল্লাহ যদি তোমাকে কষ্ট দান করেন, তবে স্বয়ং তিনি ছাড়া তা মোচনকারী আর কেউ নেই। (সূরা আন'আম, আয়াত ১৭)

আল্লাহ তা'আলার পরিচয় সম্পর্কে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি.-কে আরও বলেন إذا أصابك عام سنة فدعوته أنبتها لك (যাঁকে তুমি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়ে ডাক, ফলে তিনি তোমার জন্য শস্য উৎপন্ন করেন)। অর্থাৎ যদি খরা দেখা দেয়, বৃষ্টি না হওয়ার দরুন জমি শুকিয়ে যায়, ফলে চাষাবাদ করা অসম্ভব হয়ে দাঁড়ায়, না শস্যক্ষেত্রে শস্য জন্মায় আর না বাগানে ফল-ফলাদি উৎপন্ন হয়, এভাবে দুর্ভিক্ষ ছড়িয়ে পড়ে এবং খাদ্যের অভাবে মানুষ হাহাকার করতে থাকে, তখন আল্লাহ ছাড়া কে আছে যে বৃষ্টি দিয়ে ভূমিকে সুজলা-সুফলা করে তুলতে পারে? এসব তো ঘোর কাফেরও উপলব্ধি করতে পারে। তাই ক্ষুধার্ত মানুষ তখন আর্তস্বরে আল্লাহ তা'আলাকে ডাকতে থাকে। তিনি মানুষের ডাকে সাড়া দিয়ে বৃষ্টি বর্ষণ করেন। ফলে জমি উর্বর হয়ে ওঠে, মানুষ চাষাবাদে ব্যস্ত হয়ে যায় আর দেখতে না দেখতে শস্যক্ষেত্র ও বাগ-বাগিচা ফল-ফসলে ভরে ওঠে।

তারপর প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- وإذا كنت بأرض قفر أو فلاة، فضلت راحلتك فدعوته ردها عليك (এবং যাঁকে তুমি কোনও মরুভূমিতে থাকা অবস্থায় তোমার সওয়ারী হারিয়ে গেলে ডাক, ফলে তিনি সেটি তোমাকে ফিরিয়ে দেন)। জানা কথা, মরুভূমিতে না আছে গাছ-বৃক্ষ, না জনমানুষ। যেদিকে চোখ যায় শুধু ধু-ধু মাঠ। মাঝেমধ্যে কোথাও ক্ষুদ্র ঝোঁপঝাড়। উটসওয়ার দিগন্তবিস্তারি সেই শূন্যপ্রান্তর দিয়ে চলার সময় কখনও কখনও ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তখন কোনও গাছের ছায়ায় ক্ষণিকের জন্য বিশ্রাম নেয়। বিশ্রাম শেষে আবার সে উটের পিঠে চড়ে আপন লক্ষ্যস্থলের দিকে যাত্রা করবে। তাই নিজ মালসামানা কিছুই নামায় না। সবই উটের পিঠে থাকে। এবার চিন্তা করুন মরুভূমির সেই পথিক বিশ্রাম শেষে চোখ খুলে যদি দেখে তার উটটি সেখানে নেই, সামনে-পেছনে চারদিকে চোখ বুলায়, কিন্তু কোথাও সেটির পাত্তা নেই, এ অবস্থায় সে লোকটির মনের হাল কেমন হতে পারে? তার খাদ্য-পানি সবই উটের পিঠে। চারদিকে বালু আর বালু। পায়ে হেঁটে এ শূন্যপ্রান্তর পাড়ি দেওয়া কিছুতেই সম্ভব নয়। এখন সে কী করবে? পরিস্থিতি ভাবলে মৃত্যু ছাড়া আর কিছুই তার নজরে আসবে না। এমন মুহূর্তে আল্লাহ ছাড়া আর কার আশ্রয় সে নিতে পারে? নিশ্চয়ই এক ঘোর অবিশ্বাসীও এ অবস্থায় কেবল আল্লাহ তা'আলাকেই ডাকবে। আল্লাহ তা'আলাও অসীম মেহেরবান। এমন ঘোর বিপদে বান্দা যখন আর্তস্বরে তাঁকে ডেকে ওঠে, তখন ঠিকই তিনি সাহায্য করেন। অকল্পনীয়ভাবে তিনি মরুযাত্রীর হারিয়ে যাওয়া উট ফিরিয়ে দেন। অবাকবিস্ময়ে সে দেখতে পায় প্রাণপ্রিয় উটটি তার কাছে দাঁড়িয়ে আছে।

উল্লিখিত তিনটি কথা দ্বারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহ তা'আলার অফুরন্ত দয়ার প্রতি হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি.-এর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। তিনি তাঁর সমঝদার এ সাহাবীকে বোঝাচ্ছেন যে, এই পরম দয়ালু আল্লাহ তা'আলাই নিজ দয়ায় আমাকে তোমাদের কাছে রাসূল করে পাঠিয়েছেন। তিনি আমাকে রহমাতুল-লিল-আলামীন বানিয়েছেন। তিনি আমাকে যে হিদায়াত ও নবুওয়াতী ইলম দিয়ে পাঠিয়েছেন, তা কিয়ামত পর্যন্ত সারা বিশ্বের সমস্ত মানুষের জন্য রহমত। দুনিয়া ও আখিরাতের মুক্তির জন্য সমস্ত মানুষের কর্তব্য এ হিদায়াত গ্রহণ করা এবং এ ইলম অনুযায়ী নিজেদের জীবন গঠন করা।

হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে উপদেশ চাইলেন। তিনি তাঁকে মৌলিকভাবে চারটি উপদেশ দিলেন।

প্রথম উপদেশ : لاَ تَسُبَّنَّ أَحَدًا (কাউকে কখনও গালি দেবে না)। গালি দেওয়া কবীরা গুনাহ। এক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-
سِبَابُ الْمُسْلِمِ فُسُوقٌ، وَقِتَالُهُ كُفْرٌ
'মুসলিম ব্যক্তিকে গালি দেওয়া ফাসিকী কাজ এবং তার সঙ্গে লড়াই করা কুফরী কাজ।
(সহীহ বুখারী: ৪৮; সহীহ মুসলিম: ১১৬; জামে' তিরমিযী: ১৯৮৩; সুনানে নাসাঈ: ৪১০৫: সুনানে ইবন মাজাহ: ৬৯; মুসনাদে আহমাদ: ৩৬৪৫; মুসনাদে আবূ দাউদ তয়ালিসী: ২৫৬; মুসনাদুল বাযযার: ১৬৬০; মুসনাদে আবূ ইয়া'লা: ৪৯৯১; তহাবী, শারহু মুশকিলিল আছার: ৮৪৪; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৩২৫)

হযরত জাবির ইবন সুলায়ম রাযি. বলেন, এ উপদেশ শোনার পর আমি কখনও কাউকে গালি দিইনি। না কোনও স্বাধীন ব্যক্তিকে, না কোনও গোলামকে, এমনকি না কোনও উট বা বকরিকে। এর দ্বারা ধারণা পাওয়া যায় নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপদেশ পালনে তিনি কতটা সচেতন ছিলেন এবং শরী'আতে যে কাজ নিষেধ তা থেকে বিরত থাকার ব্যাপারে তিনি কত বেশি সতর্ক থাকতেন। উপদেশটি ছিল 'কাউকে গালি দিয়ো না'। এর দ্বারা স্বাভাবিকভাবে কোনও মানুষকে গালি না দেওয়ার কথাই বোঝা যায়। কিন্তু তিনি গালি কাকে দেওয়া হচ্ছে সেটিকে বিবেচনায় না নিয়ে গালির কাজটিকেই বিবেচনায় রেখেছেন। অর্থাৎ গালি দিতে যখন নিষেধ করেছেন, তখন নিশ্চয়ই এটি নেহাৎ মন্দকাজ। কাজেই কেবল মানুষ কেন, কোনও জীবজন্তুকে পর্যন্ত গালি দেব না। গালির কোনও শব্দই মুখে উচ্চারণ করব না, তা যার বেলায়ই হোক। এই-ই হল প্রকৃত অনুসরণ। সাহাবায়ে কেরাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের অনুসরণ এভাবেই করতেন।

দ্বিতীয় উপদেশ : وَلَا تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا (কোনও সৎকর্মকে তুচ্ছ গণ্য করো না)। অর্থাৎ কাজটি যদি সৎ হয়, তবে তা অবশ্যই পালনযোগ্য, তা যে পর্যায়েরই হোক। আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যে-কোনও সৎকর্ম করা হয়, তাতে ছাওয়াব পাওয়া যায়। ছাওয়াব অল্প হোক বা বেশি, মুমিন মাত্রেরই তা কাম্যবস্তু। কাজেই হালকা, অতি সাধারণ বা অতি ছোট বলে কোনও সৎকর্মকেই অবহেলা করতে নেই। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উদাহরণ দিয়েছেন 'অন্যের সঙ্গে হাসিমুখে কথা বলা'-এর দ্বারা। বলেছেন যে, হাসিমুখে কথা বলাটাও একটি সৎকর্ম। কাজেই এটিকেও তুচ্ছ মনে করে ছেড়ে দিয়ো না। অপর এক হাদীছে আছে-
لا تَحْقِرَنَّ مِنَ الْمَعْرُوفِ شَيْئًا، وَلَوْ أَنْ تَلْقَى أَخَاكَ بِوَجْهِ طَلْقٍ
'তুমি কিছুতেই কোনও নেক কাজকে তুচ্ছ মনে করো না, যদি তা তোমার ভাইয়ের সাথে হাসিমুখে সাক্ষাৎ করাও হয়।
(সহীহ মুসলিম: ২৬২৬; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ১৬৮৯; তাবারানী, আল মু'জামুল কাবীর: ৬৩৮৫; মুসনাদে আহমাদ: ১৪৭১)

আরেক হাদীছে ইরশাদ হয়েছে-
وَتَبَسُّمُكَ فِي وَجْهِ أَخِيكَ صَدَقَةٌ
'তোমার ভাইয়ের চেহারার দিকে ফিরে তোমার হাসি দেওয়া এক সদাকা।’(শু'আবুল ঈমান: ৩১০৫)

তৃতীয় উপদেশ : وارفع إزارك إلى نصف الساق (তোমার লুঙ্গি পায়ের নলার অর্ধেক পর্যন্ত তুলে রাখবে)। লুঙ্গি পরার উদ্দেশ্য হল সতর ঢাকা। পুরুষের সতর নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত। কাজেই লুঙ্গি হাঁটুর নিচে নামালেই উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে যায়। হাঁ, বাড়তি আরাম বা সৌন্দর্যের জন্য এর নিচেও নামানো যেতে পারে। কিন্তু তার সীমানা টাখনু। টাখনুর নিচে নামানোর কোনও প্রয়োজন নেই। তা সত্ত্বেও কেউ কেউ নামায়। তার কারণ কেবলই অহংকার। তাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাবধান করে দেন যে- وإياك وإسبال الإزار, فإنها من المخيلة, وإن الله لا يحب المخيلة ( সাবধান! লুঙ্গি এর নিচে ঝোলাবে না। কেননা এটা অহংকারের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ অহংকার পসন্দ করেন না)। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন এটাকে অহংকার সাব্যস্ত করেছেন, তখন এই অজুহাতে কারও টাখনুর নিচে পোশাক পরার বৈধতা থাকে না যে, আমি এটা অহংকারবশত করছি না। কার মধ্যে অহংকার আছে কার মধ্যে নেই তা আল্লাহ তা'আলাই ভালো জানেন। ব্যক্তি নিজে তা বুঝতে পারে না। কাজেই হাদীছে যে বিষয়কে অহংকার সাব্যস্ত করা হয়েছে, মুসলিম ব্যক্তিকে অবশ্যই তা পরিহার করতে হবে। তা পরিহার করতে হবে এ কারণে যে, আল্লাহ তা'আলা অহংকার পসন্দ করেন না। অহংকার যখন পসন্দ করেন না, তখন যে ব্যক্তির মধ্যে অহংকার থাকবে বা যে ব্যক্তি অহংকারমূলক কাজ করবে, সেও আল্লাহ তা'আলার পসন্দনীয় হতে পারে না। এরূপ ব্যক্তি আখিরাতে আল্লাহ তা'আলার দয়া থেকে বঞ্চিত থাকবে।

চতুর্থ উপদেশ : وإن امرؤ شتمك وعيرك بما يعلم فيك, فلا تعيره بما تعلم فيه (কোনও ব্যক্তি যদি তোমাকে গালি দেয় এবং তোমার সম্পর্কে সে যা জানে তা নিয়ে তোমার নিন্দা করে, তবে তুমি তার সম্পর্কে যা জান তা নিয়ে তার নিন্দা করবে না)। অর্থাৎ কেউ তোমাকে গালি দিলে তুমি পাল্টা তাকে গালি দিয়ো না। আর তোমার মধ্যে যে দোষ আছে তা নিয়ে কেউ তোমার নিন্দা করলে প্রতিশোধস্বরূপ তুমি তার যে দোষ সম্পর্কে জান তা নিয়ে তার নিন্দা করো না। অর্থাৎ গালি দেওয়া বা নিন্দা করা মন্দ কাজ। অন্যে এ মন্দকাজ করেছে বলে তুমিও তা করবে, এটা কোনও বুদ্ধির কথা নয়। অন্যের মন্দ আচরণের জবাবে অনুরূপ মন্দ আচরণ করা প্রশংসনীয় চরিত্র নয়। এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
لا تكونوا إمعة, تقولون: إن أحسن الناس أحسنا, وإن ظلموا ظلمنا, ولكن وطنوا أنفسكم, إن أحسن الناس أن تحسنوا, وإن أساءوا فلا تظلموا
'তোমরা পাল্টাপাল্টি আচরণকারী হয়ো না যে বলবে, লোকে ভালো ব্যবহার করলে আমরাও ভালো ব্যবহার করব আর তারা জুলুম করলে আমরাও জুলুম করব। বরং তোমরা নিজেদের (এ আদর্শের উপর) প্রতিষ্ঠিত রাখো যে, লোকে ভালো ব্যবহার করলে তো ভালো ব্যবহার করবেই, আর যদি তারা মন্দ আচরণ করে, তবুও তোমরা জুলুম করবে না।
(জামে' তিরমিযী: ২০০৭; মুসনাদুল বাযযার ২৮০২; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৪৪৪)

অন্যের সম্পর্কে যে দোষ জানা যায় তা নিয়ে তার নিন্দা করা খুবই গর্হিত কাজ, বিশেষত সে দোষ থেকে যদি সেই ব্যক্তি তাওবা করে থাকে। এর পরিণাম সম্পর্কে এ হাদীছে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- فَإِنَّمَا وَبَالُ ذَلِكَ عَلَيْهِ কেননা সে নিন্দার পরিণাম তাকেই ভোগ করতে হবে)। অর্থাৎ আখিরাতে তাকে এজন্য শাস্তি পেতে হবে। অনেক সময় দুনিয়ায়ও এর অশুভ পরিণাম ভোগ করতে হয়।

এক হাদীছে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-
مَنْ عَيَّرَ أَخَاهُ بِذَنْبٍ لَمْ يَمُتْ حَتَّى يَعْمَلَهُ
'যে ব্যক্তি কোনও গুনাহের কারণে তার ভাইয়ের নিন্দা করে, তার মৃত্যু হবে না যাবৎ না সে নিজে ওই গুনাহে লিপ্ত হবে।'
(জামে' তিরমিযী: ২৫০৫; তাবারানী, আল মু'জামুল আওসাত ৭২৪৪; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান: ৬২৭১; বাগাবী, শারহুস সুন্নাহ: ৩৫৬২)

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. দীনী বিষয়ে নিজে নিজে সিদ্ধান্ত না নিয়ে উলামায়ে কেরামের অভিমত গ্রহণ করা উচিত।

খ. সালাম দেওয়ায় সেই পদ্ধতিই অনুসরণ করা উচিত, যা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শিক্ষা দিয়েছেন।

গ. বিপদ-আপদে অস্থির হতে নেই। একান্ত মনে আল্লাহ তা'আলার শরণাপন্ন হলে তিনি অবশ্যই সাহায্য করে থাকেন।

ঘ. অভাব-অনটন, খরা-দুর্ভিক্ষে বাহ্যিক ব্যবস্থাপনার পাশাপাশি সর্বান্তকরণে আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আয় রত থাকা চাই।

ঙ. হারিয়ে যাওয়া বস্তু কেবল সন্ধান করেই ক্ষান্ত হওয়া উচিত নয়; আল্লাহ তা'আলার কাছে দু'আও করা উচিত।

চ. আলেম ও বুযুর্গ ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তার কাছে নসীহতের দরখাস্ত করা উচিত।

ছ. গালি দেওয়া নেহাৎ মন্দ কর্ম। কোনও মুমিন ব্যক্তির মুখ থেকে এর উচ্চারণ শোভনীয় নয়।

জ. কোনও সৎকর্মকে তুচ্ছ মনে করতে নেই।

ঝ. হাসিমুখে সাক্ষাৎ করা একটি সৎকর্ম। এতে অভ্যস্ত হওয়া দরকার।

ঞ. পরিধানের কাপড় কিছুতেই যাতে টাখনুর নিচে না নামে, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।

ট. টাখনুর নিচে পোশাক পরা অহংকারের লক্ষণ।

ঠ. কোনও বিষয়েই যাতে অহংকার প্রকাশ না পায় সে বিষয়ে সতর্ক থাকা জরুরি, যেহেতু আল্লাহ তা'আলা অহংকারীকে পসন্দ করেন না।

ড. গালির বিপরীতে গালি দিতে নেই।

চ. অন্যের কোনও দোষ জানতে পারলে তা নিয়ে তার নিন্দা করতে নেই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে আবু দাউদ - হাদীস নং ৪০৪০ | মুসলিম বাংলা