আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

২৪- রোযার অধ্যায়

হাদীস নং: ১৮১২
আন্তর্জাতিক নং: ১৯৩৬
১২১৩. যদি রমযানে স্ত্রী সঙ্গম করে এবং তার নিকট কিছু না থাকে এবং তাকে সাদ্‌কা দেওয়া হয়, তাহলে সে যেন তা কাফফারা স্বরূপ দিয়ে দেয়।
১৮১২। আবুল ইয়ামান (রাহঃ) ......... আবু হুরায়রা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট বসা ছিলাম। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি ধ্বংস হয়ে গিয়েছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমার কি হয়েছে? সে বলল, আমি রোযা অবস্থায় আমার স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছি। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ আযাদ করার মত কোন ক্রীতদাস তুমি পাবে কি? সে বলল, না। তিনি বললেনঃ তুমি কি একাধারে দু’মাস রোযা পালন করতে পারবে? সে বলল, না। এরপর তিনি বললেনঃ ষাটজন মিসকীন খাওয়াতে পারবে কি? সে বলল, না। রাবী বলেন, তখন নবী (ﷺ) থেমে গেলেন, আমরাও এ অবস্থায় ছিলাম। এ সময় নবী (ﷺ) এর কাছে এক আরাক পেশ করা হল যাতে খেজুর ছিল। আরাক হল ঝুড়ি। নবী (ﷺ) বললেনঃ প্রশ্নকারী কোথায়? সে বলল, আমি। তিনি বললেনঃ এগুলো নিয়ে সাদ্‌কা করে দাও। তখন লোকটি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার চাইতেও বেশী অভাবগ্রস্তকে সাদ্‌কা করব? আল্লাহর শপথ, মদীনার উভয় লাবা অর্থাৎ উভয় প্রান্তের মধ্যে আমার পরিবারের চাইতে অভাবগ্রস্থ কেউ নেই। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) হেসে উঠলেন এবং তাঁর দাঁত (আনইয়াব) দেখা গেল। এরপর তিনি বললেনঃ এগুলো তোমার পরিবারকে খাওয়াও।
باب إِذَا جَامَعَ فِي رَمَضَانَ وَلَمْ يَكُنْ لَهُ شَىْءٌ فَتُصُدِّقَ عَلَيْهِ فَلْيُكَفِّرْ
1936 - حَدَّثَنَا أَبُو اليَمَانِ، أَخْبَرَنَا شُعَيْبٌ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، قَالَ: أَخْبَرَنِي حُمَيْدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ، أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ، قَالَ: بَيْنَمَا نَحْنُ جُلُوسٌ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، إِذْ جَاءَهُ رَجُلٌ فَقَالَ: يَا رَسُولَ اللَّهِ هَلَكْتُ. قَالَ: «مَا لَكَ؟» قَالَ: وَقَعْتُ عَلَى امْرَأَتِي وَأَنَا صَائِمٌ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «هَلْ تَجِدُ رَقَبَةً تُعْتِقُهَا؟» قَالَ: لاَ، قَالَ: «فَهَلْ تَسْتَطِيعُ أَنْ تَصُومَ شَهْرَيْنِ مُتَتَابِعَيْنِ» ، قَالَ: لاَ، فَقَالَ: «فَهَلْ تَجِدُ إِطْعَامَ سِتِّينَ مِسْكِينًا» . قَالَ: لاَ، قَالَ: فَمَكَثَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَبَيْنَا نَحْنُ عَلَى ذَلِكَ أُتِيَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِعَرَقٍ فِيهَا تَمْرٌ - وَالعَرَقُ المِكْتَلُ - قَالَ: «أَيْنَ السَّائِلُ؟» فَقَالَ: أَنَا، قَالَ: «خُذْهَا، فَتَصَدَّقْ بِهِ» فَقَالَ الرَّجُلُ: أَعَلَى أَفْقَرَ مِنِّي يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ فَوَاللَّهِ مَا بَيْنَ لاَبَتَيْهَا - يُرِيدُ الحَرَّتَيْنِ - أَهْلُ بَيْتٍ أَفْقَرُ مِنْ أَهْلِ بَيْتِي، فَضَحِكَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حَتَّى بَدَتْ أَنْيَابُهُ، ثُمَّ قَالَ: «أَطْعِمْهُ أَهْلَكَ»

হাদীসের ব্যাখ্যা:

রমযানে রোযা রেখে দিনে স্ত্রী সহবাস করলে বীর্যপাত না হলেও স্বামী-স্ত্রী উভয়ের উপর কাযা ও কাফফারা ওয়াজিব হবে।

কাফফারা আদায়ের নিয়ম
একটি রোযার জন্য দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখতে হবে। রোযা রাখতে সক্ষম না হলে ৬০ জন ফকির-মিসকীনকে দুই বেলা পেট ভরে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেককে এর মূল্য দিয়ে দিতে হবে।
মনে রাখতে হবে, রোযা রাখতে সক্ষম হলে ফিদিয়া আদায় করলে তা আদায় হবে না।
-খুলাসাতুল ফাতাওয়া ১/২৬০; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪১৩; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ৩/৩৯৪

কোনো কারণে ধারাবাহিকতা ছুটে গেলে পুনরায় নতুন করে রোযা রাখতে হবে। পেছনের রোযাগুলো কাফফারার রোযা হিসাবে ধর্তব্য হবে না। তবে মহিলাদের হায়েযের কারণে ধারাবাহিকতা নষ্ট হলে অসুবিধা নেই।

ইবরাহীম নাখায়ী রাহ. বলেন, ‘যার উপর কাফফারা হিসাবে দুই মাস ধারাবাহিকভাবে রোযা রাখা জরুরি সে যদি মাঝে অসুস্থ হওয়ার কারণে রোযা রাখতে না পারে, তাহলে আবার নতুন করে রোযা রাখা শুরু করবে।’-আলমুহাল্লা ৪/৩৩১; মাবসূত, সারাখসী ৭/১৪; আলবাহরুর রায়েক ২/২৭৭; আলমুহীতুল বুরহানী ৫/১৯৬

#সংগৃহীত
tahqiqতাহকীক:বিশুদ্ধ (পারিভাষিক সহীহ)