আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

২২- ওমরার অধ্যায়

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ১৮২১
১১৪৩. শিকার জন্তু এবং অনুরূপ কিছুর বিনিময়।
আর মহান আল্লাহর বাণীঃ হে মুমিনগণ! ইহরামে থাকাকালে তোমরা শিকার জন্তু হত্যা করো না, তোমাদের মধ্যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে উহা হত্যা করলে যা হত্যা করল এর বিনিময় হলো অনুরূপ গৃহপালিত জন্তু, যার ফয়সালা করবে তোমাদের মধ্যে দু’জন ন্যায়পরায়ণ লোক কাবাতে প্রেরিতব্য কুরবানীরূপে। অথবা তার কাফফারা হবে দরিদ্রকে খাদ্য দান করা কিংবা সমসংখ্যক সিয়াম পালন করা যাতে সে আপন কৃতকর্মের ফল ভোগ করে। যা গত হয়েছে, আল্লাহ তা ক্ষমা করেছেন; কেউ তা পুনরায় করলে আল্লাহ তার শাস্তি দিবেন এবং আল্লাহ পরাক্রমশালী, শাস্তিদাতা। তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও তা ভক্ষণ হালাল করা হয়েছে তোমাদের ও (পর্যটকদের) ভোগের জন্য এবং তোমরা যতক্ষণ ইহরামে থাকবে ততক্ষণ স্থলের শিকার তোমাদের জন্য হারাম। আল্লাহকে ভয় কর যার নিকট তোমাদেরকে একত্র করা হবে। (৫ঃ ৯৫-৯৬)

১১৪৪. মুহরিম নয় এমন কোন ব্যক্তি যদি শিকার করে শিকারকৃত জন্তু মুহরিমকে উপহার দেয় তাহলে মুহরিম তা খেতে পারবে।
ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) ও আনাস (রাযিঃ) শিকার ছাড়া অন্য কোন প্রাণী যবেহ করাতে মুহরিমের কোন অসুবিধা আছে বলে মনে করেন না। যেমন উট, বকরী, গরু, মুরগী ও ঘোড়া।
বলা হয় عَدْل অর্থ مِثْل (অনুরূপ) এবং عِدْلٌ অর্থ زِنَةُ (সমান) قِيَامًا এর অর্থ হল قِوَامًا (কল্যাণ) এবং يَعْدِلُونَ এর অর্থ হল يَجْعَلُونَ له عَدْلاً (সমকক্ষ দাঁড় করানো)
১৭০৪। মু’আয ইবনে ফাযালা (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ ইবনে আবু কাতাদা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার পিতা হুদায়বিয়ার বছর (শত্রুদের তথ্য অনুসন্ধানের জন্য) বের হলেন। নবী করীম (ﷺ) এর সাহাবীগণ ইহরাম বাঁধলেন কিন্তু তিনি ইহরাম বাঁধলেন না। নবী (ﷺ) কে বলা হল, একটি শত্রুদল তাঁর সাথে যুদ্ধ করতে চায়। নবী (ﷺ) সামনে অগ্রসর হতে লাগলেন। এ সময় আমি তাঁর সাহাবীদের সাথে ছিলাম। হঠাৎ দেখি যে, তারা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে হাসাহাসি করছেন। আমি তাকাতেই একটি জংলী গাধা দেখতে পেলাম। অমনিই আমি বর্শা দিয়ে আক্রমণ করে তাঁকে ধরাশায়ী করে ফেলি। সঙ্গীদের নিকট সহযোগিতা কামনা করলে সকলে আমাকে সহযোগিতা করতে অস্বীকার করল। এরপর আমরা সকলেই ঐ জংলী গাধার গোশত খেলাম। এতে আমরা নবী (ﷺ) থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবার আশঙ্কা করলাম। তাই নবী (ﷺ) এর সন্ধানে আমার ঘোড়াটিকে কখনো দ্রুত কখনো আস্তে চালাচ্ছিলাম। মাঝরাতের দিকে গিফার গোত্রের এক লোকের সাথে সাক্ষাত হলে আমি তাঁকে জিজ্ঞাসা করলাম যে নবী (ﷺ) কে কোথায় রেখে এসে এসেছ? সে বললো তা’হিন নামক স্থানে আমি তাঁকে রেখে এসেছি। এখন তিনি সুকয়া নামক স্থানে কায়লূলায় (দুপুরের বিশ্রামে) আছেন। আমি বললাম হে আল্লাহর রাসূল! আপনার সাহাবীগণ আপনার প্রতি সালাম পাঠিয়েছেন এবং আল্লাহর রহমত কামনা করেছেন। তারা আপনার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছে। তাই আপনি তাঁদের জন্য অপেক্ষা করুন। তারপর আমি পুনরায় বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমি একটি বন্য গাধা শিকার করেছি। এখনো তাঁর বাকি অংশটুকু আমার নিকট রয়েছে। নবী (ﷺ) কওমের প্রতি লক্ষ্য করে বললেনঃ তোমরা খাও। অথচ তারা সকলেই তখন ইহরাম অবস্থায় ছিলেন।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন