আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ

২২- ওমরার অধ্যায়

হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ১৭৯১
১১২২. উমরা আদায়কারী কখন হালাল হবে।
আতা (রাহঃ) সূত্রে জাবির (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ﷺ) তাঁর সাহাবীগণকে তাদের হজ্জকে উমরায় রূপান্তরিত করার পর তাওয়াফ করে চুল ছেঁটে হালাল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
১৬৭৬। ইসহাক ইবনে ইবরাহীম (রাহঃ) ......... আব্দুল্লাহ ইবনে আবু আওফা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) উমরা করলেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে উমরা করলাম। তিনি মক্কা প্রবেশ করে তাওয়াফ করলেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে তাওয়াফ করলাম। এরপর তিনি সাফা-মারওয়ায় সা’ঈ করলেন, আমরাও তাঁর সঙ্গে সা’ঈ করলাম। আর আমরা তাঁকে মক্কাবাসীদের থেকে লুকিয়ে রাখছিলাম যাতে কোন মুশরিক তাঁর প্রতি কোন কিছু নিক্ষেপ করতে না পারে।
বর্ণনাকারী বলেন, আমার এক সাথী তাঁকে বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) কি কাবা শরীফে প্রবেশ করেছিলেন? তিনি বললেন, না।
প্রশ্নকারী তাঁকে বললেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) খাদীজা (রাযিঃ) সম্বন্ধে কি বলেছেন? তিনি বললেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ খাদীজাকে বেহেশতের মাঝে মোতি দিয়ে নির্মিত এমন একটি ঘরের সুসংবাদ দাও যেখানে কোন শোরগোল থাকবে না এবং কোন প্রকার কষ্ট ক্লেশও থাকবে না।

হাদীসের ব্যাখ্যা:

উম্মুল মুমিনীন হযরত খাদীজা রাযি. রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ১ম স্ত্রী। এক ইবরাহীম ছাড়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সকল পুত্র-কন্যার জন্ম তাঁরই গর্ভে। তিনি ৬৫ বছর বয়সে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নবুওয়াতের ১০ম বছর ইন্তিকাল করেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর বৈবাহিক জীবনের দীর্ঘ ২৫ বছর কেবল তাঁকে নিয়েই কাটিয়েছেন। এ সময় তিনি অন্য কোনও বিবাহ করেননি। তাঁর ইন্তিকালে তিনি গভীর বেদনাহত হন। জীবনে কখনও তিনি তাঁকে ভুলতে পারেননি।

হযরত খাদীজা রাযি. ছিলেন সর্বপ্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ব্যক্তি। তিনি ইসলাম ও নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য নিজের সবকিছু উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। সেজন্য আল্লাহ তা'আলার কাছে অতি উচ্চমর্যাদা লাভ করেন। এ হাদীছে তাঁকে জান্নাতের সুসংবাদ দেওয়ার পাশাপাশি সেখানে তাঁর বাড়িটি কেমন হবে তাও জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে সে বাড়িটি হবে মুক্তার। বলাবাহুল্য, তা জান্নাতের মুক্তা। দুনিয়ার মুক্তা দিয়ে তার মূল্য ও সৌন্দর্য অনুমান করা সম্ভব নয়।

বলা হয়েছে, সেখানে কোনও শোরগোল ও ক্লান্তি থাকবে না। জান্নাতে তা থাকার কথাও নয়। কারণ জান্নাত কাজকর্ম ও ব্যস্ততার জায়গা নয়। শোরগোল ও ক্লান্তি ব্যস্ততার কারণেই হয়। জান্নাত হল আরাম ও উপভোগের স্থান। সম্মান ও মর্যাদার জায়গা। সেখানে সুখ-শান্তি ও সম্মানের পরিপন্থী কোনওকিছুই ঘটবে না।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. এ হাদীছটি দ্বারা হযরত খাদীজা রাযি.-এর উচ্চমর্যাদা সম্পর্কে ধারণা লাভ হয়। জীবিত অবস্থায় যারা জান্নাতের সুসংবাদ লাভ করেছেন, তিনি তাদের অন্যতম।

খ. জান্নাত সত্য। সেখানে অকল্পনীয় সুখ-শান্তির ব্যবস্থা থাকবে। থাকবে দৃষ্টিনন্দন বিলাসিতাপূর্ণ বাড়ি।
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন