মা'আরিফুল হাদীস

কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়

হাদীস নং: ২৪
কিতাবুল আযকার ওয়াদ-দাওয়াত অধ্যায়
লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর খাস ফযীলত
২৪. হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, আল্লাহর নবী মূসা (আ) আল্লাহর দরবারে আরয করলেন, হে আমার প্রভু, আমাকে এমন একটি কালিমা শিক্ষা দিন, যার সাহায্যে আমি তোমার নামের যিকির করবো। (অথবা তিনি বললেন: যার সাহায্যে আমি তোমাকে ডাকবো।) তখন আল্লাহ তা'আলা বললেন: হে মূসা! তুমি লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলবে।

তিনি আরয করলেন: হে আমার প্রভু! এ কালিমা তো তোমার সকল বান্দাই বলে থাকে। আমি তো এমন কিছু একটা চাই, যা তুমি আমাকে বিশেষভাবে দান করবে।

আল্লাহ তা'আলা বললেন: হে মূসা! সাত আসমান এবং আমি ছাড়া এর সমস্ত অধিবাসী এবং সমস্ত যমীন যদি এক পাল্লায় রাখা হয় এবং লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ যদি অপর পাল্লায় রাখা হয়, তাহলে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর পাল্লা নিশ্চিতভাবে ভারী হবে বা তা ঝুকে যাবে। - (শারহুস সুন্নাহ-বাগাভী সঙ্কলিত)
کتاب الاذکار والدعوات
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: قَالَ مُوسَى النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: يَا رَبِّ عَلِّمْنِي شَيْئًا أَذْكُرُكَ بِهِ، أَوْ أَدْعُوكَ بِهِ. فَقَالَ: يَا مُوسَى، قُلْ: لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ. فَقَالَ: يَا رَبِّ، كُلُّ عِبَادِكَ يَقُولُ هَذَا، إِنَّمَا أُرِيدُ شَيْئًا تَخُصُّنِي بِهِ. قَالَ: يَا مُوسَى، لَوْ أَنَّ السَّمَوَاتِ السَّبْعَ وَعَامِرَهُنَّ غَيْرِي، وَالأَرَضِينَ السَّبْعَ وُضِعْنَ فِي كِفَّةٍ، وَلا إِلَهَ إِلا اللَّهُ فِي كِفَّةٍ، لَمَالَتْ بِهِنَّ لَا إِلَهَ إِلا اللَّهُ ". (رواه البغوى فى شرح السنة)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

আল্লাহর সাথে বন্দেগীর বিশেষ সম্পর্ক ছিল মূসা (আ)-এর সে হিসাবে বিশেষ নৈকট্যের ভিত্তিতে তাঁর যে আকুতি ছিল সে জন্যে তিনি আল্লাহর দরবারে বিশেষ দু'আর জন্যে প্রার্থনা জানান। আল্লাহ তা'আলা তাঁকে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ-এর যিকির করতে বলেন-যা সর্বোত্তম যিকির। তিনি আরয করেন: আমার দরখাস্ত কোন একটি বিশেষ কালিমার জন্যে, যা কেবল বিশেষভাবে আমাকেই প্রদান করা হবে। মোট কথা, কালিমায়ে লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ ব্যাপকভাবে বহুল প্রচলিত হওয়ায় তাঁর মূল্যমান ও ফযীলত অনুধাবনের ব্যাপারে তিনি সঠিকভাবে উপলব্ধি করে উঠতে পারেননি। এ জন্যে তাঁকে বলে দেয়া হলো যে, লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ হাকীকত যমীন ও আসমান তথা গোটা সৃষ্টি জগতের তুলনায় অধিকতর মূল্যবান ও ভারী। এটা দয়ালু আল্লাহর দয়ার দান যে, তিনি তাঁর পয়গম্বরগণের মাধ্যমে নির্বিশেষে সকলকে আমভাবে এ রহমত দান করেছেন। মোদ্দা কথা, আম্বিয়া ও প্রেরিত রাসূলগণের জন্যেও এর চাইতে বেশি দামী এবং অধিক বরকতময় আর কিছুই নেই।

এ অমূল্য নিয়ামতের শুকর হচ্ছে যে, এই পবিত্র কলিমাকে জপমালা বানিয়ে নেবে এবং বহুল পরিমাণে এর যিকির-এর মাধ্যমে আল্লাহর সাথে সংযোগ স্থাপন করা হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান