মা'আরিফুল হাদীস
যাকাত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩০
যাকাত অধ্যায়
যে পর্যন্ত পরিশ্রম করে জীবিকা উপার্জন করা যায় সে পর্যন্ত সওয়াল করতে নেই।
৩০. হযরত আনাস ইবনে মালিক রাযি. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক আনসারী ব্যক্তি নবী করীম (ﷺ)-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে কিছু সাহায্য প্রার্থনা করে। তখন তিনি তাকে জিজ্ঞাসা করেন, তোমার ঘরে কি কিছু নাই? সে বলেঃ হ্যাঁ, একটি কম্বল মাত্র যার অর্ধেক আমি পরিধান করি এবং বাকী অর্ধেক বিছিয়ে শয়ন করি। আর আছে একটি পেয়ালা, যাতে আমি পানি পান করি। তিনি বলেনঃ উভয় বস্তু আমার নিকট নিয়ে আস। রাবী বলেনঃ সে তা আনয়ন করলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তা স্বহস্তে ধারণ পূর্বক (নিলামের ডাকের মত) বলেনঃ কে এই দুটি ক্রয় করতে ইচ্ছুক? এক ব্যক্তি বলে, আমি তা এক দিরহামের বিনিময়ে গ্রহণ করতে চাই।
অতঃপর তিনি বলেনঃ এক দিরহামের অধিক কে দিবে? তিনি দুই বা তিনবার এইরূপ উচ্চারণ করেন। তখন এক ব্যক্তি বলে, আমি তা দুই দিরহামের বিনিময়ে গ্রহণ করব। তিনি সেই ব্যক্তিকে তা প্রদান করেন এবং বিনিময়ে দুইটি দিরহাম গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি তা আনসারীর হাতে তুলে দিয়ে বলেনঃ এর একটি দিরহাম দিয়ে কিছু খাদ্য ক্রয় করে তোমার পরিবার-পরিজনদের দাও; আর বাকী এক দিরহাম দিয়ে একটি কুঠার কিনে আমার নিকট আস। লোকটি কুঠার কিনে আনলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) স্বহস্তে তাতে হাতল লাগিয়ে তার হাতে দিয়ে বলেনঃ এখন তুমি যাও এবং জঙ্গল হতে কাঠ কেটে এনে বিক্রী কর। আর আমি যেন তোমাকে পনের দিন না দেখি।
অতঃপর সে চলে গেল এবং কাঠ কেটে এনে বিক্রয় করতে থাকে। অতঃপর সে (পনের দিন পর) আসল। সে তখন প্রাপ্ত হয়েছিল দশটি দিরহাম যা দিয়ে সে কিছু কাপড় এবং কিছু খাদ্য ক্রয় করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ ভিক্ষাবৃত্তির চাইতে এটা তোমার জন্য উত্তম। কেননা ভিক্ষাবৃত্তির ফলে কিয়ামতের দিন তোমার চেহারা ক্ষত-বিক্ষত হত। ভিক্ষা চাওয়া তিন শ্রেনীর ব্যক্তি ব্যতীত অন্যদের জন্য হালাল নয়ঃ (১) ধূলা-মলিন নিঃস্ব ভিক্ষুকের জন্য, (২) প্রচন্ড ঋণের চাপে জর্জরিত ব্যক্তির জন্য এবং (৩) যার উপর দিয়াত (রক্তপণ) আছে, অথচ তা পরিশোধের অক্ষমতার কারণে নিজের জীবন বিপন্ন— এ ধরনের ব্যক্তিরা যাচ্ঞা করতে পারে।
অতঃপর তিনি বলেনঃ এক দিরহামের অধিক কে দিবে? তিনি দুই বা তিনবার এইরূপ উচ্চারণ করেন। তখন এক ব্যক্তি বলে, আমি তা দুই দিরহামের বিনিময়ে গ্রহণ করব। তিনি সেই ব্যক্তিকে তা প্রদান করেন এবং বিনিময়ে দুইটি দিরহাম গ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি তা আনসারীর হাতে তুলে দিয়ে বলেনঃ এর একটি দিরহাম দিয়ে কিছু খাদ্য ক্রয় করে তোমার পরিবার-পরিজনদের দাও; আর বাকী এক দিরহাম দিয়ে একটি কুঠার কিনে আমার নিকট আস। লোকটি কুঠার কিনে আনলে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) স্বহস্তে তাতে হাতল লাগিয়ে তার হাতে দিয়ে বলেনঃ এখন তুমি যাও এবং জঙ্গল হতে কাঠ কেটে এনে বিক্রী কর। আর আমি যেন তোমাকে পনের দিন না দেখি।
অতঃপর সে চলে গেল এবং কাঠ কেটে এনে বিক্রয় করতে থাকে। অতঃপর সে (পনের দিন পর) আসল। সে তখন প্রাপ্ত হয়েছিল দশটি দিরহাম যা দিয়ে সে কিছু কাপড় এবং কিছু খাদ্য ক্রয় করল। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ ভিক্ষাবৃত্তির চাইতে এটা তোমার জন্য উত্তম। কেননা ভিক্ষাবৃত্তির ফলে কিয়ামতের দিন তোমার চেহারা ক্ষত-বিক্ষত হত। ভিক্ষা চাওয়া তিন শ্রেনীর ব্যক্তি ব্যতীত অন্যদের জন্য হালাল নয়ঃ (১) ধূলা-মলিন নিঃস্ব ভিক্ষুকের জন্য, (২) প্রচন্ড ঋণের চাপে জর্জরিত ব্যক্তির জন্য এবং (৩) যার উপর দিয়াত (রক্তপণ) আছে, অথচ তা পরিশোধের অক্ষমতার কারণে নিজের জীবন বিপন্ন— এ ধরনের ব্যক্তিরা যাচ্ঞা করতে পারে।
کتاب الزکوٰۃ
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَجُلًا مِنَ الْأَنْصَارِ أَتَى النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَسْأَلُهُ ، فَقَالَ : « أَمَا فِي بَيْتِكَ شَيْءٌ؟ » فَقَالَ : بَلَى ، حِلْسٌ نَلْبَسُ بَعْضَهُ وَنَبْسُطُ بَعْضَهُ ، وَقَعْبٌ نَشْرَبُ فِيهِ مِنَ الْمَاءِ ، قَالَ : « ائْتِنِي بِهِمَا » ، قَالَ : فَأَتَاهُ بِهِمَا ، فَأَخَذَهُمَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِيَدِهِ ، وَقَالَ : « مَنْ يَشْتَرِي هَذَيْنِ؟ » قَالَ رَجُلٌ : أَنَا ، آخُذُهُمَا بِدِرْهَمٍ ، قَالَ : « مَنْ يَزِيدُ عَلَى دِرْهَمٍ مَرَّتَيْنِ ، أَوْ ثَلَاثًا » ، قَالَ رَجُلٌ : أَنَا آخُذُهُمَا بِدِرْهَمَيْنِ فَأَعْطَاهُمَا إِيَّاهُ ، وَأَخَذَ الدِّرْهَمَيْنِ وَأَعْطَاهُمَا الْأَنْصَارِيَّ ، وَقَالَ : « اشْتَرِ بِأَحَدِهِمَا طَعَامًا فَانْبِذْهُ إِلَى أَهْلِكَ ، وَاشْتَرِ بِالْآخَرِ قَدُومًا فَأْتِنِي بِهِ ، » ، فَأَتَاهُ بِهِ ، فَشَدَّ فِيهِ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عُودًا بِيَدِهِ ، ثُمَّ قَالَ لَهُ : « اذْهَبْ فَاحْتَطِبْ وَبِعْ ، وَلَا أَرَيَنَّكَ خَمْسَةَ عَشَرَ يَوْمًا » ، فَذَهَبَ الرَّجُلُ يَحْتَطِبُ وَيَبِيعُ ، فَجَاءَ وَقَدْ أَصَابَ عَشْرَةَ دَرَاهِمَ ، فَاشْتَرَى بِبَعْضِهَا ثَوْبًا ، وَبِبَعْضِهَا طَعَامًا ، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " هَذَا خَيْرٌ لَكَ مِنْ أَنْ تَجِيءَ الْمَسْأَلَةُ نُكْتَةً فِي وَجْهِكَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ ، إِنَّ الْمَسْأَلَةَ لَا تَصْلُحُ إِلَّا لِثَلَاثَةٍ : لِذِي فَقْرٍ مُدْقِعٍ ، أَوْ لِذِي غُرْمٍ مُفْظِعٍ ، أَوْ لِذِي دَمٍ مُوجِعٍ "
(رواه ابوداؤد)
(رواه ابوداؤد)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীসটি ব্যাখ্যার কোন প্রয়োজন রাখে না। আফসোস! যে নবীর এ শিক্ষা ও এ কর্মপদ্ধতি ছিল, আজ সেই নবীর উম্মতের মধ্যে পেশাদার ভিক্ষুক ও সাহায্য প্রার্থনাকারীদের একটি শ্রেণী বিদ্যমান। আর কিছু লোক এমনও রয়েছে, যারা আলেম ও পীর সেজে সম্মানজনক পদ্ধতিতে ভিক্ষাবৃত্তি চালিয়ে যাচ্ছে। এরা ভিক্ষাবৃত্তির পাশাপাশি প্রতারণা ও ধর্মব্যবসায়ের দরুনও অপরাধী।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)