মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ৩২৪
সলাত অধ্যায়
নবী কারীম ﷺ এর একটি শোকগাঁথা এবং ধৈর্যের উপদেশ
৩২৪. হযরত মু'আয (রা) থেকে বণির্ত, তাঁর একটি পুত্র সন্তান মারা যাওয়ায় নবী করীম ﷺ তাঁকে লক্ষ্য করে একটি শোকবাণী লিখে পাঠান।
"দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে"
আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ ﷺ-এর পক্ষ থেকে মু'আয ইবনে জাবালের প্রতি। তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আমি প্রথমে তোমার পক্ষ থেকে ঐ আল্লাহর প্রশংসা করছি যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আমি দু'আ করি আল্লাহ তোমাকে বিপুল পুরস্কারে ভূষিত করুন এবং ধৈর্যধারণের তাওফীক দিন। আমাদেরকে এবং তোমাকে তাঁর নি'আমতের শুকরিয়া আদায়ের সামর্থ্য দিন। মূলকথা হল এই, আমাদের জীবন, আমাদের ধনসম্পদ ও পরিবারের-পরিজন এ সবই আল্লাহর বিশেষ দান এবং তাঁর দেওয়া আমানত। তিনি যখন চাইবেন এ সমুদয় থেকে উপকৃত করবেন এবং অন্তরে শান্তি যোগাবেন। আর যখন চাইবেন তিনি তাঁর আমানত তোমার থেকে ফিরিয়ে নিবেন। তবে এর বিপরীতে তিনি তোমাকে বিপুল পুরস্কারে ধন্য করবেন। আল্লাহর কাছে তোমার জন্য রয়েছে বিশেষ অনুগ্রহ, দয়া এবং হিদায়াতের পথ নির্দেশক। কাজেই তুমি সাওয়াব চাইলে ধৈর্যধারণ কর। হে মু'আয! তুমি ধৈর্য ধর! তোমার বিলাপও শোক প্রকাশ যেন এমন পর্যায়ে না পড়ে যাতে মূল্যবান প্রতিদান প্রাপ্তির আশা ব্যাহত হয়। ফলে তুমি লজ্জিত হয়ে পড়বে। তুমি জেনে রেখ, গভীর শোক প্রকাশ ও বিলাপ করা হলেও মৃত কখনো (জীবিত হয়ে ফিরে) আসে না এবং শোক ও দুঃখও লাঘব হয় না। আল্লাহর পক্ষ থেকে যে নির্দেশ অবধারিত তা কার্যকর হবেই বরং বলা যায় তা কার্যকর হয়ে গিয়েছে। তোমার প্রতি সালাম"। (তাবারানীর কাবীর ও আওসাত গ্রন্থ)
"দয়াময়, পরম দয়ালু আল্লাহর নামে"
আল্লাহর রাসূল মুহাম্মদ ﷺ-এর পক্ষ থেকে মু'আয ইবনে জাবালের প্রতি। তোমার প্রতি শান্তি বর্ষিত হোক। আমি প্রথমে তোমার পক্ষ থেকে ঐ আল্লাহর প্রশংসা করছি যিনি ব্যতীত কোন ইলাহ নেই। আমি দু'আ করি আল্লাহ তোমাকে বিপুল পুরস্কারে ভূষিত করুন এবং ধৈর্যধারণের তাওফীক দিন। আমাদেরকে এবং তোমাকে তাঁর নি'আমতের শুকরিয়া আদায়ের সামর্থ্য দিন। মূলকথা হল এই, আমাদের জীবন, আমাদের ধনসম্পদ ও পরিবারের-পরিজন এ সবই আল্লাহর বিশেষ দান এবং তাঁর দেওয়া আমানত। তিনি যখন চাইবেন এ সমুদয় থেকে উপকৃত করবেন এবং অন্তরে শান্তি যোগাবেন। আর যখন চাইবেন তিনি তাঁর আমানত তোমার থেকে ফিরিয়ে নিবেন। তবে এর বিপরীতে তিনি তোমাকে বিপুল পুরস্কারে ধন্য করবেন। আল্লাহর কাছে তোমার জন্য রয়েছে বিশেষ অনুগ্রহ, দয়া এবং হিদায়াতের পথ নির্দেশক। কাজেই তুমি সাওয়াব চাইলে ধৈর্যধারণ কর। হে মু'আয! তুমি ধৈর্য ধর! তোমার বিলাপও শোক প্রকাশ যেন এমন পর্যায়ে না পড়ে যাতে মূল্যবান প্রতিদান প্রাপ্তির আশা ব্যাহত হয়। ফলে তুমি লজ্জিত হয়ে পড়বে। তুমি জেনে রেখ, গভীর শোক প্রকাশ ও বিলাপ করা হলেও মৃত কখনো (জীবিত হয়ে ফিরে) আসে না এবং শোক ও দুঃখও লাঘব হয় না। আল্লাহর পক্ষ থেকে যে নির্দেশ অবধারিত তা কার্যকর হবেই বরং বলা যায় তা কার্যকর হয়ে গিয়েছে। তোমার প্রতি সালাম"। (তাবারানীর কাবীর ও আওসাত গ্রন্থ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ ، أَنَّهُ مَاتَ ابْنٌ لَهُ فَكَتَبَ إِلَيْهِ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ التَّعْزِيَةَ..... " بِسْمِ اللهِ الرَّحْمَنِ الرَّحِيمِ ، مِنْ مُحَمَّدٍ رَسُولِ اللهِ إِلَى مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ ، سَلَامٌ عَلَيْكَ ، فَإِنِّي أَحْمَدُ إِلَيْكَ اللهَ الَّذِي لَا إِلَهَ إِلَّا هُوَ. أَمَّا بَعْدُ ، فَأَعْظَمَ اللهُ لَكَ الْأَجْرَ ، وأَلْهَمَكَ الصَّبْرَ ، وَرَزَقَنَا وَإِيَّاكَ الشُّكْرَ ، فَإِنَّ أَنْفُسَنَا وَأَمْوَالَنَا وَأَهْلِينا مِنْ مَوَاهِبِ اللهِ الْهَنِيئةِ وَعَوَارِيهِ الْمُسْتَوْدَعَةِ ، مَتَّعكَ اللهُ بِهِ فِي غِبْطَةٍ وَسُرُورٍ ، وَقَبَضَهُ مِنْكَ بِأَجْرٍ كَبِيْرٍ ، الصَّلَاةِ وَالرَّحْمَةِ وَالْهُدَى إِنِ احْتَسَبَتْهُ ، فَاصْبِرْ ، وَلَا يُحْبِطْ جَزَعُكَ أَجْرَكَ فَتَنْدمَ ، وَاعْلَمْ أَنَّ الْجَزَعَ لَا يَرُدُّ مَيِّتًا ، وَلَا يَدْفَعَ حُزْنًا ، وَمَا هُوَ نَازِلٌ فَكَأَنْ قَدْ وَالسَّلَامُ " (رواه الطبرانى فى الكبير والاوسط)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
কুরআন মাজীদে বিপদে ধৈর্যধারণকারীদের তিনটি সুসংবাদ দেয়া হয়েছে-
اُولٰٓئِکَ عَلَیۡہِمۡ صَلَوٰتٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَرَحۡمَۃٌ ۟ وَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُہۡتَدُوۡنَ
এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে বিশেষ করুণা ও দয়া রয়েছে এবং এরাই আছে হিদায়াতের উপর। (২, সূরা বাকারা: ১৫৭)
রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর শোক বার্তায় মূলত কুরআনের উল্লিখিত বাণীর সুসংবাদের প্রতি ইংগিত করেছেন এবং বলেছেন-
"হে মু'আয! তুমি যদি সাওয়াব প্রাপ্তি ও আল্লাহর সন্তোষ লাভের লক্ষ্যে এই বিপদে ধৈর্যধারণ কর, তবে আল্লাহর কাছে তোমার জন্য তাঁর রহমত, দয়া ও সুসংবাদ রয়েছে।"
যে কোন মুসলমান বিপদগ্রস্থ হলে নবী কারীম ﷺ-এর এ শোকবার্তা পাঠ করে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে এবং পেতে পারে মনের প্রশান্তি। সম্ভবত আমরাও নিজ নিজ বিপদে নবী কারীম ﷺ-এর ঈমান বর্ধক শোক গাঁথা থেকে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। ধৈর্য ও শোকর আদায়ের এই পদ্ধতিকে প্রতীক বানিয়ে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর বিশেষ দয়া, অনুগ্রহ ও হিদায়াত প্রাপ্তির লক্ষ্যে এগিয়ে আসা সবার কর্তব্য।
اُولٰٓئِکَ عَلَیۡہِمۡ صَلَوٰتٌ مِّنۡ رَّبِّہِمۡ وَرَحۡمَۃٌ ۟ وَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡمُہۡتَدُوۡنَ
এরাই তারা, যাদের প্রতি তাদের প্রতিপালকের পক্ষ হতে বিশেষ করুণা ও দয়া রয়েছে এবং এরাই আছে হিদায়াতের উপর। (২, সূরা বাকারা: ১৫৭)
রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর শোক বার্তায় মূলত কুরআনের উল্লিখিত বাণীর সুসংবাদের প্রতি ইংগিত করেছেন এবং বলেছেন-
"হে মু'আয! তুমি যদি সাওয়াব প্রাপ্তি ও আল্লাহর সন্তোষ লাভের লক্ষ্যে এই বিপদে ধৈর্যধারণ কর, তবে আল্লাহর কাছে তোমার জন্য তাঁর রহমত, দয়া ও সুসংবাদ রয়েছে।"
যে কোন মুসলমান বিপদগ্রস্থ হলে নবী কারীম ﷺ-এর এ শোকবার্তা পাঠ করে উপদেশ গ্রহণ করতে পারে এবং পেতে পারে মনের প্রশান্তি। সম্ভবত আমরাও নিজ নিজ বিপদে নবী কারীম ﷺ-এর ঈমান বর্ধক শোক গাঁথা থেকে প্রশান্তি লাভ করতে পারি। ধৈর্য ও শোকর আদায়ের এই পদ্ধতিকে প্রতীক বানিয়ে দুনিয়া ও আখিরাতে আল্লাহর বিশেষ দয়া, অনুগ্রহ ও হিদায়াত প্রাপ্তির লক্ষ্যে এগিয়ে আসা সবার কর্তব্য।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)