মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ২৩৪
সলাত অধ্যায়
জুমু'আর দিনে রহমত প্রাপ্তি ও দু'আ কবুলের একটি বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে
২৩৪. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: জুমু'আর দিনে এমন একটি মুহূর্ত আছে, কোন মুসলিম বান্দা সে মুহূর্তটি পেলে এবং আল্লাহর নিকট কোন কল্যাণ প্রার্থনা করলে আল্লাহ্ অবশ্যই তাকে তা দিবেন। (বুখারী ও মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنَّ فِي الْجُمُعَةِ لَسَاعَةً لَا يُوَافِقُهَا عَبْدٌ مُسْلِمٌ يَسْأَلُ اللهَ فِيْهَا خَيْرًا ، إِلَّا أَعْطَاهُ اللهُ إِيَّاهُ. (رواه البخارى ومسلم)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
সারা বছরে রহমত প্রাপ্তি ও দু'আ কবুলের জন্য যেমন লায়লাতুল কদর বা মহিমান্বিত নির্ধারিত, যাতে বান্দা তাওবা-ইস্তিগফার করে দু'আ করলে সৌভাগ্যের ছোঁয়া পায় এবং আল্লাহ্ তার দু'আ কবুল করেন। একইভাবে প্রতি সপ্তাহে জুমু'আর দিনেও রহমত প্রাপ্তি ও দু'আ কবুলের একটি বিশেষ মুহূর্ত রয়েছে। কাজেই বান্দা যদি উক্ত সময়ে দু'আ করে তাহলে আশা করা যায় আল্লাহ্ তার দু'আ কবুল করবেন। হযরত আবু হুরায়রা (রা.) আবদুল্লাহ্ ইবনে সালাম ও কা'ব ইবনে আহবার (রা.) থেকে বর্ণনা করেন যে, তাঁরা বলেছেন, জুমু'আর দিনের দু'আ কবুলের মুহূর্তটির বিষয়ে তাওরাতেও বর্ণিত আছে। বলাবাহুল্য, এ দু'জনেই ছিলেন তাওরাত ও অন্যান্য আসমানী কিতাবের বিশেষজ্ঞ আলিম।
জুমু'আর দিনের এই মুহূর্তটি সনাক্ত করতে যেয়ে হাদীস বিশারদগণ অনেক অভিমত দিয়েছেন। এর মতে দু'টি এমন মত রয়েছে যা প্রকাশ্য কিংবা ইঙ্গিতে কোন কোন হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে। নিম্নে তাই উল্লেখ করা হলো-
১. ইমাম যখন খুতবা দানের জন্য মিস্বরে উঠেন, সে সময় থেকে শুরু করে সালাত আদায় শেষ করা পর্যন্ত দু'আ কবুলের এই মুহূর্তটি স্থায়ী থাকে।
মোদ্দাকথা, খুতবা এবং সালাতের মধ্যবর্তী সময়ই মূলতঃ দু'আ কবুলের মুহূর্ত।
২. আসর থেকে শুরু করে সূর্য অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত।
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ (র.) এ অভিমত দু'টি 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগায়' উল্লেখ করে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করেছেন:
উল্লিখিত অভিমত দু'টিতে সময় নির্দিষ্ট করা উদ্দেশ্য নয়। বরং খুতবা ও সালাতের সময় যেহেতু বান্দা বিশেষভাবে আল্লাহ অভিমুখী হয় তখনই ইবাদত ও দু'আ করার বিশেষ সময়-এটাই বুঝানো উদ্দেশ্য। তাই আশা করা যায় যে, ঐ সময়ই মূলতঃ দু'আ কবুলের মুহূর্ত। একইভাবে আসরের সময় থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময় যেহেতু ভাগ্য প্রসন্ন হওয়ার মুহূর্ত এবং দিনের শেষ সময় কাজেই সে সময় ও দু'আ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কোন কোন মনীষী লিখেছেন: কাদরের রাত যে কারণে অনির্দিষ্ট ঠিক একই কারণে জুমু'আর দিনের দু'আ কবুলের মুহূর্তটিও অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।
বলাবাহুল্য, তথাপিও রমাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে, বিশেষত সাতাশতম রাত কাদরের রাত হওয়ার ব্যাপারে কোন কোন হাদীসে যেমন ইঙ্গিত রয়েছে, ঠিক একইভাবে জুমু'আর দিনের দু'আ কবুলের মুহূর্তটি সম্পর্কেও সালাত ও খুতবার সময় এবং আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ের ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হাদীসের ইঙ্গিত রয়েছে। তাই এই দু'সময়েই যেন আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করে এবং গুরুত্বের সাথে দু'আ করে।"
এই অধম তাঁর কোন কোন প্রবীন উস্তাদদের দেখেছেন যে, তাঁরা এই দু'সময়ে লোকদের সাথে মেলামেশা এবং কথাবার্তা বলা পসন্দ করতেন না, বরং সালাত অথবা যিকর ও আল্লাহর প্রতি গভীর ধ্যানের মধ্য দিয়ে সময় কাটাতেন।
জুমু'আর দিনের এই মুহূর্তটি সনাক্ত করতে যেয়ে হাদীস বিশারদগণ অনেক অভিমত দিয়েছেন। এর মতে দু'টি এমন মত রয়েছে যা প্রকাশ্য কিংবা ইঙ্গিতে কোন কোন হাদীসে উল্লিখিত হয়েছে। নিম্নে তাই উল্লেখ করা হলো-
১. ইমাম যখন খুতবা দানের জন্য মিস্বরে উঠেন, সে সময় থেকে শুরু করে সালাত আদায় শেষ করা পর্যন্ত দু'আ কবুলের এই মুহূর্তটি স্থায়ী থাকে।
মোদ্দাকথা, খুতবা এবং সালাতের মধ্যবর্তী সময়ই মূলতঃ দু'আ কবুলের মুহূর্ত।
২. আসর থেকে শুরু করে সূর্য অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত।
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ (র.) এ অভিমত দু'টি 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগায়' উল্লেখ করে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করেছেন:
উল্লিখিত অভিমত দু'টিতে সময় নির্দিষ্ট করা উদ্দেশ্য নয়। বরং খুতবা ও সালাতের সময় যেহেতু বান্দা বিশেষভাবে আল্লাহ অভিমুখী হয় তখনই ইবাদত ও দু'আ করার বিশেষ সময়-এটাই বুঝানো উদ্দেশ্য। তাই আশা করা যায় যে, ঐ সময়ই মূলতঃ দু'আ কবুলের মুহূর্ত। একইভাবে আসরের সময় থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময় যেহেতু ভাগ্য প্রসন্ন হওয়ার মুহূর্ত এবং দিনের শেষ সময় কাজেই সে সময় ও দু'আ কবুল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
কোন কোন মনীষী লিখেছেন: কাদরের রাত যে কারণে অনির্দিষ্ট ঠিক একই কারণে জুমু'আর দিনের দু'আ কবুলের মুহূর্তটিও অজ্ঞাত রাখা হয়েছে।
বলাবাহুল্য, তথাপিও রমাযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতে, বিশেষত সাতাশতম রাত কাদরের রাত হওয়ার ব্যাপারে কোন কোন হাদীসে যেমন ইঙ্গিত রয়েছে, ঠিক একইভাবে জুমু'আর দিনের দু'আ কবুলের মুহূর্তটি সম্পর্কেও সালাত ও খুতবার সময় এবং আসর থেকে মাগরিব পর্যন্ত সময়ের ব্যাপারে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হাদীসের ইঙ্গিত রয়েছে। তাই এই দু'সময়েই যেন আল্লাহর বান্দারা আল্লাহর প্রতি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করে এবং গুরুত্বের সাথে দু'আ করে।"
এই অধম তাঁর কোন কোন প্রবীন উস্তাদদের দেখেছেন যে, তাঁরা এই দু'সময়ে লোকদের সাথে মেলামেশা এবং কথাবার্তা বলা পসন্দ করতেন না, বরং সালাত অথবা যিকর ও আল্লাহর প্রতি গভীর ধ্যানের মধ্য দিয়ে সময় কাটাতেন।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)