মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ১৩৩
সলাত অধ্যায়
জুমু'আ ও দুই ঈদের সালাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর কিরা'আত
১৩৩. হযরত উবায়দুল্লাহ্ (রা) থেকে বর্ণিত। উমর ইবনুল খাত্তাব (রা) আবু ওয়াকিদ লায়সীকে জিজ্ঞেস করেন যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ ঈদুল আযহা ও ঈদুল ফিতরে কোন সূরা পাঠ করতেন। তিনি বলেন, তিনি উভয় ঈদের সালাতে সূরা কাফ ও সূরা কামার পাঠ করতেন। (মুসলিম)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ عُبَيْدِ اللهِ أَنَّ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ ، سَأَلَ أَبَا وَاقِدٍ اللَّيْثِيَّ : مَا كَانَ يَقْرَأُ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي الْأَضْحَى وَالْفِطْرِ؟ فَقَالَ : « كَانَ يَقْرَأُ فِيهِمَا بِ ق وَالْقُرْآنِ الْمَجِيدِ ، وَاقْتَرَبَتِ السَّاعَةُ. (رواه مسلم)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আলোচ্য হাদীস থেকে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ জুমু'আর দুই রাক'আত সালাতে সূরা জুমু'আ ও সূরা মুনাফিকূন অথবা সূরা আ'লা ও সূরা গাশিয়া পাঠ করতেন। উভয় ঈদের সালাতে তিনি সূরা আলা ও সূরা গাশিয়া পাঠ করতেন অথবা কখনো কখনো সূরা কাফ ও সূরা কামার পাঠ করতেন।
কোন কোন ভাষ্যকার লিখেছেন, হযরত উমর (রা)-এর এই জিজ্ঞাসা তাঁর অজানার কারণে বা ভুলে যাওয়ার কারণে ছিল না, কেননা তাঁর সম্পর্কে একথা চিন্তা করা যায় না। তার প্রশ্নের কারণ হয়ত হযরত আবূ ওয়াকিদ লায়সীর ইলম ও স্মরণ শক্তি সম্পর্কে অবগত হওয়া অথবা তাঁর মুখ থেকে অপরকে শুনানো অথবা নিজ জানা বিষয় সত্যায়িত করা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এবং জুমু'আ ও দুই ঈদের সালাতের কিরা'আত সম্পর্কীয় এ পর্যন্ত যেসব হাদীস উদ্ধৃত করা হয়েছে এবং ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তার আলোকে পাঠক নিশ্চয়ই নিম্নোক্ত দু'টি বিষয় অনুধাবন করেছেন।
১. রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সাধারণ আমল ছিল এরূপ যে, তিনি ফজরে তিওয়ালে মুফাস্সাল কিরা'আত পাঠ করতেন, যুহরে কিছু দীর্ঘ কিরা'আত পাঠ করতেন, আসরে সংক্ষিপ্ত হালকা কিরা'আত পাঠ করতেন, মাগরিবেও অনুরূপ হালকা কিরা'আত পাঠ করতেন এবং এশার সালাতে আওসাতে মুফাস্সাল কিরা'আত পাঠ পসন্দ করতেন। তবে কখনো কখনো ব্যতিক্রমও হতো।
২. কোন সালাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ বিশেষ কোন সূরা পাঠের নির্দেশ দেননি এবং নিজে কার্যত এরূপ করেনও নি। তবে হ্যাঁ, কোন কোন সালাতে বিশেষ বিশেষ সূরা পাঠের বিষয়টি তাঁর থেকে প্রমাণিত।
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ্ (র) 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগায়' বলেন: "রাসূলুল্লাহ ﷺ কোন কোন সালাতে বিশেষ গুরুত্ব ও উপকারিতা লক্ষ্য করে বিশেষ সূরা পাঠ করা পসন্দ করতেন। কিন্তু না তিনি অকাট্যভাবে নির্দিষ্ট করে গেছেন আর না অন্যকে তা করার তাগিদ দিয়েছেন। সুতরাং সালাতে যদি কেউ তাঁর অনুসরণ করে, তবে তা উত্তম, আর কেউ যদি তা না করে তবে তাতে কোন দোষ নেই।" (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা: দ্বিতীয় পর্ব)
কোন কোন ভাষ্যকার লিখেছেন, হযরত উমর (রা)-এর এই জিজ্ঞাসা তাঁর অজানার কারণে বা ভুলে যাওয়ার কারণে ছিল না, কেননা তাঁর সম্পর্কে একথা চিন্তা করা যায় না। তার প্রশ্নের কারণ হয়ত হযরত আবূ ওয়াকিদ লায়সীর ইলম ও স্মরণ শক্তি সম্পর্কে অবগত হওয়া অথবা তাঁর মুখ থেকে অপরকে শুনানো অথবা নিজ জানা বিষয় সত্যায়িত করা। পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এবং জুমু'আ ও দুই ঈদের সালাতের কিরা'আত সম্পর্কীয় এ পর্যন্ত যেসব হাদীস উদ্ধৃত করা হয়েছে এবং ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তার আলোকে পাঠক নিশ্চয়ই নিম্নোক্ত দু'টি বিষয় অনুধাবন করেছেন।
১. রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সাধারণ আমল ছিল এরূপ যে, তিনি ফজরে তিওয়ালে মুফাস্সাল কিরা'আত পাঠ করতেন, যুহরে কিছু দীর্ঘ কিরা'আত পাঠ করতেন, আসরে সংক্ষিপ্ত হালকা কিরা'আত পাঠ করতেন, মাগরিবেও অনুরূপ হালকা কিরা'আত পাঠ করতেন এবং এশার সালাতে আওসাতে মুফাস্সাল কিরা'আত পাঠ পসন্দ করতেন। তবে কখনো কখনো ব্যতিক্রমও হতো।
২. কোন সালাতে রাসূলুল্লাহ ﷺ বিশেষ কোন সূরা পাঠের নির্দেশ দেননি এবং নিজে কার্যত এরূপ করেনও নি। তবে হ্যাঁ, কোন কোন সালাতে বিশেষ বিশেষ সূরা পাঠের বিষয়টি তাঁর থেকে প্রমাণিত।
হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ্ (র) 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগায়' বলেন: "রাসূলুল্লাহ ﷺ কোন কোন সালাতে বিশেষ গুরুত্ব ও উপকারিতা লক্ষ্য করে বিশেষ সূরা পাঠ করা পসন্দ করতেন। কিন্তু না তিনি অকাট্যভাবে নির্দিষ্ট করে গেছেন আর না অন্যকে তা করার তাগিদ দিয়েছেন। সুতরাং সালাতে যদি কেউ তাঁর অনুসরণ করে, তবে তা উত্তম, আর কেউ যদি তা না করে তবে তাতে কোন দোষ নেই।" (হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা: দ্বিতীয় পর্ব)
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)