মা'আরিফুল হাদীস
সলাত অধ্যায়
হাদীস নং: ১১৩
সলাত অধ্যায়
সালাতে সূরা ফাতিহা পাঠের ব্যাপারে ইমামগণের অভিমত
বিশেষজ্ঞ আলিমগণের মধ্যে ইমাম শাফিঈ এবং আরো কতিপয় ইমাম এই হাদীস এবং অনুরূপ হাদীসের আলোকে মনে করেন যে, মুসল্লী একা হোক, কি ইমাম হোক কিংবা মুক্তাদী হোক, জোরে কিরা'আত সম্পন্ন সালাত হোক কি চুপিচুপি আদায়যোগ্য সালাত হোক সর্বাবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করা অত্যাবশ্যক।
ইমাম মালিক ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (র) এবং আরো কতিপয় আলিম আলোচ্য হাদীস এবং এ বিষয় সম্পর্কিত অন্যান্য হাদীস বিবেচনা করে মত প্রকাশ করেন যে, মুসল্লী যদি মুক্তাদী হয় এবং সালাতের কিরা'আত যদি জোরে পাঠযোগ্য হয়, তবে ইমামের কিরা'আত মুক্তাদীর পক্ষে যথেষ্ট হবে। সুতরাং এমতাবস্থায় মুক্তাদীর কিরা'আত পাঠের প্রয়োজন নেই। অপরাপর অবস্থাসমূহে মুসল্লীর জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করা জরুরী।
ইমাম আযম আবূ হানীফা (র)ও এ অভিমতের প্রবক্তা। তবে তিনি আর একটু অগ্রসর হয়ে বলেন, নিঃশব্দ কিরা'আত সম্বলিত সালাতেও ইমামের কিরা'আত মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট। উল্লিখিত ইমামগণ যে সকল দলীলের ভিত্তিতে উপরিবর্ণিত অভিমত পোষণ করেন, তন্মধ্যে একটি হাদীস ইতোপূর্বে উল্লিখিত হয়েছে।
বিশেষজ্ঞ আলিমগণের মধ্যে ইমাম শাফিঈ এবং আরো কতিপয় ইমাম এই হাদীস এবং অনুরূপ হাদীসের আলোকে মনে করেন যে, মুসল্লী একা হোক, কি ইমাম হোক কিংবা মুক্তাদী হোক, জোরে কিরা'আত সম্পন্ন সালাত হোক কি চুপিচুপি আদায়যোগ্য সালাত হোক সর্বাবস্থায় সূরা ফাতিহা পাঠ করা অত্যাবশ্যক।
ইমাম মালিক ও ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (র) এবং আরো কতিপয় আলিম আলোচ্য হাদীস এবং এ বিষয় সম্পর্কিত অন্যান্য হাদীস বিবেচনা করে মত প্রকাশ করেন যে, মুসল্লী যদি মুক্তাদী হয় এবং সালাতের কিরা'আত যদি জোরে পাঠযোগ্য হয়, তবে ইমামের কিরা'আত মুক্তাদীর পক্ষে যথেষ্ট হবে। সুতরাং এমতাবস্থায় মুক্তাদীর কিরা'আত পাঠের প্রয়োজন নেই। অপরাপর অবস্থাসমূহে মুসল্লীর জন্য সূরা ফাতিহা পাঠ করা জরুরী।
ইমাম আযম আবূ হানীফা (র)ও এ অভিমতের প্রবক্তা। তবে তিনি আর একটু অগ্রসর হয়ে বলেন, নিঃশব্দ কিরা'আত সম্বলিত সালাতেও ইমামের কিরা'আত মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট। উল্লিখিত ইমামগণ যে সকল দলীলের ভিত্তিতে উপরিবর্ণিত অভিমত পোষণ করেন, তন্মধ্যে একটি হাদীস ইতোপূর্বে উল্লিখিত হয়েছে।
১১৩. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: ইমাম নিয়োগ করা হয় অনুসরণ করার জন্য। সুতরাং ইমাম তাকবীর বললে তোমরাও তাকবীর বলবে। তবে ইমাম যখন কিরা'আত পাঠ করে তখন তোমরা নীরব থাকবে। (আবূ দাউদ, নাসায়ী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " إِنَّمَا جُعِلَ الْإِمَامُ لِيُؤْتَمَّ بِهِ ، فَإِذَا كَبَّرَ فَكَبِّرُوا ، وَإِذَا قَرَأَ فَأَنْصِتُوا. (رواه ابوداؤد والترمذى وابن ماجه)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
ইমামের কিরা'আত পাঠের সময় মুক্তাদীর নীরবে কিরা'আত শুনার বিষয়টি সম্পর্কে যে নির্দেশন এসেছে হুবহু সে শব্দমালাসহ অন্যান্য কতিপয় সাহাবীও তা রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে বর্ণনা করেছেন। যেমন, সহীহ্ মুসলিমে হযরত আবু মূসা আশ'আরী (রা) থেকে এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ হাদীস বর্ণিত হয়েছে। ইমাম মুসলিম (র) তাঁর কোন এক ছাত্রের প্রশ্নের জবাবে হযরত আবূ হুরায়রা (রা) বর্ণিত পূর্বোল্লিখিত হাদীসকে বিশুদ্ধ ও নির্ভরযোগ্য বলে আখ্যায়িত করেছেন। সম্ভবতঃ রাসূলুল্লাহ ﷺ এর এই নির্দেশনার মূলে রয়েছে কুরআন মাজীদের নিম্নোক্ত আয়াত- وَإِذَا قُرِءَ الْقُرْآنُ فَاسْتَمِعُوا لَهُ وَأَنْصِتُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ "যখন কুরআন পাঠ করা হয় তখন তোমরা মনোযোগের সাথে তা শুনবে এবং নিশ্চুপ হয়ে থাকবে যাতে তোমাদের প্রতি দয়া করা হয়"। (৭, সূরা আরাফঃ ২০৪) ইমাম আযম আবূ হানীফা (র) শব্দহীন কিরা'আত সম্বলিত সালাতেও ইমামের কিরা'আত মুক্তাদীর জন্য যথেষ্ট বলে অভিমত পোষণ করেন। তার সপক্ষে বিশেষভাবে তিনি হযরত জাবির (রা) বর্ণিত হাদীস উল্লেখ করেন।
এই হাদীস ইমাম মুহাম্মাদ, ইমাম তাহাভী, দারু কুতনী প্রমুখ ইমাম আযম আবূ হানীফা (র) থেকে সনদ সহ বর্ণনা করেছেন। মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর এক রিওয়ায়াতে নিম্নোক্ত শব্দ যোগে বর্ণিত হয়েছে-
"হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ (রা) থেকে বর্ণিত। নবী কারীম ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি ইমামের পেছনে সালাত আদায় করে, ইমামের কিরা'আতই তার কিরা'আত।"
জ্ঞাতব্য: ইমামের পেছনে মুক্তাদীর সূরা ফাতিহা পাঠ করা জরূরী কিনা এ বিষয়টি ঐ সব বিতর্কিত বিষয়ের অন্যতম। যাকে কেন্দ্র করে বর্তমান শতাব্দীতে উভয়পক্ষে শতাধিক পুস্তক প্রণয়ন করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এর মধ্যে কিছু সংখ্যক কতিপয় বিশেষজ্ঞ এর সুক্ষাতিসূক্ষ বিশ্লেষণ সমৃদ্ধ। কিন্তু মা'আরিফুল হাদীস যে সকল মানুষের উদ্দেশ্যে প্রণীত, তাতে এহেন মতভেদজনিত বিষয় কেবল অপ্রয়োজনীয় নয় বরং কোন কোন দিক থেকে ক্ষতিকরও বটে। এধরনের মতভেদজনিত মাসআলার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে এই যে, প্রত্যেক প্রবীন ইমামের প্রতি সুধারণা পোষণ করা চাই, অন্তর থেকে তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা চাই এবং তাঁদের এভাবে মূল্যায়ন করা উচিত যে প্রত্যেকেই কুরআন ও সুন্নাহ্ এবং সাহাবা কিরামের কর্মধারার উপর গভীর গবেষণা করার পর তাঁদের কাছে যা অগ্রাধিকার পাবার যোগ্য মনে হয়েছে তাঁরা তা ভালো উদ্দেশ্যেই গ্রহণ করেছেন এবং তাঁদের কেউই মিথ্যাশ্রয়ী নন। তবে উম্মাতের ঐক্য ও সংহতি রক্ষাকল্পে মূর্খতা, প্রবৃত্তির দাসত্ব ও ফিতনার সয়লাবের এই যুগে কোন এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আমল করা বাঞ্ছনীয়। মোটকথা মা'আরিফুল হাদীস গ্রন্থে তর্ক-সমালোচনা থেকে আত্মরক্ষার পথ বেছে নেয়া হয়েছে। আল্লাহর শোকর, পূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি ও আস্থার সাথে অধম (গ্রন্থকার) এই অভিমত পেশ করছে যে, গোটা ভারত উপমহাদেশের গর্বের ধন ও মহান শিক্ষক হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ্ (র) 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা' গ্রন্থে মতভেদ জনিত মাসআলার যে ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান দিয়েছেন। বর্তমান যুগে উম্মাতে মুহাম্মাদীকে তাই আবার ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।
এই হাদীস ইমাম মুহাম্মাদ, ইমাম তাহাভী, দারু কুতনী প্রমুখ ইমাম আযম আবূ হানীফা (র) থেকে সনদ সহ বর্ণনা করেছেন। মুয়াত্তা ইমাম মুহাম্মাদ রহ. এর এক রিওয়ায়াতে নিম্নোক্ত শব্দ যোগে বর্ণিত হয়েছে-
"হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ্ (রা) থেকে বর্ণিত। নবী কারীম ﷺ বলেছেন: যে ব্যক্তি ইমামের পেছনে সালাত আদায় করে, ইমামের কিরা'আতই তার কিরা'আত।"
জ্ঞাতব্য: ইমামের পেছনে মুক্তাদীর সূরা ফাতিহা পাঠ করা জরূরী কিনা এ বিষয়টি ঐ সব বিতর্কিত বিষয়ের অন্যতম। যাকে কেন্দ্র করে বর্তমান শতাব্দীতে উভয়পক্ষে শতাধিক পুস্তক প্রণয়ন করা হয়েছে। নিঃসন্দেহে এর মধ্যে কিছু সংখ্যক কতিপয় বিশেষজ্ঞ এর সুক্ষাতিসূক্ষ বিশ্লেষণ সমৃদ্ধ। কিন্তু মা'আরিফুল হাদীস যে সকল মানুষের উদ্দেশ্যে প্রণীত, তাতে এহেন মতভেদজনিত বিষয় কেবল অপ্রয়োজনীয় নয় বরং কোন কোন দিক থেকে ক্ষতিকরও বটে। এধরনের মতভেদজনিত মাসআলার ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে এই যে, প্রত্যেক প্রবীন ইমামের প্রতি সুধারণা পোষণ করা চাই, অন্তর থেকে তাঁদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা চাই এবং তাঁদের এভাবে মূল্যায়ন করা উচিত যে প্রত্যেকেই কুরআন ও সুন্নাহ্ এবং সাহাবা কিরামের কর্মধারার উপর গভীর গবেষণা করার পর তাঁদের কাছে যা অগ্রাধিকার পাবার যোগ্য মনে হয়েছে তাঁরা তা ভালো উদ্দেশ্যেই গ্রহণ করেছেন এবং তাঁদের কেউই মিথ্যাশ্রয়ী নন। তবে উম্মাতের ঐক্য ও সংহতি রক্ষাকল্পে মূর্খতা, প্রবৃত্তির দাসত্ব ও ফিতনার সয়লাবের এই যুগে কোন এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে আমল করা বাঞ্ছনীয়। মোটকথা মা'আরিফুল হাদীস গ্রন্থে তর্ক-সমালোচনা থেকে আত্মরক্ষার পথ বেছে নেয়া হয়েছে। আল্লাহর শোকর, পূর্ণ অন্তর্দৃষ্টি ও আস্থার সাথে অধম (গ্রন্থকার) এই অভিমত পেশ করছে যে, গোটা ভারত উপমহাদেশের গর্বের ধন ও মহান শিক্ষক হযরত শাহ ওয়ালী উল্লাহ্ (র) 'হুজ্জাতুল্লাহিল বালিগা' গ্রন্থে মতভেদ জনিত মাসআলার যে ভারসাম্যপূর্ণ সমাধান দিয়েছেন। বর্তমান যুগে উম্মাতে মুহাম্মাদীকে তাই আবার ঐক্যবদ্ধ করতে পারে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)