মা'আরিফুল হাদীস
সালাত অধ্যায়
হাদীস নং: ২৬
সালাত অধ্যায়
ফজরের সময় প্রসঙ্গ
২৬. হযরত রাফি ইবনে খাদীজ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ (সা) বলেছেন: তোমরা ফর্সার সময় (সুবহে সাদিকের ছড়িয়ে পড়লে) ফজরের সালাত আদায় করবে। কেননা এতে অধিক সাওয়াব রয়েছে (আবূ দাউদ, তিরমিযী ও দারিমী)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ رَافِعِ بْنِ خَدِيجٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : " أَسْفِرُوا بِالْفَجْرِ ، فَإِنَّهُ أَعْظَمُ لِلْأَجْر". (رواه ابو داؤد والترمذى والدارمى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
উপরে বর্ণিত হযরত আয়েশার হাদীস সূত্রে জানা যায় যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ ফজরের সালাত এমন অন্ধকারে আদায় করতেন যে, চাদর পরিহিত মহিলারা সালাত শেষে বাড়ি ফেরার পথে তাদের চেনা যেত না।
পক্ষান্তরে হযরত রাফি' ইবনে খাদীজা (রা) বর্ণিত হাদীস সূত্রে জানা যায় যে, ফজরের আলো দীপ্তিমান হওয়ার পর ফজরের সালাত আদায়ে রয়েছে অতিরিক্ত সাওয়াব। প্রাজ্ঞ আলিমগণ এ উভয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানে বিভিন্ন ব্যাখ্যা পেশ করেছেন। এই অধম (গ্রন্থকার) এর মতে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হচ্ছে এই যে, রাফি' ইবনে খাদীজ (রা) বর্ণিত হাদীস মুতাবিক ফর্সার আলোতে ফজরের সালাত আদায় করা উত্তম। অর্থাৎ এতটুকু বিলম্ব করা চাই যাতে সুবহে সাদিকের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যামানায় বেশির ভাগ লোক তাহাজ্জুদ আদায় করতেন এবং ফজরের সালাত প্রথম ওয়াক্তে আদায়ে অভ্যস্ত ছিলেন, যেমন বর্তমানেও কিছু সংখ্যক মুত্তাকী লোক এরূপ করে থাকেন। তাঁদের সুবিধার্থে রাসূলুল্লাহ ﷺ ফজরের সালাত আদায়ে বিলম্ব করতেন না। কারণ সুবহে সাদিকের আলো ছড়িয়ে যাওয়ার পর আদায় করা হলে তাদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষাজনিত কষ্ট করতে হতো। তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ বেশির ভাগ সময় অন্ধকার থাকতেই ফজরের সালাত আদায় করে নিতেন। যেমন, ইশার সালাত রাতের এক তৃতীয়াংশে আদায় করা উত্তম হওয়া সত্ত্বেও তিনি মুসল্লীদের সুবিধার্থে তাড়াতাড়ি আদায় করে নিতেন। ঠিক একইভাবে লোকদের সুবিধার্থে তিনি অন্ধকারেই ফজরের সালাত আদায় করে নিতেন। তারপর রাসূলুল্লাহ ﷺ এ বক্তব্যও পেশ করেন যে, লোকদের সুবিধার প্রতি দৃষ্টিদান সময়ের ফযীলতের চেয়ে অধিক মর্যাদার দাবি রাখে।
আমাদের এই বর্তমান যুগে যেহেতু তাহাজ্জুদগুযার ও ফজরের প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায়কারী লোকের সংখ্যা কম, তাই সবার সুবিধার্থে সুবহে সাদিকের আলো ছড়িয়ে যাওয়ার পরই ফজরের সালাত আদায় করা উত্তম। কারণ অন্ধকার থাকতেই যদি প্রথম ওয়াক্তে জামা'আতে অংশ নেবে। এ সকল কারণে আমাদের বর্তমান সময়ে কিছু বিলম্ব ফর্সার সময় ফজরের সালাত আদায় করাই উত্তম হবে। তবে হ্যাঁ, কোন এলাকার মুসল্লীরা যদি প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদয়ের জন্য একত্র হয় এবং বিলম্ব করা তাদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়, তবে তাদের অন্ধকারে আদায় করা উত্তম হবে। যেমন রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সাধারণ আমল ছিল। একারণেই বহু এলাকা রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপরিউক্ত আমলের উপর ভিত্তি করে অন্ধকারের মধ্যে ফজরের সালাত আদায় করা হয়।
পক্ষান্তরে হযরত রাফি' ইবনে খাদীজা (রা) বর্ণিত হাদীস সূত্রে জানা যায় যে, ফজরের আলো দীপ্তিমান হওয়ার পর ফজরের সালাত আদায়ে রয়েছে অতিরিক্ত সাওয়াব। প্রাজ্ঞ আলিমগণ এ উভয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধানে বিভিন্ন ব্যাখ্যা পেশ করেছেন। এই অধম (গ্রন্থকার) এর মতে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা হচ্ছে এই যে, রাফি' ইবনে খাদীজ (রা) বর্ণিত হাদীস মুতাবিক ফর্সার আলোতে ফজরের সালাত আদায় করা উত্তম। অর্থাৎ এতটুকু বিলম্ব করা চাই যাতে সুবহে সাদিকের আলো চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ এর যামানায় বেশির ভাগ লোক তাহাজ্জুদ আদায় করতেন এবং ফজরের সালাত প্রথম ওয়াক্তে আদায়ে অভ্যস্ত ছিলেন, যেমন বর্তমানেও কিছু সংখ্যক মুত্তাকী লোক এরূপ করে থাকেন। তাঁদের সুবিধার্থে রাসূলুল্লাহ ﷺ ফজরের সালাত আদায়ে বিলম্ব করতেন না। কারণ সুবহে সাদিকের আলো ছড়িয়ে যাওয়ার পর আদায় করা হলে তাদের দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষাজনিত কষ্ট করতে হতো। তাই রাসূলুল্লাহ ﷺ বেশির ভাগ সময় অন্ধকার থাকতেই ফজরের সালাত আদায় করে নিতেন। যেমন, ইশার সালাত রাতের এক তৃতীয়াংশে আদায় করা উত্তম হওয়া সত্ত্বেও তিনি মুসল্লীদের সুবিধার্থে তাড়াতাড়ি আদায় করে নিতেন। ঠিক একইভাবে লোকদের সুবিধার্থে তিনি অন্ধকারেই ফজরের সালাত আদায় করে নিতেন। তারপর রাসূলুল্লাহ ﷺ এ বক্তব্যও পেশ করেন যে, লোকদের সুবিধার প্রতি দৃষ্টিদান সময়ের ফযীলতের চেয়ে অধিক মর্যাদার দাবি রাখে।
আমাদের এই বর্তমান যুগে যেহেতু তাহাজ্জুদগুযার ও ফজরের প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদায়কারী লোকের সংখ্যা কম, তাই সবার সুবিধার্থে সুবহে সাদিকের আলো ছড়িয়ে যাওয়ার পরই ফজরের সালাত আদায় করা উত্তম। কারণ অন্ধকার থাকতেই যদি প্রথম ওয়াক্তে জামা'আতে অংশ নেবে। এ সকল কারণে আমাদের বর্তমান সময়ে কিছু বিলম্ব ফর্সার সময় ফজরের সালাত আদায় করাই উত্তম হবে। তবে হ্যাঁ, কোন এলাকার মুসল্লীরা যদি প্রথম ওয়াক্তে সালাত আদয়ের জন্য একত্র হয় এবং বিলম্ব করা তাদের জন্য দুর্ভোগের কারণ হয়, তবে তাদের অন্ধকারে আদায় করা উত্তম হবে। যেমন রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর সাধারণ আমল ছিল। একারণেই বহু এলাকা রমযান মাসে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপরিউক্ত আমলের উপর ভিত্তি করে অন্ধকারের মধ্যে ফজরের সালাত আদায় করা হয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)