মা'আরিফুল হাদীস

সলাত অধ্যায়

হাদীস নং: ২১
সলাত অধ্যায়
ইশার সময় প্রসঙ্গে
২১. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন: আমি আমার উম্মাতকে কষ্টে ফেলব একথা যদি মনে না করতাম, তবে আমি তাদেরকে ইশার সালাত রাতের এক তৃতীয়াংশ কিংবা অর্ধ রাত পর্যন্ত দেরী করে আদায়ের নির্দেশ দিতাম। (আহমাদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজাহ)
کتاب الصلوٰۃ
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : لَوْلاَ أَنْ أَشُقَّ عَلَى أُمَّتِي لأَمَرْتُهُمْ أَنْ يُؤَخِّرُوا العِشَاءَ إِلَى ثُلُثِ اللَّيْلِ أَوْ نِصْفِهِ. (رواه احمد والترمذى وابن ماجه)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীস থেকে একথা পরিষ্কার জানা গেল যে, ইশার সালাত রাতের এক তৃতীয়াংশের পর আদায় করা উত্তম। কিন্তু সাধারণ মুসল্লীদের এতক্ষণ জেগে থেকে সালাত আদায় করা সত্যি কষ্টসাধ্য ব্যাপার। এ কষ্টের দিকে লক্ষ্য করেই রাসূলুল্লাহ ﷺ তাঁর উম্মাতের সুবিধার্থে তাড়াতাড়ি করে সালাত আদায় করে নিতেন। হযরত জাবির (রা) সূত্রে এ মর্মে একটি হাদীস পূর্বে উল্লিখিত হয়েছে যে, ইশার সালাতে যদি তাড়াতাড়ি লোক সমাগম হতো তাহলে তাড়াতাড়ি, আর বিলম্বে লোক সমাগম হলে বিলম্বে নবী কারীম ﷺ সালাত আদায় করে নিতেন। নবী কারীম ﷺ এর কথা ও কাজ থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ মূলনীতি জানা যায় যে, কোন সামষ্টিক আমল সম্পাদন করতে যেয়ে উত্তম সময় পেতে যদি সাধারণ মানুষের কষ্ট হয়, তবে তা বর্জন করাই উত্তম। আল্লাহ্ চাহেত সাধারণ মানুষের কষ্ট বিবেচনা করে উত্তম সময় বর্জন করায় হয়ত বা আরো অধিক সাওয়াব হবে। অন্যকথায় বলা যায়, সামষ্টিক কাজে সময়ের মর্যাদার তুলনায় সাধারণের অবস্থার দিকে লক্ষ্য রাখা সাওয়াব অর্জনের ক্ষেত্রে অগ্রগামী হওয়ার দাবি রাখে। এ হাদীস থেকে এও জানা যায় যে, ইশার সালাত কেবল এই উম্মাতের উপরই ফরয। অন্য কোন উম্মাতের উপর এই সালাত ফরয ছিল না। এই কথা অন্য হাদীসে আরো সবিস্তার বর্ণনা করা হয়েছে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান