মা'আরিফুল হাদীস

আখলাক অধ্যায়

হাদীস নং: ১৯১
আখলাক অধ্যায়
গীবত ও বুহতানের সংজ্ঞা
১৯১. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তোমরা কি জান গীবত কাকে বলে? সাহাবীগণ বললেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল বেশি জানেন। তিনি বললেন: তোমার ভাই সম্পর্কে এমন কথা বলা যা সে পসন্দ করে না। বলা হল, আমি যা বলি তা যদি আমার ভাইয়ের মধ্যে থাকে, তাহলে কি তা গীবত হবে? আল্লাহর রাসূল ﷺ বললেন: যা তুমি বলেছ তা তার মধ্যে থাকলে তুমি গীবত করেছ এবং তা তার মধ্যে না থাকলে তুমি তার বুহতান (অপবাদ) দিচ্ছ। (মুসলিম)
کتاب الاخلاق
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ ، أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ، قَالَ : « أَتَدْرُونَ مَا الْغِيبَةُ؟ » قَالُوا : اللهُ وَرَسُولُهُ أَعْلَمُ ، قَالَ : « ذِكْرُكَ أَخَاكَ بِمَا يَكْرَهُ » قِيلَ أَفَرَأَيْتَ إِنْ كَانَ فِي أَخِي مَا أَقُولُ؟ قَالَ : « إِنْ كَانَ فِيهِ مَا تَقُولُ ، فَقَدِ اغْتَبْتَهُ ، وَإِنْ لَمْ يَكُنْ فِيهِ مَا تَقُوْلُ فَقَدْ بَهَتَّهُ » (رواه مسلم)

হাদীসের ব্যাখ্যা:

মানুষের অসাক্ষাতে তার দোষ বর্ণনা করা গীবত। গীবতের দ্বারা সমাজের শান্তি বিঘ্নিত হয়, পারস্পরিক ভালবাসা ও সম্মান বিলুপ্ত হয় এবং অসাক্ষাতে দোষ বর্ণনা করার কারণে অভিযুক্ত ব্যক্তি আত্মপক্ষ সমর্থন করা বা তার প্রতিবাদ করার সুযোগ লাভ থেকে বঞ্চিত হওয়ার কারণে তা এক জঘন্য ধরনের বে-ইনসাফী। গীবত মারাত্মক সামাজিক ব্যধি হওয়ার কারণে আল্লাহ কিয়ামতের দিন গীবতকারীকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করবেন।

বুহতান গীবতের চেয়েও মারাত্মক। তাই ভুলক্রমেও কোন আল্লাহর বান্দার বিরুদ্ধে বুহতান বা অপবাদ আরোপ করা ঠিক নয়।

হাকিমের কাছে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে দোষ বর্ণনা করা, পেশাদার চোর, বদমায়েশ, গুন্ডা বা মারাত্মক দুষ্কৃতকারী ব্যক্তির অপরাধ সম্পর্কে সমাজের মানুষকে হুঁশিয়ার করা, সংশোধন করার উদ্দেশ্যে শাসক ব্যক্তি বা সরকারী আমলাদের দোষ বর্ণনা করা, বিবাহ-শাদীর ব্যাপারে পাত্র-পাত্রীর দোষ-গুণ সম্পর্কে সঠিক রায় দান করা, পদস্থ ব্যক্তির কাছে অধীনস্থ ব্যক্তির দোষ-ত্রুটির উল্লেখ করা ইত্যাদি গীবতের অন্তর্ভুক্ত নয়।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান