মা'আরিফুল হাদীস
আখলাক অধ্যায়
হাদীস নং: ১২৬
আখলাক অধ্যায়
খাদিমকে প্রতিদিন সত্তরবার মাফ কর
১২৬. হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী করীম ﷺ-এর খিদমতে উপস্থিত হয়ে বললঃ হে আল্লাহর রাসূল! খাদিমকে কতবার মাফ করব? নবী ﷺ চুপ থাকলেন। পুনরায় লোকটি বলল, হে আল্লাহর রাসুল! খাদিমকে কতবার মাফ করব? তিনি বললেন: প্রতিদিন সত্তরবার। (তিরমিযী)
کتاب الاخلاق
عَنِ عَبْدِاللهِ ابْنِ عُمَرَ قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، كَمْ أَعْفُو عَنِ الْخَادِمِ؟ فَصَمَتَ عَنْهُ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ثُمَّ قَالَ : يَا رَسُولَ اللهِ ، كَمْ أَعْفُو عَنِ الخَادِمِ؟ فَقَالَ : كُلَّ يَوْمٍ سَبْعِينَ مَرَّةً . (رواه الترمذى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
অধীনস্থদের সাথে অমায়িক ব্যবহার করা, তাদের ছোটখাটো ত্রুটি-বিচ্যুতি খুব বড় করে না দেখা এবং তাদের অপরাধ মার্জনা করা উত্তম আখলাকের অন্তর্গত। কিন্তু তারা ইসলামী হুকুম-আহকামের খেলাফ কোন কিছু করলে তা সহানুভূতির চোখে দেখা যাবে না। শরীআত মোতাবিক তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক বা সংশোধনমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
খাদিম বা অধীনস্থদের ত্রুটি-বিচ্যুতি বার বার মাফ করা কোন কৃতিত্বের কাজ নয়, বরং তা প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির কর্তব্যকর্ম। মানুষ হিসেবে আমরা বার বার ত্রুটি-বিচ্যুতি করি, বার বার অপরাধ করি, বার বার আমরা আমাদের কর্তব্যকর্মের বিপরীত অনেক কিছু করি, বার বার আল্লাহ আমাদেরকে মাফ করেন এবং সংশোধন হওয়ার সুযোগ দেন। যদি আমরা আল্লাহর বান্দাদের প্রতি দয়া ও রহম প্রদর্শন না করি তাহলে আমরা কি করে আশা করতে পারি যে, আমাদের প্রতি তিনি রহমের দৃষ্টি দান করবেন এবং আমাদের সাথে নরম ব্যবহার করবেন। বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত এক হাদীসে আল্লাহর রাসূল ﷺ সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন: যে ব্যক্তি মানুষকে রহম করে না, আল্লাহ তাকে রহম করেন না। অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন: তোমরা দুনিয়াবাসীর প্রতি রহম কর, আসমানে অবস্থানকারী তোমাদেরকে রহম করবেন। তাই বার বার অধীনস্থদের মাফ করতে হবে।
হাদীসে বর্ণিত সত্তর অর্থ কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নয়, বরং অনেক বা বার বার অর্থে ব্যবহৃত। আল্লাহর নবী ﷺ সর্বদা তাঁর অধীনস্থদের প্রতি সহনশীল ছিলেন। তিনি তাদেরকে মহব্বত করতেন। তিনি তাদের অপরাধ শুধু মাফই করেননি, কোনদিন তাদের কৈফিয়তও তলব করেননি, তাদের প্রতি কখনো রাগ বা বিরক্তিও প্রকাশ করেননি। নবী করীম ﷺ-এর বিশিষ্ট খাদিম আনাস ইবন মালিক (রা) তাঁর জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন, আমি দশ বছর আল্লাহর রাসূলের খিদমত করেছি, তিনি কখনো উফ (আহ) বলেননি। আমি কোন কাজ করলে বলেননি কেন করেছ এবং কোন কাজ না করলে বলেননি কেন করনি? মানব জাতির মধ্যে আল্লাহর রাসূলের আখলাক ছিল সর্বোত্তম।
খাদিম বা অধীনস্থদের ত্রুটি-বিচ্যুতি বার বার মাফ করা কোন কৃতিত্বের কাজ নয়, বরং তা প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির কর্তব্যকর্ম। মানুষ হিসেবে আমরা বার বার ত্রুটি-বিচ্যুতি করি, বার বার অপরাধ করি, বার বার আমরা আমাদের কর্তব্যকর্মের বিপরীত অনেক কিছু করি, বার বার আল্লাহ আমাদেরকে মাফ করেন এবং সংশোধন হওয়ার সুযোগ দেন। যদি আমরা আল্লাহর বান্দাদের প্রতি দয়া ও রহম প্রদর্শন না করি তাহলে আমরা কি করে আশা করতে পারি যে, আমাদের প্রতি তিনি রহমের দৃষ্টি দান করবেন এবং আমাদের সাথে নরম ব্যবহার করবেন। বুখারী ও মুসলিম শরীফে বর্ণিত এক হাদীসে আল্লাহর রাসূল ﷺ সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন: যে ব্যক্তি মানুষকে রহম করে না, আল্লাহ তাকে রহম করেন না। অপর এক বর্ণনায় বলা হয়েছে, আল্লাহর রাসূল ﷺ বলেছেন: তোমরা দুনিয়াবাসীর প্রতি রহম কর, আসমানে অবস্থানকারী তোমাদেরকে রহম করবেন। তাই বার বার অধীনস্থদের মাফ করতে হবে।
হাদীসে বর্ণিত সত্তর অর্থ কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নয়, বরং অনেক বা বার বার অর্থে ব্যবহৃত। আল্লাহর নবী ﷺ সর্বদা তাঁর অধীনস্থদের প্রতি সহনশীল ছিলেন। তিনি তাদেরকে মহব্বত করতেন। তিনি তাদের অপরাধ শুধু মাফই করেননি, কোনদিন তাদের কৈফিয়তও তলব করেননি, তাদের প্রতি কখনো রাগ বা বিরক্তিও প্রকাশ করেননি। নবী করীম ﷺ-এর বিশিষ্ট খাদিম আনাস ইবন মালিক (রা) তাঁর জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা বর্ণনা প্রসঙ্গে বলেছেন, আমি দশ বছর আল্লাহর রাসূলের খিদমত করেছি, তিনি কখনো উফ (আহ) বলেননি। আমি কোন কাজ করলে বলেননি কেন করেছ এবং কোন কাজ না করলে বলেননি কেন করনি? মানব জাতির মধ্যে আল্লাহর রাসূলের আখলাক ছিল সর্বোত্তম।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)