মা'আরিফুল হাদীস
আখলাক অধ্যায়
হাদীস নং: ১০৬
আখলাক অধ্যায়
হযরত মু'আয (রা)-এর প্রতি সর্বশেষ নসীহত
১০৬. হযরত মু'আয (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, বাহনের রিকাবে আমার পা রাখার পর আল্লাহর রাসুল ﷺ আমাকে সর্বশেষ নসীহত করে বলেছিলেনঃ হে মু'আয, মানুষের প্রতি তোমার আখলাক সুন্দর করবে। (মুয়াত্তা ইমাম মালিক)
کتاب الاخلاق
عَنْ مُعَاذٍ قَالَ : كَانَ آخِرُ مَا وَصَّانِىْ بِهِ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ حِينَ وَضَعْتُ رِجْلِي فِي الْغَرْزِ ، اَنْ قَالَ : يَامُعَاذُ " أَحْسِنْ خُلُقَكَ لِلنَّاسِ (رواه مالك)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আমীর-গরীব, রাজা-প্রজা, হাকিম-মাহকুম বা শাসক-শাসিত নির্বিশেষে সকল ঈমানদারের সুন্দর আখলাক বা আচরণের প্রয়োজন রয়েছে। মানুষকে প্রকৃত অর্থে আল্লাহর গোলাম হিসেবে তৈরি করার জন্য রাসুলুল্লাহ ﷺ তাদের ঈমান-আমলের সঙ্গে আখলাকের উৎকর্ষ সাধন করেছেন। সুন্দর আচরণের দ্বারা আল্লাহর মহব্বত, সন্তুষ্টি এবং সহানুভূতি হাসিল করার প্রতি তিনি গুরুত্ব আরোপ করছেন। তাহাজ্জুদ, নফল রোযা ও এ জাতীয় ইবাদতের দ্বারা যে মর্যাদা হাসিল করা যায়, তা সুন্দর আখলাকের অধিকারী ব্যক্তি কোন পরিশ্রম ছাড়াই লাভ করেন। সাধারণ ঈমানদার ব্যক্তি সুন্দর আখলাকের অধিকারী না হলে দুনিয়ার বহু মূল্যবান নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবেন এবং দুনিয়ার মানুষও তার ঈমানের নূর এবং আমলের দৌলত থেকে ফায়দা হাসিল করতে পারবে না। আখিরাতের যিন্দেগীতে তিনি বহু ইনাম থেকে বঞ্চিত হবেন। কিন্তু একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, যার উপর কওমের কোন যিম্মাদারী রয়েছে, তিনি সুন্দর আচরণের অধিকারী না হলে অসংখ্য মানুষের বর্ণনাতীত কষ্ট হবে। সাধারণ মানুষ তার যোগ্যতা থেকে ফায়দা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হবে। তাই শাসক ও পদস্থ ব্যক্তিদের সুন্দর আখলাক না থাকার অর্থ হল পরোক্ষভাবে সাধারণ মানুষের লোকসান করা। অন্যের লোকসান করা এক ধরনের যুলম এবং ছোট বড় কোন যুলম আল্লাহ পসন্দ করেন না। তাই নবী করীম ﷺ তাঁর বিশিষ্ট সাহাবী এবং ইয়েমেনের গভর্নর হযরত মু'আয ইবন জাবালকে ইয়েমেনে পাঠানোর সময় এ মূল্যবান উপদেশ দিয়েছিলেন। আফসোস! বর্তমান যুগের মুসলিম শাসকগণ যদি আল্লাহর রাসূলের এই অমূল্য উপদেশের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতেন, তাহলে তাদের নিজেদের এবং সমাজের মানুষের প্রচুর উপকার হতো।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)