মা'আরিফুল হাদীস
রিকাক অধ্যায়
হাদীস নং: ৯৯
রিকাক অধ্যায়
অধিক হাসি চেহারার নূর নষ্ট করে
৯৯. হযরত আবু যর গিফারী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর খিদমতে হাযির হলাম। অতঃপর বর্ণনাকারী দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন: আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে ওসীয়াত (আদেশ এবং উপদেশ অর্থে) করুন। রাসুল ﷺ বললেন: আমি তোমাকে তাকওয়ার ওসীয়াত করছি যা তোমার প্রত্যেক কাজকে সুন্দর ও সুসম্পন্ন করবে। আমি বললাম, আমাকে আরও ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন: কুরআন তিলাওয়াত ও মহান ইযযত ও জালালের অধিকারী আল্লাহর যিকির করা তোমার কর্তব্য। কেননা তার দ্বারা আসমানে তোমার যিকির হবে এবং দুনিয়াতে তা তোমার জন্য আলো স্বরূপ হবে। আমি বললাম, আমাকে আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন: খুব বেশি চুপ থাকবে; কারণ এটা শয়তানকে বিতাড়িত করবে এবং দীনের ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করবে। আমি বললাম, আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন। অধিক হাসি থেকে সাবধান থাক, কারণ এটা অন্তরকে মেরে ফেলে এবং চেহারার নূর বিদূরিত করে। আমি বললাম, আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেন: আল্লাহর পথে নিন্দাকারীদের নিন্দাকে ভয় করো না। আমি বললাম, আরো ওসীয়াত করুন। তিনি বললেনঃ তুমি তোমার নিজের নফস সম্পর্কে যা জান তা যেন তোমাকে মানুষের দোষ অন্বেষণ করা থেকে বিরত রাখে। (বায়হাকী: শুয়াবুল ঈমান)
کتاب الرقاق
عَنْ أَبِي ذَرٍّ قَالَ : دَخَلْتُ عَلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَذَكَرَ الْحَدِيثَ بِطُولِهِ إِلَى أَنْ قَالَ : قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللهِ ، أَوْصِنِي . قَالَ : " أَوْصَيْتُكَ بِتَقْوَى اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ، فَإِنَّهُ أَزْيَنُ لِأَمْرِكَ كُلِّهِ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " عَلَيْكَ بِتِلَاوَةِ الْقُرْآنِ ، وَذِكْرِ اللهِ عَزَّ وَجَلَّ ، فَإِنَّهُ ذِكْرٌ لَكَ فِي السَّمَاءِ وَنُورٌ لَكَ فِي الْأَرْضِ " قُلْتُ : زِدْنِي ، قَالَ : " عَلَيْكَ بِطُولِ الصَّمْتِ ، فَإِنَّهُ مَطْرَدَةٌ لِلشَّيْطَانِ ، وَعَوْنٌ لَكَ عَلَى أَمْرِ دِينِكَ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : إِيَّاكَ وَكَثْرَةَ الضَّحِكِ ، فَإِنَّهُ يُمِيتُ الْقَلْبَ ، وَيَذْهَبُ بِنُورِ الْوَجْهِ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " قُلِ الْحَقَّ ، وَإِنْ كَانَ مُرًّا " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " لَا تَخَفْ فِي اللهِ لَوْمَةَ لَائِمٍ " قُلْتُ : زِدْنِي . قَالَ : " لِيَحْجِزْكَ عَنِ النَّاسِ مَا تَعْلَمُ مِنْ نَفْسِكَ " (رواه البيهقى فى شعب الايمان)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
তাকওয়ার ফল ও বরকত অবর্ণনীয়। যিনি আল্লাহকে ভয় করে যিন্দেগী যাপন করেন তিনি দুনিয়ার যিন্দেগীতে বেশুমার ফযীলত লাভ করেন এবং আখিরাতের যিন্দেগীতে উৎফুল্ল ও আনন্দিত হবেন। আল্লাহ মুত্তাকী বান্দাকে বে-ইনতেহা মহব্বত করেন এবং তার বিক্ষিপ্ত কাজকে সুন্দর ও সুশৃঙ্খল করেন।
যিকির খুব ব্যাপক শব্দ। আল্লাহর স্মরণ, নামায, কুরআন তিলাওয়াত সব কিছুই আল্লাহর যিকিরের মধ্যে শামিল। শুধু স্মরণ বা ইয়াদ হিসেবে যখন যিকির ব্যবহৃত হবে, তখন বুঝতে হবে, মনের মধ্যে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব, কর্তৃত্ব, এখতিয়ার সম্পর্কে সঠিক ধারণার সৃষ্টি করা। আসমান-যমীন বা যাবতীয় সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা, মুখে আল্লাহর গুণগান করা এবং অপর মানুষের কাছে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা। যখনই কোন মজলিসে আল্লাহর বাণী পাঠ করা হয় বা তাঁর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, তখন ফেরেশতাদের মজলিসে তার আলোচনা করা হয়। যে আল্লাহকে ইয়াদ করে, আল্লাহ তাকে ইয়াদ করেন।
যিকর ও কুরআন পাঠের মাধ্যমে বান্দা দুনিয়াতে নূর লাভ করবে। দুনিয়াতে নূর লাভ করার জন্য প্রয়োজন হল, কুরআনের অর্থ বুঝতে হবে, কুরআনের হুকুম-আহকাম পালন করতে হবে, কুরআনের ফয়সালার কাছে মাথানত করতে হবে, কুরআন যাকে মন্দ বলে তাকে মন্দ এবং কুরআন যাকে ভাল বলে তাকে ভাল মনে করতে হবে। যখন কুরআনের সাথে ঈমানদার ব্যক্তির সম্পর্ক এ ধরনের হবে, তখন তার জীবন কুরআনের আলোয় আলোকিত হবে।
যিকির খুব ব্যাপক শব্দ। আল্লাহর স্মরণ, নামায, কুরআন তিলাওয়াত সব কিছুই আল্লাহর যিকিরের মধ্যে শামিল। শুধু স্মরণ বা ইয়াদ হিসেবে যখন যিকির ব্যবহৃত হবে, তখন বুঝতে হবে, মনের মধ্যে আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব, কর্তৃত্ব, এখতিয়ার সম্পর্কে সঠিক ধারণার সৃষ্টি করা। আসমান-যমীন বা যাবতীয় সৃষ্টি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা, মুখে আল্লাহর গুণগান করা এবং অপর মানুষের কাছে তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করা। যখনই কোন মজলিসে আল্লাহর বাণী পাঠ করা হয় বা তাঁর সম্পর্কে আলোচনা করা হয়, তখন ফেরেশতাদের মজলিসে তার আলোচনা করা হয়। যে আল্লাহকে ইয়াদ করে, আল্লাহ তাকে ইয়াদ করেন।
যিকর ও কুরআন পাঠের মাধ্যমে বান্দা দুনিয়াতে নূর লাভ করবে। দুনিয়াতে নূর লাভ করার জন্য প্রয়োজন হল, কুরআনের অর্থ বুঝতে হবে, কুরআনের হুকুম-আহকাম পালন করতে হবে, কুরআনের ফয়সালার কাছে মাথানত করতে হবে, কুরআন যাকে মন্দ বলে তাকে মন্দ এবং কুরআন যাকে ভাল বলে তাকে ভাল মনে করতে হবে। যখন কুরআনের সাথে ঈমানদার ব্যক্তির সম্পর্ক এ ধরনের হবে, তখন তার জীবন কুরআনের আলোয় আলোকিত হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)