মা'আরিফুল হাদীস
রিকাক অধ্যায়
হাদীস নং: ৬৮
রিকাক অধ্যায়
নবীর বর্ম ৩০ সা' যবের বিনিময়ে বন্ধক
৬৮. হযরত আয়েশা (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূলের ইনতেকালের সময় তাঁর বর্ম ৩০ সা' যবের বিনিময়ে জনৈক ইয়াহূদীর নিকট বন্ধক ছিল। (বুখারী)
کتاب الرقاق
عَنْ عَائِشَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهَا ، قَالَتْ : « تُوُفِّيَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَدِرْعُهُ مَرْهُونَةٌ عِنْدَ يَهُودِيٍّ ، بِثَلاَثِينَ صَاعًا مِنْ شَعِيرٍ » (رواه البخارى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
আল্লাহর রাসূল ﷺ আমরণ অভাবের মধ্যে ছিলেন। আল্লাহর দীনের পয়গাম মানুষের কাছে পৌছে দেয়ার গুরুদায়িত্ব পালন করার মধ্যেই রাসুল ﷺ-এর দিন-রাত কেটে যেত। জীবিকা উপার্জনের কোন সময় তাঁর ছিল না। তিনি ও তাঁর পরিজন যখন খাবার পেয়েছেন, খেয়েছেন, না পেলে উপোস করেছেন। কোন কোন সময় আল্লাহর নবী ﷺ মানুষের নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করতেন। এখন প্রশ্ন হল, তিনি মুসলমানদের পরিবর্তে ইয়াহুদীর নিকট থেকে ঋণ গ্রহণ করতেন কেন? তার কোন সঠিক জবাব আমাদের জানা নেই। তার রহস্য আল্লাহ ও তাঁর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানেন। কোন কোন হাদীস ব্যাখ্যাতা মনে করেন, আল্লাহর রাসূল ﷺ তাঁর সাহাবীদেরকে নিজের অভাবের কথা স্বেচ্ছায় জানতে দেননি। কারণ তাতে তাঁরা কষ্ট পাবেন। শুধু তাই নয়, তিনি সাহাবীদের নিকট ঋণ চাইলে তারা তাঁকে ঋণের পরিবর্তে হাদিয়া দিয়ে দিতেন। নিজের অভাব অন্যকে জানিয়ে হাদিয়া গ্রহণ করা নবী করীমের স্বভাব ও মর্যাদার পরিপন্থি ছিল। অধিকন্ত এ ধরনের লেনদেনের মাধ্যমে অমুসলমানগণ নবী করীম ﷺ-এর আদব ও আখলাক জানার সুযোগ পেত। বলা বাহুল্য, নবী করীম ﷺ-এর সংস্পর্শে যারা এসেছিল, তারা কোন না কোন দিক থেকে লাভবান হয়েছিল। আল্লাহ তাদের হিদায়াত করেছেন, তারা মুসলমান হয়েছেন। যারা মুসলমান হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেনি, তারাও হয়ত নবী করীমের চরিত্রের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে নিজেদের ব্যক্তিগত আচার-আচরণ পরিবর্তন করেছে। তাই ইয়াহুদীর নিকট থেকে ঋণ গ্রহণের মধ্যে হিকমত নিহিত রয়েছে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)