মা'আরিফুল হাদীস
রিকাক অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৩
রিকাক অধ্যায়
দুনিয়ায় পথিকের মত অবস্থান কর
৩৩. হযরত আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ ﷺ আমার উভয় কাঁধ ধরে বললেন: দুনিয়াতে ভিনদেশী বা পথিকজনের ন্যায় অবস্থান কর। (বুখারী)
کتاب الرقاق
عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا ، قَالَ : أَخَذَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ بِمَنْكِبِي ، فَقَالَ : « كُنْ فِي الدُّنْيَا كَأَنَّكَ غَرِيبٌ أَوْ عَابِرُ سَبِيلٍ » (رواه البخارى)
হাদীসের ব্যাখ্যা:
দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী, মানুষের জীবন আরো ক্ষণস্থায়ী। অপরদিকে আখিরাত চিরস্থায়ী এবং মানুষের আখিরাতের জীবন অফুরন্ত। দুনিয়ার জীবনের এ ক্ষণস্থায়ী অবস্থা সম্পর্কে নবী করীম ﷺ এক উদাহরণ দিয়েছেন, দুনিয়ার জীবনকে তিনি মুসাফিরের জীবনের সংগে তুলনা করেছেন। তিনি মানুষকে মায়াময় দুনিয়াতে একজন খাঁটি মুসাফিরের ন্যায় জীবন যাপন করতে উপদেশ দিয়েছেন।
দুনিয়ার জীবনের এ বাস্তব দিক সম্পর্কে যে ওয়াকিবহাল নয় বা তার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে অক্ষম ও অসমর্থ, সে কখনো দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম নয়। একজন মুসাফির পথ চলাকালে অনেক সুন্দর জিনিস দেখতে পায়; কিন্তু সেগুলো ভোগ-দখল করার চিন্তা বা চেষ্টা সে কখনো করতে পারে না। কারণ পথিক পথের জিনিস সংগ্রহ করা শুরু করলে পথ কখনো ফুরাবে না, ফলে সে মনযিলে মাকসুদেও পৌছতে পারবে না। অনুরূপ অস্থায়ী দুনিয়ার চাকচিক্যে বিমুগ্ধ হয়ে দুনিয়া হাসিলের চেষ্টা করলে আখিরাতের মনযিল হাসিল করা যাবে না। আখিরাতের মনযিলে তারাই পৌঁছতে পারে যারা দুনিয়ার জীবনকে পথিকের জীবন মনে করে এবং দুনিয়ার যিন্দেগীতে নিজেদেরকে অহেতুকভাবে জড়িত করে না।
ইমাম বুখারী (র)-এ হাদীসের রিওয়ায়াতের শেষাংশে আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা)-এর যে বক্তব্য উল্লেখ করেছেন, তা এক উৎকৃষ্ট ব্যাখ্যাঃ
وكان ابنُ عمرَ رضِي اللهُ تعالَى عنه يقولُ : إذا أصبحتَ فلا تنتظِرِ المساءَ ، وإذا أمسيْتَ فلا تنتظِرِ الصَّباحَ ، وخُذْ من صِحَّتِك لمرضِك ، ومن حياتِك لموتِك.
হযরত ইবন উমর (রা) বলেনঃ “তুমি সন্ধ্যা যাপন করলে ভোরের অপেক্ষা করবে না এবং ভোর যাপন করলে বিকালের ইনতিযার করবে না। তোমার সুস্থতাকে অসুস্থতার ও জীবনকে মৃত্যুর পূর্বেই কাজে লাগাও।”
ইমাম নববী তাঁর মশহুর হাদীস সংগ্রহ 'রিয়াযুস-সালিহীন'-এ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নরূপ করেছেনঃ
দুনিয়ার উপর ভরসা করো না, দুনিয়াকে 'ওয়াতন' বা স্বদেশ মনে করো না, দীর্ঘ জীবনের আশা পোষণ করো না, দুনিয়ার প্রতি অনুরক্ত হইও না। ভিনদেশে মুসাফির যতটুকু সংশ্লিষ্ট হয়, তার চেয়ে বেশি তোমরা নিজেদেরকে সংশ্লিষ্ট করো না এবং স্বদেশে প্রত্যাবর্তন-ইচ্ছুক মুসাফির ভিনদেশে যতটুকু কাজকর্ম করে, তার চেয়ে বেশি কাজ করো না।
দুনিয়ার জীবনের এ বাস্তব দিক সম্পর্কে যে ওয়াকিবহাল নয় বা তার গুরুত্ব উপলব্ধি করতে অক্ষম ও অসমর্থ, সে কখনো দুনিয়ার জীবন সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম নয়। একজন মুসাফির পথ চলাকালে অনেক সুন্দর জিনিস দেখতে পায়; কিন্তু সেগুলো ভোগ-দখল করার চিন্তা বা চেষ্টা সে কখনো করতে পারে না। কারণ পথিক পথের জিনিস সংগ্রহ করা শুরু করলে পথ কখনো ফুরাবে না, ফলে সে মনযিলে মাকসুদেও পৌছতে পারবে না। অনুরূপ অস্থায়ী দুনিয়ার চাকচিক্যে বিমুগ্ধ হয়ে দুনিয়া হাসিলের চেষ্টা করলে আখিরাতের মনযিল হাসিল করা যাবে না। আখিরাতের মনযিলে তারাই পৌঁছতে পারে যারা দুনিয়ার জীবনকে পথিকের জীবন মনে করে এবং দুনিয়ার যিন্দেগীতে নিজেদেরকে অহেতুকভাবে জড়িত করে না।
ইমাম বুখারী (র)-এ হাদীসের রিওয়ায়াতের শেষাংশে আবদুল্লাহ ইবন উমর (রা)-এর যে বক্তব্য উল্লেখ করেছেন, তা এক উৎকৃষ্ট ব্যাখ্যাঃ
وكان ابنُ عمرَ رضِي اللهُ تعالَى عنه يقولُ : إذا أصبحتَ فلا تنتظِرِ المساءَ ، وإذا أمسيْتَ فلا تنتظِرِ الصَّباحَ ، وخُذْ من صِحَّتِك لمرضِك ، ومن حياتِك لموتِك.
হযরত ইবন উমর (রা) বলেনঃ “তুমি সন্ধ্যা যাপন করলে ভোরের অপেক্ষা করবে না এবং ভোর যাপন করলে বিকালের ইনতিযার করবে না। তোমার সুস্থতাকে অসুস্থতার ও জীবনকে মৃত্যুর পূর্বেই কাজে লাগাও।”
ইমাম নববী তাঁর মশহুর হাদীস সংগ্রহ 'রিয়াযুস-সালিহীন'-এ উক্ত হাদীসের ব্যাখ্যা নিম্নরূপ করেছেনঃ
দুনিয়ার উপর ভরসা করো না, দুনিয়াকে 'ওয়াতন' বা স্বদেশ মনে করো না, দীর্ঘ জীবনের আশা পোষণ করো না, দুনিয়ার প্রতি অনুরক্ত হইও না। ভিনদেশে মুসাফির যতটুকু সংশ্লিষ্ট হয়, তার চেয়ে বেশি তোমরা নিজেদেরকে সংশ্লিষ্ট করো না এবং স্বদেশে প্রত্যাবর্তন-ইচ্ছুক মুসাফির ভিনদেশে যতটুকু কাজকর্ম করে, তার চেয়ে বেশি কাজ করো না।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ মা'আরিফুল হাদীস (মাওলানা মনযূর নোমানী রহ.)