কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
৫. হজ্ব আদায়ের নিয়মাবলীর বিবরণ
হাদীস নং: ১৯১৮
আন্তর্জাতিক নং: ১৯২০
৬২. আরাফার থেকে প্রত্যাবর্তন।
১৯১৮. মুহাম্মাদ ইবনে কাসীর ও ওয়াহব ইবনে বায়ান (রাহঃ) ..... ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) আরাফার হতে প্রশান্ত অবস্থায় প্রত্যাবর্তন করেন এবং তাঁর সওয়ারীর পশ্চাতে সওয়ার ছিলেন উসামা ইবনে যায়দ। অতঃপর তিনি ইরশাদ করেনঃ লোক সকল! তোমরা শান্ত হও, কেননা ঘোড়া ও উটকে দ্রুত চালনার মধ্যে কোন সওয়ার নেই। রাবী বলেন, এরূপ ঘোষণার পর আমি কোন ঘোড়া বা উটকে সহীসদের দু‘হাত দ্রুত পরিচালনা করতে দেখিনি। এমতাবস্থায় আমরা মুযদালিফায় আগমন করি। রাবী ওয়াহব অতিরিক্ত বর্ণনা করেছেন যে, অতঃপর (মুযদালিফা হতে) মিনায় গমনকালে তাঁর উটের পশ্চাতে ফযল ইবনে আব্বাস (রাযিঃ) সওয়ার হন। আর ঐ সময়ও তিনি বলেনঃ হে জনগণ! ঘোড়া বা উটকে দ্রুত চালনার মধ্যে কোন নেকী বা কল্যাণ নেই বরং তোমাদের উচিত এখন শান্ত হওয়া। রাবী (ইবনে আব্বাস) বলেন, অতঃপর আমি কাউকেই তার দু‘হাত দ্রুত পরিচালনা করতে দেখিনি, মিনায় আগমন করা পর্যন্ত।
باب الدَّفْعَةِ مِنْ عَرَفَةَ
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ كَثِيرٍ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الأَعْمَشِ، ح وَحَدَّثَنَا وَهْبُ بْنُ بَيَانٍ، حَدَّثَنَا عَبِيدَةُ، حَدَّثَنَا سُلَيْمَانُ الأَعْمَشُ، - الْمَعْنَى - عَنِ الْحَكَمِ، عَنْ مِقْسَمٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ، قَالَ أَفَاضَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم مِنْ عَرَفَةَ وَعَلَيْهِ السَّكِينَةُ وَرَدِيفُهُ أُسَامَةُ وَقَالَ " أَيُّهَا النَّاسُ عَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ فَإِنَّ الْبِرَّ لَيْسَ بِإِيجَافِ الْخَيْلِ وَالإِبِلِ " . قَالَ فَمَا رَأَيْتُهَا رَافِعَةً يَدَيْهَا عَادِيَةً حَتَّى أَتَى جَمْعًا . زَادَ وَهْبٌ ثُمَّ أَرْدَفَ الْفَضْلَ بْنَ الْعَبَّاسِ . وَقَالَ " أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّ الْبِرَّ لَيْسَ بِإِيجَافِ الْخَيْلِ وَالإِبِلِ فَعَلَيْكُمْ بِالسَّكِينَةِ " . قَالَ فَمَا رَأَيْتُهَا رَافِعَةً يَدَيْهَا حَتَّى أَتَى مِنًى .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এটা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিদায় হজ্জের কথা। তিনি আরাফার দিন সূর্যাস্তের পর সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে মুযদালিফায় যাচ্ছিলেন। তাঁর সঙ্গে বিপুল সংখ্যক লোক। সকলেই দ্রুত যাওয়ার জন্য উটগুলোকে সজোরে হাঁকাচ্ছিল। কেউ কেউ পেটাচ্ছিল। তাতে উটগুলো উচ্চস্বরে আওয়াজ করছিল। সব মিলে খুব শোরগোল হচ্ছিল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে শোরগোল শুনে তাদের দিকে ফিরে তাকালেন এবং লাঠি দিয়ে ইশারা করে বললেন-
يَا أَيُّهَا النَّاسُ، عَلَيكُم بِالسَّكِينَةِ، فَإِنَّ البِرَّ لَيسَ بِالإيضَاعِ (হে লোকসকল! তোমরা শান্তভাবে চলো। কেননা দ্রুত চলায় কোনও পুণ্য নেই)। অর্থাৎ এটা হজ্জের আমল। মিনা, আরাফা ও মুযদালিফা হজ্জের অনুষ্ঠানাদি পালনের স্থান। সে হিসেবে এগুলো আল্লাহ তা'আলার নিদর্শন। এসবকে সম্মান করা জরুরি। সে সম্মানের দাবি হল আদবের সঙ্গে চলা। এ চলাটা সাধারণ কোনও চলা নয়। আরাফা থেকে মুযদালিফা গমন হজ্জেরই একটা আমল। তাই এ চলার স্বতন্ত্র মহিমা আছে। শোরগোল করার দ্বারা সে মহিমা ক্ষুণ্ণ হয়। কাজেই উটগুলোকে দ্রুত না হাঁকিয়ে ধীরে চালাও। তোমরা শান্তভাবে চলো। হইচই করো না। হজ্জের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা করো। আমাদের উদ্দেশ্য তো নেকী লাভ করা। দ্রুত চলাটা নেকী লাভের উপায় নয়। তাতে কেবল কষ্টই বাড়ে। পশুদেরও শুধু শুধু কষ্ট দেওয়া হয়। নেকী লাভের উপায় হল আল্লাহর সামনে বিনয়, নম্রতা এবং নিজ ক্ষুদ্রতা ও হীনতা প্রকাশ করা। ধীর-শান্তভাবে চলার দ্বারাই তার প্রকাশ হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. হজ্জের স্থানসমূহে চলাচলের ক্ষেত্রে ধীর-শান্ত ভাব বজায় রাখতে হবে।
খ. যে-কোনও মর্যাদাপূর্ণ স্থানে গমন ও মর্যাদাপূর্ণ কাজ করার সময় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখা উচিত।
গ. দ্রুত চলাটা পুণ্য লাভের উপায় নয়। বরং পুণ্য লাভ করার উপায় হল বিনয়-নম্রতার সঙ্গে চলা।
يَا أَيُّهَا النَّاسُ، عَلَيكُم بِالسَّكِينَةِ، فَإِنَّ البِرَّ لَيسَ بِالإيضَاعِ (হে লোকসকল! তোমরা শান্তভাবে চলো। কেননা দ্রুত চলায় কোনও পুণ্য নেই)। অর্থাৎ এটা হজ্জের আমল। মিনা, আরাফা ও মুযদালিফা হজ্জের অনুষ্ঠানাদি পালনের স্থান। সে হিসেবে এগুলো আল্লাহ তা'আলার নিদর্শন। এসবকে সম্মান করা জরুরি। সে সম্মানের দাবি হল আদবের সঙ্গে চলা। এ চলাটা সাধারণ কোনও চলা নয়। আরাফা থেকে মুযদালিফা গমন হজ্জেরই একটা আমল। তাই এ চলার স্বতন্ত্র মহিমা আছে। শোরগোল করার দ্বারা সে মহিমা ক্ষুণ্ণ হয়। কাজেই উটগুলোকে দ্রুত না হাঁকিয়ে ধীরে চালাও। তোমরা শান্তভাবে চলো। হইচই করো না। হজ্জের ভাবগাম্ভীর্য রক্ষা করো। আমাদের উদ্দেশ্য তো নেকী লাভ করা। দ্রুত চলাটা নেকী লাভের উপায় নয়। তাতে কেবল কষ্টই বাড়ে। পশুদেরও শুধু শুধু কষ্ট দেওয়া হয়। নেকী লাভের উপায় হল আল্লাহর সামনে বিনয়, নম্রতা এবং নিজ ক্ষুদ্রতা ও হীনতা প্রকাশ করা। ধীর-শান্তভাবে চলার দ্বারাই তার প্রকাশ হয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. হজ্জের স্থানসমূহে চলাচলের ক্ষেত্রে ধীর-শান্ত ভাব বজায় রাখতে হবে।
খ. যে-কোনও মর্যাদাপূর্ণ স্থানে গমন ও মর্যাদাপূর্ণ কাজ করার সময় ভাবগাম্ভীর্য বজায় রাখা উচিত।
গ. দ্রুত চলাটা পুণ্য লাভের উপায় নয়। বরং পুণ্য লাভ করার উপায় হল বিনয়-নম্রতার সঙ্গে চলা।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
