মুসনাদে আহমদ- ইমাম আহমদ রহঃ (আল-ফাতহুর রব্বানী)

বিবাহ অধ্যায়

হাদীস নং: ২৫৭
বিবাহ অধ্যায়
পরিচ্ছেদ: স্ত্রীর উপর স্বামীর হক।
২৫৭। আবু সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমরা নবী (ﷺ)-এর কাছে থাকাকালীন সাফওয়ান ইবন মু'আত্তাল (রা) এর স্ত্রী তাঁর কাছে এসে বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমার স্বামী সফওয়ান ইবন মু'আত্তাল (রা) আমাকে মারেন যদি আমি নামায পড়ি, আমার রোযা ভাঙ্গান যদি আমি নফল রোযা রাখি। আর তিনি সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত ফজরের নামায পড়েন না। তিনি বলেন, সফওয়ান (রা) তাঁর কাছে উপস্থিত ছিলেন। তিনি তাঁকে তাঁর স্ত্রীর অভিযোেগ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। তিনি বললেন, হে আল্লাহর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার কথা, সে আমাকে মারে যদি আমি নামায পড়ি। কেননা সে দু'টি দীর্ঘ সূরা পড়ে। আমি তাকে দু'টি দীর্ঘ সূরা পড়তে নিষেধ করেছি। তিনি (ﷺ) বললেন, একটি সূরা পড়া সকল মানুষের জন্য যথেষ্ট। আর তার কথা, সে আমাকে রোযা ভাংগায়। কেননা সে রোযা রাখে, আর আমি যুবক ধৈর্য ধারণ করতে পারি না। রাসূলুল্লাহ (ﷺ) সেদিন বললেন, কোন মহিলা তার স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোযা রাখবে না। তিনি বললেন, আর তার কথা, আমি সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত ফজরের নামায পড়িনা, কেননা আমাদের পরিবারের লোকদের সম্পর্কে মানুষ অবহিত যে আমরা সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত ঘুম হতে জাগ্রত হতে পারি না। (তারা রাতের অধিকাংশ সময় পানি সেচনের কাজে রত থাকতেন তাই তাঁদের জন্য ফজরের নামাযের সময় জাগ্রত হওয়া কষ্টকর ছিল।) তিনি বললেন, তুমি যখন জাগ্রত হবে তখন ফজরের নামায পড়বে।
অন্য এক বর্ণনা আছে তাঁর কথা: আমি সূর্য উদয় না হওয়া পর্যন্ত ফজরের নামায পড়িনা। কেননা আমার মাথায় যন্ত্রণা আছেন। আর আমার পরিবারের লোকেরা মাথায় যন্ত্রণাগ্রস্তরূগীরূপে পরিচিত। তিনি বললেন, তুমি যখন জাগ্রত হবে তখন ফজরের নামায পড়বে।
(আবূ দাউদ, ইবন মাজাহ। আহমদ ইবন্ আবদুর রহমান আল বান্না বলেছেন, হাদীসটির সনদ উত্তম।)
كتاب النكاح
باب حق الزوج على الزوجة
عن أبى سعيد الخدرى (6) قال جاءت امراة صفوان بن المعطل الى النبى صلى الله عليه وسلم ونحن عنده فقالت يا رسول الله ان زوجى صفوان بن المعطل يضربنى اذا صليت، ويفطرنى اذا صمت، ولا يصلى الفجر حتى طلوع الشمس، قال وصفوان عنده (7) قال فسأله عما قالت، فقال يا رسول الله أما قولها يضربنى اذا صليت فأنها تقرأ بسورتين (8) فقد نيتها عنها، قال فقال لو كانت سورة واحدة لكفيت الناس، وأما قولها يفطرنى فإنها تصوم (9) وأنا رجل شاب فلا أصبر، قال فقال رسول الله صلى الله عليه وسلم يومئذ لا تصومن امرأة الا بإذن زوجها، قال وأما قولها بأنى لا أصلى حتى تطلع الشمس، فإن أهل بيت قد عرف لنا ذاك (1) لا نكاد نستيقظ حتى تطلع الشمس، قال فاذا استيقظت فصل (وفى رواية 9 وأما قولها انى لا أصلى حتى تطلع الشمس فانى ثقيل الرأس (2) وأنا من أهل بيت يعرفون بذاك الرءوس، قال فاذا قمت فصل

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর জন্য নফল রোযা রাখা অবৈধ করা হয়েছে। স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল রোযা রাখতে নিষেধ করা হয়েছে এ কারণে যে, তাতে করে স্বামীর হক আদায় বিঘ্নিত হতে পারে।
যে-কোনও ইবাদত নফল শুরু করলে তা পূরণ করা ওয়াজিব হয়ে যায়। কাজেই স্ত্রী যদি নফল রোযা রাখে, তার তা অবশ্যই পূরণ করতে হবে। এখন স্বামীর যদি এমন কোনও প্রয়োজন দেখা দেয়, যা মেটাতে গেলে তার রোযা ভাঙতে হবে, তবে পরে তা কাযা করা জরুরি হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে এক তো ইবাদত শুরুর পর তা ভাঙতে হচ্ছে, যা পসন্দনীয় নয়। আবার পরে কাযা করাটাও সম্ভব নাও হতে পারে। যদি আগেই মৃত্যু হয়ে যায়, তবে একটা ওয়াজিব আমলের দায় নিয়েই মৃত্যু হল। আর যদি স্থায়ীভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে, যদ্দরুন রোযা রাখা সম্ভব না হয়, তবে ফিদয়া দিতে হবে। মোটকথা কোনও-না কোনও বিপত্তি থেকেই যায়। এর থেকে বাঁচার উপায় হল স্বামী উপস্থিত থাকাকালে তার অনুমতি ছাড়া রোযা রাখা হতে বিরত থাকা।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

এ হাদীছটির শিক্ষা সুস্পষ্ট। স্বামীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ অনুমতি ছাড়া স্ত্রী নফল রোযা রাখবে না।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান