আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
৮. অধ্যায়ঃ সদকা
হাদীস নং: ১১৭১
আল্লাহ-ভীতির সাথে সদকা করার প্রতি অনুপ্রেরণা এবং তাতে সীমালংঘন ও খিয়ানত করার প্রতি ভীতি প্রদর্শন। যে আত্মবিশ্বাসী নয়, তার আমল বর্জন মুস্তাহাব এবং টোল আদায়কারী, উশরের অতিরিক্ত আদায়কারী এবং নেতৃবর্গ সম্পর্কে
১১৭১. হযরত আদী ইবন উমায়র (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছিঃ আমরা যখন তোমাদের মধ্যকার কাউকে আমলা নিযুক্ত করি, আর সে আমাদের একটি সূঁচ অপেক্ষা নিকৃষ্ট কোন বস্তুও গোপন করে, সে উক্ত খিয়ানতকৃত বস্তু নিয়ে কিয়ামতের দিন উপস্থিত হবে। আনসারদের এক কালো ব্যক্তি দাঁড়িয়ে গেল এবং তা যেন আমি এখনো দেখতে পাচ্ছি। সে বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পক্ষ থেকে আপনার দেওয়া দায়িত্ব বুঝে নিন। তিনি বললেন: তোমার কী হল? সে বলল: আমি আপনাকে এই এই বলতে শুনেছি। তিনি বললেন: আমি এখনো তা-ই বলছি। আমরা তোমাদের মধ্যকার কাউকে আমলা (কর্মকর্তা) নিযুক্ত করলে (যদি খিয়ানত করে, চাই তা) কম বা বেশি যা-ই হোক, সে তা নিয়ে (কিয়ামতের দিন) উপস্থিত হবে। তবে তাকে যা দেওয়া হয়, সে কেবল তাই গ্রহণ করবে এবং তাকে যা থেকে নিষেধ করা হয়, সে তা থেকে বিরত থাকবে।
(হাদীসটি মুসলিম, আবু দাউদ এবং অপরাপর গ্রন্থাবলীতে বর্ণিত হয়েছে।)
(হাদীসটি মুসলিম, আবু দাউদ এবং অপরাপর গ্রন্থাবলীতে বর্ণিত হয়েছে।)
التَّرْغِيب فِي الْعَمَل على الصَّدَقَة بالتقوى والترهيب من التَّعَدِّي فِيهَا والخيانة واستحباب ترك الْعَمَل لمن لَا يَثِق بِنَفسِهِ وَمَا جَاءَ فِي المكاسين والعشارين والعرفاء
1171 - وَعَن عدي بن عميرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ سَمِعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من
استعملناه مِنْكُم على عمل فكتمنا مخيطا فَمَا فَوْقه كَانَ غلولا يَأْتِي بِهِ يَوْم الْقِيَامَة فَقَامَ إِلَيْهِ رجل أسود من الْأَنْصَار كَأَنِّي أنظر إِلَيْهِ فَقَالَ يَا رَسُول الله اقبل عني عَمَلك
قَالَ وَمَا لَك قَالَ سَمِعتك تَقول كَذَا وَكَذَا
قَالَ وَأَنا أَقُول الْآن من استعملناه مِنْكُم على عمل فليجىء بقليله وَكَثِيره فَمَا أُوتِيَ مِنْهُ أَخذ وَمَا نهي عَنهُ انْتهى
رَوَاهُ مُسلم وَأَبُو دَاوُد وَغَيرهمَا
استعملناه مِنْكُم على عمل فكتمنا مخيطا فَمَا فَوْقه كَانَ غلولا يَأْتِي بِهِ يَوْم الْقِيَامَة فَقَامَ إِلَيْهِ رجل أسود من الْأَنْصَار كَأَنِّي أنظر إِلَيْهِ فَقَالَ يَا رَسُول الله اقبل عني عَمَلك
قَالَ وَمَا لَك قَالَ سَمِعتك تَقول كَذَا وَكَذَا
قَالَ وَأَنا أَقُول الْآن من استعملناه مِنْكُم على عمل فليجىء بقليله وَكَثِيره فَمَا أُوتِيَ مِنْهُ أَخذ وَمَا نهي عَنهُ انْتهى
رَوَاهُ مُسلم وَأَبُو دَاوُد وَغَيرهمَا
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে সরকারি কাজে নিযুক্ত ব্যক্তির দুর্নীতি সম্পর্কে কঠিন সতর্কবাণী উচ্চারিত হয়েছে। এতে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানাচ্ছেন যে, কাউকে যদি কোনও সরকারি কাজে নিযুক্ত করা হয়, তা যাকাত উশুল করা হোক, গনীমতের মাল রক্ষণাবেক্ষণ করা হোক, খারাজ আদায় করা হোক কিংবা এ জাতীয় যে-কোনও দায়িত্বই হোক না কেন, তারপর সে ব্যক্তি যদি সুই বা তার উপরের কোনও বস্তু গোপন করে, এখানে 'ওপর' বলতে ক্ষুদ্রতার দিক থেকে ওপর বোঝানো হয়েছে, অর্থাৎ সুইয়ের চেয়েও ছোট কোনও জিনিস যদি গোপন করে, তবে তা আত্মসাৎ সাব্যস্ত হবে।
সাধারণত 'গুলূল' বলা হয় গনীমতের মাল আত্মসাৎ করাকে। এস্থলে ব্যাপক অর্থে সরকারি বা জনগণের যে-কোনও মালামাল বোঝানো হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানান যে, যে ব্যক্তি এরকম আত্মসাতের কাজ করে, কিয়ামতের দিন সে তার আত্মসাৎ করা মাল বহন করা অবস্থায় আল্লাহর আদালতে উপস্থিত হবে। কুরআন মাজীদেও ইরশাদ হয়েছে-
وَمَنْ يَغْلُلْ يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
'যে-কেউ খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন সেই মাল নিয়ে উঠবে, যা সে খেয়ানতের মাধ্যমে হস্তগত করেছিল।' সূরা আলে-ইমরান (৩), আয়াত ১৬১
এটা তার জন্য যেমন কঠিন শাস্তি হবে, তেমনি হবে চরম লাঞ্ছনা ও লজ্জারও ব্যাপার, যেহেতু হাশরের ময়দানে সমগ্র মানুষের চোখের সামনে তা ঘটবে। এ সতর্কবাণী দ্বারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম সরকারি কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিবর্গকে আমানত রক্ষায় উৎসাহিত করেন এবং কারও দ্বারা যাতে কোনওরকম খেয়ানত না হয়ে যায় সে ব্যাপারে সাবধান করেন।
সরকারি সম্পদ গোপন করা বা তসরুফ করা হারাম, তা যত অল্পই হোক। এটা কবীরা গুনাহ। সর্বসম্মতিক্রমে তা ফেরত দেওয়ার অবশ্যকর্তব্য। কিন্তু ফেরত দেওয়া সহজ নয়। কেননা যদি ফেরত দেওয়ার আগে জনগণের কেউ মারা গিয়ে থাকে আর ওই মালে তার কোনও হক থেকে থাকে, তবে তো তার হক এই তসরুফকারীর ঘাড়ে থেকে গেল। কিংবা সে যদি জীবিতও থাকে কিন্তু তাকে খুঁজে না পাওয়া যায়, তখনও তো ব্যাপারটা জটিল হয়ে যায়। এমনও হতে পারে যে, তসরুফকারী নিজেই অর্থ- সংকটে পড়ে গেছে, ফলে আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দিতে পারছে না।
মোটকথা ব্যক্তিবিশেষের সম্পদ আত্মসাৎ করাও কবীরা গুনাহ বটে, কিন্তু জাতীয় বা সমষ্টির সম্পদ আত্মসাৎ করা অধিকতর কঠিন পাপ, যেহেতু তাতে বহুজনের হক সংশ্লিষ্ট থাকে। এর থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক কঠিন। তারপরও যদি কেউ সত্যিকারভাবে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয় এবং খাঁটি মনে তাওবা করে, তবে ইসলাম তার জন্য মুক্তির পথ খোলা রেখেছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য রিয়াযুস সালিহীনের 'তাওবা' অধ্যায় দ্রষ্টব্য।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সতর্কবাণী শুনে সাহাবায়ে কিরাম ভীষণ ভয় পেলেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষার বদৌলতে প্রত্যেক সাহাবী অত্যন্ত সৎ ছিলেন। তাঁদের দ্বারা কোনওরকম সরকারি সম্পদ গোপন বা তসরুফ করার চিন্তাই করা যায় না। তারপরও তাদের অন্তরে এ ভয় জাগার কারণ ছিল আল্লাহভীতির প্রবলতা। যার অন্তরে আল্লাহভীতি প্রবল থাকে, সে জ্ঞাতসারে পাপ না করলেও অজ্ঞাতসারে কোনও ভুলত্রুটি হয়ে গেল কি না সেই চিন্তায় শঙ্কিত থাকে। তাই এরকম লোক অনেক সময় এমন বৈধ কাজেরও ধারেকাছে যেতে চায় না, যার ফাঁকফোকর দিয়ে কোনও অন্যায়-অপরাধ হয়ে যেতে পারে।
সুতরাং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সতর্কবাণী শুনে আনসার সম্প্রদায়ের জনৈক কালো ব্যক্তি, যার নাম-ঠিকানা জানা যায় না, উঠে আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাকে যে দায়িত্বে নিয়োজিত করেছিলেন সে দায়িত্বটি প্রত্যাহার করে নিন।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি ওই সতর্কবাণীর কথা উল্লেখ করলেন। তখন তিনি সতর্কবাণীটি পুনর্ব্যক্ত করলেন এবং বললেন যে, এখনও আমি সে কথাই বলছি। কাজেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির উচিত হবে অল্প-বিস্তর যাই উশুল হয় তা এনে জমা দেওয়া এবং তারপর তা থেকে তাকে যা দেওয়া হয়, খুশিমনে তা গ্রহণ করা আর যা দেওয়া হয় না, খুশিমনেই তা থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ সর্বাবস্থায় তার কর্তব্য আনুগত্য প্রকাশ করা এবং নীতিসম্মতভাবে বা বৈধ উপায়ে যা অর্জিত হয় তাতে সন্তুষ্ট থাকা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. রাষ্ট্রপ্রধানের কর্তব্য সরকারি লোকজনকে সততা রক্ষায় উৎসাহ দেওয়া এবং অসৎ উপার্জনের অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করা।
খ. জনগণের সম্পদের পরিমাণ যত তুচ্ছই হোক, কোনও অবস্থায়ই তা আত্মসাৎ করতে নেই। কেননা কিয়ামতে তার জন্য কঠিন দুর্ভোগ রয়েছে।
গ. সরকারি পদ খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। এ পদ চেয়ে নেওয়া তো উচিতই নয়। যদি না চাইতেও এসে যায়, তবে নিজ বিশ্বস্ততার শক্তি বিবেচনা করে দেখা চাই। নিজেকে দুর্বল মনে হলে সে পদ গ্রহণ না করাই বাঞ্ছনীয়।
ঘ. সরকারি সম্পদ যত কমই হোক, নিজ হাতে রাখতে নেই। একটি পয়সা হলেও তা সংশ্লিষ্ট ফান্ডে জমা করে দেওয়া চাই।
সাধারণত 'গুলূল' বলা হয় গনীমতের মাল আত্মসাৎ করাকে। এস্থলে ব্যাপক অর্থে সরকারি বা জনগণের যে-কোনও মালামাল বোঝানো হয়েছে। নবী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম জানান যে, যে ব্যক্তি এরকম আত্মসাতের কাজ করে, কিয়ামতের দিন সে তার আত্মসাৎ করা মাল বহন করা অবস্থায় আল্লাহর আদালতে উপস্থিত হবে। কুরআন মাজীদেও ইরশাদ হয়েছে-
وَمَنْ يَغْلُلْ يَأْتِ بِمَا غَلَّ يَوْمَ الْقِيَامَةِ
'যে-কেউ খেয়ানত করবে, সে কিয়ামতের দিন সেই মাল নিয়ে উঠবে, যা সে খেয়ানতের মাধ্যমে হস্তগত করেছিল।' সূরা আলে-ইমরান (৩), আয়াত ১৬১
এটা তার জন্য যেমন কঠিন শাস্তি হবে, তেমনি হবে চরম লাঞ্ছনা ও লজ্জারও ব্যাপার, যেহেতু হাশরের ময়দানে সমগ্র মানুষের চোখের সামনে তা ঘটবে। এ সতর্কবাণী দ্বারা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম সরকারি কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিবর্গকে আমানত রক্ষায় উৎসাহিত করেন এবং কারও দ্বারা যাতে কোনওরকম খেয়ানত না হয়ে যায় সে ব্যাপারে সাবধান করেন।
সরকারি সম্পদ গোপন করা বা তসরুফ করা হারাম, তা যত অল্পই হোক। এটা কবীরা গুনাহ। সর্বসম্মতিক্রমে তা ফেরত দেওয়ার অবশ্যকর্তব্য। কিন্তু ফেরত দেওয়া সহজ নয়। কেননা যদি ফেরত দেওয়ার আগে জনগণের কেউ মারা গিয়ে থাকে আর ওই মালে তার কোনও হক থেকে থাকে, তবে তো তার হক এই তসরুফকারীর ঘাড়ে থেকে গেল। কিংবা সে যদি জীবিতও থাকে কিন্তু তাকে খুঁজে না পাওয়া যায়, তখনও তো ব্যাপারটা জটিল হয়ে যায়। এমনও হতে পারে যে, তসরুফকারী নিজেই অর্থ- সংকটে পড়ে গেছে, ফলে আত্মসাৎ করা অর্থ ফেরত দিতে পারছে না।
মোটকথা ব্যক্তিবিশেষের সম্পদ আত্মসাৎ করাও কবীরা গুনাহ বটে, কিন্তু জাতীয় বা সমষ্টির সম্পদ আত্মসাৎ করা অধিকতর কঠিন পাপ, যেহেতু তাতে বহুজনের হক সংশ্লিষ্ট থাকে। এর থেকে মুক্তি পাওয়া অনেক কঠিন। তারপরও যদি কেউ সত্যিকারভাবে অনুতপ্ত ও লজ্জিত হয় এবং খাঁটি মনে তাওবা করে, তবে ইসলাম তার জন্য মুক্তির পথ খোলা রেখেছে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানার জন্য রিয়াযুস সালিহীনের 'তাওবা' অধ্যায় দ্রষ্টব্য।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সতর্কবাণী শুনে সাহাবায়ে কিরাম ভীষণ ভয় পেলেন। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষার বদৌলতে প্রত্যেক সাহাবী অত্যন্ত সৎ ছিলেন। তাঁদের দ্বারা কোনওরকম সরকারি সম্পদ গোপন বা তসরুফ করার চিন্তাই করা যায় না। তারপরও তাদের অন্তরে এ ভয় জাগার কারণ ছিল আল্লাহভীতির প্রবলতা। যার অন্তরে আল্লাহভীতি প্রবল থাকে, সে জ্ঞাতসারে পাপ না করলেও অজ্ঞাতসারে কোনও ভুলত্রুটি হয়ে গেল কি না সেই চিন্তায় শঙ্কিত থাকে। তাই এরকম লোক অনেক সময় এমন বৈধ কাজেরও ধারেকাছে যেতে চায় না, যার ফাঁকফোকর দিয়ে কোনও অন্যায়-অপরাধ হয়ে যেতে পারে।
সুতরাং নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লামের সতর্কবাণী শুনে আনসার সম্প্রদায়ের জনৈক কালো ব্যক্তি, যার নাম-ঠিকানা জানা যায় না, উঠে আরয করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাকে যে দায়িত্বে নিয়োজিত করেছিলেন সে দায়িত্বটি প্রত্যাহার করে নিন।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি ওই সতর্কবাণীর কথা উল্লেখ করলেন। তখন তিনি সতর্কবাণীটি পুনর্ব্যক্ত করলেন এবং বললেন যে, এখনও আমি সে কথাই বলছি। কাজেই দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির উচিত হবে অল্প-বিস্তর যাই উশুল হয় তা এনে জমা দেওয়া এবং তারপর তা থেকে তাকে যা দেওয়া হয়, খুশিমনে তা গ্রহণ করা আর যা দেওয়া হয় না, খুশিমনেই তা থেকে বিরত থাকা। অর্থাৎ সর্বাবস্থায় তার কর্তব্য আনুগত্য প্রকাশ করা এবং নীতিসম্মতভাবে বা বৈধ উপায়ে যা অর্জিত হয় তাতে সন্তুষ্ট থাকা।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. রাষ্ট্রপ্রধানের কর্তব্য সরকারি লোকজনকে সততা রক্ষায় উৎসাহ দেওয়া এবং অসৎ উপার্জনের অশুভ পরিণাম সম্পর্কে সতর্ক করা।
খ. জনগণের সম্পদের পরিমাণ যত তুচ্ছই হোক, কোনও অবস্থায়ই তা আত্মসাৎ করতে নেই। কেননা কিয়ামতে তার জন্য কঠিন দুর্ভোগ রয়েছে।
গ. সরকারি পদ খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। এ পদ চেয়ে নেওয়া তো উচিতই নয়। যদি না চাইতেও এসে যায়, তবে নিজ বিশ্বস্ততার শক্তি বিবেচনা করে দেখা চাই। নিজেকে দুর্বল মনে হলে সে পদ গ্রহণ না করাই বাঞ্ছনীয়।
ঘ. সরকারি সম্পদ যত কমই হোক, নিজ হাতে রাখতে নেই। একটি পয়সা হলেও তা সংশ্লিষ্ট ফান্ডে জমা করে দেওয়া চাই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
