আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

২৩. অধ্যায়ঃ তাওবা ও যুহদ

হাদীস নং: ৪৭৯১
অধ্যায়ঃ তাওবা ও যুহদ
অধ্যায়: তাওবা ও যুহদ।
তাওবা করা, তাওবার প্রতি ধাবিত হওয়া এবং মন্দকাজের পর ভালকাজ করার প্রতি উৎসাহ প্রদান
৪৭৯১. হযরত ইমরান ইবন হুসায়ন (রা) থেকে বর্ণিত, জুহায়না গোত্রের এক মহিলা রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর কাছে এল। তখন মহিলাটি ব্যভিচারের কারণে গর্ভবতী ছিল। সে তখন বললঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ্। আমি হদ'*
প্রয়োগযোগ্য অপরাধ করে ফেলেছি। অতএব আপনি আমার উপর হদ জারী করুন। তখন আল্লাহর নবী (ﷺ) মহিলাটির অভিভাবককে ডেকে বললেন: তার প্রতি অনুগ্রহ কর। অতঃপর যখন সে সন্তান প্রসব করে ফেলবে, তখন তুমি তাকে আমার কাছে নিয়ে আসবে। (সে ব্যক্তি তাই করল) এরপর আল্লাহর নবী তার কাপড় বেধে দেয়ার ব্যাপারে নির্দেশ দিলেন। সুতরাং তার কাপড় তার গায়ে শক্ত করে বেঁধে দেয়া হল। তারপর তিনি তার উপর (হদ জারী করার) নির্দেশ দিলেন। সে মুতাবিক তাকে প্রস্তরাঘাত করা হল, (যার ফলে সে মৃত্যুবরণ করল)। এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তার সালাতুল জানাযা আদায় করলেন। তখন উমর (রা) তাঁকে বলল: ইয়া রাসূলাল্লাহ। আপনি তার সালাতুল জানাযা আদায় করছেন, অথচ সে ব্যভিচার করেছে? রাসূলুল্লাহ বললেন: অবশ্যই সে এমন তাওবা করেছে, যদি তা সত্তরজন মদীনাবাসীর মাঝে বণ্টন করে দেয়া হত, তবে তা তাদের জন্য যথেষ্ট হত। যে মহিলা আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টির জন্য নিজের প্রাণ বিলিয়ে দিয়েছে, তার চেয়ে উত্তম মানুষও কি তুমি পেয়েছ?
(মুসলিম হাদীসটি বর্ণনা করেছেন।)

*শরী'আত নির্ধারিত দণ্ড।
كتاب التوبة والزهد
كتاب التَّوْبَة والزهد
التَّرْغِيب فِي التَّوْبَة والمبادرة بهَا وإتباع السَّيئَة الْحَسَنَة
4791- وَعَن عمرَان بن الْحصين رَضِي الله عَنهُ أَن امْرَأَة من جُهَيْنَة أَتَت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَهِي حُبْلَى من الزِّنَا فَقَالَت يَا رَسُول الله أصبت حدا فأقمه عَليّ فَدَعَا نَبِي الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَليهَا فَقَالَ أحسن إِلَيْهَا فَإِذا وضعت فأتني بهَا فَفعل فَأمر بهَا نَبِي الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فشدت عَلَيْهَا ثِيَابهَا ثمَّ أَمر بهَا فرجمت ثمَّ صلى عَلَيْهَا فَقَالَ لَهُ عمر تصلي عَلَيْهَا يَا رَسُول الله وَقد زنت قَالَ لقد تابت تَوْبَة لَو قسمت بَين سبعين من أهل الْمَدِينَة لوسعتهم وَهل وجدت أفضل من أَن جَادَتْ بِنَفسِهَا لله عز وَجل

رَوَاهُ مُسلم

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে খাঁটি তাওবার এক অনন্য দৃষ্টান্ত বর্ণিত হয়েছে। জুহায়না গোত্রের এক স্ত্রীলোক দ্বারা ব্যভিচার হয়ে গিয়েছিল। তার নাম ছিল খাওলা বিনতে খুওয়াইলিদ। কারও মতে তার নাম ছিল সুবাই আহ। তাকে গামিদিয়্যাহ-ও বলা হয়ে থাকে। তা বলা হয় এ কারণে যে, জুহায়না গোত্রের একটি শাখার নাম বনূ গামিদ। তিনি জুহায়না গোত্রের এই শাখার লোক ছিলেন।

তার দ্বারা ব্যভিচার হয়ে যায় এবং তাতে তিনি গর্ভবতীও হয়ে পড়েন। অতঃপর তার অনুশোচনা জাগে। তার অন্তরে ছিল আখিরাতের ভয়। এরূপ পাপের পরিণামে আখিরাতে কঠিন শাস্তির সতর্কবাণী আছে। দুনিয়ায় যদি এই পাপ থেকে তিনি পবিত্র হতে না পারেন এবং ক্ষমালাভ ছাড়াই মৃত্যুবরণ করেন, তবে সেই শাস্তি ভোগ করতে হবে। জাহান্নামের সেই শাস্তি তো সহ্য করা সম্ভব নয়। কাজেই যেভাবেই হোক তারে পবিত্রতা অর্জন করতেই হবে। এর পার্থিব শাস্তি যত কঠিনই হোক তা মাথা পেতে নিতেই হবে। তা মাথা পেতে নেওয়াই এ পাপের পঙ্কিলতা থেকে মুক্তির প্রকৃষ্ট উপায়। সুতরাং কালবিলম্ব না করে তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ছুটে আসলেন। বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি এমন পাপ করেছি, যাতে হদ্দ ওয়াজিব হয়ে যায়। আপনি আমার উপর হদ জারি করুন। মুসলিম শরীফের বর্ণনায় আছে, তিনি বলেছিলেন, আমাকে পবিত্র করুন।

'হদ্দ' বলা হয় শরী'আত-নির্ধারিত শাস্তিকে, যেমন চুরি করার শাস্তি হাত কাটা, মদপানের শান্তি চল্লিশ দোররা, ব্যভিচারের অপবাদ দেওয়ার শান্তি আশি দোররা ইত্যাদি। অবিবাহিত নর-নারী ব্যভিচার করলে তাদের প্রত্যেকের শাস্তি হয় একশ দোররা। কিন্তু তারা যদি বিবাহিত হয়, তখন তার শাস্তি হল পাথর মেরে হত্যা করা। পাথর মেরে হত্যা করাকে রজম বলা হয়। এসকল শাস্তিকে 'হদ্দ' এবং বহুবচনে 'হুদ্বুদ' গুলা হয় এ কারণে যে, 'হদ্দ'-এর শাব্দিক অর্থ হচ্ছে সীমানা। কোনও কিছুর সীমানা সে বস্তুকে অন্য বস্তুর সংগে মিলিত হতে বাধা প্রদান করে, যেমন জমির সীমানা, বাড়ির সীমানা, দেশের সীমানা ইত্যাদি। শরী'আতী শাস্তি এরকমই। এটা মানুষকে অপরাধে লিপ্ত হতে বাধা প্রদান করে সুতরাং এর হদ্দ নাম যথার্থ। ইতিহাস সাক্ষী, যখন হুদুদের বিধান প্রয়োগ করা হত, তখন সমাজে অপরাধের পরিমাণ নেহাত কম ছিল। কারণ মানুষের জানা ছিল অপরাধ করলে তাকে কঠোর শাস্তি ভোগ করতে হবে । হুদুদের শাস্তি কঠোরই বটে। সেই কঠোরতার প্রতি লক্ষ করে অনেকে এর উপর আপত্তিও তুলে থাকে। তাদের সে আপত্তি অবান্তর। কেননা একে তো এটা আল্লাহর বিধান। আল্লাহর বিধানে আপত্তি তোলার অধিকার কোনও মানুষের নেই। দ্বিতীয়ত শান্তির এ কঠোরতা মানুষেরই কল্যাণে। এর ফলে সমাজে শান্তি-শৃংখলা প্রতিষ্ঠিত হয়। মানুষের জান, মাল ও ইজ্জতের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। কুরআন মাজীদে ইরশাদ-

ولَكُمْ في القِصاص خيراً يَأُولِي الْأَلْبَابِ لَعَلَّكُمْ تَتَّقُونَ

অর্থ : এবং হে বুদ্ধিমানেরা কিসাসের ভেতর (অর্থাৎ হত্যার বদলে হত্যা, দাঁতভাঙার বদলে দাঁতভাঙা, হাত কাটার বদলে হাত কাটা, জখমের বদলে জখম- এই শাস্তি আরোপের ভেতর) তোমাদের জন্য রয়েছে জীবন (রক্ষার ব্যবস্থা)। আশা করা যায় তোমরা (এর বিরুদ্ধাচরণ) পরিহার করবে।
তাছাড়া এই শান্তি যেমন কঠিন, তেমনি এ শাস্তি আরোপের শর্তাবলীও কঠিনই রাখা হয়েছে, যেমন এ শাস্তি আরোপের জন্য প্রথমে চারজন প্রত্যক্ষদর্শী ও নির্ভরযোগ্য সাক্ষীর সাক্ষ্য দ্বারা অপরাধ প্রমাণিত হতে হবে। কিংবা অপরাধীর নিজের তা স্বীকার করতে হবে। এ শাস্তি আরোপ কেবল সরকারের কাজ। কোনও ব্যক্তি বা জনগণ এটা আরোপের অধিকার রাখে না। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্যে ফিকহী গ্রন্থাবলী দ্রষ্টব্য।

যাহোক ওই নারী বললেন, আমার উপর হদ্দ জারি করুন। কোনও কোনও বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বলেছিলেন, যাও, আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাও এবং তাওবা কর। সন্দেহ নেই যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামের কথা অনুযায়ী ফিরে গিয়ে তিনি তাওবা করলে আল্লাহ তা'আলা তাকে অবশ্যই ক্ষমা করে দিতেন। কিন্তু পাপ গুরুতর হওয়ার কারণে তার মনে অনুশোচনাও দেখা দিয়েছিল প্রচণ্ড। সেই অনুশোচনার আগুনে তিনি এমনভাবেই পুড়ছিলেন যে, কেবল তাওবা-ইস্তিগফার দ্বারাই সন্তষ্ট হতে পারছিলেন না। পরকালীন শাস্তির ভয়ে তিনি এমনই ভীত হয়ে পড়েছিলেন যে, তার থেকে মুক্তির লক্ষ্যে পার্থিব শাস্তি মাথা পেতে নেওয়াকেই শ্রেয় মনে করছিলেন। সেই শাস্তি বরণ ছাড়া তিনি কিছুতেই শান্তি পাচ্ছিলেন না। তাই তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পীড়াপীড়ি করলেন, যাতে তার উপরে হদ্দ জারি করা হয়। তিনি বলেই ফেললেন, আপনি মা'ইয আসলামীকে যেমন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন তেমনি আমাকেও ফিরিয়ে দেবেন নাকি? তার পীড়াপীড়িতে শেষ পর্যন্ত হদ্দ জারি করাই স্থির হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার অভিভাবককে ডেকে বললেন, এর সাথে ভালো ব্যবহার কর। আশংকা ছিল নিজেদের পারিবারিক মান-সম্মান ডোবানোর দায়ে তার প্রতি দুর্ব্যবহার করা হবে। কিন্তু এমন অনুশোচনাদগ্ধ ব্যক্তির উপর দুর্ব্যবহার করা চলে না। করলে তা অবিচার হয়ে যায়। এরূপ ব্যক্তি তো দয়া ও সহানুভূতি পাওয়ার যোগ্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম সে হুকুমই তাদের দিলেন। শাস্তি আরোপ সহানুভূতির পরিপন্থী নয়। এটা করা হয় তার কল্যাণার্থেই, যেহেতু এর মাধ্যমে অপরাধীর পরকালীন শাস্তি হতে মুক্তির ব্যবস্থা হয় এবং হয় বৃহত্তর মানবগোষ্ঠীর কল্যাণ।

যাহোক অভিভাবক তাকে নিয়ে গেল। তার সন্তান প্রসব হল। সন্তান বড় হল। তার দুধ ছাড়ানোর বয়স হল। তারপর তিনি সেই শিশুকে সঙ্গে নিয়ে হাজির হলেন। ভাবা যায় কী খাঁটি তাওবা তিনি করেছিলেন? এ দীর্ঘ সময়ের মধ্যে তো তার পালানোরও সুযোগ ছিল। কিন্তু সেই সুযোগ তিনি গ্রহণ করেননি। তার যে আখিরাতের শাস্তি থেকে। বাঁচার লক্ষ্যে পবিত্র হতে হবে!

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম জনৈক সাহাবীর উপর শিশুটির লালন- পালনের ভার অর্পণ করলেন। তারপর রজমের হুকুম দিলেন। রজমের আগে তার শরীরে শক্ত করে কাপড়-চোপড় আটকে দেওয়া হল, যাতে রজমকালে তার সতর খুলে না যায়। তারপর তাকে রজম করা হল।

রজমের পর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার জানাযা পড়লেন। হযরত উমর রাযি.-এর মনে প্রশ্ন জাগল, এমন গুরুতর পাপ যেই নারী করেছে। তাকে তো অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করার কথা! তা না করে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে তার জানাযা পড়বেন? এই সম্মান কি তার প্রাপ্য? বস্তুত তিনি তার দ্বারা ঘটিত পাপের দিকেই লক্ষ করেছিলেন। তার ভেতর অনুশোচনার যে আগুন জ্বলেছিল, যদ্দরুণ নিজে এসে পাপের কথা স্বীকার করেন এবং জাগতিক শান্তির জনে নিজেকে উৎসর্গ করেন, সেই অন্তরস্থ অনুশোচনা ও সত্যিকারের তাওবার বিষয়টা তিনি বিবেচনা করেননি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম সেই দিকে তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন এবং যে কঠিন ও নিখুঁত তাওবা তিনি করেছিলেন তা এই ভাষায় প্রকাশ করেন যে, মদীনাবাসীদের সত্তরজনের মধ্যে যদি তার তাওবা বণ্টন করে দেওয়া হয়, তবে সকলেরই মাগফিরাতের জন্যে তা যথেষ্ট হয়ে যাবে। সম্ভবত এর দ্বারা মদীনায় যেসকল মুনাফিক বাস করত তাদের দিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে। মুনাফিকরা মূলত কাফির। তার মানে দাঁড়ায়, তার তাওবার সত্যতা ও প্রকৃষ্টতা এত উন্নত ছিল যে, তার সত্তর ভাগের একভাগ বিশুদ্ধতাও যদি কোনও কাফিরের তাওবায় থাকে, তা তার কুফরী শুনাহ মাফ হয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। সুবহানাল্লাহ! কী উচ্চস্তরের তাওবা তিনি করেছিলেন।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

ক. কারও দ্বারা কোনও পাপকর্ম হয়ে গেলে সেজন্য মনে-প্রাণে অনুতপ্ত হওয়া একান্ত কর্তব্য।

খ. কখনও কখনও সাহাবায়ে কিরামের দ্বারাও পাপকর্ম হয়ে গেছে। কিন্তু তাদের ও আমাদের মধ্যে দু'টি মৌলিক পার্থক্য আছে। তারা আমাদের মত পরিকল্পিতভাবে পাপকর্ম করতেন না। অসতর্কতাবশত ঘটনাক্রমে তাদের দ্বারা তা হয়ে যেত। দ্বিতীয়ত পাপ হয়ে যাওয়ার পর তারা যারপরনাই অনুতপ্ত হতেন এবং যথাশীঘ্র তাওবা করে নিতেন, আমাদের মত তাওবায় গড়িমসি করতেন না। তাদের অনুশোচনা এত গভীর হত, যা আমাদের পক্ষে কল্পনা করাও সম্ভব নয়। জুহায়না বংশীয়া এ মহিলা সাহাবী যেমন অনুতাপদগ্ধ হয়েছিলেন তার তুলনা কি আমাদের মধ্যে পাওয়া যাবে, না পাওয়া সম্ভব? তাদের দ্বারা কদাচিত যেসব পাপকর্ম হয়ে গেছে তাতে তাদের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয়নি; বরং সেই পাপজনিত অনুশোচনা ও বিশুদ্ধ তাওবার ফলে তাদের মর্যাদা আরও বুলন্দ হয়েছে। কিয়ামতকাল পর্যন্ত মানুষ তাদের দ্বারা শিক্ষা পাবে যে, গুনাহ হয়ে যাওয়ার পর কেমন অনুতাপের সাথে তাওবায় লিপ্ত হতে হয়। অসম্ভব নয় সে আদর্শ স্থাপনের জন্যই কুদরতীভাবে তাদের দ্বারা দু'-চারটি গুনাহ করানো হয়েছে।

গ. গুনাহের কারণে কাউকে ঘৃণা করতে নেই। অসম্ভব কি সেই গুনাহের পর হয়তো সে এমন তাওবা করেছে, যা দ্বারা সে আল্লাহর এক প্রিয় বান্দায় পরিণত হয়েছে। আল্লাহর কোনও প্রিয় বান্দাকে ঘৃণা করার পরিণাম তার গযবের পাত্র হওয়া ছাড়া আর কিছুই নয়।

ঘ. পরিবারের কোনও সদস্য দ্বারা কোনও অন্যায় কাজ হয়ে গেলে ঘৃণাভরে তাকে প্রত্যাখ্যান করা উচিত নয়; বরং তার প্রতিকার ও সংশোধনে সকলের উচিত আন্তরিকতার সংগে তার সহযোগিতা করা।

ঙ. ব্যভিচার একটি কঠিন পাপ। তাই এর শাস্তিও সুকঠিন। এর থেকে বেঁচে থাকার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত।

চ. সমাজে যাতে ব্যভিচারের বিস্তার ঘটতে না পারে, সেজন্যে শাস্তি প্রয়োগসহ সবরকম আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ সরকারের অবশ্যকর্তব্য।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব - হাদীস নং ৪৭৯১ | মুসলিম বাংলা