আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২২. অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
হাদীস নং: ৪১৫২
অধ্যায়ঃ শিষ্টাচার
মুসাফাহা (করমর্দন) করার প্রতি অনুপ্রেরণা, ইশারায় সালাম দানের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং কাফিরকে সালাম দান প্রসঙ্গে
৪১৫২. হযরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: আহলে কিতাব (ইয়াহুদী ও নাসারাগণ) তোমাদের সালাম দিলে জবাবে তোমরা কেবলমাত্র 'ওয়া আলাইকুম' বলবে।
(বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজা বর্ণিত। উল্লেখিত দু'টি হাদীসের মত অনেক হাদীস রয়েছে, যা আমাদের শর্তানুযায়ী না হওয়ায় তার আলোচনা বর্জন করেছি।)
(বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ, তিরমিযী ও ইবনে মাজা বর্ণিত। উল্লেখিত দু'টি হাদীসের মত অনেক হাদীস রয়েছে, যা আমাদের শর্তানুযায়ী না হওয়ায় তার আলোচনা বর্জন করেছি।)
كتاب الأدب
التَّرْغِيب فِي المصافحة والترهيب من الْإِشَارَة فِي السَّلَام وَمَا جَاءَ فِي السَّلَام على الْكفَّار
4152 - وَعَن أنس رَضِي الله عَنهُ قَالَ قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِذا سلم عَلَيْكُم أهل الْكتاب فَقولُوا وَعَلَيْكُم
رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَأَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه وَمن نوع هذَيْن الْحَدِيثين كثير لَيْسَ من شَرط كتَابنَا فتركناها
رَوَاهُ البُخَارِيّ وَمُسلم وَأَبُو دَاوُد وَالتِّرْمِذِيّ وَابْن مَاجَه وَمن نوع هذَيْن الْحَدِيثين كثير لَيْسَ من شَرط كتَابنَا فتركناها
হাদীসের ব্যাখ্যা:
'আসসালামু আলাইকুম' শব্দে সালাম দেওয়া এবং এর উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা ইসলামের নিদর্শন। এটা কেবল মুসলিমদের বেলায়ই প্রযোজ্য। এ শব্দে যেমন অমুসলিমদের সালাম দেওয়া জায়েয নয়, তেমনি এভাবে তাদের সালামের জবাব দেওয়াও জায়েয নয়। কাজেই তারা কোনও মুসলিমকে আসসালামু আলাইকুম শব্দে সালাম দিলে তার উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা যাবে না। কেবল وَعَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতিও) বলতে হবে, যেমনটা আলোচ্য হাদীছে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মদীনার ইহুদীরা মুসলিমদেরকে যখন সালাম দিত, তখন বলত- السَّامُ عَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতি ধ্বংস পতিত হোক অর্থাৎ তোমরা ধ্বংস হও বা তোমরা মরো)। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ اللَّهُ
'এবং (হে রাসূল!) তারা তোমার কাছে যখন আসে, তখন তারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন জানায়, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাকে অভিবাদন জানাননি’। (সূরা মুজাদালা, আয়াত ৮)
একবার কয়েকজন ইহুদী নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। তখন তারা السَّامُ عَلَيْكُمْ বলে অভিবাদন জানিয়েছিল। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. উত্তর দিলেন-
بَلْ عَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ
'বরং তোমাদের উপর পতিত হোক ধ্বংস ও লা'নত।'
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ক্ষান্ত হও হে আয়েশা। তারপর বললেন-
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِي الْأَمْرِ كُلِّهِ
'আল্লাহ সকল বিষয়ে কোমলতা পসন্দ করেন।'
হযরত আয়েশা রাযি. বললেন, আপনি শোনেননি তারা কী বলেছে? তিনি বললেন, আমিও তো বলেছি وَعَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতিও)। (সহীহ মুসলিম: ২১৬৫)
অর্থাৎ এতটুকু দ্বারাই উত্তর হয়ে গেছে। শুধু শুধু শক্ত কথা বলার কী প্রয়োজন?
মোটকথা তাদের বিকৃত সালামের উত্তরে وَعَلَيْكُمْ বলাই যথেষ্ট। এর অর্থ হয় আমাদের উপর যে বদদু'আ তোমরা করেছ, অনুরূপ বদদু'আ তোমাদের উপরও। এ প্রসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
وَإِنَّا نُجَابُ عَلَيْهِمْ وَلَا يُجَابُونَ عَلَيْنَا
তাদের প্রতি আমাদের বদদু'আ কবুল হবে। কিন্তু আমাদের প্রতি তাদের বদদু'আ কবুল হবে না। (সহীহ মুসলিম : ২১৬৬; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ৮৬৮০)
হাদীছটির সম্পর্ক যদিও ইহুদী বা আহলে কিতাব সম্পর্কে, তবে এর বিধান যে- কোনও অমুসলিমের জন্যই প্রযোজ্য। তারা বিশুদ্ধ বা বিকৃত যে শব্দেই সালাম দিক, তার উত্তর দেওয়া হবে কেবল وَعَلَيْكُمْ শব্দ দ্বারা। অর্থাৎ তোমরা যার উপযুক্ত তাই যেন হয়। তোমাদের প্রতি আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যথোপযুক্ত আচরণ করা হোক।
অমুসলিমগণ যদি সালাম ছাড়া অন্য কোনও শব্দে মুসলিমদের অভিবাদন জানায়, তবে তার উত্তরে অনুরূপ শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সুপ্রভাতের বিপরীতে সুপ্রভাত, শুভ সন্ধ্যার বিপরীতে শুভ সন্ধ্যা, আদাবের বিপরীতে আদাব।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও অমুসলিম ব্যক্তি সালাম দিলে তার উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা যাবে না। শুধু وَعَلَيْكُمْ বলতে হবে
খ. অমুসলিম কোনও ব্যক্তি তার ধর্মীয় নিদর্শন নয় এমন কোনও শব্দে অভিবাদন জানালে অনুরূপ শব্দে তার উত্তর দেওয়া যাবে।
উল্লেখ্য, মদীনার ইহুদীরা মুসলিমদেরকে যখন সালাম দিত, তখন বলত- السَّامُ عَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতি ধ্বংস পতিত হোক অর্থাৎ তোমরা ধ্বংস হও বা তোমরা মরো)। কুরআন মাজীদে ইরশাদ হয়েছে-
وَإِذَا جَاءُوكَ حَيَّوْكَ بِمَا لَمْ يُحَيِّكَ بِهِ اللَّهُ
'এবং (হে রাসূল!) তারা তোমার কাছে যখন আসে, তখন তারা তোমাকে এমন কথা দ্বারা অভিবাদন জানায়, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাকে অভিবাদন জানাননি’। (সূরা মুজাদালা, আয়াত ৮)
একবার কয়েকজন ইহুদী নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করল। তখন তারা السَّامُ عَلَيْكُمْ বলে অভিবাদন জানিয়েছিল। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. উত্তর দিলেন-
بَلْ عَلَيْكُمُ السَّامُ وَاللَّعْنَةُ
'বরং তোমাদের উপর পতিত হোক ধ্বংস ও লা'নত।'
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ক্ষান্ত হও হে আয়েশা। তারপর বললেন-
إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ الرِّفْقَ فِي الْأَمْرِ كُلِّهِ
'আল্লাহ সকল বিষয়ে কোমলতা পসন্দ করেন।'
হযরত আয়েশা রাযি. বললেন, আপনি শোনেননি তারা কী বলেছে? তিনি বললেন, আমিও তো বলেছি وَعَلَيْكُمْ (তোমাদের প্রতিও)। (সহীহ মুসলিম: ২১৬৫)
অর্থাৎ এতটুকু দ্বারাই উত্তর হয়ে গেছে। শুধু শুধু শক্ত কথা বলার কী প্রয়োজন?
মোটকথা তাদের বিকৃত সালামের উত্তরে وَعَلَيْكُمْ বলাই যথেষ্ট। এর অর্থ হয় আমাদের উপর যে বদদু'আ তোমরা করেছ, অনুরূপ বদদু'আ তোমাদের উপরও। এ প্রসঙ্গে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন-
وَإِنَّا نُجَابُ عَلَيْهِمْ وَلَا يُجَابُونَ عَلَيْنَا
তাদের প্রতি আমাদের বদদু'আ কবুল হবে। কিন্তু আমাদের প্রতি তাদের বদদু'আ কবুল হবে না। (সহীহ মুসলিম : ২১৬৬; বায়হাকী, শু'আবুল ঈমান : ৮৬৮০)
হাদীছটির সম্পর্ক যদিও ইহুদী বা আহলে কিতাব সম্পর্কে, তবে এর বিধান যে- কোনও অমুসলিমের জন্যই প্রযোজ্য। তারা বিশুদ্ধ বা বিকৃত যে শব্দেই সালাম দিক, তার উত্তর দেওয়া হবে কেবল وَعَلَيْكُمْ শব্দ দ্বারা। অর্থাৎ তোমরা যার উপযুক্ত তাই যেন হয়। তোমাদের প্রতি আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে যথোপযুক্ত আচরণ করা হোক।
অমুসলিমগণ যদি সালাম ছাড়া অন্য কোনও শব্দে মুসলিমদের অভিবাদন জানায়, তবে তার উত্তরে অনুরূপ শব্দ ব্যবহার করা যেতে পারে। যেমন সুপ্রভাতের বিপরীতে সুপ্রভাত, শুভ সন্ধ্যার বিপরীতে শুভ সন্ধ্যা, আদাবের বিপরীতে আদাব।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. কোনও অমুসলিম ব্যক্তি সালাম দিলে তার উত্তরে ওয়া আলাইকুমুস সালাম বলা যাবে না। শুধু وَعَلَيْكُمْ বলতে হবে
খ. অমুসলিম কোনও ব্যক্তি তার ধর্মীয় নিদর্শন নয় এমন কোনও শব্দে অভিবাদন জানালে অনুরূপ শব্দে তার উত্তর দেওয়া যাবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)