আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
২০. অধ্যায়ঃ হদ্দ
হাদীস নং: ৩৫৭৬
অধ্যায়ঃ হদ্দ
মদ পান করা, বেচা-কেনা, মদ তৈরি করা, বহন করা ও তার মূল্য ভোগ করার ব্যাপারে কঠোরতা ও তার প্রতি ভীতিপ্রদর্শন এবং তা বর্জন করা ও তা থেকে তাওবা করার প্রতি অনুপ্রেরণা
৩৫৭৬. হযরত আবু মূসা (রা) থেকে বর্ণিত। নবী করীম (ﷺ) বলেছেন: তিন প্রকারের লোক জান্নাতী হবে না। তারা হল : ১. সর্বদা মদপানে অভ্যন্ত ব্যক্তি, ২. আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী, এবং ৩. যাদুতে বিশ্বাসী। সর্বদা মদপানে অভ্যন্ত ব্যক্তি মারা গেলে আল্লাহ তাকে নাহরে গুতাহ থেকে পান করাবেন। বলা হল: নাহরে গুতাহ কি? তিনি বললেন: ব্যভিচারীর লজ্জাস্থান থেকে নিঃসরিত পুঁজের নহর, যার দুর্গন্ধময় বায়ু জাহান্নামীদের কষ্ট দেবে।
(আহমাদ, আবু ই'আলা, ইবনে হিব্বানের সহীহ গ্রন্থ ও হাকিম (র) ইবনে হিব্বানের থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: সর্বদা মদপানে অভ্যন্ত ব্যক্তি, যাদুতে বিশ্বাসী এবং আত্মীয়তার সম্পর্কোচ্ছেদকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
المومسات অর্থাৎ ব্যভিচারিণী।)
(আহমাদ, আবু ই'আলা, ইবনে হিব্বানের সহীহ গ্রন্থ ও হাকিম (র) ইবনে হিব্বানের থেকে বিশুদ্ধ সূত্রে বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন: সর্বদা মদপানে অভ্যন্ত ব্যক্তি, যাদুতে বিশ্বাসী এবং আত্মীয়তার সম্পর্কোচ্ছেদকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।
المومسات অর্থাৎ ব্যভিচারিণী।)
كتاب الحدود
التَّرْهِيب من شرب الْخمر وَبَيْعهَا وشرائها وعصرها وَحملهَا وَأكل ثمنهَا وَالتَّشْدِيد فِي ذَلِك وَالتَّرْغِيب فِي تَركه وَالتَّوْبَة مِنْهُ
3576- وَعَن أبي مُوسَى رَضِي الله عَنهُ أَن النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ ثَلَاثَة لَا يدْخلُونَ الْجنَّة مدمن الْخمر وقاطع الرَّحِم ومصدق بِالسحرِ وَمن مَاتَ مدمن الْخمر سقَاهُ الله جلّ وَعلا من نهر الغوطة
قيل وَمَا نهر الغوطة قَالَ نهر يجْرِي من فروج المومسات يُؤْذِي أهل النَّار ريح فروجهم
رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو يعلى وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْحَاكِم وَصَححهُ فِي رِوَايَة لِابْنِ حبَان
قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَا يدْخل الْجنَّة مدمن خمر وَلَا مُؤمن بِسحر وَلَا قَاطع رحم
المومسات هن الزانيات
قيل وَمَا نهر الغوطة قَالَ نهر يجْرِي من فروج المومسات يُؤْذِي أهل النَّار ريح فروجهم
رَوَاهُ أَحْمد وَأَبُو يعلى وَابْن حبَان فِي صَحِيحه وَالْحَاكِم وَصَححهُ فِي رِوَايَة لِابْنِ حبَان
قَالَ رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَا يدْخل الْجنَّة مدمن خمر وَلَا مُؤمن بِسحر وَلَا قَاطع رحم
المومسات هن الزانيات
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটি আমাদের জন্য এক কঠোর সতর্কবাণী। আমরা যারা নিজেদেরকে মুমিন বলে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করি কিআমত আছে, হাশরের হিসাব নিকাশ আছে তারপর আছে জান্নাত ও জাহান্নাম, তাদের কোনও অবস্থায়ই আত্মীয়তা ছিন্ন করা উচিত নয়। কেননা এ হাদীছে জানানো হয়েছে, আত্মীয়তা ছিন্নকারী জান্নাতে যাবে না। যে ব্যক্তি আত্মীয়তা ছিন্ন করতে অভ্যস্ত হয়ে যায় তার দ্বারা নানাভাবে বান্দার হক নষ্ট হতে থাকে। বান্দার হক নষ্ট করা কঠিন পাপ। এক পাপ আরেক পাপে লিপ্ত হতে উৎসাহ যোগায়। আত্মীয়তা ছিন্ন করার পাপ যাকে পেয়ে বসে আর সে যথাশীঘ্র তা থেকে তওবা না করে, তার পাপপ্রবণতা উত্তরোত্তর বাড়তেই থাকে। এরূপ ব্যক্তির তো অশুভ মৃত্যুর আশঙ্কা থাকেই, অর্থাৎ ঈমানবিহীন মৃত্যু। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করুন। ঈমান ছাড়া যার মৃত্যু হয় তার পরিণাম স্থায়ী জাহান্নাম।
আত্মীয়তা ছিন্নকারীর মৃত্যু যদি ঈমানের সঙ্গে হয়ও, তারপরও আত্মীয়তার হক খর্ব করার কারণে তার জাহান্নামের শাস্তিভোগের আশঙ্কা রয়েছে। যদি আল্লাহ তাআলা তার ক্ষমার কোনও ব্যবস্থা না করেন, তবে প্রথমে তাকে জাহান্নামে যেতেই হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ শাস্তিভোগের পর সে মুক্তি পাবে এবং ঈমানের বদৌলতে জান্নাত লাভ করবে। কিন্তু যতদিন তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, ততদিনের দুর্ভোগ কিছু সহজ বিষয় তো নয়। সে দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই আত্মীয়তা ছিন্ন করা হতে বিরত থাকতে হবে, অবস্থাবিশেষে তা যতই কঠিন হোক না কেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
যত কঠিন অবস্থাই হোক না কেন, কোনওক্রমেই আত্মীয়তা ছিন্ন করতে নেই। জাহান্নাম থেকে সম্পূর্ণরূপে আত্মরক্ষার লক্ষ্যে আমাদেরকে আমৃত্যু আত্মীয়তা রক্ষা করে যেতেই হবে।
আত্মীয়তা ছিন্নকারীর মৃত্যু যদি ঈমানের সঙ্গে হয়ও, তারপরও আত্মীয়তার হক খর্ব করার কারণে তার জাহান্নামের শাস্তিভোগের আশঙ্কা রয়েছে। যদি আল্লাহ তাআলা তার ক্ষমার কোনও ব্যবস্থা না করেন, তবে প্রথমে তাকে জাহান্নামে যেতেই হবে। নির্দিষ্ট পরিমাণ শাস্তিভোগের পর সে মুক্তি পাবে এবং ঈমানের বদৌলতে জান্নাত লাভ করবে। কিন্তু যতদিন তাকে জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে, ততদিনের দুর্ভোগ কিছু সহজ বিষয় তো নয়। সে দুর্ভোগ থেকে বাঁচতে চাইলে আমাদেরকে অবশ্যই আত্মীয়তা ছিন্ন করা হতে বিরত থাকতে হবে, অবস্থাবিশেষে তা যতই কঠিন হোক না কেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
যত কঠিন অবস্থাই হোক না কেন, কোনওক্রমেই আত্মীয়তা ছিন্ন করতে নেই। জাহান্নাম থেকে সম্পূর্ণরূপে আত্মরক্ষার লক্ষ্যে আমাদেরকে আমৃত্যু আত্মীয়তা রক্ষা করে যেতেই হবে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)