আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
১২. অধ্যায়ঃ জিহাদ
হাদীস নং: ২০০৭
আল্লাহর পথে একটি সকাল ও একটি বিকাল যাপনের প্রতি উৎসাহ দান, জিহাদে পদব্রজে চলা, ধূলিবালি লাগানো ও এতে ভয়ভীতি বরদাস্ত করার ফযীলত প্রসঙ্গ
২০০৭. হযরত আবুল মুসাব্বিহ মুক্রাঈ (রা) সূত্রে বর্ণিত। তিনি বলেন: রোম যুদ্ধে একদিন আমরা একটি কাফেলার সাথে যাচ্ছিলাম। সেই কাফেলায় ছিলেন মালিক ইব্ন আবদুল্লাহ্ আল খাসয়ামী। হঠাৎ মালিক হযরত জাবির ইব্ন আবদুল্লাহ্ (রা)-এর পাশ দিয়ে গেলেন। জাবির তাঁর খাচ্চরটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন। মালিক তাঁকে বললেন, হে আবদুল্লাহর পিতা। আরোহণ কর। কেননা আল্লাহ্ তোমাকে বাহন দিয়েছেন। জাবির বললেন, আমি আমার বাহনটিকে ঠিক করে নিচ্ছি। আমি আমার গোত্রের মুখাপেক্ষিতা থেকে বেঁচে থাকতে চাই। আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি তার পদদ্বয় আল্লাহর পথের ধূলিবালি দ্বারা ধূসরিত করল; আল্লাহ্ তাকে জাহান্নামের আগুনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন। তারপর মালিক একটু অগ্রসর হলেন। যখন এমন স্থানে পৌছলেন, যেখান থেকে ডাক দিলে জাবির-এর কানে আওয়াজ পৌঁছবে, তিনি বললেন, হে আবূ আবদুল্লাহ্! আরোহণ কর। কেননা আল্লাহ তোমাকে বাহন দিয়েছেন। জাবির বুঝতে পারলেন, মালিক কোন্ উদ্দেশ্যে এমনটি করছেন। তিনি আবার বললেন, আমি বাহনটি ঠিক করে নিচ্ছি এবং গোত্র-নির্ভরতা থেকে আমি নাজাত চাই। আমি রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর পথের ধূলিবালিতে তার দু'পা ধূসরিত করবে, তাকে আল্লাহ দোযখের জন্য হারাম করে দিবেন। তারপর মানুষ দ্রুতপায়ে হাঁটতে শুরু করল। সেদিনই আমি সর্বাধিক সংখ্যক মানুষকে পদব্রজে চলতে দেখেছি।
(হাদীসটি ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। বর্ণিত শব্দমালা তাঁরই।)
(হাদীসটি ইবন হিব্বান তাঁর 'সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। বর্ণিত শব্দমালা তাঁরই।)
التَّرْغِيب فِي الغدوة فِي سَبِيل الله والروحة وَمَا جَاءَ فِي فضل الْمَشْي وَالْغُبَار فِي سَبِيل الله وَالْخَوْف فِيهِ
2007- وَعَن أبي المصبح المقرائي رَضِي الله عَنهُ قَالَ بَيْنَمَا نَحن نسير بِأَرْض الرّوم فِي طَائِفَة عَلَيْهَا مَالك بن عبد الله الْخَثْعَمِي إِذْ مر مَالك بجابر بن عبد الله رَضِي الله عَنْهُمَا وَهُوَ يَقُود بغلا لَهُ فَقَالَ لَهُ مَالك أَي أَبَا عبد الله اركب فقد حملك الله فَقَالَ جَابر أصلح دَابَّتي وأستغني عَن قومِي وَسمعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من اغبرت قدماه فِي سَبِيل الله حرمه الله على النَّار فَسَار حَتَّى إِذا كَانَ حَيْثُ يسمعهُ الصَّوْت نَادَى بِأَعْلَى صَوته يَا أَبَا عبد الله اركب فقد حملك الله فَعرف جَابر الَّذِي يُرِيد فَقَالَ أصلح دَابَّتي وأستغني عَن قومِي وَسمعت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَقُول من اغبرت قدماه فِي سَبِيل الله حرمه الله على النَّار فتواثب النَّاس عَن دوابهم فَمَا رَأَيْت يَوْمًا أَكثر مَاشِيا مِنْهُ
رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه
وَاللَّفْظ لَهُ
رَوَاهُ ابْن حبَان فِي صَحِيحه
وَاللَّفْظ لَهُ
হাদীসের ব্যাখ্যা:
জিহাদের ফযীলত সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে শরীরে যে ধুলো লাগে, সে ধুলো ও জাহান্নামের ধোঁয়া কখনও একত্রিত হবে না। অর্থাৎ মুজাহিদ ব্যক্তিকে কখনও জাহান্নামের আগুন তো স্পর্শ করবেই না, এমনকি জাহান্নামের ধোঁয়াও তার গায়ে লাগবে না। সে জাহান্নাম থেকে বহু দূরে থাকবে।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ বলতে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করাকে বোঝায়। এ লড়াই যেমন মুখের দ্বারা হতে পারে, কলমের দ্বারা হতে পারে, তেমনি হতে পারে সশস্ত্র সংগ্রাম। এর প্রত্যেকটির জন্যই সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন আছে। সে নিয়ম-কানুনের অধীনে সংগ্রাম করলেই তা মহান জিহাদ নামে অভিহিত হওয়ার উপযুক্ত হবে, অন্যথায় নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জাহান্নাম থেকে বাঁচার লক্ষ্যে আমরা আপন সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর পথে জিহাদে রত থাকব, এমনকি সশস্ত্র সংগ্রামের জন্যও প্রস্তুত থাকব। এবং যখনই সে অবকাশ আসে, যথাযথ নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ব।
প্রকাশ থাকে যে, আল্লাহর পথে জিহাদ বলতে আল্লাহ তা'আলার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করাকে বোঝায়। এ লড়াই যেমন মুখের দ্বারা হতে পারে, কলমের দ্বারা হতে পারে, তেমনি হতে পারে সশস্ত্র সংগ্রাম। এর প্রত্যেকটির জন্যই সুনির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন আছে। সে নিয়ম-কানুনের অধীনে সংগ্রাম করলেই তা মহান জিহাদ নামে অভিহিত হওয়ার উপযুক্ত হবে, অন্যথায় নয়।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. জাহান্নাম থেকে বাঁচার লক্ষ্যে আমরা আপন সামর্থ্য অনুযায়ী আল্লাহর পথে জিহাদে রত থাকব, এমনকি সশস্ত্র সংগ্রামের জন্যও প্রস্তুত থাকব। এবং যখনই সে অবকাশ আসে, যথাযথ নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে তাতে ঝাঁপিয়ে পড়ব।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
