আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

৬. অধ্যায়ঃ নফল

হাদীস নং: ৯০৩
অধ্যায়ঃ নফল
বিছানায় শুয়ে দু'আ পাঠের প্রতি অনুপ্রেরণা এবং যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকর ব্যতীত ঘুমিয়ে পড়ে
৯০৩. হযরত আবূ হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন: রাসূলুল্লাহ আমাকে রমযানের সাদাকাতুল ফিতর উসূলের জন্য তহশীলদার নিযুক্ত করেন। এমন সময় আমার কাছে এক আগন্তুক এলো। সে দুই হাত
ভরে খাদ্য বস্তু নিল। আমি তাকে ধরে ফেললাম এবং বললাম: আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে পেশ করব। সে বলল: আমি একজন সাহায্যপ্রার্থী, আমার উপর রয়েছে ঋণের বোঝা, আমার রয়েছে পরিবার-পরিজন এবং আমার রয়েছে তীব্র চাহিদা। ফলে আমি তাকে ছেড়ে দিলাম। আমি সকালে নবী -এর কাছে হাযির হলে তিনি বললেনঃ হে আবু হুরায়রা। তুমি তোমার গত রাতের বন্দীর সাথে কিরূপ আচরণ করলে? তিনি বলেন, আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ। সে তার তীব্র চাহিদা ও পরিবারের কথা বলেছে। ফলে আমি তার প্রতি দয়া পরবশ হয়ে তাকে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি বলেছেন: নিশ্চয়ই সে তোমার সাথে মিথ্যা বলেছে এবং অচিরেই সে আবার আসবে। আমি রাসূলুল্লাহ-এর কথামত জানতে পারলাম যে, সে পুনরায় আসবে। আমি তার আসার অপেক্ষায় বসে থাকলাম। এমন সময় সে এসে খাদ্য সামগ্রী দ্বারা অঞ্জলী পূর্ণ করতে লাগল। এরপর তিনি পূর্ণ হাদীসটি দ্বিতীয়বারের মত উল্লেখ করেন। এভাবে আমি তাকে তৃতীয়বার ধরলাম। তখন আমি বললাম: আমি তোমাকে রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট নিয়ে যাব। এ ছিল তৃতীয়বারের ব্যাপার। তুমি বলঃ তুমি আর ফিরে আসবে না, অথচ তুমি পুনরায় ফিরে আস। সে বলল: তুমি আমাকে ছেড়ে দাও, আমি তোমাকে এমন কিছু বাক্য শিক্ষা দেব, যদ্বারা আল্লাহ তোমাকে উপকৃত করবেন। আমি বললামঃ সেই বাক্যগুলো কি? সে বলল: যখন তুমি বিছানায় ঘুমোতে যাবে, তখন তুমি পূর্ণ আয়াতুল কুরসী তিলাওয়াত করবে। এতে আল্লাহর পক্ষ থেকে তোমার জন্য একজন রক্ষক নিযুক্ত হবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার নিকটবর্তী হতে পারবে না। এরপর আমি তাকে তার পথে ছেড়ে দিলাম। পরের দিন সকালে আমি রাসূলুল্লাহ (সা) এর নিকট উপস্থিত হলাম। তখন তিনি আমাকে বললেনঃ তোমার বন্দী গত রাতে কি করেছে? আমি বললামঃ ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে বলেছে, আমাকে সে এমন কিছু বাক্য শিক্ষা দেবে, যদ্বারা আল্লাহ আমাকে উপকৃত করবেন। এরপর আমি তাকে তার পথে ছেড়ে দিয়েছি। তিনি জিজ্ঞেস করলেন: সেই বাক্যগুলো কি? আমি বললামঃ সে আমাকে বলেছে, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে, তখন পূর্ণ আয়াতুল কুরসী পাঠ করে নেবে। সে বলেছে, এতে আল্লাহ তোমার জন্য একজন রক্ষক (ফিরিশতা) নিয়োগ করবেন এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার নিকটবর্তী হতে পারবে না। সাহাবায়ে কিরাম কল্যাণকর কাজের প্রতি ছিলেন অধিক লোভাতুর। রাসূলুল্লাহ বললেন: হ্যাঁ, সে এ ব্যাপারে সত্য বলেছে, অথচ সে মিথ্যুক। হে আবু হুরায়রা। তুমি কি জান, তুমি গত তিন দিন যার সাথে কথা বলেছ, সে কে? তিনি বলেন: না। তিনি বললেন: সে শয়তান।
(বুখারী, ইবন খুযায়মা ও অন্যান্যগণ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। আর তিরমিযী ও অন্যান্যগণ হযরত আবু আযাব (রা)-এর হাদীসের শব্দমালার অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযীর কোন কোন সূত্রে নিম্নরূপ বর্ণিত আছে: "তুমি যদি আমাকে ছেড়ে দাও, তবে আমি তোমাকে কুরআনের এমন একটি আয়াত শিক্ষা দেব, যদ্বারা তোমার সন্তান ও সম্পদ রক্ষা পাবে এবং তোমার কাছে কখনো শয়তান আসতে পারবে না। আমি বললামঃ তা কি? সে বলল: তা আমি পাঠ করতে পারি না, আর তা হলঃ আয়াতুল কুরসী।"
[হাফিয মুনযিরী (র) বলেন:] এই অধ্যায়ে রাসূলুল্লাহ (সা) এর আমল হতে অসংখ্য হাদীস বর্ণিত আছে। আমার কিতাবের শর্তানুরূপ না হওয়ায় আমি তা বর্জন করেছি।
كتاب النَّوَافِل
التَّرْغِيب فِي كَلِمَات يقولهن حِين يأوي إِلَى فرَاشه وَمَا جَاءَ فِيمَن نَام وَلم يذكر الله تَعَالَى
903 - وَعَن أبي هُرَيْرَة رَضِي الله عَنهُ قَالَ وكلني رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم بِحِفْظ زَكَاة رَمَضَان فَأَتَانِي آتٍ فَجعل يحثو من الطَّعَام فَأَخَذته فَقلت لأرفعنك إِلَى رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم قَالَ إِنِّي مُحْتَاج وَعلي دين وعيال ولي حَاجَة شَدِيدَة فخليت عَنهُ فَأَصْبَحت فَقَالَ النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يَا أَبَا هُرَيْرَة مَا فعل أسيرك البارحة قَالَ قلت يَا رَسُول الله شكا حَاجَة شَدِيدَة وعيالا فرحمته فخليت سَبيله
قَالَ أما إِنَّه قد كَذبك وَسَيَعُودُ فَعرفت أَنه سيعود لقَوْل رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم إِنَّه سيعود فرصدته فجَاء يحثو الطَّعَام وَذكر الحَدِيث إِلَى أَن قَالَ فَأَخَذته يَعْنِي فِي الثَّالِثَة فَقلت لأرفعنك إِلَى رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم وَهَذَا آخر ثَلَاث مَرَّات تزْعم أَنَّك لَا تعود ثمَّ تعود
قَالَ دَعْنِي أعلمك كَلِمَات ينفعك الله بهَا
قلت مَا هن قَالَ إِذا أويت إِلَى فراشك فاقرأ آيَة الْكُرْسِيّ {الله لَا إِلَه إِلَّا هُوَ الْحَيّ القيوم} الْبَقَرَة 552 حَتَّى تختم الْآيَة فَإنَّك لن يزَال عَلَيْك من الله حَافظ وَلَا يقربك شَيْطَان حَتَّى تصبح فخليت سَبيله فَأَصْبَحت فَقَالَ لي رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم مَا فعل أسيرك البارحة قلت
قَالَ مَا هِيَ قلت قَالَ لي إِذا أويت إِلَى فراشك فاقرأ آيَة الْكُرْسِيّ من أَولهَا حَتَّى تختم الْآيَة {الله لَا إِلَه إِلَّا هُوَ الْحَيّ القيوم} وَقَالَ لن يزَال يَا رَسُول الله زعم أَنه
يعلمني كَلِمَات يَنْفَعنِي الله بهَا فخليت سَبيله عَلَيْك من الله حَافظ وَلَا يقربك شَيْطَان حَتَّى تصبح وَكَانُوا أحرص شَيْء على الْخَيْر فَقَالَ النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم أما إِنَّه قد صدقك وَهُوَ كذوب تعلم من تخاطب مُنْذُ ثَلَاث لَيَال يَا أَبَا هُرَيْرَة قَالَ لَا قَالَ ذَاك الشَّيْطَان

رَوَاهُ البُخَارِيّ وَابْن خُزَيْمَة وَغَيرهمَا وَرَوَاهُ التِّرْمِذِيّ وَغَيره من حَدِيث أبي أَيُّوب بِنَحْوِهِ وَفِي بعض طرقه عِنْده قَالَ أَرْسلنِي وأعلمك آيَة من كتاب الله لَا تضعها على مَال وَلَا ولد فيقربك شَيْطَان أبدا
قلت وَمَا هِيَ قَالَ لَا أَسْتَطِيع أَن أَتكَلّم بهَا آيَة الْكُرْسِيّ
قَالَ الْحَافِظ رَحمَه الله وَفِي الْبَاب أَحَادِيث كَثِيرَة من فعل النَّبِي صلى الله عَلَيْهِ وَسلم لَيست من شَرط كتَابنَا أضربنا عَن ذكرهَا
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান