আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ
৫. অধ্যায়ঃ নামাজ
হাদীস নং: ৭৭৯
অসম্পূর্ণ রুকু-সিজদা করার প্রতি ভীতি প্রদর্শন, রুকু-সিজদার মাঝে পিঠ সোজা করা এবং সালাতে আল্লাহ-ভীতি প্রসঙ্গে
৭৭৯. মুতরাফ তাঁর পিতা (রা) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে উত্তপ্ত ভেগে জোশের ন্যায় কান্নার আওয়ায করে সালাত আদায় করতে দেখেছি।
(আবু দাউদ ও নাসাঈ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। নাসাঈর শব্দমালা হলঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে ডেগের জোশের ন্যায় সশব্দে কান্নার আওয়ায করে সালাত আদায় করতে দেখেছি। ইবন খুযায়মা ও ইবন হিব্বান উভয়ে তাঁদের 'সহীহ' গ্রন্থে নাসাঈর অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে ইবন খুযায়মার বর্ণনায় তিনি বলেনঃ ولصدره أزيز الرَّحَى তার বুকে কান্নার শব্দ ছিল ডেগে উত্তপ্ত জোশের মত।)
(আবু দাউদ ও নাসাঈ হাদীসটি বর্ণনা করেছেন। নাসাঈর শব্দমালা হলঃ আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে ডেগের জোশের ন্যায় সশব্দে কান্নার আওয়ায করে সালাত আদায় করতে দেখেছি। ইবন খুযায়মা ও ইবন হিব্বান উভয়ে তাঁদের 'সহীহ' গ্রন্থে নাসাঈর অনুরূপ বর্ণনা করেন। তবে ইবন খুযায়মার বর্ণনায় তিনি বলেনঃ ولصدره أزيز الرَّحَى তার বুকে কান্নার শব্দ ছিল ডেগে উত্তপ্ত জোশের মত।)
التَّرْهِيب من عدم إتْمَام الرُّكُوع وَالسُّجُود وَإِقَامَة الصلب بَينهمَا وَمَا جَاءَ فِي الْخُشُوع
779 - وَعَن مطرف عَن أَبِيه رَضِي الله عَنهُ قَالَ رَأَيْت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يُصَلِّي وَفِي صَدره أزيز كأزيز الرَّحَى من الْبكاء
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ وَلَفظه
رَأَيْت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يُصَلِّي ولجوفه أزيز كأزيز الْمرجل يَعْنِي يبكي
وَرَوَاهُ ابْن خُزَيْمَة وَابْن حبَان فِي صَحِيحَيْهِمَا نَحْو رِوَايَة النَّسَائِيّ إِلَّا أَن ابْن خُزَيْمَة قَالَ ولصدره أزيز كأزيز الرَّحَى
رَوَاهُ أَبُو دَاوُد وَالنَّسَائِيّ وَلَفظه
رَأَيْت رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم يُصَلِّي ولجوفه أزيز كأزيز الْمرجل يَعْنِي يبكي
وَرَوَاهُ ابْن خُزَيْمَة وَابْن حبَان فِي صَحِيحَيْهِمَا نَحْو رِوَايَة النَّسَائِيّ إِلَّا أَن ابْن خُزَيْمَة قَالَ ولصدره أزيز كأزيز الرَّحَى
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছটিতে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে শিখখীর রাযি, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। তিনি নামাযে কিভাবে কাঁদতেন, একটি দৃষ্টান্ত দ্বারা তা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন- (আর কান্নার কারণে তাঁর পেট থেকে হাঁড়ির আওয়াজের মত আওয়াজ বের হচ্ছিল)। অর্থাৎ চুলায় চড়ানো হাঁড়ির ভাত, তরকারি বা পানি ইত্যাদি যখন উথলে ওঠে এবং তা টগবগ করে ফোঁটে, তখন সে হাঁড়ি থেকে যেমন আওয়াজ শোনা যায়, নামায অবস্থায় ঠিক সেরকম আওয়াজ নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পেট থেকেও শোনা যাচ্ছিল। এটা ছিল তাঁর কান্নার আওয়াজ। আল্লাহ তা'আলাকে তিনিই সবচে' বেশি জানতেন, যে কারণে আল্লাহ তা'আলাকে ভয়ও করতেন সবচে বেশি তিনিই।
নামাযে মহান রাব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড়ানো হয়। নামাযে তাঁর কালাম তিলাওয়াত করা হয়। নামাযের এ শান এবং আল্লাহ তা'আলার কালামের ওজন ও মাহাত্ম্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে বেশি আর কে বুঝতে পারে? তিনি যখন নামাযে দাঁড়াতেন, তখন বন্দেগী ও আবদিয়্যাতের অদৃশ্য এক জগতে হারিয়ে যেতেন। আল্লাহ তা'আলার মুশাহাদা ও রূহানী দীদারের অনির্বচনীয় এক ভূবনে তিনি পাড়ি জমাতেন। এ সময় আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব এবং তাঁর গৌরব-মহিমার প্রভাবে ভীত-বিহ্বলতার উচ্ছ্বসিত আবেগ তাঁর দেহমন ছাপিয়ে যেত। তাঁর বুকের ভেতর কান্নার কলরোল শুরু হয়ে যেত। সে কান্নাকেই হযরত আব্দুল্লাহ ইবন শিখীর রাযি. টগবগ করে ফোঁটা হাঁড়ির আওয়াজের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
আল্লাহ তা'আলার গৌরব-মহিমার অনুভবে যাদের অন্তর ভরপুর থাকে, তাদের নামাযে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের এ চরিত্র বিদ্যমান থাকে। তাঁরা পূর্ণ খুশু-খুযু'র সঙ্গে নামায পড়ে থাকেন। তাই নামায অবস্থায় তাদেরও কান্না চলে আসে। হযরত উমর ফারূক রাযি. নামাযে হু হু করে কাঁদতে থাকতেন। তাঁর কান্নার আওয়াজ কয়েক কাতার দূর থেকেও শোনা যেত। উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. নামাযের ভেতর কোনও কোনও আয়াত বারবার পড়তেন আর কাঁদতে থাকতেন। এভাবে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যেত। অনেকের সম্পর্কে জানা যায়, নামাযে একটি মাত্র আয়াত সারারাত পড়েছেন আর কেঁদেছেন। আল্লাহ তা'আলা তাদের সে হাল আমাদেরও কিছুটা দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
নামায পড়া চাই পরিপূর্ণ খুশু-খুযূ'র সঙ্গে। ক্রন্দন করা বা ক্রন্দনের ভাব সৃষ্টি করাও খুশু-খুযূ'র অংশ।
নামাযে মহান রাব্বুল আলামীনের সামনে দাঁড়ানো হয়। নামাযে তাঁর কালাম তিলাওয়াত করা হয়। নামাযের এ শান এবং আল্লাহ তা'আলার কালামের ওজন ও মাহাত্ম্য রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের চেয়ে বেশি আর কে বুঝতে পারে? তিনি যখন নামাযে দাঁড়াতেন, তখন বন্দেগী ও আবদিয়্যাতের অদৃশ্য এক জগতে হারিয়ে যেতেন। আল্লাহ তা'আলার মুশাহাদা ও রূহানী দীদারের অনির্বচনীয় এক ভূবনে তিনি পাড়ি জমাতেন। এ সময় আল্লাহর বড়ত্ব ও মহত্ব এবং তাঁর গৌরব-মহিমার প্রভাবে ভীত-বিহ্বলতার উচ্ছ্বসিত আবেগ তাঁর দেহমন ছাপিয়ে যেত। তাঁর বুকের ভেতর কান্নার কলরোল শুরু হয়ে যেত। সে কান্নাকেই হযরত আব্দুল্লাহ ইবন শিখীর রাযি. টগবগ করে ফোঁটা হাঁড়ির আওয়াজের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
আল্লাহ তা'আলার গৌরব-মহিমার অনুভবে যাদের অন্তর ভরপুর থাকে, তাদের নামাযে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নামাযের এ চরিত্র বিদ্যমান থাকে। তাঁরা পূর্ণ খুশু-খুযু'র সঙ্গে নামায পড়ে থাকেন। তাই নামায অবস্থায় তাদেরও কান্না চলে আসে। হযরত উমর ফারূক রাযি. নামাযে হু হু করে কাঁদতে থাকতেন। তাঁর কান্নার আওয়াজ কয়েক কাতার দূর থেকেও শোনা যেত। উম্মুল মু'মিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি. নামাযের ভেতর কোনও কোনও আয়াত বারবার পড়তেন আর কাঁদতে থাকতেন। এভাবে দীর্ঘ সময় পার হয়ে যেত। অনেকের সম্পর্কে জানা যায়, নামাযে একটি মাত্র আয়াত সারারাত পড়েছেন আর কেঁদেছেন। আল্লাহ তা'আলা তাদের সে হাল আমাদেরও কিছুটা দান করুন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
নামায পড়া চাই পরিপূর্ণ খুশু-খুযূ'র সঙ্গে। ক্রন্দন করা বা ক্রন্দনের ভাব সৃষ্টি করাও খুশু-খুযূ'র অংশ।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
