আত্-তারগীব ওয়াত্-তারহীব- ইমাম মুনযিরী রহঃ

১. ইখলাস-সত্যবাদিতা ও সদিচ্ছা সম্পর্কিত

হাদীস নং: ২৫
অনুচ্ছেদ
২৫. হযরত মা'ন ইব্‌ন ইয়াযীদ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমার পিতা দান করার জন্য কিছু দীনার মসজিদে এক ব্যক্তির জন্য রেখে দিলেন। ইতোমধ্যে আমি (মা'ন) এসে পড়লাম এবং আমি তা তুলে নিলাম এবং তা নিয়ে পিতার কাছে আসলাম। তিনি (ইয়াযীদ) বললেন, আল্লাহর কসম, আমি তা তোমার জন্য রাখিনি, বরং আমি দান করার ইচ্ছা করেছি। অতঃপর আমি রাসূলুল্লাহ্ (সা) এর কাছে বিষয়টি উত্থাপন করলাম। তিনি বললেনঃ হে ইয়াযীদ। তুমি যার নিয়্যাত করেছ, তা তোমার জন্য (১) এবং হে মা'ন! তুমি যা গ্রহণ করেছ, তা তোমার জন্য।
(হাদীসটি ইমাম বুখারী বর্ণনা করেছেন)

(১). অর্থাৎ তুমি সাদকার নিয়্যাত করার কারণে তার সওয়াব তুমি পেয়ে যাবে। সম্পাদক
فصل
25 - وَعَن معن بن يزِيد رَضِي الله عَنْهُمَا قَالَ كَانَ أبي يزِيد أخرج دَنَانِير يتَصَدَّق بهَا فوضعها عِنْد رجل فِي الْمَسْجِد فَجئْت فأخذتها فَأَتَيْته بهَا فَقَالَ وَالله مَا إياك أردْت فَخَاصَمته إِلَى رَسُول الله صلى الله عَلَيْهِ وَسلم فَقَالَ لَك مَا نَوَيْت يَا يزِيد وَلَك مَا أخذت يَا معن
رَوَاهُ البُخَارِيّ

হাদীসের ব্যাখ্যা:

বাহ্যত বোঝা যায় হযরত ইয়াযীদ ইবনুল আখনাস রাযি.-এর এ সদাকা ছিল নফল সাদাকা অর্থাৎ সাধারণ দান-খয়রাত, যা নিজ পিতা, পুত্রসহ যে-কোনও আত্মীয়- স্বজনকে দেওয়া যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তার নিয়ত পুত্রকে দেওয়ার ছিল না, অন্য কোনও গরীব ব্যক্তিকে দেওয়াই উদ্দেশ্য ছিল। যখন দেখতে পেলেন তার সে দান নিজ পুত্রের হাতে পৌঁছে গেছে, তখন সন্দেহ জাগল, বুঝি বা এ দান সহীহ হয়নি। এজন্যই তিনি আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু পুত্র যেহেতু গরীব ছিলেন আর গরীবকে দেওয়াই তার উদ্দেশ্য ছিল, সে হিসেবে পুত্রের মনে হয়েছিল তার তা নেওয়া বৈধ হয়েছে। এভাবে পিতা-পুত্রের মধ্যে তা নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। শেষে বিষয়টা যখন নবী কারীম সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম পর্যন্ত গড়াল, তিনি দিলেন যে, সে সদাকা কার্যকর হয়ে গেছে এবং পুত্রের পক্ষে তা নেওয়া হালাল হয়েছে। পুত্রের হাতে পৌঁছার কারণে পিতা ইয়াযীদের সদাকা বাতিল হয়ে যায়নি। পুত্রকে দেওয়ার নিয়ত না থাকলেও যেহেতু কোনও গরীবকে দেওয়ার নিয়ত ছিল আর গরীবের হাতেই তা পৌঁছেছে, সেহেতু সে তার নিয়ত অনুযায়ী সদাকার ছওয়াব ঠিকই পেয়ে যাবে।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

(ক) এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল যে, একজনকে দান-খয়রাত করার নিয়ত করার পর অন্য কাউকে দিয়ে ফেললে তাতে দানের ছওয়াব নষ্ট হয় না।

(খ) পিতা-পুত্রের মধ্যে কোনও বিষয়ে বিতর্ক দেখা দিলে এবং নিজেরা মীমাংসা করতে সক্ষম না হলে অন্য কোনও গণ্যমান্য লোক দ্বারা মীমাংসা করিয়ে নেওয়া উচিত।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান