কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ
১. পাক-পবিত্রতার অধ্যায়
হাদীস নং: ৩৪৭
আন্তর্জাতিক নং: ৩৪৭
পাক-পবিত্রতার অধ্যায়
১২৯. জুমআর দিনের গোসল সম্পর্কে।
৩৪৭. ইবনে আবু আকীল .... আব্দুল্লাহ্ ইবনে আমর ইবনুল আস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। নবী (ﷺ) বলেনঃ যে ব্যক্তি জুমআর দিন গোসল করবে এবং স্ত্রীর সুগন্ধি দ্রব্য ব্যবহার করবে (যদি নিজের না থাকে), অতঃপর উত্তম রূপে বস্ত্র পরিধান করে মসজিদে এসে অন্যের ঘাড় টপকিয়ে সামনে না যাবে এবং ইমামের খুতবা পাঠের সময় নিশ্চুপ থাকবে, তার এক জুমআ হতে অন্য জুমআ পর্যন্ত সমস্ত (সগীরা) গুনাহ্ মাফ হয়ে যাবে।
অপর পক্ষে যে ব্যক্তি জুমআর নামাযের জন্য মসজিদে উপনীত হয়ে অপ্রয়োজনীয় ক্রিয়াকর্মে লিপ্ত হবে এবং মানুযের ঘাড় টপকে সামনে যাবে সে (জুমআর নামাযের সাওয়াব হতে বঞ্চিত হবে এবং) কেবলমাত্র যোহরের নামায আদায়ের সম-পরিমাণ সাওয়াব প্রাপ্ত হবে।
অপর পক্ষে যে ব্যক্তি জুমআর নামাযের জন্য মসজিদে উপনীত হয়ে অপ্রয়োজনীয় ক্রিয়াকর্মে লিপ্ত হবে এবং মানুযের ঘাড় টপকে সামনে যাবে সে (জুমআর নামাযের সাওয়াব হতে বঞ্চিত হবে এবং) কেবলমাত্র যোহরের নামায আদায়ের সম-পরিমাণ সাওয়াব প্রাপ্ত হবে।
كتاب الطهارة
باب فِي الْغُسْلِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ
حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي عَقِيلٍ، وَمُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ الْمِصْرِيَّانِ، قَالاَ حَدَّثَنَا ابْنُ وَهْبٍ، - قَالَ ابْنُ أَبِي عَقِيلٍ - أَخْبَرَنِي أُسَامَةُ، - يَعْنِي ابْنَ زَيْدٍ - عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنَّهُ قَالَ " مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَمَسَّ مِنْ طِيبِ امْرَأَتِهِ - إِنْ كَانَ لَهَا - وَلَبِسَ مِنْ صَالِحِ ثِيَابِهِ ثُمَّ لَمْ يَتَخَطَّ رِقَابَ النَّاسِ وَلَمْ يَلْغُ عِنْدَ الْمَوْعِظَةِ كَانَتْ كَفَّارَةً لِمَا بَيْنَهُمَا وَمَنْ لَغَا وَتَخَطَّى رِقَابَ النَّاسِ كَانَتْ لَهُ ظُهْرًا " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
হাদীস থেকে জুমআর দিনে গোসল করা এবং সুগন্ধি ব্যবহার করা ছুন্নাত ও ফযীলতপূর্ণ বলে প্রমাণিত হয়। আর এটাই হানাফী মাযহাবের মত। (বাদায়েউস সানায়ে’: ১/২৬৯) জুমআর দিন গোসল করা জরুরী বলে যদিও কোন কোন ইমাম মত প্রকাশ করেছেন। কিন্তু হযরত ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, ইসলামের শুরু যুগে সাহাবায়ে কিরামের আর্থিক দৈন্যতা ছিল চরমে। নিজেরা ক্ষেতে খামারে কাজ করতেন, মোটা কাপড় পরিধান করতেন এবং ঘর্মাক্ত শরীরে জুমার নামাযে আসতেন। ঘামের দুর্গন্ধে মানুষের কষ্ট হতো। কিন্তু পরবর্তীতে আল্লাহ তাআলা তাঁদের অনটন দূর করে আর্থিক স্বচ্ছলতা দান করেছেন। তাঁরা উন্নতমানের পাতলা কাপড় পরিধান করেন। কাজের মানুষে তাঁদের কাজ করে। তখন গোসল করার ঐ প্রয়োজনীয়তা থাকেনি যা শুরু যুগে ছিলো। (তহাবী শরীফ-৭০৭) এ হাদীসের আলোকে বলা যেতে পারে যে, রসূল স.-এর বাণী الغُسْلُ يَوْمَ الجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلَى كُلِّ مُحْتَلِمٍ জুমআর দিনের গোসল করা সকল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ওয়াজিব’ (বুখারী-৮১৬) এটা ইসলামের শুরু দিকের কথা। এর আরো একটি প্রমাণ মেলে مَنْ تَوَضَّأَ فَأَحْسَنَ الْوُضُوءَ، ثُمَّ أَتَى الْجُمُعَةَ، فَاسْتَمَعَ وَأَنْصَتَ، غُفِرَ لَهُ مَا بَيْنَهُ وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ، وَزِيَادَة ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে অযু করে জুমআর নামাযে যায় এবং চুপ করে মনোযোগ সহকারে (ইমামের খুৎবা) শোনে তার এই জুমআ থেকে পরের জুমআ এবং আরো অতিরিক্ত তিন দিনের গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (মুসলিম-১৮৬১) এ হাদীসে জুমআর ফযীলত পাওয়ার জন্য তিনটি আমলের কথা বলা হয়েছে যার মধ্যে গোসলের কথা উল্লেখ করা হয়নি। এ থেকেও বুঝা যায় যে, জুমআর জন্য গোসল করা জরুরী নয়। তবে বুখারী: ৮৬৪ নং হাদীস থেকে গোসলের ফযীলত প্রমাণিত হয়েছে। অতএব এটা ছুন্নাত।