কিতাবুস সুনান - ইমাম আবু দাউদ রহঃ

১. পাক-পবিত্রতার অধ্যায়

হাদীস নং: ২৮৭
আন্তর্জাতিক নং: ২৮৭
১০৯. রক্ত প্রদরের রোগিণীর হায়যের সময় শুরু হলে নামায ত্যাগ করবে।
২৮৭. যুহায়ের ইবনে হারব ..... ইবরাহীম থেকে তার চাচা ইমরানের সূত্রে এবং তিনি তাঁর মাতা হুমনা বিনতে জাহশ (রাযিঃ) হতে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, আমার খুব বেশী রক্তস্রাব হত তখন আমি এ সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)কে অবগত করাতে এবং তাঁর নিকট হতে সমাধান জানতে আসি। আমি তাকে আমার বোন যয়নাব বিনতে জাহশের ঘরে পেয়ে জিজ্ঞাসা করি, ইয়া রাসূলাল্লাহ্! আমার খুব অধিক পরিমাণে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে; এ ব্যাপারে আপনার অভিমত কি? এই ঋতুস্রাব আমাকে নামায ও রোযা হতে বিরত রাখে। তিনি বলেন, আমি তোমাকে কুরসুফ্ (তুলা) ব্যবহ্যরের পরামর্শ দেই। কেননা তা রক্ত শোষণ করবে। তখন তিনি (মহিলা বলেন, এর পরিমাণ তা হতেও বেশী (কাজেই তুলা দ্বারা বন্ধ করা সম্ভব নয়)।

রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেন, তবে তুমি এর উপর নেকড়া বাঁধবে। মহিলাটি বলেন, এর পরিমাণ তা থেকেও অধিক। তখন নবী (ﷺ) বলেন, তা হলে এর উপর একটা কাপড় বেঁধে নিবে। মহিলাটি বলেন, এর পরিমাণ তার চাইতেও আধিক; বরং আমার রক্তস্রাব অত্যধিক পরিমাণে হয়ে থাকে। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেনঃ আমি তোমাকে দুইঢি কাজ সম্পাদনের জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। এর যে কোন একটি সম্পন্ন করলেই চলবে। কাজ সস্পাদন করতে তুমি সক্ষম কিনা তা জান।

তিনি বলেন, এটা শয়তানের চক্রান্ত কাজেই (১ম কাজ) প্রতি মাসে ছয় বা সাত দিনের জন্য তোমার হায়যের নির্ধারিত দিন গণনা করবে। অতঃপর গোসল করবে এবং তুমি যখন বুঝতে পারবে যে, তুমি উল্লেখিত দিনণ্ডলি অতিক্রম করে পবিত্রতা অর্জন করেছ- তখন তুমি প্রত্যেক মাসের ২৩/২৪ দিন নিয়মিতভাবে নামায আদায় করবে এবং রোযা রাখবে।এটাই তোমার জন্য যথেষ্ট। প্রত্যেক মাসে এরূপই করবে- যেরূপ অন্যান্য মহিলারা হায়য হতে পবিত্রতা অর্জনের পর করে থাকে।

(২য় কাজ) যদি তোমার সামর্থ থাকে, তবে একই গোসলে যোহর ও আসরের নামায একত্রে আদায় করবে- এইরূপে যে, যোহরের শেষ সময়ে উক্ত নামায এবং আসরের প্রারম্ভিক সময়ে আসরের নামায পড়ে উভয় নামায একত্রে আদায় করবে। অতঃপর মাগরিবের নামায এর শেষ সময়ে এবং এশার নামায এর প্রথম সময়ে একই গোসলে পর্যায়ক্রমে আদায় করবে এবং একবার গোসল করে ফজরের নামায আদায় করবে। বর্ণিত উপায়ে সম্ভব হলে, নিয়মিতভাবে নামায আদায় করবে এবং রোযা রাখবে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন, এই কাজের মধ্যে আমার নিকট শেষোক্তটি পছন্দনীয়।
باب مَنْ قَالَ إِذَا أَقْبَلَتِ الْحَيْضَةُ تَدَعُ الصَّلاَةَ
حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، وَغَيْرُهُ، قَالاَ حَدَّثَنَا عَبْدُ الْمَلِكِ بْنُ عَمْرٍو، حَدَّثَنَا زُهَيْرُ بْنُ مُحَمَّدٍ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَقِيلٍ، عَنْ إِبْرَاهِيمَ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ طَلْحَةَ، عَنْ عَمِّهِ، عِمْرَانَ بْنِ طَلْحَةَ عَنْ أُمِّهِ، حَمْنَةَ بِنْتِ جَحْشٍ قَالَتْ كُنْتُ أُسْتَحَاضُ حَيْضَةً كَثِيرَةً شَدِيدَةً فَأَتَيْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَسْتَفْتِيهِ وَأُخْبِرُهُ فَوَجَدْتُهُ فِي بَيْتِ أُخْتِي زَيْنَبَ بِنْتِ جَحْشٍ فَقُلْتُ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي امْرَأَةٌ أُسْتَحَاضُ حَيْضَةً كَثِيرَةً شَدِيدَةً فَمَا تَرَى فِيهَا قَدْ مَنَعَتْنِي الصَّلاَةَ وَالصَّوْمَ فَقَالَ " أَنْعَتُ لَكِ الْكُرْسُفَ فَإِنَّهُ يُذْهِبُ الدَّمَ " . قَالَتْ هُوَ أَكْثَرُ مِنْ ذَلِكَ . قَالَ " فَاتَّخِذِي ثَوْبًا " . فَقَالَتْ هُوَ أَكْثَرُ مِنْ ذَلِكَ إِنَّمَا أَثُجُّ ثَجًّا . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " سَآمُرُكِ بِأَمْرَيْنِ أَيَّهُمَا فَعَلْتِ أَجْزَأَ عَنْكِ مِنَ الآخَرِ وَإِنْ قَوِيتِ عَلَيْهِمَا فَأَنْتِ أَعْلَمُ " . فَقَالَ لَهَا " إِنَّمَا هَذِهِ رَكْضَةٌ من رَكَضَاتِ الشَّيْطَانِ فَتَحَيَّضِي سِتَّةَ أَيَّامٍ أَوْ سَبْعَةَ أَيَّامٍ فِي عِلْمِ اللَّهِ ثُمَّ اغْتَسِلِي حَتَّى إِذَا رَأَيْتِ أَنَّكِ قَدْ طَهُرْتِ وَاسْتَنْقَأْتِ فَصَلِّي ثَلاَثًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً أَوْ أَرْبَعًا وَعِشْرِينَ لَيْلَةً وَأَيَّامَهَا وَصُومِي فَإِنَّ ذَلِكَ يُجْزِئُكِ وَكَذَلِكَ فَافْعَلِي فِي كُلِّ شَهْرٍ كَمَا تَحِيضُ النِّسَاءُ وَكَمَا يَطْهُرْنَ مِيقَاتَ حَيْضِهِنَّ وَطُهْرِهِنَّ وَإِنْ قَوِيتِ عَلَى أَنْ تُؤَخِّرِي الظُّهْرَ وَتُعَجِّلِي الْعَصْرَ فَتَغْتَسِلِينَ وَتَجْمَعِينَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ الظُّهْرِ وَالْعَصْرِ وَتُؤَخِّرِينَ الْمَغْرِبَ وَتُعَجِّلِينَ الْعِشَاءَ ثُمَّ تَغْتَسِلِينَ وَتَجْمَعِينَ بَيْنَ الصَّلاَتَيْنِ فَافْعَلِي وَتَغْتَسِلِينَ مَعَ الْفَجْرِ فَافْعَلِي وَصُومِي إِنْ قَدَرْتِ عَلَى ذَلِكَ " . قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " وَهَذَا أَعْجَبُ الأَمْرَيْنِ إِلَىَّ " .
قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَرَوَاهُ عَمْرُو بْنُ ثَابِتٍ عَنِ ابْنِ عَقِيلٍ قَالَ فَقَالَتْ حَمْنَةُ فَقُلْتُ هَذَا أَعْجَبُ الأَمْرَيْنِ إِلَىَّ . لَمْ يَجْعَلْهُ مِنْ قَوْلِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم جَعَلَهُ كَلاَمَ حَمْنَةَ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ وَعَمْرُو بْنُ ثَابِتٍ رَافِضِيٌّ رَجُلُ سَوْءٍ وَلَكِنَّهُ كَانَ صَدُوقًا فِي الْحَدِيثِ وَثَابِتُ بْنُ الْمِقْدَامِ رَجُلٌ ثِقَةٌ وَذَكَرَهُ عَنْ يَحْيَى بْنِ مَعِينٍ . قَالَ أَبُو دَاوُدَ سَمِعْتُ أَحْمَدَ يَقُولُ حَدِيثُ ابْنِ عَقِيلٍ فِي نَفْسِي مِنْهُ شَىْءٌ .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

হায়েয বা নিফাস ব্যতীত কোন রোগের কারণে মহিলাদের যে রক্ত দেখা যায় তাকে ইস্তিহাযা বলে। এ হাদীসে ইস্তিহাযা রোগে আক্রান্ত মহিলার ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যে, প্রত্যেক ওয়াক্তের জন্য নতুন করে অযু করবে। এ বিধানটি শুধু ইস্তিহাযা রোগে আক্রান্ত মহিলার জন্যই নয়। বরং শরীর হতে সার্বক্ষণিক নাপাক বের হতে থাকা যে কোন মা’জুর তথা রোগাক্রান্ত ব্যক্তির জন্যই এটা প্রযোজ্য হবে। (শামী: ১/৩০৬)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক চলমান
সুনানে আবু দাউদ - হাদীস নং ২৮৭ | মুসলিম বাংলা