আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ

৫৪- জান্নাতের নিআমত ও জান্নাতীদের বর্ণনা

হাদীস নং: ৬৯৪০
১৫. কিয়ামতের দিবসের বিবরণ। (এদিনের ভয়ংকর বিষয়সমূহের ব্যাপারে আল্লাহ আমাদেরকে সাহায্য করুন)
৬৯৪০। মুহাম্মাদ ইবনে ইসহাক মুসায়্যিবী (অন্য সনদে) সুওয়ায়দ ইবনে সাঈদ (অন্য সনদে) আবু বকর ইবনে আবি শাঈবা (অন্য সনদে) আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর ইবনে ইয়াহয়া (অন্য সূত্রে) আবু নসর তাম্মার (অন্য সনদে) হুলওয়ানী ও আব্দ ইবনে হুমায়দ (রাহঃ) ......... ইবনে উমর (রাযিঃ) এর সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে ......... নাফি (রাহঃ) উবাইদুল্লাহ (রাহঃ) এর হাদীসের অনুরূপ বর্ণনা করেছেন। তবে মুসা ইবনে উকবা ও সালিহ (রাহঃ) এর হাদীসের মধ্যে আছে حَتَّى يَغِيبَ أَحَدُهُمْ فِي رَشْحِهِ إِلَى أَنْصَافِ أُذُنَيْهِ (يَقُومُ স্থলে يَغِيب আছে)।
باب فِي صِفَةِ يَوْمِ الْقِيَامَةِ أَعَانَنَا اللَّهُ عَلَى أَهْوَالِهَا
حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ إِسْحَاقَ الْمُسَيَّبِيُّ، حَدَّثَنَا أَنَسٌ يَعْنِي ابْنَ عِيَاضٍ، ح وَحَدَّثَنِي سُوَيْدُ بْنُ سَعِيدٍ، حَدَّثَنَا حَفْصُ بْنُ مَيْسَرَةَ، كِلاَهُمَا عَنْ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ، ح وَحَدَّثَنَا أَبُو بَكْرِ، بْنُ أَبِي شَيْبَةَ حَدَّثَنَا أَبُو خَالِدٍ الأَحْمَرُ، وَعِيسَى بْنُ يُونُسَ، عَنِ ابْنِ عَوْنٍ، ح وَحَدَّثَنِي عَبْدُ، اللَّهِ بْنُ جَعْفَرِ بْنِ يَحْيَى حَدَّثَنَا مَعْنٌ، حَدَّثَنَا مَالِكٌ، ح وَحَدَّثَنِي أَبُو نَصْرٍ التَّمَّارُ، حَدَّثَنَا حَمَّادُ، بْنُ سَلَمَةَ عَنْ أَيُّوبَ، ح وَحَدَّثَنَا الْحُلْوَانِيُّ، وَعَبْدُ بْنُ حُمَيْدٍ، عَنْ يَعْقُوبَ بْنِ إِبْرَاهِيمَ بْنِ سَعْدٍ، حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ صَالِحٍ، كُلُّ هَؤُلاَءِ عَنْ نَافِعٍ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم . بِمَعْنَى حَدِيثِ عُبَيْدِ اللَّهِ عَنْ نَافِعٍ . غَيْرَ أَنَّ فِي حَدِيثِ مُوسَى بْنِ عُقْبَةَ وَصَالِحٍ " حَتَّى يَغِيبَ أَحَدُهُمْ فِي رَشْحِهِ إِلَى أَنْصَافِ أُذُنَيْهِ " .

হাদীসের ব্যাখ্যা:

এ হাদীছে হাশরের ময়দানে সমস্ত মাখলূক হিসাব-নিকাশের জন্য যখন আল্লাহ তাআলার সামনে দাঁড়ানো থাকবে, তখন তার পরিস্থিতি কী ভয়াবহ হবে তার খানিকটা তুলে ধরা হয়েছে। এতে জানানো হয়েছে যে, সেদিন কেউ কেউ নিজ ঘামের মধ্যে কানের মাঝামাঝি পর্যন্ত ডুবে যাবে। এতটা ঘামের কারণ এক তো উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা।কঠিন উদ্বেগে প্রচণ্ড শীতের মধ্যেও মানুষ ঘেমে যায়। হিসাব-নিকাশের পর শেষ গতি জান্নাত হবে না জাহান্নাম, এরচে' বড় উদ্বেগ আর কিছুই হতে পারে না। ঘামে শরীরের সবটা পানি নিঃশেষ হয়ে যাওয়ার জন্য এই এক দুর্ভাবনাই যথেষ্ট। তারপর আবার সূর্য মাথার কাছাকাছি চলে আসবে। তদুপরি জাহান্নাম কাছে নিয়ে আসা হবে। হাশরের ময়দানে অবস্থানকালও হবে অনেক দীর্ঘ। কোনও কোনও বর্ণনানুযায়ী দুনিয়ার সময় হিসাবে পঞ্চাশ হাজার বছর। সুতরাং এমন অগ্নিউত্তাপে এত দীর্ঘকালব্যাপী অসংখ্য মানুষের দেহের ঘামে হাশরের ময়দান যদি সাগরেও পরিণত হয়ে যায়, তা অসম্ভব কিছু নয়।

প্রশ্ন হতে পারে, হাশরের ময়দান যদি ঘামের সাগরে পরিণত হয়, তবে তাতে তো সকলেরই সমান ডুবে যাওয়ার কথা, কেউ হাঁটু পর্যন্ত, আবার কেউ গলা পর্যন্ত ডুববে কেন?

এর উত্তর হলো, হতে পারে আল্লাহ তাআলা যার শাস্তি কম তার পায়ের নিচের মাটি উঁচু করে দেবেন বা অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে তাকে দাঁড় করানো হবে। এমনও হতে পারে যে, প্রত্যেকের আমল অনুযায়ী তার ঘাম কেবল তার স্থানেই সীমাবদ্ধ থাকবে, সে সীমা অতিক্রম করবে না। হযরত মূসা আলাইহিস সালাম ও তাঁর কওমের জন্য পথ করে দিতে তো সাগরের পানিও দু'পাশে আটকে দেওয়া হয়েছিল। তেমনিভাবে যার যার ঘাম তার তার স্থানে আটকে রাখা সম্ভব হতেই পারে। প্রকৃতপক্ষে আখেরাতের সবকিছু দুনিয়ায় বসে পুরোপুরি বুঝে ফেলা সম্ভব নয়। আমাদের কাজ যতটুকু বলা হয়েছে অতটুকুতে বিশ্বাস রাখা।

হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ

এ হাদীছ আমাদের সামনে হাশর-ময়দানের বিভীষিকা তুলে ধরেছে, যাতে আমরা সেদিনের কষ্ট হতে বাঁচার লক্ষ্যে আল্লাহ তাআলার আদেশ-নিষেধ পালনে আরও বেশি সচেষ্ট হই।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
tahqiqতাহকীক:তাহকীক নিষ্প্রয়োজন
সহীহ মুসলিম - হাদীস নং ৬৯৪০ | মুসলিম বাংলা