আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৫১- যিকর, দুআ, তাওবা ও ইসতিগফারের অধ্যায়
হাদীস নং: ৬৭৫১
আন্তর্জাতিক নং: ২৭৬৫
৩৪. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ নিশ্চয় পুণ্য পাপসমূহ মিটিয়ে দেয়। (সূরা হুদঃ ১১৪)
৬৭৫১। নসর ইবনে আলী জাহযামী ও যুহাইর ইবনে হারব (রাহঃ) ......... আবু উমামা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) মসজিদে উপবিষ্ট ছিলেন এবং আমরা তাঁর সঙ্গে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন এক ব্যক্তি এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! হদ্দ প্রযোজ্য হওয়ার অপরাধ করে ফেলেছি। সুতরাং আপনি আমার উপর হদ্দ বাস্তবায়িত করুন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চুপ করে রইলেন। সে পুনরায় বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার দ্বারা হদ্দ প্রযোজ্য হওয়ার মত অপরাধ হয়ে গেছে। সুতরাং আপনি আমার উপর হদ্দ বাস্তবায়িত করুন। এবারও রাসূলুল্লাহ (ﷺ) চুপ করে রইলেন। লোকটি তৃতীয়বার অনুরূপ বলল। এমতাবস্থায় নামায শুরু হল।
আল্লাহর নবী (ﷺ) যখন নামায সমাপ্ত করলেন, রাবী আবু উমামা (রাযিঃ) বলেন, নামায শেষে লোকটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর অনুসরণ করতে লাগল। [আবু উমামা (রাযিঃ)] বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) লোকটিকে কি উত্তর দেন তা দেখার জন্য আমিও তাঁর অনুসরণ করলাম। এরপর প্রশ্নকারী লোকটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট গিয়ে আবার বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আমার উপর হদ্দ হওয়ার মত অপরাধ করে ফেলেছি। সুতরাং আমার উপর বাস্তবায়িত করুন।
আবু উমামা (রাযিঃ) বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় তুমি কি উত্তমরূপে উযু করো নি? সে বলল, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি আমাদের সঙ্গে নামায আদায় করো নি? সে বলল, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমার হদ্দ ক্ষমা করে দিয়েছেন, অথবা বললেনঃ তিনি তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।
আল্লাহর নবী (ﷺ) যখন নামায সমাপ্ত করলেন, রাবী আবু উমামা (রাযিঃ) বলেন, নামায শেষে লোকটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর অনুসরণ করতে লাগল। [আবু উমামা (রাযিঃ)] বলেন, রাসূলুল্লাহ (ﷺ) লোকটিকে কি উত্তর দেন তা দেখার জন্য আমিও তাঁর অনুসরণ করলাম। এরপর প্রশ্নকারী লোকটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর নিকট গিয়ে আবার বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি আমার উপর হদ্দ হওয়ার মত অপরাধ করে ফেলেছি। সুতরাং আমার উপর বাস্তবায়িত করুন।
আবু উমামা (রাযিঃ) বলেন, এরপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ ঘর থেকে বের হওয়ার সময় তুমি কি উত্তমরূপে উযু করো নি? সে বলল, হ্যাঁ, নিশ্চয়ই, ইয়া রাসুলাল্লাহ! তারপর রাসূলুল্লাহ (ﷺ) জিজ্ঞাসা করলেনঃ তুমি কি আমাদের সঙ্গে নামায আদায় করো নি? সে বলল, হ্যাঁ, ইয়া রাসুলাল্লাহ। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) তাকে বললেনঃ আল্লাহ তাআলা তোমার হদ্দ ক্ষমা করে দিয়েছেন, অথবা বললেনঃ তিনি তোমার গুনাহ ক্ষমা করে দিয়েছেন।
باب قَوْلِهِ تَعَالَى { إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ}
حَدَّثَنَا نَصْرُ بْنُ عَلِيٍّ الْجَهْضَمِيُّ، وَزُهَيْرُ بْنُ حَرْبٍ، - وَاللَّفْظُ لِزُهَيْرٍ - قَالاَ حَدَّثَنَا عُمَرُ بْنُ يُونُسَ، حَدَّثَنَا عِكْرِمَةُ بْنُ عَمَّارٍ، حَدَّثَنَا شَدَّادٌ، حَدَّثَنَا أَبُو أُمَامَةَ، قَالَ بَيْنَمَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فِي الْمَسْجِدِ وَنَحْنُ قُعُودٌ مَعَهُ إِذْ جَاءَ رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَىَّ . فَسَكَتَ عَنْهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ثُمَّ أَعَادَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَىَّ . فَسَكَتَ عَنْهُ وَأُقِيمَتِ الصَّلاَةُ فَلَمَّا انْصَرَفَ نَبِيُّ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ أَبُو أُمَامَةَ فَاتَّبَعَ الرَّجُلُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم حِينَ انْصَرَفَ وَاتَّبَعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم أَنْظُرُ مَا يَرُدُّ عَلَى الرَّجُلِ فَلَحِقَ الرَّجُلُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَىَّ - قَالَ أَبُو أُمَامَةَ - فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " أَرَأَيْتَ حِينَ خَرَجْتَ مِنْ بَيْتِكَ أَلَيْسَ قَدْ تَوَضَّأْتَ فَأَحْسَنْتَ الْوُضُوءَ " . قَالَ بَلَى يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ " ثُمَّ شَهِدْتَ الصَّلاَةَ مَعَنَا " . فَقَالَ نَعَمْ يَا رَسُولَ اللَّهِ . قَالَ فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " فَإِنَّ اللَّهَ قَدْ غَفَرَ لَكَ حَدَّكَ - أَوْ قَالَ - ذَنْبَكَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে যে সাহাবীর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, তিনি এতটাই অস্থির হয়ে পড়েছিলেন যে, নিজ অপরাধকে হদ্দের উপযুক্ত গণ্য করে ফেলেন। হদ্দ বলা হয় শরী'আত প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট শাস্তি, যেমন চুরির ক্ষেত্রে হাত কাটা, ব্যভিচারের ক্ষেত্রে বিবাহিত হলে পাথর মেরে হত্যা করা, অবিবাহিত হলে একশ দোররা মারা। অথচ তিনি এ পর্যায়ের পাপ করেননি।
ইমাম নববী রহ. বলেন, اصبت حدا (আমি হদ্দের উপযুক্ত অপরাধ করেছি)-এর অর্থ এমন অপরাধ, যে কারণে তা'যীর (বিচারকের বিবেচনা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি) আরোপিত হয়। এর দ্বারা প্রকৃত শরী'আতী হদ্দ (সুনির্দিষ্ট শাস্তি) বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। যেমন ব্যভিচারের শাস্তি মদপানের শাস্তি ইত্যাদি। কেননা এসকল শাস্তি নামায দ্বারা রহিত হয় না এবং ইমামের জন্য তা মওকুফ করাও জায়েয হয় না।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু তার উপর হদ্দ জারি করেননি; বরং তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, নামায পড়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন, তাই বোঝা যাচ্ছে তার দ্বারা চূড়ান্ত পর্যায়ের গুনাহ হয়নি। তিনি তার কৃত গুনাহকে প্রকৃত অবস্থার চেয়েও কঠিনরূপে দেখেছেন নিজ অনুশোচনার তীব্রতা ও আল্লাহভীতির গভীরতার কারণে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গুনাহ সগীরা হোক বা কবীরা, কোনওটাতেই জড়ানো উচিত নয়। কেননা আল্লাহ তা ঘৃণা করেন। আর এ কারণেই নিজ দয়ায় তিনি তা মোচনের ব্যবস্থা করেছেন।
খ. যে-কোনও পাপকর্ম হয়ে যাওয়ার পর নিশ্চিন্তে বসে থাকতে নেই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশায় অতিদ্রুত লজ্জা ও অনুতাপের সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই।
গ. পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে যত্নবান থাকা চাই। কেননা এ নামায আমাদের পাপমোচনের ব্যবস্থাও বটে।
ঘ. এ হাদীছ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের আশান্বিত করে।
ইমাম নববী রহ. বলেন, اصبت حدا (আমি হদ্দের উপযুক্ত অপরাধ করেছি)-এর অর্থ এমন অপরাধ, যে কারণে তা'যীর (বিচারকের বিবেচনা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি) আরোপিত হয়। এর দ্বারা প্রকৃত শরী'আতী হদ্দ (সুনির্দিষ্ট শাস্তি) বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। যেমন ব্যভিচারের শাস্তি মদপানের শাস্তি ইত্যাদি। কেননা এসকল শাস্তি নামায দ্বারা রহিত হয় না এবং ইমামের জন্য তা মওকুফ করাও জায়েয হয় না।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু তার উপর হদ্দ জারি করেননি; বরং তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, নামায পড়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন, তাই বোঝা যাচ্ছে তার দ্বারা চূড়ান্ত পর্যায়ের গুনাহ হয়নি। তিনি তার কৃত গুনাহকে প্রকৃত অবস্থার চেয়েও কঠিনরূপে দেখেছেন নিজ অনুশোচনার তীব্রতা ও আল্লাহভীতির গভীরতার কারণে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গুনাহ সগীরা হোক বা কবীরা, কোনওটাতেই জড়ানো উচিত নয়। কেননা আল্লাহ তা ঘৃণা করেন। আর এ কারণেই নিজ দয়ায় তিনি তা মোচনের ব্যবস্থা করেছেন।
খ. যে-কোনও পাপকর্ম হয়ে যাওয়ার পর নিশ্চিন্তে বসে থাকতে নেই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশায় অতিদ্রুত লজ্জা ও অনুতাপের সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই।
গ. পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে যত্নবান থাকা চাই। কেননা এ নামায আমাদের পাপমোচনের ব্যবস্থাও বটে।
ঘ. এ হাদীছ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের আশান্বিত করে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)


বর্ণনাকারী: