আল মুসনাদুস সহীহ- ইমাম মুসলিম রহঃ
৫১- যিকর, দুআ, তাওবা ও ইসতিগফারের অধ্যায়
হাদীস নং: ৬৭৫০
আন্তর্জাতিক নং: ২৭৬৪
৩৪. আল্লাহ তাআলার বাণীঃ নিশ্চয় পুণ্য পাপসমূহ মিটিয়ে দেয়। (সূরা হুদঃ ১১৪)
৬৭৫০। হাসান ইবনে আলী হুলওয়ানী (রাহঃ) ......... আনাস (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (ﷺ) এর নিকট এসে বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি হদ্দ কায়িম হওয়ার যোগ্য কাজ করে ফেলেছি। সুতরাং আপনি আমার উপর তো কায়িম করুন। রাবী বলেন, তখন নামাযের ওয়াক্ত হল এবং লোকটি রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এর সঙ্গে নামায আদায় করল। নামায আদায় হয়ে গেলে লোকটি বলল, ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার উপর হদ্দ কায়েম হওয়ার মত অপরাধ করে ফেলেছি। সুতরাং আপনি আল কুরআনের বিধান অনুসারে আমার উপর শাস্তি কায়িম করুন। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তুমি কি আমাদের সঙ্গে নামাযে ছিলে? লোকটি বলল, হ্যাঁ। তখন রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেনঃ তোমাকে ক্ষমা করা হয়েছে।
باب قَوْلِهِ تَعَالَى { إِنَّ الْحَسَنَاتِ يُذْهِبْنَ السَّيِّئَاتِ}
حَدَّثَنَا الْحَسَنُ بْنُ عَلِيٍّ الْحُلْوَانِيُّ، حَدَّثَنَا عَمْرُو بْنُ عَاصِمٍ، حَدَّثَنَا هَمَّامٌ، عَنْ إِسْحَاقَ، بْنِ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ عَنْ أَنَسٍ، قَالَ جَاءَ رَجُلٌ إِلَى النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْهُ عَلَىَّ - قَالَ - وَحَضَرَتِ الصَّلاَةُ فَصَلَّى مَعَ رَسُولِ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم فَلَمَّا قَضَى الصَّلاَةَ قَالَ يَا رَسُولَ اللَّهِ إِنِّي أَصَبْتُ حَدًّا فَأَقِمْ فِيَّ كِتَابَ اللَّهِ . قَالَ " هَلْ حَضَرْتَ الصَّلاَةَ مَعَنَا " . قَالَ نَعَمْ . قَالَ " قَدْ غُفِرَ لَكَ " .
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে যে সাহাবীর ঘটনা বর্ণিত হয়েছে, তিনি এতটাই অস্থির হয়ে পড়েছিলেন যে, নিজ অপরাধকে হদ্দের উপযুক্ত গণ্য করে ফেলেন। হদ্দ বলা হয় শরী'আত প্রদত্ত সুনির্দিষ্ট শাস্তি, যেমন চুরির ক্ষেত্রে হাত কাটা, ব্যভিচারের ক্ষেত্রে বিবাহিত হলে পাথর মেরে হত্যা করা, অবিবাহিত হলে একশ দোররা মারা। অথচ তিনি এ পর্যায়ের পাপ করেননি।
ইমাম নববী রহ. বলেন, اصبت حدا (আমি হদ্দের উপযুক্ত অপরাধ করেছি)-এর অর্থ এমন অপরাধ, যে কারণে তা'যীর (বিচারকের বিবেচনা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি) আরোপিত হয়। এর দ্বারা প্রকৃত শরী'আতী হদ্দ (সুনির্দিষ্ট শাস্তি) বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। যেমন ব্যভিচারের শাস্তি মদপানের শাস্তি ইত্যাদি। কেননা এসকল শাস্তি নামায দ্বারা রহিত হয় না এবং ইমামের জন্য তা মওকুফ করাও জায়েয হয় না।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু তার উপর হদ্দ জারি করেননি; বরং তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, নামায পড়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন, তাই বোঝা যাচ্ছে তার দ্বারা চূড়ান্ত পর্যায়ের গুনাহ হয়নি। তিনি তার কৃত গুনাহকে প্রকৃত অবস্থার চেয়েও কঠিনরূপে দেখেছেন নিজ অনুশোচনার তীব্রতা ও আল্লাহভীতির গভীরতার কারণে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গুনাহ সগীরা হোক বা কবীরা, কোনওটাতেই জড়ানো উচিত নয়। কেননা আল্লাহ তা ঘৃণা করেন। আর এ কারণেই নিজ দয়ায় তিনি তা মোচনের ব্যবস্থা করেছেন।
খ. যে-কোনও পাপকর্ম হয়ে যাওয়ার পর নিশ্চিন্তে বসে থাকতে নেই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশায় অতিদ্রুত লজ্জা ও অনুতাপের সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই।
গ. পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে যত্নবান থাকা চাই। কেননা এ নামায আমাদের পাপমোচনের ব্যবস্থাও বটে।
ঘ. এ হাদীছ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের আশান্বিত করে।
ইমাম নববী রহ. বলেন, اصبت حدا (আমি হদ্দের উপযুক্ত অপরাধ করেছি)-এর অর্থ এমন অপরাধ, যে কারণে তা'যীর (বিচারকের বিবেচনা অনুযায়ী উপযুক্ত শাস্তি) আরোপিত হয়। এর দ্বারা প্রকৃত শরী'আতী হদ্দ (সুনির্দিষ্ট শাস্তি) বোঝানো উদ্দেশ্য নয়। যেমন ব্যভিচারের শাস্তি মদপানের শাস্তি ইত্যাদি। কেননা এসকল শাস্তি নামায দ্বারা রহিত হয় না এবং ইমামের জন্য তা মওকুফ করাও জায়েয হয় না।
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু তার উপর হদ্দ জারি করেননি; বরং তাকে এই বলে আশ্বস্ত করেছেন যে, নামায পড়ার দ্বারা আল্লাহ তা'আলা তার গুনাহ মাফ করে দিয়েছেন, তাই বোঝা যাচ্ছে তার দ্বারা চূড়ান্ত পর্যায়ের গুনাহ হয়নি। তিনি তার কৃত গুনাহকে প্রকৃত অবস্থার চেয়েও কঠিনরূপে দেখেছেন নিজ অনুশোচনার তীব্রতা ও আল্লাহভীতির গভীরতার কারণে।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. গুনাহ সগীরা হোক বা কবীরা, কোনওটাতেই জড়ানো উচিত নয়। কেননা আল্লাহ তা ঘৃণা করেন। আর এ কারণেই নিজ দয়ায় তিনি তা মোচনের ব্যবস্থা করেছেন।
খ. যে-কোনও পাপকর্ম হয়ে যাওয়ার পর নিশ্চিন্তে বসে থাকতে নেই। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার আশায় অতিদ্রুত লজ্জা ও অনুতাপের সঙ্গে তাওবা করে ফেলা চাই।
গ. পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায়ে যত্নবান থাকা চাই। কেননা এ নামায আমাদের পাপমোচনের ব্যবস্থাও বটে।
ঘ. এ হাদীছ আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্তির ব্যাপারে আমাদের আশান্বিত করে।
ব্যাখ্যা সূত্রঃ_ রিয়াযুস সালিহীন (অনুবাদ- মাওলানা আবুল বাশার মুহাম্মাদ সাইফুল ইসলাম হাফি.)
