আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
২০- যাকাতের অধ্যায়
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ১৪৩৮
৯০৭. মালিকের আদেশে ফাসাদের উদ্দেশ্য ব্যতীত খাদিমের সাদ্কা করার সাওয়াব।
১৩৫৫। মুহাম্মাদ ইবনে আলা’ (রাহঃ) ......... আবু মুসা (রাযিঃ) সূত্রে নবী (ﷺ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যে বিশ্বস্ত মুসলিম খাজাঞ্চী (আপন মালিক কর্তৃক) নির্দেশিত পরিমাণ সাদ্কার সবটুকুই নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে সানন্দচিত্তে আদায় করে, —কোনো কোনো সময় তিনি يُنْفِذُ (বাস্তবায়িত করে) শব্দের স্থলেيُعْطِي (আদায় করে) শব্দ বলেছেন— সে খাজাঞ্চীও নির্দেশদাতার ন্যায় সাদ্কা দানকারী হিসাবে গণ্য।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে চারটি গুণসম্পন্ন খাজাঞ্চি সম্পর্কে জানানো হয়েছে যে, সে একজন সদকাকারীরূপে গণ্য হয়। অর্থাৎ নিজ মালিকানাধীন সম্পদ থেকে আল্লাহর পথে দান-সদাকা করলে যে ছাওয়াব পাওয়া যায়, সে অনুরূপ ছাওয়াবের অধিকারী হবে।
গুণগুলো হচ্ছেঃ-
ক. মুসলিম হওয়া;
খ. আমানতদার ও বিশ্বস্ত হওয়া;
গ. তাকে যা আদেশ করা হয় তা কার্যকর করা এবং
ঘ. খুশিমনে দেওয়া।
যে-কোনও দীনী কাজ আল্লাহর কাছে কবূল হওয়ার জন্য ঈমান ও ইসলাম শর্ত। কোনও অমুসলিম ব্যক্তি নেককাজ করলে আল্লাহর কাছে তা কবূল হয় না এবং তার বিনিময়ে সে কোনও ছাওয়াবও পায় না। হাঁ, কাজটি ভালো হওয়ায় দুনিয়াতেই তাকে বদলা দিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং খাজাঞ্চি বা কোষাধ্যক্ষ মালিকের হুকুমমত দান-সদাকা করলে ছাওয়াব পাবে কেবল তখনই, যখন সে একজন মুসলিম হবে, অন্যথায় নয়।
এমনিভাবে তার বিশ্বস্ত হওয়া জরুরি। যদি খেয়ানতকারী হয় তবে ছাওয়াব পাবে না। তার মানে মালিকের পক্ষ হতে যে পরিমাণ সম্পদ কোনও খাতে ব্যয় করার হুকুম দেওয়া হয়, সে বিশ্বস্ততার সঙ্গে সেই খাতে তা ব্যয় করে। এ ক্ষেত্রে সে কোনও খেয়ানত করে না। অর্থের পরিমাণেও কমবেশি করে না এবং খাতও পরিবর্তন করে না। সেরকম কিছু করলে ছাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। যদি সে অন্য কোনও ক্ষেত্রে খেয়ানত করে সে কারণে গুনাহগার হবে বটে, কিন্তু সে খেয়ানতের কোনও আছর এ ক্ষেত্রে পড়বে না। এ ক্ষেত্রে আমানত রক্ষা করায় সে ঠিকই ছাওয়াব পাবে। কেননা এক ক্ষেত্রে গুনাহ করার কারণে অন্য ক্ষেত্রের নেক আমল বাতিল হয় না।
ছাওয়াব পাওয়ার জন্য এটাও শর্ত যে, তাকে যা আদেশ করা হয় তা পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করবে। অবহেলা ও গড়িমসি করবে না। যা দিতে বলা হয়েছে তা দিতে বখিলী করবে না। অনেক খাজাঞ্চি এমন আছে, যে অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে বখিলী করে। মালিক কোনও ক্ষেত্রে অর্থ অনুমোদন করলে সে তা সহজে দিতে চায় না। কোনও বখীল ব্যক্তি পকেটের টাকা-পয়সা খরচ করতে যেমন কষ্টবোধ করে, তারও যেন সেরকম কষ্ট হয়। টাকাটা যেন নিজ পকেট থেকেই যাচ্ছে। এরকম আচরণকারী খাজাঞ্চি ছাওয়াব পাবে না।
চতুর্থ গুণ হল খুশিমনে দেওয়া। অর্থাৎ মালিক যাকে যে পরিমাণ অর্থ দিতে আদেশ করেছে সে খুশিমনে তাকে তা দিয়ে দেয়। গড়িমসিও করে না, কৃপা দেখানোর ভাবও করে না এবং অহমিকাও দেখায় না। বরং দিতে পারার কারণে আনন্দ বোধ করে।
এ চারটি গুণের সাথে যে খাজাঞ্চি মালিকের হুকুম কার্যকর করে, সে মালিকের মতই দান-সদাকার ছাওয়াব পেয়ে যায়, যদিও সে নিজ পকেট থেকে কিছুই খরচ করেনি। নিজে খরচ না করেও ছাওয়াব পাওয়ার কারণ নেককাজে সহযোগিতা। সে মালিকের অনুমোদন কার্যকর করে তাকে আল্লাহর পথে খরচ করতে সহযোগিতা করেছে। অনেক সময় মালিকের পক্ষে সরাসরি গরীব-দুঃখীকে দান করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে খাজাঞ্চি যদি তার পক্ষ থেকে তা করে দেয়, তবে তার জন্য এটা অনেক বড় সহযোগিতা বৈ কি। আর দীনী কাজে সহযোগিতা করাটাও একটি নেক আমল। আর সে কারণেই তার এ ছাওয়াব। এটা আল্লাহ তা'আলারই মেহেরবানী যে, অর্থ-সম্পদের মালিক না হওয়া সত্ত্বেও মালিকের মতই আল্লাহর পথে দান-সদাকা করার ছাওয়াব লাভের সুযোগ তিনি বান্দাকে দান করেছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় নেককাজে ছাওয়াব পাওয়ার জন্য মুসলিম হওয়া শর্ত।
খ. এ হাদীছ দ্বারা আমানতদারীর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।
গ. খেয়ানত করা কঠিন গুনাহ। খাজাঞ্চি দান-খয়রাতের ক্ষেত্রে খেয়ানত করলে ছাওয়াব তো পায়ই না, উল্টো খেয়ানতের কারণে গুনাহগার হয়ে থাকে। তাই খাজাঞ্চি ও কোষাধ্যক্ষদের সতর্ক হওয়া উচিত।
ঘ. দান-সদাকার ছাওয়াব পাওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে তা খুশিমনে প্রদান করা। অন্যের পক্ষ থেকে দেওয়ার ক্ষেত্রেও এটা জরুরি।
গুণগুলো হচ্ছেঃ-
ক. মুসলিম হওয়া;
খ. আমানতদার ও বিশ্বস্ত হওয়া;
গ. তাকে যা আদেশ করা হয় তা কার্যকর করা এবং
ঘ. খুশিমনে দেওয়া।
যে-কোনও দীনী কাজ আল্লাহর কাছে কবূল হওয়ার জন্য ঈমান ও ইসলাম শর্ত। কোনও অমুসলিম ব্যক্তি নেককাজ করলে আল্লাহর কাছে তা কবূল হয় না এবং তার বিনিময়ে সে কোনও ছাওয়াবও পায় না। হাঁ, কাজটি ভালো হওয়ায় দুনিয়াতেই তাকে বদলা দিয়ে দেওয়া হয়। সুতরাং খাজাঞ্চি বা কোষাধ্যক্ষ মালিকের হুকুমমত দান-সদাকা করলে ছাওয়াব পাবে কেবল তখনই, যখন সে একজন মুসলিম হবে, অন্যথায় নয়।
এমনিভাবে তার বিশ্বস্ত হওয়া জরুরি। যদি খেয়ানতকারী হয় তবে ছাওয়াব পাবে না। তার মানে মালিকের পক্ষ হতে যে পরিমাণ সম্পদ কোনও খাতে ব্যয় করার হুকুম দেওয়া হয়, সে বিশ্বস্ততার সঙ্গে সেই খাতে তা ব্যয় করে। এ ক্ষেত্রে সে কোনও খেয়ানত করে না। অর্থের পরিমাণেও কমবেশি করে না এবং খাতও পরিবর্তন করে না। সেরকম কিছু করলে ছাওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে। যদি সে অন্য কোনও ক্ষেত্রে খেয়ানত করে সে কারণে গুনাহগার হবে বটে, কিন্তু সে খেয়ানতের কোনও আছর এ ক্ষেত্রে পড়বে না। এ ক্ষেত্রে আমানত রক্ষা করায় সে ঠিকই ছাওয়াব পাবে। কেননা এক ক্ষেত্রে গুনাহ করার কারণে অন্য ক্ষেত্রের নেক আমল বাতিল হয় না।
ছাওয়াব পাওয়ার জন্য এটাও শর্ত যে, তাকে যা আদেশ করা হয় তা পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করবে। অবহেলা ও গড়িমসি করবে না। যা দিতে বলা হয়েছে তা দিতে বখিলী করবে না। অনেক খাজাঞ্চি এমন আছে, যে অর্থব্যয়ের ক্ষেত্রে বখিলী করে। মালিক কোনও ক্ষেত্রে অর্থ অনুমোদন করলে সে তা সহজে দিতে চায় না। কোনও বখীল ব্যক্তি পকেটের টাকা-পয়সা খরচ করতে যেমন কষ্টবোধ করে, তারও যেন সেরকম কষ্ট হয়। টাকাটা যেন নিজ পকেট থেকেই যাচ্ছে। এরকম আচরণকারী খাজাঞ্চি ছাওয়াব পাবে না।
চতুর্থ গুণ হল খুশিমনে দেওয়া। অর্থাৎ মালিক যাকে যে পরিমাণ অর্থ দিতে আদেশ করেছে সে খুশিমনে তাকে তা দিয়ে দেয়। গড়িমসিও করে না, কৃপা দেখানোর ভাবও করে না এবং অহমিকাও দেখায় না। বরং দিতে পারার কারণে আনন্দ বোধ করে।
এ চারটি গুণের সাথে যে খাজাঞ্চি মালিকের হুকুম কার্যকর করে, সে মালিকের মতই দান-সদাকার ছাওয়াব পেয়ে যায়, যদিও সে নিজ পকেট থেকে কিছুই খরচ করেনি। নিজে খরচ না করেও ছাওয়াব পাওয়ার কারণ নেককাজে সহযোগিতা। সে মালিকের অনুমোদন কার্যকর করে তাকে আল্লাহর পথে খরচ করতে সহযোগিতা করেছে। অনেক সময় মালিকের পক্ষে সরাসরি গরীব-দুঃখীকে দান করা সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে খাজাঞ্চি যদি তার পক্ষ থেকে তা করে দেয়, তবে তার জন্য এটা অনেক বড় সহযোগিতা বৈ কি। আর দীনী কাজে সহযোগিতা করাটাও একটি নেক আমল। আর সে কারণেই তার এ ছাওয়াব। এটা আল্লাহ তা'আলারই মেহেরবানী যে, অর্থ-সম্পদের মালিক না হওয়া সত্ত্বেও মালিকের মতই আল্লাহর পথে দান-সদাকা করার ছাওয়াব লাভের সুযোগ তিনি বান্দাকে দান করেছেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা যায় নেককাজে ছাওয়াব পাওয়ার জন্য মুসলিম হওয়া শর্ত।
খ. এ হাদীছ দ্বারা আমানতদারীর গুরুত্ব উপলব্ধি করা যায়।
গ. খেয়ানত করা কঠিন গুনাহ। খাজাঞ্চি দান-খয়রাতের ক্ষেত্রে খেয়ানত করলে ছাওয়াব তো পায়ই না, উল্টো খেয়ানতের কারণে গুনাহগার হয়ে থাকে। তাই খাজাঞ্চি ও কোষাধ্যক্ষদের সতর্ক হওয়া উচিত।
ঘ. দান-সদাকার ছাওয়াব পাওয়ার জন্য শর্ত হচ্ছে তা খুশিমনে প্রদান করা। অন্যের পক্ষ থেকে দেওয়ার ক্ষেত্রেও এটা জরুরি।


বর্ণনাকারী: