আল জামিউস সহীহ- ইমাম বুখারী রহঃ
২০- যাকাতের অধ্যায়
হাদীস নং:
আন্তর্জাতিক নং: ১৪১৮
৮৯১. জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর, এক টুকরা খেজুর অথবা সামান্য কিছু সাদ্কা করে হলেও।
১৩৩৫। বিশর ইবনে মুহাম্মাদ (রাহঃ) ......... আয়িশা (রাযিঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ভিখারিণী দু’টি শিশু কন্যা সঙ্গে করে আমার নিকট এসে কিছু চাইল। আমার নিকট একটি খেজুর ব্যতীত অন্য কিছু ছিলনা। আমি তাকে তা দিলাম। সে নিজে না খেয়ে খেজুরটি দু’ভাগ করে কন্যা দু’টিকে দিয়ে দিল। এরপর ভিখারিণী বেরিয়ে চলে গেলে নবী (ﷺ) আমাদের নিকট আসলেন। তাঁর নিকট ঘটনা বিবৃত করলে তিনি বললেনঃ যাকে এরূপ কন্যা সন্তানের ব্যাপারে কোনরূপ পরীক্ষা করা হয়, তবে সে কন্যা সন্তান তার জন্য জাহান্নামের আগুন থেকে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াবে।
হাদীসের ব্যাখ্যা:
এ হাদীছে যে মহিলার কথা বলা হয়েছে যে, সে তার দু'টি মেয়েকে নিয়ে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর কাছে এসে সওয়াল করেছিল, তার নাম পরিচয় জানা যায় না। এতটুকু তো স্পষ্ট যে, তিনি নেহাত গরীব ছিলেন। এমনিতে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও গরীবী হালেই জীবন কাটিয়েছেন। তবে ওই দরিদ্র নারী যখন এসেছিলেন, তখন কী কঠিন দারিদ্র্য চলছিল তা আম্মাজানের কথা দ্বারা কিছুটা হলেও অনুমান করা যায়।
তিনি বলেন (কিন্তু আমার কাছে একটিমাত্র খেজুর ছাড়া আর কিছুই পেল না। আমি সেটিও তাকেই দিয়ে দিলাম)। অর্থাৎ ঘরে তখন খাদ্যদ্রব্য বলতে ওই একটি খেজুরই ছিল, আর কিছু ছিল না। নিতান্ত গরীবের ঘরেও খুঁজলে খাওয়ার মত দু'-চারটা জিনিস পাওয়াই যায়। কিন্তু এখানে কেবলই একটা খেজুর। প্রচণ্ড অভাব-অনটনকালে একটা খেজুরেরও অনেক মূল্য। কোনও এক জিহাদের সফর সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে সাহাবী বলেছিলেন যে, আমাদের আমীর শেষপর্যন্ত আমাদেরকে প্রতিদিন একটা করে খেজুর দিতেন। এক ব্যক্তি বলে উঠল, একটা খেজুরে কী হত? তিনি বললেন, কী হত তা বোঝা গিয়েছিল সেইদিন, যেদিন ওই একটা খেজুরও পাওয়া যায়নি। ফলে কিছুক্ষণ মুখে খেজুরের বিচি নিয়ে চুষতে থেকেছি, তারপর পানি খেয়েছি। তো ঘরে যখন আর কিছুই নেই, তখন ওই একটি খেজুরও ছিল অনেক মূল্যবান। কিন্তু আম্মাজান রাযি. মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শিক্ষাপ্রাপ্ত। তিনি তাঁকে শিক্ষা দিয়েছেন يا عائشة لا يرجعن من عندك سائل، ولو بظلف محرق 'হে আয়েশা! তোমার কাছ থেকে কোনও খাদ্যপ্রার্থী যেন কিছুতেই ফিরে না যায়। একটা জ্বালানো খুর হলেও দিও।৩০১
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে লক্ষ্য করে আরও বলেন يا عائشة، استتري من النار ولو بشق تمرة، فإنها تسد من الجائع مسدها من الشبعان 'হে আয়েশা! জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর, যদিও একটা খেজুরের অর্ধেক দিয়ে হয়। কেননা তা দ্বারাও ক্ষুধার্ত ব্যক্তির অতটুকু ক্ষুধা নিবারণ হয়, যেমনটা পরিতৃপ্ত ব্যক্তির নিবারণ হয়ে থাকে।৩০২
তো আম্মাজান রাযি. সেই খেজুরটিই দিয়ে দিলেন। নিজে পরে কী খাবেন সে চিন্তা করলেন না। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষায় এভাবেই তাঁর আখলাক-চরিত্র গড়ে উঠেছিল। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এভাবে অকাতরে দান করে গেছেন। জমা করে রাখার অভ্যাসই তাঁর ছিল না।
ওই মহিলা সে খেজুরটি দুই ভাগ করে তার দুই মেয়েকে দিয়ে দিলেন। নিজে কিছুই খেলেন না। এটা মাতৃচরিত্র। মায়েরা নিজেরা অনাহারে থেকে সন্তানকে খাওয়ান। সন্তানদের এটা মনে রাখা উচিত। পরে যখন নিজের পালা আসবে, তখন নিজে না খেয়ে হলেও মাকে খাওয়াবে। মাকে পরিবারের অতিরিক্ত সদস্যদের কাতারে ফেলবে না। মা যাতে এ কথা না বোঝে যে, তিনি এ ঘরের এক বাড়তি বোঝা। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করুন।
তারপর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে আসলে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. তাঁকে এসব কথা শোনালেন। তিনি বললেন (যে ব্যক্তিই এ কন্যাসন্তানদের দ্বারা কিছুটা পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তারপর সে তাদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করবে, তার জন্য তারা জাহান্নামের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হবে)। ابتلي ক্রিয়াপদটি بلاء থেকে তৈরি। এর মূল অর্থ পরীক্ষা। বিপদ-আপদকেও 'বালা' বলা হয়। এর কারণ বালা-মসিবত দ্বারা মানুষকে পরীক্ষা করা হয় সে তাতে ধৈর্যধারণ করে না দিশা হারিয়ে ফেলে।
হাদীছে যে কন্যাসন্তানকে পরীক্ষার বিষয় বলা হয়েছে, তার কারণ হল দীনী অবক্ষয়ের কারণে অনেকে কন্যাসন্তানকে অবজ্ঞা করে। এ কারণে যার কন্যাসন্তান জন্ম নেয় সেও কেমন লজ্জাবোধ করে। হাদীছে ইশারা করা হচ্ছে যে, তোমার জন্য এটা পরীক্ষা– তুমি কন্যাসন্তানের কারণে লজ্জিত, নাকি তাকে আল্লাহর দান ও নিআমত মনে করে সন্তুষ্ট। পরীক্ষা করা হয় তার বিবাহের ব্যাপারেও। লক্ষ করা হয় তুমি তার বিবাহে কেবল দুনিয়াটাই দেখ, নাকি দীনদার ছেলেকে অগ্রাধিকার দাও। একটা কঠিন পরীক্ষা হয় বিবাহের পরও। ছেলেপক্ষ ইসলামী আখলাক ও শিষ্টাচারে অভ্যস্ত না হলে মেয়ের সঙ্গে সন্তোষজনক আচরণ করে না। কখনও মানসিক নির্যাতন করে, কখনও বা দৈহিক। পিতামাতার পক্ষে তা মর্মবিদারক। এ ক্ষেত্রে ধৈর্য ও হিকমতের সঙ্গে কাজ করা উচিত। মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তাকে কিছুতেই অসহায় ছেড়ে দেওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।
যাহোক এ হাদীছ বলছে, কন্যাসন্তান দ্বারা যে-কোনওরকম পরীক্ষার সম্মুখীন হলে তাতে বিরক্ত না হয়ে যদি তাদের প্রতি সদাচরণ ও উত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তবে তার ফযীলত হল এই যে, এর ফলে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। তাদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করার কারণে আল্লাহ তাআলা পিতামাতাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল কারও দরজায় কোনও খাদ্যপ্রার্থী হাজির হলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
খ. উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর মহৎ চরিত্র জানা গেল যে, তিনি খাদ্যপ্রার্থীকে নিজ ঘরে থাকা সর্বশেষ খাবারটুকুও দিয়ে দিতেন। পরে কী খাবেন সে চিন্তা করতেন না। অভুক্তের প্রতি এ মমত্ববোধ আমাদেরও রপ্ত করা উচিত।
গ. এ হাদীছ দ্বারা মাতৃমমতারও পরিচয় পাওয়া গেল। প্রত্যেক সন্তানের কর্তব্য এর মূল্য বোঝা এবং জীবনভর মায়ের বাধ্য হয়ে থাকা।
ঘ. পিতামাতার জন্য কন্যাসন্তান পরীক্ষাস্বরূপ। আল্লাহ দেখেন পিতামাতা তাকে অবজ্ঞা করে, নাকি তাকে আল্লাহ তাআলার দান ও নিআমত মনে করে এবং মায়া মমতার সাথে তার প্রতিপালন করে।
ঙ. কন্যাসন্তানের সুন্দর লালন-পালন দ্বারা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা হয়, যা কিনা মানুষের পরম লক্ষ্যবস্তু। কাজেই এ লক্ষ্য অর্জনের জন্যও পরম মমতার সাথে কন্যাসন্তানের লালন-পালন করা চাই।
৩০১. মুসনাদুল বাযযার, হাদীছ নং ৮১৩১; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৭৫৬
৩০২. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৫০১
তিনি বলেন (কিন্তু আমার কাছে একটিমাত্র খেজুর ছাড়া আর কিছুই পেল না। আমি সেটিও তাকেই দিয়ে দিলাম)। অর্থাৎ ঘরে তখন খাদ্যদ্রব্য বলতে ওই একটি খেজুরই ছিল, আর কিছু ছিল না। নিতান্ত গরীবের ঘরেও খুঁজলে খাওয়ার মত দু'-চারটা জিনিস পাওয়াই যায়। কিন্তু এখানে কেবলই একটা খেজুর। প্রচণ্ড অভাব-অনটনকালে একটা খেজুরেরও অনেক মূল্য। কোনও এক জিহাদের সফর সম্পর্কে বর্ণনা দিতে গিয়ে সাহাবী বলেছিলেন যে, আমাদের আমীর শেষপর্যন্ত আমাদেরকে প্রতিদিন একটা করে খেজুর দিতেন। এক ব্যক্তি বলে উঠল, একটা খেজুরে কী হত? তিনি বললেন, কী হত তা বোঝা গিয়েছিল সেইদিন, যেদিন ওই একটা খেজুরও পাওয়া যায়নি। ফলে কিছুক্ষণ মুখে খেজুরের বিচি নিয়ে চুষতে থেকেছি, তারপর পানি খেয়েছি। তো ঘরে যখন আর কিছুই নেই, তখন ওই একটি খেজুরও ছিল অনেক মূল্যবান। কিন্তু আম্মাজান রাযি. মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে শিক্ষাপ্রাপ্ত। তিনি তাঁকে শিক্ষা দিয়েছেন يا عائشة لا يرجعن من عندك سائل، ولو بظلف محرق 'হে আয়েশা! তোমার কাছ থেকে কোনও খাদ্যপ্রার্থী যেন কিছুতেই ফিরে না যায়। একটা জ্বালানো খুর হলেও দিও।৩০১
প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে লক্ষ্য করে আরও বলেন يا عائشة، استتري من النار ولو بشق تمرة، فإنها تسد من الجائع مسدها من الشبعان 'হে আয়েশা! জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা কর, যদিও একটা খেজুরের অর্ধেক দিয়ে হয়। কেননা তা দ্বারাও ক্ষুধার্ত ব্যক্তির অতটুকু ক্ষুধা নিবারণ হয়, যেমনটা পরিতৃপ্ত ব্যক্তির নিবারণ হয়ে থাকে।৩০২
তো আম্মাজান রাযি. সেই খেজুরটিই দিয়ে দিলেন। নিজে পরে কী খাবেন সে চিন্তা করলেন না। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের শিক্ষায় এভাবেই তাঁর আখলাক-চরিত্র গড়ে উঠেছিল। মৃত্যু পর্যন্ত তিনি এভাবে অকাতরে দান করে গেছেন। জমা করে রাখার অভ্যাসই তাঁর ছিল না।
ওই মহিলা সে খেজুরটি দুই ভাগ করে তার দুই মেয়েকে দিয়ে দিলেন। নিজে কিছুই খেলেন না। এটা মাতৃচরিত্র। মায়েরা নিজেরা অনাহারে থেকে সন্তানকে খাওয়ান। সন্তানদের এটা মনে রাখা উচিত। পরে যখন নিজের পালা আসবে, তখন নিজে না খেয়ে হলেও মাকে খাওয়াবে। মাকে পরিবারের অতিরিক্ত সদস্যদের কাতারে ফেলবে না। মা যাতে এ কথা না বোঝে যে, তিনি এ ঘরের এক বাড়তি বোঝা। আল্লাহ তাআলা আমাদের হেফাজত করুন।
তারপর নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘরে আসলে উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযি. তাঁকে এসব কথা শোনালেন। তিনি বললেন (যে ব্যক্তিই এ কন্যাসন্তানদের দ্বারা কিছুটা পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তারপর সে তাদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করবে, তার জন্য তারা জাহান্নামের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধক হবে)। ابتلي ক্রিয়াপদটি بلاء থেকে তৈরি। এর মূল অর্থ পরীক্ষা। বিপদ-আপদকেও 'বালা' বলা হয়। এর কারণ বালা-মসিবত দ্বারা মানুষকে পরীক্ষা করা হয় সে তাতে ধৈর্যধারণ করে না দিশা হারিয়ে ফেলে।
হাদীছে যে কন্যাসন্তানকে পরীক্ষার বিষয় বলা হয়েছে, তার কারণ হল দীনী অবক্ষয়ের কারণে অনেকে কন্যাসন্তানকে অবজ্ঞা করে। এ কারণে যার কন্যাসন্তান জন্ম নেয় সেও কেমন লজ্জাবোধ করে। হাদীছে ইশারা করা হচ্ছে যে, তোমার জন্য এটা পরীক্ষা– তুমি কন্যাসন্তানের কারণে লজ্জিত, নাকি তাকে আল্লাহর দান ও নিআমত মনে করে সন্তুষ্ট। পরীক্ষা করা হয় তার বিবাহের ব্যাপারেও। লক্ষ করা হয় তুমি তার বিবাহে কেবল দুনিয়াটাই দেখ, নাকি দীনদার ছেলেকে অগ্রাধিকার দাও। একটা কঠিন পরীক্ষা হয় বিবাহের পরও। ছেলেপক্ষ ইসলামী আখলাক ও শিষ্টাচারে অভ্যস্ত না হলে মেয়ের সঙ্গে সন্তোষজনক আচরণ করে না। কখনও মানসিক নির্যাতন করে, কখনও বা দৈহিক। পিতামাতার পক্ষে তা মর্মবিদারক। এ ক্ষেত্রে ধৈর্য ও হিকমতের সঙ্গে কাজ করা উচিত। মেয়েকে নির্যাতন থেকে রক্ষার জন্য সুচিন্তিত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তাকে কিছুতেই অসহায় ছেড়ে দেওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।
যাহোক এ হাদীছ বলছে, কন্যাসন্তান দ্বারা যে-কোনওরকম পরীক্ষার সম্মুখীন হলে তাতে বিরক্ত না হয়ে যদি তাদের প্রতি সদাচরণ ও উত্তম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, তবে তার ফযীলত হল এই যে, এর ফলে জাহান্নাম থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। তাদের প্রতি সুন্দর ব্যবহার করার কারণে আল্লাহ তাআলা পিতামাতাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।
হাদীস থেকে শিক্ষণীয়ঃ
ক. এ হাদীছ দ্বারা জানা গেল কারও দরজায় কোনও খাদ্যপ্রার্থী হাজির হলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত নয়।
খ. উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রাযি.-এর মহৎ চরিত্র জানা গেল যে, তিনি খাদ্যপ্রার্থীকে নিজ ঘরে থাকা সর্বশেষ খাবারটুকুও দিয়ে দিতেন। পরে কী খাবেন সে চিন্তা করতেন না। অভুক্তের প্রতি এ মমত্ববোধ আমাদেরও রপ্ত করা উচিত।
গ. এ হাদীছ দ্বারা মাতৃমমতারও পরিচয় পাওয়া গেল। প্রত্যেক সন্তানের কর্তব্য এর মূল্য বোঝা এবং জীবনভর মায়ের বাধ্য হয়ে থাকা।
ঘ. পিতামাতার জন্য কন্যাসন্তান পরীক্ষাস্বরূপ। আল্লাহ দেখেন পিতামাতা তাকে অবজ্ঞা করে, নাকি তাকে আল্লাহ তাআলার দান ও নিআমত মনে করে এবং মায়া মমতার সাথে তার প্রতিপালন করে।
ঙ. কন্যাসন্তানের সুন্দর লালন-পালন দ্বারা জাহান্নাম থেকে আত্মরক্ষা হয়, যা কিনা মানুষের পরম লক্ষ্যবস্তু। কাজেই এ লক্ষ্য অর্জনের জন্যও পরম মমতার সাথে কন্যাসন্তানের লালন-পালন করা চাই।
৩০১. মুসনাদুল বাযযার, হাদীছ নং ৮১৩১; শুআবুল ঈমান, হাদীছ নং ১০৭৫৬
৩০২. মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ২৪৫০১
